নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

রাজীব নুর

আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।

রাজীব নুর › বিস্তারিত পোস্টঃ

একটি অতি সাধারন গল্প

১৪ ই অক্টোবর, ২০১৯ দুপুর ১২:৩৯



গভীর রাত। রাত বড় রহস্যময় হয়।
খুব বৃষ্টি হচ্ছে। রাস্তায় পানি জমে গেছে। গর্ত থেকে একটা ইঁদুর উঠে এসেছে। ইঁদুরের ঘর পানিতে ঢুবে গেছে। সে কোথায় যাবে বুঝতে পারছে না। প্রচন্ড বৃষ্টি আর বজ্রপাতের শব্দে ইঁদুর টা বেশ ভয় পাচ্ছে। ঠিক এমন সময়, ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়কে একটা সাদা রঙের গাড়ি খুব দ্রুত ঢাকার দিকে আসছে। যেন তার খুব তাড়া। ভয়ার্ত ক্ষুধার্থ ইঁদুর টি সাদা গাড়ির চাকায় মারা পড়লো। কেউ জানলো না। কেউ দেখলো না। অনেকের অজান্তেই এরকম বহু প্রান শেষ হয়ে যায়।

চারিদিকে বেশ অন্ধকার।
বৃষ্টির জোর আরো বেড়েছে। বৃষ্টির ঝাপটায় হেড লাইটের আলোতেও পরিস্কার দেখা যাচ্ছে না। দমকা বাতাসসহ ঝুম বৃষ্টি। এরকম বৃষ্টি বহু দিন হয়নি। গাড়ির ভেতর থেকে সামনের দিকে কিছুই দেখা যাচ্ছে না। অথচ রফিক সাহেব তুফানের মতো গাড়ি চালাচ্ছেন। তিনি প্রচন্ড রেগে আছেন। তার পাশে তার স্ত্রী নীলা বসা। নীলা আরো বেশি রেগে আছে। দুইজনে প্রচন্ড ঝগড়া করছে। গাড়ি খুব জোরে চালিয়ে রফিক সাহেব স্ত্রীর প্রতি রাগ প্রকাশ করছেন। ব্যাপক হারে বজ্রপাত হচ্ছে। স্বামী স্ত্রী দুইজন দু’জনের প্রতি ভালোবাসা আছে। ভালোবাসা থাকলেও ঝগড়া হয়। ভুল বুঝাবুঝি হয়।

নীলা রফিকের উপর বেশ রাগ জমেছে।
রাগ করে নীলা তার ছোট মামার বাসায় চলে গিয়েছে। রফিফ অফিসের কাজে চিটাগাং গিয়েছিল। সে আজ রাতে বাসায় ফিরে দেখে নীলা বাসায় নেই। টেবিলের উপর নীলার লেখা একটা চিঠি। সেই চিঠি পড়ে রফিক নীলার ছোট মামার বাসায় এসেছে। নীলা রফিকের সাথে ফিরবে না। রফিক জোর করে নীলাকে গাড়িতে তুলেছে। রফিক কেন নীলাকে জোর করে গাড়িতে তুলেছে, এজন্য নীলা সমানে ঘেউ ঘেউ করেই যাচ্ছে। রফিক বলল, নীলা শান্ত হও। বুঝতে চেষ্টা করো। আমাদের মধ্যে এমন কিছু হয় নাই, যে রাগ করে তোমাকে অন্যের বাসায় থাকতে হবে। তোমার প্রতি আমার ভালোবাসা কতটুকু তা তোমার বুঝার ক্ষমতা নেই।

নীলার সাথে রফিকের বিয়ে হয়েছে পাঁচ বছর হয়েছে।
তাদের সংসারে বাচ্চা নেই। বাচ্চার জন্য অনেকবার চেষ্টা করা হয়েছে। তিনবার নীলার মিসক্যারেজ হয়েছে। নীলা মেয়েটার একটা বাচ্চার খুব শখ। সে নামাজ পড়ে আল্লাহর কাছে অনেক কান্দাকাটি করেছে। ডাক্তারের সমস্ত নিয়ম মেনে চলেছে নীলা। আধুনিক শিক্ষিত মেয়ে হয়েও নীলা, এমন কি বাচ্চার জন্য আজমি শরীফ পর্যন্ত গিয়েছে। লাল সূতা দীর্ঘদিন গলায় পেঁচিয়ে রেখেছে। হুজুরের কাছ থেকে তাবিজ নিয়ে গলায় পড়েছে। মানুষ যখন পানিতে ডুবে যায়, তখন হাতের কাছে খড় কুটো যা পায় তা’ই আকড়ে ধরতে চায়। তবু ভাগ্য খারাপ। তিনবার মিসক্যারেজ। মিসক্যারেজ হওয়ার ফলে আত্মীয় স্বজন, পরিচিত-অপ্রিচিত, বন্ধু-বান্ধব সবার কাছে নীলা সহজ হয়ে মিশতে পারে না।

নীলা গত পাঁচ বছরে যা করেনি, আজ তাই করলো।
সে রফিকের শার্টের কলার খুব শক্ত করে খামচে ধরেছে। রফিকের নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে এসেছে। গাড়ি চলছে ১২০ কি. মি. স্প্রীডে। চারিদিকে তুমুল ঝড় তুফান। রফিক মনে মনে বলল, নীলা আমি তোমাকে খুব ভালোবাসি। অনেক ভালোবাসি। তোমার বেবি হয় না, তাতে আমারও কিন্তু অনেক কষ্ট। আমার একটা সন্তানের অনেক শখ। তবু আমি আরেকটা বিয়ে করার কথা ভাবি নি। আমি তোমাকে কোনো দিনও ছেড়ে যাবো না। আমি তোমাকে আমার সমস্ত ভালোত্ব দিয়ে ভালোবাসি। স্বচ্ছ পবিত্র ভালোবাসা। আমৃত্যু তোমার সাথেই থাকবো। রফিক গাড়ির নিয়ন্ত্রন রাখতে পারলো না। কার্লভাটের উপর থেকে গাড়ি ছিটকে পড়লো খালে। তিন মিনিটের মধ্যে গাড়ি ডুবে গেল। আরো তিন মিনিট পর নীলা এবং রফিকের মৃত্যু হলো।

মন্তব্য ১৪ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই অক্টোবর, ২০১৯ দুপুর ১২:৫৭

ইসিয়াক বলেছেন: বড়ই বেদনা দায়ক

১৪ ই অক্টোবর, ২০১৯ বিকাল ৩:৩৩

রাজীব নুর বলেছেন: ও আচ্ছা।

২| ১৪ ই অক্টোবর, ২০১৯ দুপুর ১:২৭

জোবাইর বলেছেন:
এতটুকুন একটা গল্পের মধ্যে বৃষ্টি, ঝড়, তুপান, ঝগড়া, রাগ, অভিমান, দুঃখ, ভালোবাসা, দুর্ঘটনা, মৃত্যু—এত কিছু! তারপরেও
এটি "একটি অতি সাধারন গল্প" হয় কিভাবে! এটি স্বল্প দৈর্ঘ্যের একটি অসাধারণ গল্প। চমৎকার! ব্লগের ধৈর্য্যহীন ও ধৈর্য্যশীল উভয় ধরনের পাঠকের পাঠোপযোগী গল্প।

১৪ ই অক্টোবর, ২০১৯ বিকাল ৩:৩৪

রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।

৩| ১৪ ই অক্টোবর, ২০১৯ দুপুর ১:৩৪

ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন:




নীলা রফিকের সাথে আরেকটি অনাগত প্রাণের মৃত্যু হয়েছে সেদিন! কারণ নীলা রফিক দুজনের কেউ জানতো না নীলা দু মাসের অন্তঃসত্ত্বা !!! - এটি লেখক রাজীব নুর জানতেন, লেখক রাজীব নুর চাইলেই তিনজনের প্রাণ বাঁচাতে পারতেন! কিন্তু লেখকদের সময়ের সাথে সময়েরে প্রয়োজনে নিষ্ঠুর হতে হয়। তাতেই বাস্তবতা।।

১৪ ই অক্টোবর, ২০১৯ বিকাল ৩:৩৫

রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।

পোষ্ট পড়ার জন্য অশেষ শুকরিয়া।

৪| ১৪ ই অক্টোবর, ২০১৯ বিকাল ৪:২২

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: একি! ছোট মামার বাসা থেকে রফিক নীলাকে আর জোর করে গাড়িতে তুলল। রফিক কেন নীলাকে জোর করে গাড়িতে তুলল। আর নীলা সমানে ঘেউঘেউ করে যাচ্ছে??? এই অংশটি অত্যন্ত দৃষ্টিকটু লাগছে।
ভাইয়ের এই পোস্টটি সাজানো-গোছানোর বড্ড অভাব চোখে পড়লো।

১৪ ই অক্টোবর, ২০১৯ রাত ৮:৫২

রাজীব নুর বলেছেন: দাদা শুভেচ্ছা নিবেন।
নীলা রফিকের সাথে যাবে না। এই জন্য রফিক জোর করেছে। আসলে এটা স্বামী স্ত্রীর একটা মান অভিমান। এদিকে রফিক যখন চিটাগাং থেকে এসে দেখে নীলা বাসায় নেই। তখন তার খুব রাগ হয়, কষ্ট লাগে।
নীলা ঘেউ ঘেউ করেছে মানে, স্ত্রীরা তো সারাক্ষন ঘ্যান ঘ্যান করতেই থাকে। রফিক বড্ড ক্লান্ত ছিল। ক্ষুধার্থ ছিল। ঠিক এই রকম সময়ে রফিকের কাছে স্ত্রীর কথা গুলো কুকুরের ঘেউ ঘেউ মনে হচ্ছিল।

৫| ১৪ ই অক্টোবর, ২০১৯ বিকাল ৪:৩৭

সাইন বোর্ড বলেছেন: খুব বেদনাবিধুর !

১৪ ই অক্টোবর, ২০১৯ রাত ৮:৫৪

রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ। ভালো থাকুন।

৬| ১৪ ই অক্টোবর, ২০১৯ বিকাল ৫:৪৩

বিজন রয় বলেছেন: ভাল গল্প!
+++++

১৪ ই অক্টোবর, ২০১৯ রাত ৮:৫৫

রাজীব নুর বলেছেন: শুকরিয়া ভাই।

৭| ১৪ ই অক্টোবর, ২০১৯ রাত ৮:৫৮

আহমেদ জী এস বলেছেন: রাজীব নুর,




শুরুটা বেশ সুন্দর হচ্ছিল কিন্তু শেষে নিয়ন্ত্রন রাখতে না পারায় খালে পড়ে গেলেন যে !!!!!!!!!!

১৪ ই অক্টোবর, ২০১৯ রাত ৯:০৪

রাজীব নুর বলেছেন: এটাই তো আমার দোষ।
একদিন হয়তো ঠিক হবে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.