![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি ডেনমার্কে প্রবাসী বাণিজ্যিক পরামর্শক। লেখালেখি আমার সবচেয়ে বড় শখ. এক সময় দৈনিক বাংলা ও সাপ্তাহিক বিচিত্রায় লিখতাম। এখন আবার শুরু করার চেষ্টা করছি। আমার হৃদয়ের কাছাকাছি যেকোনো বিষয়ে লিখি। এখানে লেখাগুলো বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে
আমাদের ব্যাক্তিত্ব অধিকাংশ ক্ষেত্রে বিভাজিত। আমরা দুইটি জীবন যাপন করি -একটি হলো যেটি নিজে যাপন করতে চাই আর আরেকটি যা বাস্তবে যাপন করি.
আমি নিজেও জীবনের বেশীর ভাগ সময় নিজের মতো করে যাপন করিনি।.অনেকের মতো আমার ভুল ধারণা ছিল, আমি যেভাবে চাই, তেমন ভাবে হতো চলা যায় না, অন্যদের মানিয়ে নিয়েই চলতে হয়. এটাই সমাজের নিয়ম।
দেরীতে হলেও আমার উপলব্ধি হয়েছে, আমার জীবনের নিয়ন্ত্রণ ও কতৃত্ব আমাকেই নিতে হবে. আমাকে আমার অনুভব ও অনুভূতিগুলি আমার মতো করেই লালন করতে হবে । আমি আমার মতো. অন্যেরা অন্যদের মতো. আমি কিভাবে আমার অমিকে লালন করবো, তা হবে সম্পূর্ণ আমার সিদ্ধান্ত।
আমি চিরদিন ভীত ছিলাম, আমার আমিত্বকে প্রতিষ্ঠিত করতে ভয় পেতাম। ভাবতাম আমাকে অন্যদের খুশী করে সামাজিক জীব হিসাবে বাঁচতে হবে. সব সময় সমাজের রীতিনীতি মেনে চলতে হবে.
আমার মনে হতো আমি আমার মতো থাকলে আমাকে কেউ চাইবে না, গ্রহণযোগ্যতার জন্য আমাকে অন্যদের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে হবে.
শুধু আমার একার নয়, অনেকেই যেভাবে বাঁচে, সেভাবে বাঁচতে চায় না. এই অনিচ্ছাকৃত বাঁচার প্রচেষ্টায় মানুষ পাওয়ার চেয়ে হারায় বেশী।
আপনাকে নিজের কাছে নিজে প্রশ্ন করতে হবে : আপনি কি চান? কিভাবে বাঁচতে চান? কিভাবে সুখী হন? আপনি কোথায় যেতে চান? কিভাবে যেতে চান?
অন্যেরা কিভাবে কি করতে চায়, তা আপনার বিবেচ্য বিষয় না. আপনি অনন্য। আপনি শুধু আপনার মতো, সে শুধু তার মতো, আমি আমার মতো. আপনি যেমন সেভাবে আপনি গর্বিত হওয়ার মানসিকতা থাকতে হবে. আমি নিজেও আমার আমিত্ব নিয়ে গর্বিত। আমি আমার মতো থাকবো, আপনি আপনার মতো. কেউ কারো সাথে মানিয়ে নেবে না, মানিয়ে নেওয়ার প্রয়োজন নেই.
পৃথিবীতে অনেক পেশার, অনেক ব্যাক্তিত্বের, অনেক চরিত্রের মানুষ রয়েছে। বিভিন্ন ধরণের মানুষ আছে বলেই পৃথিবীটা বৈচিত্রপূর্ণ। লাল বেগুনীর মতো নয়, নীল হলুদের মতো নয়. সব সব রং মিলেই রংধনু হয়.
নিজের জীবন নিজের নকশায় সাজাতে হয়. জীবনটা নিজের ঘরের মতো, তাতে নিজের পছন্দের জিনিসগুলো জায়গা পায়। যে ফুল পছন্দের সেই ফুল ফুলদানীতে থাকবে, যে পোষাক পছন্দ সেগুলো আলনায় থাকবে, যে মানুষ পছন্দ সেই জীবনসঙ্গী/সঙ্গিনী হবে.
জীবনটা একই রকম নিজের পছন্দ অনুযায়ী, মূল্যবোধ অনুযায়ী চলবে। তবে নিজের মূল্যবোধ মানবিক মূল্যবোধের সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে হবে. মানুষ বিভিন্ন ভাবে উচ্ছাস প্রকাশ করে-কেউ জোরে হাসে, কেউ নাচে। মানুষ দুঃখ প্রকাশ করে বিভিন্ন ভাবে-কেউ জোরে কাঁদে, কেউ নীরব গম্ভীর হয়ে যায়. যার যেভাবে স্বতঃস্ফূর্ত আবেগ হাসে, সেটাই থাকবে।
এটা অহেতুক ভয় যে, অন্যেরা আমার আবেগ প্রকাশ করার ধরণ দেখে নাখোশ হবে. আসলে কিন্তু উল্টো হয়. সিনেমার বিভিন্ন চরিত্র দেখে মানুষ উল্লসিত হয়, সবাই একই রকম হলে একঘেয়ে লাগে।
আবেগ, অনুভূতি, সুখ, দুঃখ,ভালোবাসা নিয়েই মানুষের সম্পূর্ণতা। মানুষ যন্ত্রচালিত হতে পারে না. সামাজিকভাবে বাঁচার জন্য অনুভূতিহীন রোবট হতে পারে না. যন্ত্রের মতো অনুকরণে করে বাঁচতে গেলে, মানুষের জীবনটাই বোঝা হয়ে ওঠে. নিজের কোনো আলাদা বৈশিষ্ট থাকে না.
মানুষ নিজের মতো করে বাঁচতে না পারলে সুখী হতে পারে না. এই কারণে বিখ্যাত তারকারা সবচেয়ে অসুখী। তারকাদের দর্শকদের পছন্দের জীবন যাপন করতে হয়, দর্শক যাতে হাততালি দেয় তাই করতে হয়.
অন্যের চুল মাথায় দিয়ে, অন্যের নির্দেশনায় চলে তারকাদের জীবন দুর্বিষহ হয়ে ওঠে. অনেকে মাদকাসক্ত হয়, কেউ বা আত্মহত্যাও করে.
নিজের জীবন যাপিত হতে হবে নিজের নির্দেশনায়, নিজের পরিচালনায়,নিজের প্রশাসনে। এতেই আত্মতুষ্টি, এতেই সুখ. নিজের মতো জীবন যাপন সব সময় সহজ নয়, তবে চলার স্বাধীনতা আছে.
জীবনের লক্ষ্যগুলো নিজের ঠিক করতে হবে, পথও নিজের হতে হবে. সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হতে হলে গুগলের সুন্দর পেচাই হতে হবে না, ধনী হতে আমাজানের জেফ বেজোস হতে হবে না, অমিতাভের মতো অভিনয় করে অভিনেতা হতে হবে, গায়ক হতে মাইকেল জ্যাকসনের মতো গান গাইতে হবে না. যেটাকে বলা হয় প্রোগ্রামের ভাষায় বলা হয় কনফিগারেশন, তা জীবনের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। নিজের প্রয়োজন ও যোগ্যতার উপর নিজের পথ ও পদ্ধতি নির্ভর করে. বিল গেটস এর মতো করে করতে গেলে হোঁচট খেতে হবে.
নিজের মতো চলতে হলে আত্মবিশ্বাস ও নিজের প্রতি আস্থা থাকতে হয়. না থাকলে তৈরী করতে হয়. তাতেই আসে সফলতা ও শান্তি।
©somewhere in net ltd.
১|
২৬ শে আগস্ট, ২০১৮ রাত ৩:২৬
ওমেরা বলেছেন: ভাল লাগল । ধন্যবাদ।