নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।
মেয়েটার নাম কান্তা।
আমাদের সাথেই পড়তো। দেখতে মোটামোটি। তবে মাথায় অনেক চুল ছিলো। কোমর পর্যন্ত চুল। আমি মুগ্ধ হয়ে কান্তার চুলের দিকে তাকিয়ে থাকতাম। মাথা ভরতি চুলের কারনেই মেয়েটাকে দেবী প্রতিমার মতোন লাগতো। সহজ সরল একটা মেয়ে! অবশ্য মেয়েরা বিয়ের আগে সহজ সরলই থাকে। বিয়ের পর তারা বদলে যায়। কঠোর হয়ে যায়, নিষ্ঠুর হয়ে যায়। কান্তার সাথে আমার গত বিশ বছর ধরে কোনো যোগাযোগ নেই। তবে তাকে আমি বেশ কয়েকবার বিভিন্ন জায়গায় দেখেছি। কান্তা আমাকে দেখতে পায়নি। কিছুদিন আগে ঘটনা চক্রে একজনের মাধ্যমে কান্তার সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারি। জেনে খুব দুঃখ পাই। কান্তার একটা আনন্দময় জীবন দরকার ছিলো। মেয়েটাকে আমার ভালো লাগতো।
কান্তার দুই ছেলে এখন।
স্বামী অসুস্থ। সারাদিন বাসায় থাকে। কান্তার স্বামী ভালো চাকরী করতো। নিজে গাড়ি চালিয়ে অফিস যেত। ছুটির দিনে পরিবার নিয়ে বেড়াতে যেত। অসুস্থতার কারনে চাকরি থেকে অবসর নিয়েছে। এখন সারাদিন বাসায় শুয়ে বসে থাকে। নিজের চিকিৎসা করাতে গিয়ে জমানো টাকা সব শেষ। এখন সংসারের হাল ধরেছে কান্তা। কান্তা লালমাটিয়া কলেজ থেকে অর্থনীতিতে মাস্টার্স করেছে। সে অনেক চেষ্টা করেও একটা চাকরি যোগাড় করতে পারে নি। আবার চাকরি পেলেও সমস্যা ছিলো। তাহলে সংসার দেখবে কেন? অসুস্থ স্বামী আর দুই সন্তানকে দেখবে কে? কান্তা এখন কেক বানায়। প্রচুর অর্ডার পায়। ফেসবুকে তার একটা পেজ আছে। আমি মুগ্ধ হয়ে মাঝে মাঝে কেকের ছবি গুলো দেখি।
কান্তার সাথে যদি আমার বিয়ে হতো!
কান্তার সাথে তো আমার ভালোই ভাব ছিলো। শুধু সাহসের অভাবে চুমু খেতে পারি নি। একদিন বেইলী রোডে কান্তার সাথে দেখা। কান্তা সবাইকে তুই করে বলতো, শুধু আমাকে কোনো এক অজানা কারনে তুমি করে বলতো। কান্তা বলল, তুমি কি সুদেব স্যারের কাছে ইংরেজী পড়ো? আমি বললাম, হুম পড়ি। কান্তা বলল, সুদেব স্যার নাকি শেক্সপিয়ারের জীবনীটা সহজ করে সুন্দর করে লিখে দিয়েছেন। খুব সহজেই নাকি মুখস্ত হয়ে যায়। আমি বললাম, হুম। কান্তা বলল, এবার পরীক্ষায় এটা আসবেই। লেখাটা আমাকে ফোটোকপি করে দিও, প্লীজ। আমি বললাম, ওকে দিবো। কান্তা সব সময় দুই হাত নেড়ে নেড়ে কথা বলতো। সেদিন কান্তা বলল, আসো তোমাকে আজ কোক আর বার্গার খাওয়াবো।
হঠাত কান্তার সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেল।
কোনো দেখা সাক্ষাত যোগাযোগ কিছুই নেই। তবে গত বিশ বছরে আমি কান্তাকে তিনচার বার রাস্তায় দেখেছি। অবশ্য কান্তার বিয়ে হবার পর একদিনও দেখিনি। একবার দেখলাম বইমেলায়। কান্তাকে দেখেই বুকের মধ্যে যেন কেমন করে উঠলো। আমি কান্তার কাছে যেতাম। কিন্তু কান্তা একটা ছেলের হাত ধরে হাটছে। ছেলেটা লম্বা করে, চোখে চশমা। আরেকদিন দেখলাম ইডেন কলেজের সামনে রিকশা করে যাচ্ছে। সাথে সেই চশোমা পড়া ছেলেটা। হাতে হাত। কান্তাকে বেশ খুশিই মনে হলো। এবারও আমার বুকে চিনচিন করে ব্যথা করলো। শেষবার কান্তাকে দেখলাম বানিজ্য মেলায়। সেই চশমা পড়া ছেলেটার সাথে। এবারো দেখলাম দুজন হাত ধরাধরি করে হাটছে। আরে এরা কি হাত ধরাধরি ছাড়া হাটতে জানে না?
একদিন আমি কান্তাকে ফোন দেই।
ফোন ধরে কান্তার স্বামী। ফোন ধরেই সে কাশতে থাকে। আমি বললাম, আপনি তো বেশ অসুস্থ! কান্তার স্বামী বলল, তবুও তো মরি না। আমি বললাম, মরবেন কেন? আপনাকে দীর্ঘদিন বেঁচে থাকতে হবে। অবশ্যই আপনি সুস্থ হবেন। মনোবল হারাবেন না। কান্তার স্বামী বললেন, এই অসুস্থ জীবন নিয়ে বেঁচে থাকতে ইচ্ছা করে না। আমি বললাম, সম্ভবত আপনার কথা বলতে কষ্ট হচ্ছে। আপনি বিশ্রাম নিন। কান্তাকে দিন। আমি একটা কেকের অর্ডার দিবো। কান্তার স্বামী বললেন, কান্তা বাসায় নেই। আপনি বলুন, আমি অর্ডার লিখে নিচ্ছি। আমি বললাম, আমার মেয়ের জন্ম দিন। আলটিমেট চকলেট কেক চাই। দুই পাউন্ড হলেই হবে। আমি টাকা বিকাশ করে দিয়েছি। ভদ্রলোক অর্ডার নিয়ে ফোন রেখে দিলেন।
১৭ ই মে, ২০২০ রাত ৯:১৬
রাজীব নুর বলেছেন: কান্তার জীবন এরকম হওয়ার কথা ছিলো না।
২| ১৭ ই মে, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৫৫
নেওয়াজ আলি বলেছেন: একরাশ ভালো লাগার ভালোবাসা ।
১৭ ই মে, ২০২০ রাত ৯:১৬
রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ আলি ভাই।
৩| ১৭ ই মে, ২০২০ রাত ৮:১৭
চাঁদগাজী বলেছেন:
বাংলাদেশের মানুষ হঠাৎ করেই অসুস্হ হয়ে যায়; চিকিৎসা করাতে গেলে পরিবার সর্বসান্ত; আমাদের প্রেসিডেন্টগুলো চিকিৎসার জন্য ১ পয়সাও ব্যয় করে না, সেজন্য উনাদের লিলিপুটিয়ান মগজে অন্যদের চিকিৎসার খরচের কথা ঢুকে না।
১৭ ই মে, ২০২০ রাত ৯:১৭
রাজীব নুর বলেছেন: আমাদের দেশের ক্ষমতাবানরা উন্নত দেশে চিকিৎসা করান।
৪| ১৭ ই মে, ২০২০ রাত ৯:১৭
কল্পদ্রুম বলেছেন: কখনো ফেসবুক বন্ধ করলে এই একটা সমস্যা হবে।ফেসবুক নির্ভর অনেক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী তৈরি হয়েছে এদেশে।তারা বিপদে পড়বেন।
১৮ ই মে, ২০২০ রাত ১২:২২
রাজীব নুর বলেছেন: তা ঠিক। অনলাইন ব্যবসা বেশ জমজমাট।
৫| ১৭ ই মে, ২০২০ রাত ৯:৪৬
শুভ্রনীল শুভ্রা বলেছেন: ইশ! বেইলী রোড আরেকটা প্রেমের সাক্ষী হতে গিয়েও পারলোনা।
১৮ ই মে, ২০২০ রাত ১২:২২
রাজীব নুর বলেছেন: হুম।
৬| ১৭ ই মে, ২০২০ রাত ৯:৫৫
নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: গল্পটা সম্পর্কে কিছুই বলার নেই, একটি মন্তব্য করেছেন,বিয়ের পরে মেয়েরা বদলে যায়।নিষ্ঠুর হয়ে যায়।গল্পে এমন কোন আভাস পাওয়া যায় না।হয়তো আমারই বোঝার ভুল।
১৮ ই মে, ২০২০ রাত ১২:২৩
রাজীব নুর বলেছেন: বিয়ে করেছেন?
৭| ২১ শে মে, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:২৬
ইসিয়াক বলেছেন: হুম
২১ শে মে, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৫৬
রাজীব নুর বলেছেন: !
©somewhere in net ltd.
১| ১৭ ই মে, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৪১
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: জীবন যেমন।