নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।
মেয়েটার নাম বিলকিস।
বয়স আনুমানিক ১৩ বা ১৪ বছর হবে। দেখতে ভীষন মিষ্টি। গায়ের রঙ পরিস্কার তবে মেয়েটা খাটো। মাথা ভরতি চুল। মেয়েটাকে দেখলে এবং তার কথা শুনলে মনেই হবে না সে একটা বাসায় কাজ করে। সে কাজের মেয়ে। সারা মাস কাজ করে তিন হাজার টাকা পায়। থাকা খাওয়া ফ্রি। প্রতিমাসের চার তারিখে মেয়েটার বাবা এসে টাকা নিয়ে যায়। মেয়েটা বেশ কয়েকবার আমাদের বাসায় এসেছে। তখন অবশ্য আমার সাথে কথা হয়নি। আমার এক আত্মীয়'র বাসায় মেয়েটা কাজ করে। বিলকিস এর বাবা মা অতি দরিদ্র তাই হয়তো মেয়েটাকে অন্যের বাসায় কাজ করতে পাঠিয়েছে। বিলকিসের এখন লেখাপড়ার কথা। অথচ সে এখন ঘর মুছে, কাপড় ধোয়, রান্না করে। এ সমাজে এরকম মেয়ের সংখ্যা কত?
সেদিন আমি আমার আত্মীয় বাসায় গিয়েছি।
তাদের বাসায় আমাদের দুপুরে এবং রাতে দাওয়াত। গিয়ে দেখি, বিলকিস ঘর মুছছে। ঘর মুছা শেষে এক বালতি কাপড় ধুতে বসলো। আমরা বেশ কয়েকজন খেতে বসেছি। বিলকিস আমাদের এটা সেটা এগিয়ে দিচ্ছে। তখন দুপুর তিনটা তখনও বিলকিসের খাওয়া হয়নি। আমি বিলকিসকে আমার পাশে বসালাম। জোর করেই বসালাম। সে বসতে চায়নি, হয়তো লজ্জা পাচ্ছিলো। সে হয়তো মাটিতে বসে খায়। খেতে খেতে বিলকিসের সাথে আমার অনেক কথা হলো। মেয়েটার জন্য আমার ভীষন কষ্ট হলো। আমি একটু চেষ্টা করলে মেয়েটার জীবন বদলে দিতে পারি না?
বিলকিসের কোনো বিশ্রাম নেই।
খাওয়া শেষ করে বিলকিস পেঁয়াজ কাটতে বসলো। রাতে পোলাউ, কোরমা, রোস্ট ইত্যাদি হাবিজাবি রান্না হবে। একগাদা পেঁয়াজ কাটছে। আমি দূরে বসে ছিলাম। পেয়াজের ঝাঁজে আমার চোখ জ্বলছে অথচ বিলকিস রান্না ঘরে একটার পর একটা পেয়াজ কেটেই যাছে। আমি বললাম, বিলকিস আমার তো খুব চোখ জ্বলছে! তোমার জ্বলছে না? বিলকিস বলল, জ্বললেও কিছু করার নেই। আমাকে তো এ বাসায় রাখাই হয়েছে কাজের জন্য। বাচ্চা একটা মেয়ে সারাদিন এত কাজ কিভাবে করে! এ বাড়িতে তাইয়্যেবা বলে একটা ছয় মাসের শিশু কন্যা আছে। তাইয়্যেবার দেখভাল সারাদিন বিলকিস'ই করে। কারন তাইয়্যেবার বাবা মা দু'জনেই চাকরি করে।
বিলকিসের বাবা মায়ের উপর আমার খুব রাগ হলো।
মেয়েকে খাওয়াতে পারবে না। পড়াতে পারবে তাহলে তারা বিলকিসের জন্ম দিয়েছে কেন? এখন মেয়েটা সারাদিন অন্যের বাসায় ঝিয়ের কাজ করে জীবন নষ্ট করছে। এই মেয়েটার জীবন কি আনন্দয় হতে পারতো না? বিলকিস'রা চার বোন। বিলকিস'ই সবার ছোট। বড় বোন এক সিএনজি চালকের সাথে পালিয়ে গেছে। মেজো বোন আরেক বাসায় কাজ করে। সেজো বোন বাবা মায়ের সাথে গ্রামে থাকে। কারন সেজো মেয়েটার পায়ে সমস্যা আছে। খুড়িয়ে খুড়িয়ে হাঁটে। বাংলাদেশের মানুষ গুলো এত বেশি দরিদ্র কেন? এত অসহায় কেন? অথচ দেশ চলে গিয়েছে উন্নয়নের মহাসড়কে।
আমি হয়তো একটা ভালো কাজ করেছি।
আমার অনুরোধে বিলকিসকে এখন পড়ানো হচ্ছে। তাইয়্যেবার মা এখন বিলকিসকে প্রতিদিন পড়ায়। আমি ফোন করে বিলকিসের খোঁজ খবর নিচ্ছি নিয়মিত। স্বরবর্ণ ও ব্যঞ্জনবর্ণ এখন বিলকিস পড়তে ও লিখতে পারে। সেদিন আমি জিজ্ঞেস করলাম, স্বরবর্ণ ও ব্যঞ্জনবর্ণ কয়টা? সে পেরেছে। আমি খুব খুশি হয়েছি। আমার বিশ্বাস আগামী দুই, তিন মাস পর বিলকিস গড়গড় করে পত্রিকা পড়তে পারবে। আগামী ১ তারিখ মানে ঈদের দিন বিলকিস আমাদের বাসায় আসবে। সুরভিকে বলেছি বিলকিসের জন্য একটা জামা কিনে রাখতে। নতুন জামা পেয়ে বিলকিস নিশ্চয়ই অনেক খুশি হবে!
২৫ শে জুলাই, ২০২০ দুপুর ১২:১১
রাজীব নুর বলেছেন: সরকার। কিন্তু সরকার দুষ্ট। লোভী। দূর্নীতিবাজ। অদক্ষ। তাই দেশের সাধারন মানুষদের এগিয়ে আসতে হবে।
২| ২৫ শে জুলাই, ২০২০ ভোর ৪:০৭
ইফতেখার ভূইয়া বলেছেন: একটা পরিবারে চারটা মেয়ে থাকাই বলে দেয় সেই পরিবারের সমস্যা কোথায়। ব্যক্তিগতভাবে আমি মনে করি বাংলাদেশের মতো একটি জনবহুল দেশে যে কোন পরিবারে দু'টোর বেশী বাচ্চা হলে আর্থিক এবং সামাজিক শাস্তির বিধান করা উচিত। বিলকিসের জন্য অনেক অনেক দোয়া আর ভালোবাসা।
২৫ শে জুলাই, ২০২০ দুপুর ১২:১২
রাজীব নুর বলেছেন: আপনি কি বলছেন, চার টা মেয়ে না হয়ে ছেলে হলে ভালো হতো?
৩| ২৫ শে জুলাই, ২০২০ ভোর ৪:২৯
চাঁদগাজী বলেছেন:
যেই জাতি প্রতিবশীর মেয়েকে "চাকরাণী" বানায়, উহা ইডিয়ট জাতি।
২৫ শে জুলাই, ২০২০ দুপুর ১২:১৩
রাজীব নুর বলেছেন: ইডিয়টে ভরা দেশ।
৪| ২৫ শে জুলাই, ২০২০ ভোর ৫:০৯
সোহানাজোহা বলেছেন:
বিলকিসের ঘটনা যদি সত্য হয়ে থাকে তার মাতাপিতাকে বলুন তাকে পড়ালেখা করাতে, আমাদের দেশে সরকারি শিক্ষাখাত বিনামূল্য করা হয়েছে বিলকিসদের জন্য। কারিগরি শিক্ষা আছে সেখানেও মেয়েটি ভালো করবে।
২৫ শে জুলাই, ২০২০ দুপুর ১২:১৫
রাজীব নুর বলেছেন: আরে মিয়া ওদের ঘরে নেই খাবার। খেয়েপড়ে বাচতে হবে আগে। তারপর লেখাপড়া।
৫| ২৫ শে জুলাই, ২০২০ ভোর ৬:২২
নেওয়াজ আলি বলেছেন: অনবদ্য ভাবনার প্রকাশ।
২৫ শে জুলাই, ২০২০ দুপুর ১২:১৫
রাজীব নুর বলেছেন: হুম।
৬| ২৫ শে জুলাই, ২০২০ সকাল ৮:০৪
নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: চাকরানী কেন বলছেন, সে সকলের মতো জব করে তবে বেতন কম দেওয়া হয়। এটা অপরাধ।সরকারের উচিত।আট ঘন্টা কাজের একটা সর্ব নিম্ন মজুরি নর্ধারন করে দেওয়া।বাড়তি সময়ের জন্য অতিরিক্ত মজুরি দেওয়া এবং শিশু শ্রম নিষিদ্ধ করা।আমার মনে হয় শিশু শ্রমের আইনটা আছে কিন্ত বাস্তবায়ীত হয় না।
২৫ শে জুলাই, ২০২০ দুপুর ১২:১৬
রাজীব নুর বলেছেন: সরকার এবং আমাদের দেশের লোকজন এই শ্রেনীকে নিয়ে ভাবে না।
৭| ২৫ শে জুলাই, ২০২০ সকাল ১১:৩০
জহিরুল ইসলাম সেতু বলেছেন: অসংখ্য বিলকিস রয়েছে আমাদের দেশে। যারা জন্মই নেয় পরের দাসত্ব করার জন্য, নিগৃহীত হবার জন্য, নির্যাতিত হবার জন্য। বিলকিসের সৌভাগ্য ভাল গৃহ কর্তা, কর্ত্রী পেয়েছেন, যারা তাকে দিয়ে কাজ করায়, নির্যাতন করে না। আপনার অনুরোধে হলেও তাকে পড়ানোর দায়িত্ব নিয়েছেন।
রাষ্ট্রের দায়িত্বের কথা বাদই দিলাম। দেশে খুব কম মানুষই আছেন যারা বিলকিসদের কথা ভাবেন, তাদের জন্য কিছু করার চেষ্টা করেন। আমরা যদি এমনি করে আপনার মতো বিলকিসদের কথা ভাবতে পারতাম, তাদের ভাগ্য উন্নয়নের জন্য কিছু করতে পারতাম, কিছুটা হলেও পরিবর্বতন হতো। আপনার মতো আমাদের আশেপাশের গরিব অসহায় মানুষগুলের ভাববো। কল্যাণ হোক বিলকিসদের। কল্যাণ হোক সকলের।
শুভকামনা প্রিয় রাজীব নুর ভাই।
২৫ শে জুলাই, ২০২০ দুপুর ১২:১৮
রাজীব নুর বলেছেন: আমরা সবাই যদি একজন বা দুইজন করে এদের দায়িত্ব নিই৷ তাহলে সমাজে এদের খুজে পাওয়া যাবে না।
৮| ২৫ শে জুলাই, ২০২০ সকাল ১১:৫৫
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: আপনি অনেক ভালো একটা কাজ করছেন।
২৫ শে জুলাই, ২০২০ দুপুর ১২:১৯
রাজীব নুর বলেছেন: এই রকম ভালো কাজ আমি সুযোগ পেলেই করি।
৯| ২৫ শে জুলাই, ২০২০ দুপুর ১:৩৮
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: আলোচনা ভালো লাগলো।
২৫ শে জুলাই, ২০২০ দুপুর ২:৩০
রাজীব নুর বলেছেন: ওকে।
১০| ২৫ শে জুলাই, ২০২০ দুপুর ২:২২
ঢুকিচেপা বলেছেন: সত্যিই আপনি একটি মহৎ কাজ করেছেন রাজীব ভাই।
২৫ শে জুলাই, ২০২০ দুপুর ২:৩১
রাজীব নুর বলেছেন: এরকম কাজ আমি সব সময় করতে চাই।
১১| ২৫ শে জুলাই, ২০২০ দুপুর ২:৩৪
মনিরা সুলতানা বলেছেন: আশা করছি বিলকিস খুশি হবে ।
২৫ শে জুলাই, ২০২০ বিকাল ৪:০২
রাজীব নুর বলেছেন: অবশ্যই।
১২| ২৫ শে জুলাই, ২০২০ বিকাল ৪:৩২
ইসিয়াক বলেছেন:
বিলকিসের জন্য শুভকামনা।
২৫ শে জুলাই, ২০২০ বিকাল ৫:২৮
রাজীব নুর বলেছেন: ওকে।
১৩| ২৫ শে জুলাই, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৫৪
পুলক ঢালী বলেছেন: একটা শিশু জন্ম নেয় কয়েকটি মৌলিক অধিকার নিয়ে অন্ন,বস্ত্র,আশ্রয়,চিকিৎসা,শিক্ষা ইত্যাদি ।
এখন যে পিতা মাতা এগুলো পাওয়ার নিশ্চিত ব্যবস্থা না করে পঙ্গপালের মত অসংখ্য শিশুর জন্ম দিয়ে দেশকে জনসংখ্যার ভারে জর্জরিত করছে তাদেরকে ক্রস ফায়ারে দেওয়া হোক তাহলে আজাইররা সন্তান জন্ম দেওয়া বন্ধ হবে।
এত এনজিও এবং সরকারী সংস্থা জন্মনিয়ন্ত্রন বড়ি ও কনডম ব্যবহার করার জন্য গলা ফাটিয়ে ফেলছে কিন্তু তাতে কাজ হচ্ছেনা সুতরাং ক্রসফায়ারই আসল সমাধান।
২৫ শে জুলাই, ২০২০ রাত ৮:৪৯
রাজীব নুর বলেছেন: আসলে এর জন্য দায়ী ধর্ম। ধর্মের কারনে তারা কনডম ব্যবহার করে না।
১৪| ২৫ শে জুলাই, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:১৬
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
চাকরি করলে চাকরির নিয়োগপত্র থাকতে হবে।
জব এগ্রিমেন্ট থাকতে হবে।
এই সমস্ত ছাড়া চাকরি অর্থহীন।
বিলকিস এর কি নিয়োগপত্র ছিল ?
তার কি জব এগ্রিমেন্ট ছিল ?
তার মাসিক বেতন কত ছিল?
২৫ শে জুলাই, ২০২০ রাত ৮:৫০
রাজীব নুর বলেছেন: ভাই এই দেশে বহু প্রতিষ্ঠান নিয়োগপত্র দেয় না।
১৫| ২৫ শে জুলাই, ২০২০ রাত ৯:৩৪
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
লেখক বলেছেন: আসলে এর জন্য দায়ী ধর্ম। ধর্মের কারনে তারা কনডম ব্যবহার করে না।
খানসাব যে কোন ইস্যুতেই ধর্মকে টেনে আনবে্ই!!
ধর্মে বলা আছেঃ আল্লাহ বলেন: "যারা বিবাহে সামর্থ নয়,
তারা যেন সংযম অবলম্বন করে যে পর্যন্ত না আল্লাহ নিজ
অনুগ্রহে তাদেরকে অভাবমুক্ত করে দেন।" (সূরা নূর : আয়াত ৩২-৩৩)
২৫ শে জুলাই, ২০২০ রাত ১০:৪১
রাজীব নুর বলেছেন: জন্ম নিরোধক বড়ি, বা কনডম ধর্মে ব্যবহারে নিষেধ আছে।
১৬| ২৫ শে জুলাই, ২০২০ রাত ১০:১৭
শোভন শামস বলেছেন: নিরন্তর কথামালার বাঁধনে জড়ানো, প্রানবন্ত লিখা
শুভেচ্ছা
২৫ শে জুলাই, ২০২০ রাত ১০:৪১
রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ ভালো থাকুন।
১৭| ২৬ শে জুলাই, ২০২০ ভোর ৬:২৯
কলাবাগান১ বলেছেন: বানানো গল্প ভালই হয়েছে...হয়ত এটা আপনার ইচ্ছে করার তাই কল্পনায় করেছেন।
কয়দিন আগেই লিখেছেন তাইয়্যেবা আপনাদের বাসায় বেবী সিট হয়... এখন দুপুর বেলায় তাইয়্যেবা তার বাসায়???
১৮| ২৬ শে জুলাই, ২০২০ দুপুর ২:০৩
রাজীব নুর বলেছেন: তাইয়্যেবা আগে আমাদের বাসায় সারাদিন থাকতো। তখন ওর মা চাকরি করতো স্কুলে। করোণায় স্কুল বন্ধ। এখন তাইয়্যেবা তাদের বাসায় থাকে।
©somewhere in net ltd.
১| ২৫ শে জুলাই, ২০২০ রাত ৩:২৩
চাঁদগাজী বলেছেন:
বিলকিসের মা-বাবা দরিদ্র হওয়ায় বিলকিস "চাকরাণী" হয়ে গেলো; দরিদ্র মাতাপিতার ছেলেমেয়েকে পড়ালেখা করানোর দায়িত্ব কার?