নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।
একটা খুনের ঘটনার সাথে জড়িয়ে গেলাম।
পুলিশের নজর আমার দিকে। অথচ আমি জীবনে কোনোদিন একটা মূরগীও জবো করিনি। যাকে নির্মম ভাবে বটি দিয়ে কোপানো হয়েছে। লোহার রড দিয়ে মাথায় আঘাত করা হয়েছে। তার নাম শাহনাজ। বয়স ৩৫ বছর। শাহজানের এক মেয়ে আছে। ৮ বছর বয়স। মেয়ের নাম লিলি। লিলি স্কুলে পড়ে। আমি লিলিকে পড়াই। লিলির মাকে আমি আপা ডাকি। শাহনাজ আপা সহজ সরল ভালো মানুষ। আমাকে ছোট ভাইয়ের মতো স্নেহ করেন। শাহনাজ আপার স্বামী মারা গেছেন পাচ বছর আগে। তার গলায় ক্যান্সার হয়েছিলো। এরপর শাহনাজ আপা আর বিয়ে করেননি। যদিও তার আত্মীয়স্বজনরা চেয়েছিলেন শাহনাজ আপা বিয়ে করুক।
আমি লিলিকে পড়াই দুই বছর হয়ে গেছে।
লিলি বুদ্ধিমতি মেয়ে। সব বিষয়েই লিলি ভালো। লিলি দেখতে ভীষন মিষ্টি। পড়া শেষ করে লিলির সাথে আমি প্রতিদিন দশ মিনিট গল্প করি। মেয়েটা আমার গল্প শুনে হিহি করে হাসে। বড় ভালো লাগে মেয়েটার হাসি। লিলির মা প্রতিদিন আমাকে নাস্তা খেতে দেয়। আমি মানা করলেও শুনেন না। কোনোদিন স্যান্ডউইচ, কোনোদিন নুডুলস, কোনোদিন ঘরে বানানো সমুচা। সব শেষে এক কাপ চা। চা আমাকে একা খেতে হয় না। শাহনাজ আপাও আমার সাথে বসে এক কাপ চা খান। তখন তার সাথে আমার অনেক বিষয় নিয়ে গল্প হয়। অনেকবার আমার মনে হয়েছে, শাহনাজ আপার মতো যদি সত্যিই আমার একটা বড় বোন থাকতো!
ঘটনা ঘটলো তৃতীয় রোজায়।
ইফতারীর সময় শাহনাজ আপা একা বাসায় ছিলেন। লিলি গিয়েছে তার মামার বাসায়। রাতে খেয়ে ফিরবে। তার মামা তাকে বাসায় পৌঁছে দিয়ে যাবেন। হঠাত লিলি আপা আমাকে ফোন দিলেন। বললেন, আমার খুব বিপদ, প্লীজ আমাকে বাঁচাও। ব্যস এরপর শাহনাজ আপার মোবাইল অফ। আমি তাহাহুড়া করে মহাখালি থেকে ইন্দিরা রোড গেলাম। ইফতারীর সময় বলে রাস্তা ফাঁকা ছিলো। তবুও আমার আধা ঘণ্টা সময় লাগলো। আমার খুব টেনশন হচ্ছিলো। শাহনাজ আপার বিপদ। আমার বিপদে আপদে আপা সব সময় আমাকে সাহায্য করেছেন। জগা বাবুতে (জগন্নাথ) ভর্তির সময় আমার কাছে টাকা ছিলো না। আপা টাকা দিয়েছেন।
কলিংবেল বাজাচ্ছি। কিন্তু কেউ দরজা খুলছে না।
দশ মিনিট হয়ে গেছে। খেয়াল করে দেখলাম, দরজার নীচ দিয়ে রক্ত এসে সিড়ি ভেসে যাচ্ছে। তখন আমি দরজার লক ভেঙ্গে ঘরে প্রবেশ করি। হায় আল্লাহ! হায় কপাল! এ আমি কি দেখলাম! ঘরের পুরো মেঝে রক্ত দিয়ে ভেসে গেছে। আপা ফ্লোরে পড়ে আছেন। তার জ্ঞান নেই। নাকি মরে গেছেন? তার কপালে ফেটে গেছে। সামনে বটি পড়ে আছে। বটি দিয়ে আপাকে কোপানো হয়েছে। আপার পুরো মুখ ফুলে আছে। মুখ এতটাই ফুলেছে যে চোখ দেখা যাচ্ছে না। ভয়াবহ দৃশ্য। এরকম দৃশ্য সহ্য করার ক্ষমতা আমার নেই। আমার হাত পা কাঁপছে! আমি কি করবো বুঝতে পারছি না। আমার মাথা কাজ করছে না। আমার মাথা ঘুরাচ্ছে। বমি বমি পাচ্ছে।
এম্বুলেন্স এলো। আপাকে হাসপাতালে নেওয়া হলো।
পুলিশ আমাকে চুলের মুঠি ধরে পাচ কেজি ওজের এক থাপ্পড় দিলো। আমি ছিটকে পড়লাম তিন হাত দূরে। এদিকে এই ঘটনা এলাকাবাসী জেনে ফেলেছে। অসংখ্য লোকজন ভিড় করে আছে। পুলিশ আমাকে মারতে মারতে গাড়িতে তুললো। ভিড় করে থাকা জনতা বলল, হারামজাদাকে আমাদের হাতে তুলে দেন। একজন বলল, শাহনাজ আপার সাথে নাকি আমার অবৈধ সম্পর্ক। একজন বলল, টাকা, গহনার জন্য আমি শাহনাজ আপাকে খুন করেছি। পুলিশ আমাকে তেজগাঁও থানায় নিয়ে গেলো। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বলল, হারামজাদা সব কিছু ভালোয় ভালোয় স্বীকার কর। নইলে ডলা দিয়ে সব স্বীকার করাবো। আসামীর কাছ থেকে কি করে কথা বের করতে হয়, আমরা জানি। খুব ভালো করেই জানি।
থানা থেকে আগামীকাল আমাকে কারাগারে পাঠানো হবে।
আসামীদের ২৪ ঘন্টার বেশি থানায় রাখার নিয়ম নেই। বাংলাদেশের পুলিশের উপর ভরসা নেই। ওরা ভালো লোকদের ধরে সাজা দিয়ে কারাগারে পাঠিয়ে দেয়। কারাগারে যারা আছে, এদের বেশির ভাগই দরিদ্র কয়েদী। টাকা নেই বলে আজ তারা কারাগারে। ধরনীরা হাজার অপরাধ করেও টাকার জোরে বেচে যায়। পুলিশের ধারনা টাকার জন্য আমি শাহনাজ আপাকে খুন করেছি। বাংলাদেশের পুলিশ কখনও সঠিক ধারনা করতে পারে না। লকাপের ভেতর আমার ঘুম আসে না। বাজে গন্ধ। উন্মুক্ত টয়লেট। প্রচুর মশা ও মাছি। সহ্য হচ্ছে না আমার। ইচ্ছা করছে গলায় দড়ি দিয়ে মরে যাই। আমি লিলির কথা ভাবতে থাকলাম। লিলি আমার সবচেয়ে প্রিয় ছাত্রী। বড় ভালো মেয়ে। লিলি এখন কি করছে? লিলির বাবা আগেই মারা গেছেন। এখন মা নেই। মেয়েটা আনন্দ নিয়ে বড় হতে পারবে না।
ডাক্তারেরা অসাধ্য সাধন করেছেন।
তারা শাহনাজকে বাঁচিয়ে তুলেছেন। পুলিশ শাহনাজের জবানবন্ধী নিয়েছেন। 'শাহনাজ স্পষ্ট করেই প্রথমেই বলেছেন, আমাকে লিলির মাস্টার হত্যা করতে চেষ্টা করে নাই। আমাকে হত্যা করার চেষ্টা করেছেন জেরিন। জেনির আমাদের বিল্ডিং এ থাকে। পাচ তলায়। নয় বছর ধরেই সে থাকে। তার ধারনা তার স্বামীর সাথে আমার অবৈধ সম্পর্ক। আমরা পরকীয়া করি। এই রাগ থেকে সে আমাকে হত্যা করতে চেয়েছিলো। কিন্তু আমি বেচে গেলাম'। আল্লাহর কাছে লাখো শুকরিয়া। এদিকে আমি ছাড়া পেয়েছি। পুলিশ আমাকে ছেড়ে দিয়েছে। তবে সাত দিন আমাকে হাজতে থাকতে হয়েছে। জেরিন যে এই কাজ করবে কেউ ভাবতে পারে নাই। জেরিনকে আমিও চিনি। সুন্দর হাসিখুশি মহিলা। জেরিনের সাথে শাহনাজ আপার বন্ধুর মতো সম্পর্ক। আসলেই কি জেরিনের স্বামীর সাথে শাহনাজ আপার সম্পর্ক আছে?
২৩ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৩:৩৫
রাজীব নুর বলেছেন: না গল্প নয়।
বাস্তব গল্প লিখেছি।
২| ২৩ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ২:৫৯
রাশিদুল ইসলাম লাবলু বলেছেন: লেখাটা সুন্দর। সত্যিই কি আপনি লিখেছেন?
২৩ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৩:৩৫
রাজীব নুর বলেছেন: জ্বী আমিই লিখেছি।
৩| ২৩ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৩:৪২
বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: দূষিত সমাজে সব কিছুই সম্ভব। এমনকি আপনার সাথেও শাহনাজের প্রেম সম্ভব...
২৩ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:২৩
রাজীব নুর বলেছেন: না সম্ভব না।
নো নেভার।
৪| ২৩ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:০৭
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: পচা
২৩ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:০৪
রাজীব নুর বলেছেন: আমি আপনার সাথে একমত।
৫| ২৩ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৩১
সোনাগাজী বলেছেন:
আপনার পরিবার কেমন আছে?
২৩ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৪৮
রাজীব নুর বলেছেন: ভালো আছে। সবাই ভালো আছে।
ফারাজা খুব বেশি পাকনা হয়েছে। রাত বারোটায় বলে, বাবা আমাকে একটা ডিম সিদ্ধ করে দাও তো, প্লীজ।
৬| ২৩ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:৪২
কামাল১৮ বলেছেন: অনেক আগে একবার পড়েছিলাম মনে হয়।
২৫ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১২:০২
রাজীব নুর বলেছেন: না এটা পড়েন না।
এটা নতুন লেখা। এবং কাহিনী সত্য।
৭| ২৩ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:৫৮
এম ডি মুসা বলেছেন: খু্বই মারাত্নক ঘটনা
২৫ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১২:০৯
রাজীব নুর বলেছেন: সত্য ঘটনা।
শাহানা আপা এখনও হাসপাতালে আছেন।
৮| ২৪ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:০১
BM Khalid Hasan বলেছেন: পড়তে গিয়ে ঘটনা বাস্তব বাস্তব লাগছে কেন বুঝলাম না! এটা কি আপনার লাইফে ঘটে যাওয়া ইনসিডেন্ট নাকি? বিশেষ করে এলাকার বর্ণনা যেভাবে দিসেন তাতে মনে হয় আসলেই নিজের সাথে ঘটেছে!
২৫ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১২:১০
রাজীব নুর বলেছেন: ভাইরে সত্য ঘটনা।
স্থান, সময়, ভিকটিম সব সত্য।
৯| ২৪ শে মার্চ, ২০২৪ ভোর ৫:০৪
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
আমি নিশ্চিত যে খুব শীঘ্রই আপনার পরিবার হবে বোরখা পরিবার ।
আর আপনি হবেন বিরাট এক হুজুর।
তার লক্ষণ এখনই খুবই সুস্পষ্ট।
আফসোস!
২৫ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১২:১৬
রাজীব নুর বলেছেন: পরিবারের কথা জানি না। আমি হুজুর হবো না। নো নেভার।
১০| ২৪ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ১১:৪১
কাছের-মানুষ বলেছেন: যাক অবশেষে আপনি ছাড়া পেয়েছেন জেনে হাফ ছেড়ে বাঁচলাম!
২৫ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১২:১৭
রাজীব নুর বলেছেন: না এটা আমার গল্প না।
১১| ২৪ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৫৩
রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ) বলেছেন: শাহানাজ আপা বেঁচে গিয়ে আপনাকেও বাঁচিয়ে দিলো। সে মরে গেলে, আপনিও ফেঁসে যেতেন।
গল্পের বর্ণনা সুন্দর হয়েছে।
২৫ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১২:১৭
রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ রিয়াদ।
ভালো থাকুন। সুস্থ থাকুন।
১২| ২৪ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১০:৫০
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
পর পরবর্তী পর্ব কবে দিচ্ছেন?
২৫ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৬
রাজীব নুর বলেছেন: না আর কোনো পর্ব নাই।
১৩| ২৫ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১২:১৯
BM Khalid Hasan বলেছেন: আমার কাছে ইন্টারেস্টিং লেগেছে জেনির কাজ কারবার। ওর হাসব্যান্ড পরকীয়া করে ওকে ঠকিয়েছে, হিসেবে তো রেগে হাসব্যান্ডকে কোপানো উচিৎ, তাইনা? শাহনাজকে মারলে ওর হাসব্যান্ড ভালো হয়ে যেত? বাংলাদেশের একটা সিংহভাগ মানুষ এইরকম থিংকিং নিয়ে চলে।
২৫ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৮
রাজীব নুর বলেছেন: অর্থ্যাত পরকীয়া একটা মানুষ সর্ব্বপরি একতা পরিবারকে ধ্বংস করে দেয়।
©somewhere in net ltd.
১| ২৩ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ২:২৮
মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন:
- অতি নিম্ন মানের রহস্য গল্প লেখা হয়েছে।