নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।
একজন শিশুর জন্ম দেয়া কি খুব বেশি প্রয়োজন?
তাও আবার এই সমাজে? একটি ছেলে-মেয়ের বিয়ের পর আত্মীয় স্বজন সবাই বাচ্চার জন্য তাড়া দেয় কেন? বাচ্চা না নিলে সমস্যা কি? এই ঘুনে ধরা সমাজে একটি বাচ্চাকে পৃথিবীতে নিয়ে আসার কোনো মানে হয় না। এই সমাজ, দেশ এবং দেশের মানুষজন তো সহজ সরল সুন্দর নয়। এই সমাজের মানুষ গুলো বদ। বিরাট বদ। একটা শিশু জন্ম নেয়ার পর থেকে, বড় হতে থাকবে, আর পদে পদে ধাক্কা খাবে। স্কুলে ভর্তি হতে নানান সমস্যা, ভালো চিকিৎসা পাবে না, খাদ্যে সমস্যা, পাড়ায় মহল্লায় সব জাগায় সমস্যা। বড় হবে নেশা করবে, প্রেম করবে, পরকীয়া করবে, এমনকি ধর্ষনও করতে পারে। শিশুটি বড় হবে হাজার হাজার সমস্যার মধ্যে দিয়ে। শিশুটির পথ মসৃন হবে না। পথ থাকবে নানান কাটাময়। জটিল, কুটিল।
আমাদের দেশের বেশির ভাগ মানুষই দরিদ্র।
তারা জন্মের পর থেকেই অভাবে-অভাবে বড় হয়। লেখা-পড়া শিখে, কোনো একটা চাকরি করে, ডাল ভাত খেয়ে জীবন পার করে দেয়। শান্তি, আনন্দ আর বিনোদন বলতে তাদের কিছু থাকে না। ধনীর ঘরে শিশু জন্মালেও সমস্যা আছে। তারা বড় হয়ে ভালো মানুষ হবে না জঙ্গি হবে এর কোনো নিশ্চয়তা নেই। এই সমাজে কেউ ভালো থাকতে পারবে না। কেউ না। একজন বাবা মা এই সমাজে এই নিশ্চয়তা দিতে পারবে না- তার ছেলে বা মেয়ে বড় হয়ে দেশের সম্পদ হবে। অতীত ইতিহাস তো তাই বলে। তাই বিয়ে করুন ঠিক আছে। কিন্তু বাচ্চা নেওয়ার দরকার নাই। আপনি নিশ্চয়ই চান না আপনার সন্তান দেশের বোঝা হোক!
দিনদিন পৃথিবীটা নিষ্ঠুর হয়ে যাচ্ছে।
কাজেই আমি মনে করি, এই নিষ্ঠুর পৃথিবীতে একটা শিশুকে ছেড়ে দেওয়া আর আগুনে ফেলে দেয়া একই কথা। বর্তমান যুগে যেসব বাবা-মা এই ভয়ংকর পৃথিবীতে শিশু জন্ম দিচ্ছেন- তারা কি একবার ভাবেন, তাদের ভবিষ্যত প্রজন্মকে কোথায় রেখে যাচ্ছেন? আপনারা ছেলেমেয়ে জন্ম দিবেন, লেখাপড়া শেখাবেন, বিয়ে দেবেন- তারপর আপনারা বুড়ো বয়সে মরে যাবেন। আর যতদিন আপনার ছেলে-মেয়ে বেঁচে থাকবে তাদের যুদ্ধ করে যেতে হবে এই সমাজে শুধু বেঁচে থাকার জন্য। আমি বলব, কেন তাদের এই ভয়ঙ্কর দুনিয়াতে আনলেন? প্রতিটা মুহূর্ত যুদ্ধ করার জন্য, কষ্ট করার জন্য? সন্তানকে একশ' পারসেন্ট সব রকম সুযোগ সুবিধা দিতে না পারলে, তাকে দুনিয়ায় আনা দরকারটা কি?
জন্মের সময় আমাকে যদি বলা হতো-
'তুমি কি পৃথিবীতে যেতে চাও? আমি চিৎকার করে বলতাম- না, আমি যাব না। এখন আমাকে প্রতিটা দিন যুদ্ধ করতে হয়, আমি শান্তিতে নিঃশ্বাস নিতে পারি না। কোথাও শান্তি নেই। চারিদিকে মানুষ আর মানুষ নেই, তারা পশুর চেয়ে বেশি নিষ্ঠুর। তাদের মন মানসিকতা নোংরা। হিংসুটে, লোভী, চতুর আর কুটিল। যত খারাপ বিশেষণ আছে- সব বললেও কম বলা হবে। আমার বাবা-মা যদি আমাকে পৃথিবীতে না আনতো- তাহলে কি আমাকে প্রতিদিন যুদ্ধ করতে হতো? হিমসিম খেতে হতো? মিথ্যা বলতে হতো? প্রতারনার স্বীকার হতে হতো? কুকুরের মতো পরিশ্রম করতে হতো? অভাবে-অভাবে জীবন যাপন করতে হতো? টেনশনে থাকতে হতো? ভয়ে থাকতে হতো? কারো গোলাম হতে হতো? বেকার জীবন যাপন করতে হতো? খাওয়া-পড়ার চিন্তা করতে হতো? অসুখ বিসুখের চিন্তা করতে হতো? আরও কত কি...। দরিদ্র জনগোষ্ঠির জন্য পৃথিবী আনন্দময় জায়গা না।
ধরে নিলাম, আপনি বিয়ে করেছেন।
মোটামোটি একটি চাকরি করছেন। বিয়ের দুই বছর পর একটা মেয়ে শিশুর জন্ম দিলেন। এই মেয়েকে অনেক আদর ভালোবাসা দিয়ে বড় করছেন। লেখাপড়া শেখাচ্ছেন। মেয়েটি বড় হবে- আর আপনার টেনশন বাড়তে থাকবে। এই আধুনিক যুগেও একটি মেয়ে আজও কোথাও নিরাপদ না। যে কোনো সময় ধর্ষণ এর স্বীকার হতে পারে, অথবা এক বখাটের সঙ্গে পালিয়ে কোথাও চলে যেতে পারে অথবা কোনো চতুর লোভী ছেলে প্রেমের অভিনয় করে- পেটে বাচ্চা দিয়ে নিখোঁজ হয়ে গেল অথবা দিনের পর দিন মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে আপনার মেয়েকে ভোগ করতে থাকলো। তখন আপনার মান সম্মান কোথায় যাবে? এই যে তিলে তিলে কত কষ্ট করে, কত আদর ভালোবাসা দিয়ে সন্তানকে বড় করলেন- তার ফলাফলটা কি দাঁড়ালো শেষ পর্যন্ত? এখন হয়তো, আপনি বলবেন- আমার মন মানসিকতা খুব নিচু। ঠিক আছে, তাহলে ধরে নিলাম- আপনার মেয়ে ধর্ষণ এর স্বীকার হলো না বা কোনো ছেলে প্রেম ভালোবাসার সস্তা কথা বলে তাকে বিছানায় নিলো না, কিংবা কোনো বখাটের পাল্লায়ও পড়লো না। মেয়েকে বড় করলেন, লেখাপড়া শেখালেন- তারপর ভালো একটা ছেলের সাথে ধূমধাম করে বিয়ে দিয়ে দিলেন। বিয়ের পর যে সেই সংসার টিকবে তার নিশ্চয়তা কি? মেয়ের শ্বশুর বাড়ির লোকজন তার সাথে ভালো আচরণ করবে তার নিশ্চয়তা কি?
এবার ধরুন, আপনার একটি ছেলে সন্তান এর কথা।
অনেক আদর ভালোবাসা দিয়ে তাকে বড় করলেন, লেখাপড়া শেখালেন। এই ছেলে- জঙ্গি হবে না তার কি কোনো নিশ্চয়তা আছে? এই ছেলে কোনো প্রেমেকে ধর্ষণ করবে না- তার কি কোনো নিশ্চয়তা আছে? সে যে একজন ঘুসখোর হবে না, অসৎ হবে তার কি কোনো নিশ্চয়তা আছে? এই সমাজে কে ভালো? কার মধ্যে সততা আছে? মমতা আছে? আপনি হাজার চেষ্টা করলেন, আপনার ছেলে-মেয়েকে পৃথিবীর কোনো পাপ স্পর্শ করতে পারল না। কিন্তু আপনি কতদিন বাঁচবেন? এই সমাজ, এই দেশ দেশের মানুষ কাউকে ভালো থাকতে দিবে না। নো নেভার। কাজেই একজন সন্তানকে দুনিয়াতে আনার আগে একশ' বার ভাবুন। ভাবার দরকার আছে। আবেগে সিদ্ধান্ত নেবেন না। প্লীজ।
বাবা-মা তো ছেলেমেয়ে জন্ম দিয়ে বড় বড় স্বপ্ন দেখেন,
আমার ছেলে ডাক্তার হবে, আমার মেয়ে ইঞ্জিয়ার হবে। হেন হবে, তেন হবে। আসলে হয় ভন্ড, লুচ্চা আর বদমাশ। কিন্তু কোনো বাবা-মা'ই স্বীকার করবেন না। সব বাবা-মা'র চোখেই তার ছেলেমেয়ে খারাপ না। তাহলে এই সমাজের এত এত নষ্ট ছেলেমেয়ে গুলো কাদের? কয়জন বাবা-মা'র ছেলে ভালো হয়? স্কুলের বাচ্চা ছেলে-মেয়েরা প্রেম করে, গাঁজা খায়। রাত জেগে মোবাইলে কথা বলে, কোচিং এর কথা বলে বন্ধুর খালি ফ্লাটে গিয়ে সেক্স করে। আর যারা খুব সাহসী তারা ভিডিও করে রাখে। পরে ছেলেমেয়েদের মধ্যে বিরোধ তৈরি হলে, সেই সব ভিডিও দেয় নেটে ছেড়ে। এই সবই অহরহ ঘটছে এখন। প্রতিটা ঘরে ঘরে। সেক্সের ব্যাপারে ধনী গরীব বুড়ো জুয়ান কেউ পিছিয়ে নেই। সবাই এগিয়ে। আমি কি খুব বাজে বাজে কথা বলছি? আচ্ছা, এই সমাজে কি বাজে ঘটনা গুলো অহরহ ঘটছে না?
ভবিষ্যৎ প্রজন্ম বলে একটা সস্তা কথা আছে।
আরও হাস্যকর কথা হলো- পুরুষ চায় তার জিন টিকিয়ে রাখতে, তাই যত বেশি সেক্স তত সম্ভবনা.. তাই পুরুষের বীযে` মিলিয়ন মিলিয়ন সুক্রানু...। সারভাইভাল অফ ফিটেস্ট। আপনি হয়তো বলবেন, কিন্তু আমরা মানুষ। আমাদের আবেগ/চিন্তা/বিবেক আছে.... তাই সবাই পশুর মতন চিন্তা করেনা.... কিছু মানুষের মতন চিন্তা করে....
কাজেই আপনি বিয়ে করেছেন, এখানেই থামুন। ছেলেমেয়ে জন্ম দিবেন না। কি দরকার লুচ্চা, বদমাশ দূর্নীতিবাজ আর ধর্ষক জন্ম দিয়ে। হুম... যদি আপনার ছেলেমেয়ে আইনস্টাইন হয়, মদার তেরেসা হয়, রবীদ্রনাথ হয়, বঙ্গবন্ধু হয়, স্টিভ জবস হয়, টমাস আলভা এডিসন হয়, উইলিয়াম শেক্সপিয়ার হয়, অ্যারিস্টটল হয়, স্বামী বিবেকানন্দ হয়, রবার্ট ফ্রস্ট হয় তাহলে জন্ম দেন। প্রতি বছর জন্ম দেন। কোনো সমস্যা নাই।
হয়তো অনেকে বলবেন- আমার ছেলে মেয়ে চোর, ধর্ষনকারী, দূরনীতিবাজ হবে না। তারা ভালো হবে। আচ্ছা, এই সমাজে এখন যারা চোর, দূর্নীতিবাজ, ছিনতাইকারী বা ধর্ষনকারী তাদেরও তো বাপ মা আছে। তাদের বাপ মা-ও তো চেয়েছিলেন- তাদের সন্তান ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার আর পাইলট হবে। কাজেই ভবিষ্যৎ কেউ বলতে পারে না। আপনি চাইলেই তো আপনার ছেলেমেয়ে ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার হয়ে যাবে না। ভালো মানুষ হয়ে যাবে না। সব বাবা মা তো সন্তানের ভালোই আশা করে। ভালোটাই চায়। কিন্তু শেষমেষ কি হয়? যারা এই সমাজে খারাপ- তাদের বাপ মা কি কখনও চেয়েছিলো তারা খারাপ হোক? কোনো বাপ মা'ই চায় না। তাই দয়া করে সন্তান জন্ম দেওয়ার আগে একবার ভাবভুন। হাজার বার ভাবুন।
১৮ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ১০:৩১
রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ চিন্তিত মতামতের জন্য।
২| ১৮ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ৯:০৯
নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: হতাশায় ভরা একটা গল্প । জীবনের আরেক নাম সংগ্রাম।আশার গল্প শুনান
১৮ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ১০:৩২
রাজীব নুর বলেছেন: আমি তো কোনো গল্প লিখি নাই।
৩| ১৮ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ৯:২৩
কথক আরমান বলেছেন: কমপক্ষে ৫ কোটি টাকার মালিক না হলে বাচ্চা নেওয়া নিসিদ্ধ করা উচিৎ, তবে নারী পুরুষ সহাবস্তান করতে পারবে তাঁদে র সন্তান উৎপাদন ক্ষমতা নষ্ট করে দিতে হবে এই ব্যবস্থা ত্রিশ বছর ধরে চালাতে হবে, টাকার অভাবে অনেক সৃজনশীল মানুষকে রাস্তায় ঘুরতে হচ্ছে, অনেক প্রতিভাবান মানুষের প্রতিভা অঙ্কুরে বিনষ্ট হচ্ছে।
১৮ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ১০:৩৩
রাজীব নুর বলেছেন: সত্য বলেছেন।
৪| ১৮ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ১১:৪০
চাঁদগাজী বলেছেন:
বাংগালী জাতি নিজেদের দেশ পরিচালনা করার মতো পজিশনে নেই।
১৯ শে আগস্ট, ২০২০ রাত ৩:০৮
রাজীব নুর বলেছেন: তারপরও তারাই দেশ চালাচ্ছেন।
৫| ১৯ শে আগস্ট, ২০২০ রাত ১২:০০
নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: গল্প না হোক প্রবন্ধ লিখেছেন।সেখানেও হতাশার কথাই শুনিয়েছেন।সকলকেই উচ্চ শিক্ষিত হতে হবে এমন কোন কথা নেই।সকলকেই লাখ লাখ টাকার মালিক হবে এমন চিন্তা মানুষের মত মানুষ হবার পথে বাঁধা।বেঁচে থাকার জন্য কোন একটা কাজ করতে হবে,সেটা যে কোন কাজই হোক না কেন।
একথা ঠিক যে পরিকল্পনা করেই বিয়ে শাদি বাচ্চা কাচ্চা নেয়া উচিত।সবার আগে যেটা করা দরকার সামাজিক পরিবর্তন,অর্থনৈতিক বৈষম্য দুর করা,মানুষকে অর্থনৈতিক বৈষম্যের বিষয়ে সচেতন করা।
১৯ শে আগস্ট, ২০২০ রাত ৩:২১
রাজীব নুর বলেছেন: খুব সুন্দর বলেছেন।
৬| ১৯ শে আগস্ট, ২০২০ সকাল ১০:০৭
কামরুননাহার কলি বলেছেন: বাহ খুব ভালো লেখেছেন তো।
১৯ শে আগস্ট, ২০২০ দুপুর ১:০৯
রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ। ভালো থাকুন।
৭| ১৯ শে আগস্ট, ২০২০ দুপুর ১২:২৯
ইসিয়াক বলেছেন: আপনার পোস্টগুলো অন্যরকম হচ্ছে। সময় দিচ্ছেন বোঝা যাচ্ছে। আরো ভালো লিখুন শুভকামনা।
১৯ শে আগস্ট, ২০২০ দুপুর ১:০৯
রাজীব নুর বলেছেন: শুকরিয়া। আপনিও ভালো থাকুন।
৮| ১৯ শে আগস্ট, ২০২০ বিকাল ৩:৪৪
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: ঠিক আছে।
১৯ শে আগস্ট, ২০২০ রাত ৮:০১
রাজীব নুর বলেছেন: শুকরিয়া বড় ভাই।
©somewhere in net ltd.
১| ১৮ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ৯:০৮
ঘরহীন বলেছেন: সুচিন্তিত ব্লগ। এগুলো নিয়ে অনেক ভাবি, সমাধান দেখি না। সমাজের চাপে পড়ে সন্তান নেয়ার উদাহরণ চারপাশে। মেয়ে সন্তান বা ছেলে সন্তান বখে যাওয়া, হা-হুতাশ তাও দেখি। আবার দেখি একজন সুসন্তান কিভাবে একটা পরিবারকে দাড় করিয়ে দেয়। খুবই জটিল একটা ব্যাপার আসলে।