![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
If u want to know anything about me, just ask।
গণমাধ্যম কর্মী ফাতেমা আবেদীন। গত ২৮ দিন যাবত একটানা জ্বরে ভুগছেন। জ্বরের সাথে আছে তীব্র অস্থিসন্ধি ব্যাথা (Joint pain)। তিনি বলেন, জ্বর কমে গেলেও ব্যথা রয়ে গেছে। প্রচন্ড ব্যথা শরীর অবশ করে দেয়। শরীরের প্রতিটা জয়েন্টে ও মাংসপেশীতে ব্যথা অনুভব করি।একটু পর পরই তৃষ্ণা অনুভব করি। তিনি আরো জানান, আমার হাতে ব্যথা এত বেশি ছিল যে হাত দিয়ে কিছু ধরতে গেলেও প্রচন্ড ব্যথা পাই। হাত মুষ্টিবদ্ধ করতে পারি না। পেইন কিলার খেলে সাময়িকভাবে ব্যথা কমলেও আবার ফিরে আসে বলে জানালেন ফাতেমা।
সাম্প্রতিক সময়ে ফাতেমার মত অনেকেই ভুগছেন চিকুনগুনিয়া নামক ভাইরাস জ্বরে। চিকুনগুনিয়া নামটি তাই অনেকের কাছেই পরিচিত। এটি মূলত একটি ভাইরাস রোগ। ডেঙ্গুর মত এটিও এডিস মশার কামড়ে ছড়ায়। অর্থাৎ এডিস মশাই এর বাহক। জুন জুলাই মাসে এই ভাইরাসের প্রদুর্ভাব দেখা দিলেও এবার বেশ আগে থেকেই এর প্রকোপ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। গত কিছুদিন ধরেই ঢাকায় চিকুনগুনিয়া জ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে।চিকিতসকেরা ্বলছেন, গত দুই মাস ধরে এই রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা অনেক বেড়েছে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ্ড এ বি এম আবদুল্লাহ বলেন, সঠিক পরিসংখ্যান না থাকলেও এ বছর ডেঙ্গুর তুলনায় চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যাই তারা বেশি পাচ্ছেন। গত কয়েক মাসে কয়েক হাজার এরকম রোগী কেবলমাত্র তার হাতেই এসেছে বলে তিনি জানান।
ঢাকার ধানমন্ডি, কলাবাগান, গ্রীনরোড, হাতিরপুল, লালমাটিয়া, মালিবাগ ইত্যাদি এলাকায় চিকুনগুনিয়া আক্রান্ত মানুষ বেশি বলে তিনি ধারণা করছন।
চিকুনগুনিয়া সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আমাদের সকলেরই জানা দরকার। আসুন জেনে নেই সেগুলো,
১। চিকুনগুনিয়ার প্রথম লক্ষণই হল উচ্চমাত্রায় জ্বর আসা। আবার জ্বর সহজে ছাড়তেও চায় না। সাধারণত জ্বরের প্রচলিত অষুধে কোন কাজ হয় না। জ্বর আনেকটা ডেঙ্গু জ্বরের মতই। দেহের তাপমাত্রা ১০৪ ডিগ্রি পর্যন্তও উঠতে পারে। তবে এ জ্বরে কাপুনি বা ঘাম হয় না।প্রাথমিক পর্যায়ে ২ থেকে ৫ দিনে জ্বর কিছুটা কমে। এরকম লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত চিকিতসক দেখান উচিত।
২। জ্বরের ফলে অস্থিসন্ধিতে ব্যথার পাশাপাশি মাংসপেশিতেও ব্যথা দেখা যায়। অনেক সময় ব্যথার কারণে পেশি এতটাই শক্ত হয়ে যায় যে চলাফেরায় সমস্যা হয় এবং ব্যথা সহ্য করা আসম্ভব হয়ে পড়ে। ব্যথার সাথে সাথে অস্থিসন্ধি ফুলেও যেতে পারে যা স্বাভাবিক কাজকর্মে বাধা সৃষ্টি করে।
৩।রোগের শুরুতে ফুসকুড়ি দেখা দিতে পারে। আবার অনেক ক্ষেত্রে রোগ শুরু হওয়ার ২,৩ দিন পর জ্বর কমলে ফুসকুড়ির আবির্ভাব হতে পারে।
৪। গায়ে লাল লাল র্যাশ দেখা দিতে পারে।
৫। কনজাংটিভাইটিস হতে পারে। সাধারণভাবে আমরা যেটাকে "চোখ ঊঠা" রোগ বলি।
৬। চিকুনগুনিয়া জ্বরে অসহ্য মাথা ব্যথা হতে পারে। এই জ্বরে দীর্ঘ সময় ধরে মাথাব্যথার প্রভাব থাকতে পারে যা ঘুমে ব্যঘাত ঘটায়।
৭।শরীর স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক দুর্বল হয়ে যায়। দুর্বলতার দরুণ বমিভাব বা বমি হতে পারে।
৮। বয়স্ক মানুষের ক্ষেত্রে ব্যথা ও জ্বর প্রায় ২ মাস পর্যন্ত থাকতে পারে।
কখন হাসপাতালে আসতে হবে?
#রক্তচাপ কমে গেলে
#প্রস্রাব কম হলে
#রক্তপাত হলে
#অষুধে যদি ব্যথা না কমে
#রোগী, বৃদ্ধ, শিশু অথবা গর্ভবতী হলে
চিকুনগুনিয়া হলে করণীয় কি?
প্রথমত, ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া কোন অষুধ সেবন করা যাবে না।
দ্বিতীয়ত, প্রচুর পরিমাণে পানি গ্রহণ করতে হবে যেমন, ডাবের পানি, স্যালাইন। অথবা পানির সাথে সামান্য লবণ মিশিয়েও খাওয়া যেতে পারে।
গিড়ার ব্যথার জন্য বরফ লাগানো যেতে পারে। গরম সেক দেওয়া যাবে না।
জ্বরের জন্য প্যারাসিটামল খাওয়া যেতে পারে। তবে ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া এন্টিবায়োটিক বা ব্যথার অষুধ খাওয়া যাবে না।
প্রতিরোধঃ
প্রতিরোধের প্রধান উপায় মশা নিয়ন্ত্রণ ও মশারী ব্যবহার করা। এজন্য,
১। মশার প্রজনন স্থল নষ্ট করতে হবে
২। মশা নিধনকারী স্প্রে বা অষূধ ব্যবহার করতে হবে
৩। দিনের বেলায় ঘুমালে মশারী ব্যবহার করতে হবে
সর্বোপরি মনে রাখতে হবে অন্যান্য রোগের মতই এটিও একটি রোগ। এই রোগে মৃত্যুর হার প্রায় শুন্য। সুতরাং ভয় পাওয়ার কিছু নেই। সকলের জন্য শুভকামনা।
©somewhere in net ltd.