নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

রাজীব নুর

আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।

রাজীব নুর › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভালোবাসার গল্প এরকমই হয়

২৫ শে জুন, ২০২০ রাত ১২:৩৮




প্রতি বছর ঢাকাতে বৃক্ষমেলা হয়।
বৃক্ষপ্রেমিকেরা মেলাতে যায়। নানান রকম গাছপালা কিনেন। শফিক অনেকক্ষন একাএকা বৃক্ষমেলাতে ঘুরলো। কোনো গাছের চারা কিনলো না। তবে অনেক গুলো ফুলের ছবি তুললো। আজ নানান রকম ফুলের ছবি তুলতে পেরে সে অনেক আনন্দিত। আনন্দ প্রকাশ করার জন্য সে এক লাইন গান গাইল- 'আমার এই পথ চলাতেই আনন্দ'।

আকাশে মেঘ জমতে শুরু করেছে।
শফিক বৃক্ষমেলা থেকে বের হয়ে রাস্তার পাশের দোকান থেকে এক কাপ চা আর একটা কেক খেয়ে নিল। তারপর আরাম করে একটা সিগারেট শেষ করলো। আকাশে মেঘ গুলো যেন নাচছে। তা ধিন, তা ধিন ধিন তা। বৃষ্টি অবশ্যই হবে। শফিক হাঁটতে হাটতে বড় রাস্তায় এসে দাড়ালো। শন শন করে হাজার হাজার গাড়ি, বাস যাচ্ছে-আসছে। যেন তাদের এক আকাশ ব্যস্ততা। শফিকের কোনো ব্যস্ততা নেই। সে খুব মন দিয়ে রাস্তার চলন্ত বাস-গাড়ি গুলো দেখছে আর বিড়বিড় করে গুনছে। চলন্ত গাড়ির হিসাব রাখা যেন খুব মজার খেলা। হঠাৎ শফিক দেখল তার পাশে একটা মেয়ে দাঁড়িয়ে আছে। মেয়েটির চোখে মুখে এক আকাশ রাগ। মেয়েটিকে দেখে শফিকের অনেক মায়া লাগল। প্রথম দেখাতেই কেন মায়া লাগলো?


নীলা কখনই খুব সাজে না।
বাইরে বের হলে- শুধু চোখে কাজল আর কপালে একটা ছোট্র টিপ। সাঁজ বলতে কাজল আর টিপ। তাতেই নীলাকে অসাধারণ লাগে। মুগ্ধ চোখে তাকিয়ে থাকতে হয়। আজ নীলা চোখে কাজল দেয়নি, কপালে টিপও পড়েনি। সে তার বাবার সাথে রাগ করে দুপুরে না খেয়ে বাসা থেকে বের হয়ে গেছে। অনেক হাঁটাহাঁটি করে সে এখন খুব ক্লান্ত এবং ক্ষুধার্থ। সে কই যাবে? কি করবে জানে না। সে ভাবছে....। এই সময় নীলা দেখল- একটা ছেলে রাস্তার চলন্ত বাস গাড়ির হিসাব করছে। ছেলেটির কাধে একটা ব্যাগ। ছেলেটি নীলার দিকে না তাকিয়ে রাস্তার চলন্ত গাড়ি গুলোর সংখ্যা খুব মন দিয়ে হিসাব করেই যাচ্ছে। নীলার ইচ্ছা হলো ছেলেটিকে বলতে- তুমি চলন্ত বাস গুলোর হিসাব রাখো আর আমি চলন্ত গাড়ি গুলোর হিসাব রাখি। তাতে তোমার হিসাব রাখতে সুবিধা হবে।
ছেলেটির কর্মকান্ডে নীলা খুব মজা পাচ্ছে। তারও খুব ইচ্ছা করছে ছেলেটির মতো চলন্ত গাড়ির সংখ্যা হিসাব করতে। কেন জানি ছেলেটির উপর তার খুব মায়া লাগছে। প্রথম দেখাতেই কেন মায়া লাগলো?


শফিক মেয়েটির দিকে তাকিয়ে বলল- কয়টা বাজে?
মেয়েটি এক আকাশ তেজ দেখিয়ে বলল- জানি না।
শফিক বলল, মোবাইলে সময় দেখে বলুন।
মেয়েটি বলল- পারব না।
শফিক বলল- আপনি তো একটা বেয়াদপ মেয়ে!
মেয়েটি রেগে গিয়ে বলল- তুই বেয়াদপ। তোর চৌদ্দ গুষ্টি বেয়াদপ।
শফিক বলল- এত রাগ করার কি আছে? আপনি কি ক্ষুধার্থ? ক্ষুধার্থ মানুষ অতি দ্রুত রেগে যায়।
মেয়েটি বলল- চুপ। আর একটা কথা বললে ধাক্কা দিয়ে গাড়ির নিচে ফেলে দিবো।


নীলার কথা শেষ হওয়ার আগেই বৃষ্টি শুরু হলো।
শফিক একটা রিকশায় উঠে পড়লো আর মেয়েটিকে বলল- তাড়াতাড়ি উঠুন। ভিজে যাবেন।
নীলা বলল- আমি কেন আপনার সাথে রিকশায় উঠবো!
শফিক বলল, এখন তর্ক করার সময় নয়। একটা হাত বাড়িয়ে দিল নীলার দিকে। নীলা রিকশায় উঠে বসল।

রিকশা যাচ্ছে সংসদ ভবনের সামনে দিয়ে।
তুমুল বৃষ্টি হচ্ছে। আকাশ ভরা কালো মেঘ। চারিদিক প্রায় অন্ধকার। ঝুম ঝুম করে সমানে বৃষ্টি পড়ছে। পর্দা থাকা সত্ত্বেও নীলা আর শফিক ভিজে একাকার। রিকশাচালকের বাতাস ভেঙ্গে রিকশা সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে।
নীলা বলল- আমরা কোথায় যাচ্ছি?
শফিক বলল- আসাদ গেইট।
আমি কি জানতে পারি আসাদ গেইট কেন যাচ্ছি?
আপনার মত আমিও দুপুরে কিছু খাই নি। এখন দুইজন মিলে ভূনা খিচুরী খাবো গরুর মাংস দিয়ে।
আর কোনো কথা নেই। দুইজনই চুপ।

অনেকক্ষন পর শফিক আঙ্গুল দিয়ে রাস্তার বামপাশ দেখিয়ে বলল- দেখেন ছেলেমেয়ে গুলো হাত ধরাধরি করে বৃষ্টিতে ভিজছে। দেখতে সুন্দর লাগছে না?
নীলা জবাব দিলো না।
শফিক নীলার দিকে তাকিয়ে বলল- আচ্ছা, আপনার নাম কি?
আমার নাম- নীলা। আপনার নাম কি?
শফিক বলল, আমার নাম শফিক।


শফিক এবং নীলা একটি রেস্টুরেন্টে বসল।
বৃষ্টির দিনেও রেস্টূরেন্টে এসি চলছে ধুমছে। তারা দুইজন খুব আরাম করে ভূনা খুচিরী খেলো। খাওয়া শেষে নীলা আইসক্রীম নিল আর শফিক কোক। রেস্টুরেন্টে গান বাজছে- "একদিন বৃষ্টিতে বিকেলে/ থাকবেনা সাথে কোন ছাতা/ শুধু দেখা হয়ে যাবে মাঝ রাস্তায়/ ...শুধু তোমার আমার হৃদয়ে/ ভিজে মাটির সোঁদা গন্ধ।"...
নীলা বলল, গানটা খুব সুন্দর।
আপনি গান গাইতে জানেন নীলা?
নীলা কিছু বলল না, তার বেশ শীত শীত লাগছে।
শফিক বলল- আইসক্রীম না খেয়ে কফি খান। ভালো লাগবে।
নীলা বলল আইসক্রীম আমার ভীষণ প্রিয়।

শফিক রেস্টুরেন্টের জানালা দিয়ে দেখল- বৃষ্টি কিছুটা কমেছে। তবে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি পড়ছেই। শফিক বলল- চলেন আপনাকে বাসায় নামিয়ে দেই- আপনার বাসা কোথায়?


রিকশা চলছে।
নীলা বলল, এখন বাসায় যাবো না। কিছুক্ষন রিকশায় করে ঘুরব। কেন জানি নীলার খুব কান্না পাচ্ছে।
চোখে পানি নিয়েই নীলা বলল- তুমি কি একটু দেখবে আমার জ্বর এসেছে কিনা?
শফিক এক আকাশ ভালোবাসা নিয়ে নীলার কপালে হাত রাখল। এবং শফিক চমকে উঠলো- নীলার অনেক জ্বর।
নীলা শফিকের কাধে মাথা রাখল। শফিক শক্ত করে নীলাকে জড়িয়ে ধরল।

এই জল ভালো লাগে; বৃষ্টির রূপালি জল কত দিন এসে
ধুয়েছে আমার দেহ — বুলায়ে দিয়েছে চুল — চোখের উপরে
তার শান — স্নিগ্ধ হাত রেখে কত খেলিয়াছে, — আবেগের ভরে
ঠোঁটে এসে চুমা দিয়ে চলে গেছে কুমারীর মতো ভালোবেসে।

মন্তব্য ২৬ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২৫ শে জুন, ২০২০ রাত ১:৩৯

কল্পদ্রুম বলেছেন: নীলার জ্বর!শফিকের উচিত ছিলো তাকে করোনার টেস্ট করানো।

২৫ শে জুন, ২০২০ রাত ২:২৩

রাজীব নুর বলেছেন: সেসব হবেখন।

২| ২৫ শে জুন, ২০২০ ভোর ৬:০৫

নেওয়াজ আলি বলেছেন: মুগ্ধ হলাম ।খুব সুন্দর লিখেছেন ।

২৫ শে জুন, ২০২০ দুপুর ১:১৪

রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ আলি ভাই।

৩| ২৫ শে জুন, ২০২০ ভোর ৬:৫০

ইসিয়াক বলেছেন: ১ নম্বর, মেয়েটির চোখে মুখে এক আকাশ রাগ। কিভাবে কি? তাহলে তো ভয়াবহ দূর্যোগ নেমে আসার কথা।

২৫ শে জুন, ২০২০ দুপুর ১:১৪

রাজীব নুর বলেছেন: মানুষের মন তো! মুহুর্তেই বদলায়।

৪| ২৫ শে জুন, ২০২০ ভোর ৬:৫১

ইসিয়াক বলেছেন: ২ নম্বরটা একটা ভালো গল্পের সূচনা হতে পারে।

২৫ শে জুন, ২০২০ দুপুর ১:১৫

রাজীব নুর বলেছেন: সেই সূচনা আপনিই করুন।

৫| ২৫ শে জুন, ২০২০ সকাল ৯:৫০

পারভীন শীলা বলেছেন: শফিকের ভালোবাসায় জোর আছে বলতে হবে ।

২৫ শে জুন, ২০২০ দুপুর ১:১৫

রাজীব নুর বলেছেন: তা আছে।

৬| ২৫ শে জুন, ২০২০ সকাল ১০:৪৪

এম ডি মুসা বলেছেন: সুন্দর কথা রাজীব ভাই।

২৫ শে জুন, ২০২০ দুপুর ১:১৫

রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ মুসা ভাই।

৭| ২৫ শে জুন, ২০২০ বিকাল ৪:৩০

ইসিয়াক বলেছেন:

৩ নম্বর, মেয়েটির নাম কি?

২৫ শে জুন, ২০২০ বিকাল ৫:৫৩

রাজীব নুর বলেছেন: নীলা।

৮| ২৫ শে জুন, ২০২০ বিকাল ৪:৪৩

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: ঠিক আছে।

২৫ শে জুন, ২০২০ বিকাল ৫:৫৪

রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ।

৯| ২৫ শে জুন, ২০২০ বিকাল ৪:৪৪

ইসিয়াক বলেছেন:

৪ নম্বর ,তখন ১৯৮০-৮১ সাল ।আমার তখন অনেক অল্প বয়স। ঢাকা শহরে তখন রাঁজহাস, ছাগল এসব পালা হতো।বেশ মজার ছিলো সময়গুলো। এবাড়ি ওবাড়ি বাটিতে করে তরকারী দেয়া নেয়া হতো।হুটহাট যাওয়া আসা হতো। বেশ আন্তরিক ছিলো মানুষগুলো। আমরা ছুটির দিনগুলোতে রাস্তার উপর নানা রকম খেলা খেলতাম । আর খেলতে খেলতে কি মনে হতেই প্রায় দিনই মিরপুর রোড পার হয়ে সংসদ ভবনে খেলতে যেতাম। সেখানে অনেক রংবেরং এর পাথর পাওয়া যেতো।পাথর কুড়াতাম। ফুল গাছ পাওয়া যেতো।বীজ পাওয়া যেতো,সেগুলো কুড়িয়ে আনতাম । সংসদ ভবনের ভেতরে তখন কত খেলা করে বেড়িয়েছি।

২৫ শে জুন, ২০২০ বিকাল ৫:৫৪

রাজীব নুর বলেছেন: বাহ!

১০| ২৫ শে জুন, ২০২০ বিকাল ৪:৫১

ইসিয়াক বলেছেন: ৫ নম্বর, শফিক নীলাকে একটা চুমু খেতে পারতো। বৃষ্টির দিনে প্রেম। চুমু ছাড়া কি জমে?

২৫ শে জুন, ২০২০ বিকাল ৫:৫৫

রাজীব নুর বলেছেন: হা হা হা---

১১| ২৫ শে জুন, ২০২০ বিকাল ৪:৫২

ইসিয়াক বলেছেন: ৬ নম্বর, সুন্দর।প্রেম করতে ইচ্ছে করছে :(

২৫ শে জুন, ২০২০ বিকাল ৫:৫৬

রাজীব নুর বলেছেন: করেন। দরকার আছে।

১২| ২৫ শে জুন, ২০২০ বিকাল ৫:৫৭

ইসিয়াক বলেছেন:


কার সাথে? নীলার সাথে? :-B

২৫ শে জুন, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:০৫

রাজীব নুর বলেছেন: ওকে।

১৩| ২৭ শে জুন, ২০২০ বিকাল ৪:৫৩

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: বৃক্ষ মেলা না বলে বলা উচিত গাছের চারার মেলা। বৃক্ষ মানে তো বিশাল গাছকে বুঝায়।

২৭ শে জুন, ২০২০ বিকাল ৫:৩৪

রাজীব নুর বলেছেন: চারার মেলা শব্দটার চেয়ে বৃক্ষ মেলা শব্দটা বেশি শ্রতিমধুর।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.