নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

রাজীব নুর

আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।

রাজীব নুর › বিস্তারিত পোস্টঃ

জেলখানার দিন গুলো- ৫

০৪ ঠা জুলাই, ২০২০ রাত ১১:২৭



(এই লেখাটি আমার নয়। এটা লিখেছেন আমার শ্বশুরমশাই। তার অনুমতি নিয়েই লেখাটি ব্লগে দিলাম।)

অনেক পাঠক বন্ধুদের কৌতুহল, আমি ১৯৯৬ সালে জনতার মঞ্চে যাওয়া সত্বেও কেন সে আন্দোলনের ফসল আওয়ামী শাসন আমলে জেলবন্দী? সে প্রশ্নের জবাব হলো- আমি একটি পেশাজীবি সংগঠনের নেতা ছিলাম। ১৯৯৬ সালে আওয়ামিলীগ ও সমমনা রাজনৈতিক দলগুলো যখন তত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে সাধারন নির্বাচন অনুষ্ঠানের আন্দোলনে দেশকে অচল করে দিচ্ছিলো তখন দেশ একটি গৃহ যুদ্ধের দিকে যাচ্ছিল আমরা প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী হিসাবে আমাদের দায়িত্ববোধ থেকেই দেশের ক্রান্তিলগ্নে অরাজক পরিস্থিতি হতে দেশকে রক্ষার ঐতিহাসিক প্রয়োজনে সরকারি কর্মচারীরা জনতার মঞ্চে যায়, যার ফলশ্রুতিতে ৩০ শে মার্চ, ১৯৯৬ তারিখে তত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠিত হয় এবং দেশ শান্তির সুবাতাস বহমান হয়। পরবর্তীতে আওয়ামিলীগ জাতীয় পার্টির সমর্থন নিয়ে সরকার গঠন করে যা সকলেই অবগত।

আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পরের দিন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সচিবালয়ে কর্মচারীদের নিকট কৃতজ্ঞতা স্বরূপ সচিবালয়ে সমাবেশে কর্মচারী নেতা সৈয়দ মহীউদ্দীন এর সভাপতিত্বে এক সমাবেশে সরকারে আসায় কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। এখানে উল্লেখ্য যে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে মহিউদ্দিন ভাই এবং আমার অবাধ যাতায়াতের সুবিধা ছিল। কোন একরাতে প্রধানমন্ত্রী আমাকে গনভবনে ডেকে পাঠান। আমি রাত সম্ভবত ১০ টায় গণভবনে পৌঁছি। তখন সেখানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর পিএস রবিউল আলম মোক্তাদির চৌধুরী ( বর্তমানে এমপি), ডিপিএস আবু আলম শহীদ খান (অবঃ সচিব), ইব্রাহিম হোসেন খান, এপিএস (অবঃ অতিরিক্ত সচিব) এবং বাহাউদ্দীন নাসিম (বর্তমানে এমপি) উপস্থিত ছিলেন।

আমাকে প্রধানমন্ত্রী বললেন, সকল অফিসে আওয়ামিলীগের সংগঠন তৈরি করতে, আমি তাকে বললাম সরকারি কর্মচারীদের মাঝে সব দলেরই সমর্থক আছে এবং সবাই আমাকে নেতা মানে কিন্তু আমি যদি আওয়ামী সংগঠন করি তা হলে অন্যরা আমাকে নেতা মানবে না। আমি এ সরল কথা বলে চলে আসার পর আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের জ্বাল বুনা শুরু করলেন ওরা যারা সেদিন প্রধানমন্ত্রীর সামনে আলোচনা কালে উপস্থিত ছিল। তারা আমাদের পাশ কাটিয়ে "মুক্তি যুদ্ধের চেতনাসিক্ত কর্মচারী ফোরাম গঠন করালেন আমারই কতিপয় কর্মী দিয়ে। এতে আমার সাথে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের দূরত্ব বেড়ে যায়।

এ জন্য আমার মোটেও দুঃখ ছিল না। কারন আমি কর্মচারী নেতা আমার তাদের পক্ষেই কথা বলতে হবে। আমরা ১৯৯৯ সালে কর্মচারীদের দাবী দাওয়া নিয়ে সরকারের নিকট স্মারকলিপি দিলাম, দাবীর জন্য আল্টিমেটাম দিলাম। সরকার ও তাদের প্রশাসনিক মেশিনারি প্রধানমন্ত্রীকে বুঝালেন, এরা খুবই ভয়ংকর। তারা বিএনপি'র মতো দলের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে তাদেরকে ক্ষমতাচ্যুতিতে অগ্রনী ভুমিকা রেখেছে সুতরাং আগষ্টে আন্দোলনের ডাক দেয়ার অর্থ হচ্ছে তারা আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। বিষয়টি সহজেই সকল মহলকে বুঝাতে সক্ষম হয় এবং নাটকীয় ভাবে আমাদের বিরুদ্ধে অবস্হান নেয়। কিন্তু আমার দুঃখ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বিষয়টি একবার তলিয়ে দেখবার প্রয়োজন অনুভব করেননি যা আজও আমাকে ব্যথিত করছে। আমি কখনো আওয়ামী লীগ তথা প্রধানমন্ত্রীকে দোষারোপ করিনি করবোও না।

আমার বিরুদ্ধে পাঁচটি ফৌজদারি মামলা দেওয়া হলো। আসামি করা হলো আমার ৫০ জন নেতাকর্মীকে। আমরা ১৪ জন জেল হাজতে বাদবাকীরা উল্লেখযোগ্য হলেন- মোঃ মজবুল হক, নুরুল আলম, আঃখালেক, মন্জুরুল হক, শাহ মোঃ মহসীন( প্রয়াত), লকিত উল্লাহ, কলিম উল্লাহ, মাহবুব আলম, আবুল বাসার, আনোয়ার হোসেন, নজরুল ইসলাম, নুরুল ইসলাম, প্রমুখ। আমি অনেকেরই নাম স্মরনে আনতে পারিনি তজ্জন্য অনুতপ্ত।

জেলে আমার দিন কিভাবে কেটে যেত তা বলে বুঝানো যাবে না, আমার বৃদ্ধা মাকে নিয়ে চিন্তা করতাম। কিন্তু আমার সহধর্মিণী এতোটাই ধীরস্থির ছিল যে, আমার চার সন্তান, মা ও বিভিন্ন মানুষকে সুন্দর ভাবে, সুচারুভাবে হেন্ডেল করতেন। যারা আমার বাসায় ফোন করে সমবেদনা জানাতেন বা দেখা করতেন তাদের নাম ঠিকানা ডায়েরিতে লিখে রাখতেন। যা একজন দূরদর্শী নারীর পক্ষেই সম্ভব ছিল। তিনি একদিন পরপর আমাকে জেলখানায় রান্না করা খাবার পাঠাত এবং বাহিরের সকল খবরাখবর লিখে আমাকে জানাত। মূলতঃ ও ছিল আমার সাংগঠনিক রাজনীতির প্রেরনাদায়ী। আমি তাকে হারিয়ে আজ বড্ড অসহায়।

মন্তব্য ১৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৪ ঠা জুলাই, ২০২০ রাত ১১:৫১

নেওয়াজ আলি বলেছেন: রাজনীতি করে কত রাস্তার লোক বস্তির মিলিয়ন টাকার মালিক হয়।

০৫ ই জুলাই, ২০২০ রাত ১২:৩১

রাজীব নুর বলেছেন: সবাই না। কেউ কেউ।

২| ০৫ ই জুলাই, ২০২০ রাত ১২:২৭

চাঁদগাজী বলেছেন:



আপনার শ্বশুরের গ্রামের বাড়ী আছে?

০৫ ই জুলাই, ২০২০ রাত ১২:৩৬

রাজীব নুর বলেছেন: জ্বী আছে।

৩| ০৫ ই জুলাই, ২০২০ রাত ২:৩৫

চাঁদগাজী বলেছেন:


করোনার সময়টা আপনি সেখানে থাকলে ভালো হতো।

০৫ ই জুলাই, ২০২০ সকাল ১১:৪৭

রাজীব নুর বলেছেন: শ্বশুর বাড়িতে গিয়ে থাকব???

৪| ০৫ ই জুলাই, ২০২০ ভোর ৬:৪৭

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:

উনি কোন পদে চাকরি করতেন? উনি কি বিসিএস ক্যাডার?

০৫ ই জুলাই, ২০২০ সকাল ১১:৪৭

রাজীব নুর বলেছেন: জানি না।

৫| ০৫ ই জুলাই, ২০২০ বিকাল ৫:২১

ইসিয়াক বলেছেন: হা হা হা .......। ****** আপনেরে ঘর জামাই থাকতে বলছে মনে হয়! :(

০৫ ই জুলাই, ২০২০ রাত ৮:৫৪

রাজীব নুর বলেছেন: প্রশ্নই আসে না। আমাদের বংশের ছেলেরা ঘর জামাই থাকে না।

৬| ০৫ ই জুলাই, ২০২০ বিকাল ৫:২৪

ইসিয়াক বলেছেন: তারপর.......

০৫ ই জুলাই, ২০২০ রাত ৮:৫৪

রাজীব নুর বলেছেন: আসবে।

৭| ০৭ ই জুলাই, ২০২০ দুপুর ১২:১১

নীল আকাশ বলেছেন: যেমন দল তেমন তার আচরণ।
স্বাধীনতার পর থেকেই এইদলের লোকজন নিজেদের সাথেই বেঈমানি করে যাচ্ছে।
কুকুরের মাংশ নাকি কুকুর খায় না। এই দলের লোকজন সেটা ভুল প্রমাণ করলো।

০৭ ই জুলাই, ২০২০ দুপুর ১:৫১

রাজীব নুর বলেছেন: দুঃখজনক।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.