![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
If u want to know anything about me, just ask।
শুরু হয়ে গেছে থার্টি ফার্স্ট নাইট উদযাপন। তীব্র শীতকে উপেক্ষা করে আজ রাতে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মত এদেশের যুবক যুবতীরা নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে ইংরেজি নববর্ষের আগমনকে শুভেচ্ছা জানাবে। প্রতিবছরের মত সেসব আয়োজনে থাকবে নারী-পুরুষের অবাধ মেলামেশা, মদ্যপান, নাচানাচি, পটকা ফোটানোসহ নানা অশ্লীল ও অনৈতিক কর্মকাণ্ডের ছড়াছড়ি। আর প্রতিবছরের মত এসবের মাঝে নিশ্চয়ই কোন না কোন নারী ধর্ষিত হবে, নির্যাতিত হবে।
আজ থেকে বিশ বছর আগেও কিন্তু আমাদের যুব সমাজ এত ঘটা করে ইংরেজি নববর্ষ বা এ জাতীয় (ভালবাসা দিবস, পহেলা বৈশাখ ইত্যাদি) উৎসবগুলো পালন করত না। কিন্তু মিডিয়ার কল্যাণে এই সকল উৎসবগুলো এতবেশি পচার ও প্রসার লাভ করেছে যে, শুধু যুব সম্প্রদায় নয় বরং সব বয়সীদের নিকট এসব উৎসবের জনপ্রিয়তা জ্যামিতিক হারে বেড়ে চলছে। তাছাড়া কোন ব্যক্তি যাতে এসব উৎসব পালনে অংশ নিতে ভুলে না যায় সেজন্য এসকল দিনগুলো আসার বেশ কিছুদিন আগে থেকেই মিডিয়াতে (রেডিও, টিভি, পত্রিকা ইত্যাদি)শুরু হয়ে যায় প্রচারণা। কিভাবে নববর্ষ উদযাপন করবেন, কোর রংয়ের ড্রেস পড়বেন, প্রেমিক বা প্রেমিকাকে কি উপহার দিবেন ইত্যাদি নানা বিষয়ে মিডিয়াগুলো আপনাকে টিপস দিতেই থাকে। আর এসবকে কেন্দ্র করে চলে পুঁজিপতিদের রমরমা ব্যবসা। পুঁজিবাদী সমাজের মিডিয়া খুব স্বাভাবিকভাবেই পুঁজিপতিদের সুবিধাকে নিশ্চিত করবে। আর সেটি করতে গিয়ে তারা জন সাধারণকে বিক্রি করে দিচ্ছে বিভিন্ন পুঁজিপতি ব্যবসায়ীদের নিকট। মানুষ যত বেশি নববর্ষ উদযাপন করবে পুঁজিপতিদের লাভ হবে তত বেশি।
পুঁজিপতিদের লাভের হিসেব তো গেল। কিন্তু আমাদের যুব সমাজ কেন থার্টি ফার্স্ট নাইট বা এরূপ অন্যান্য দিনগুলোকে উদযাপন করে থাকে? অবশ্যই জীবনটাকে উপভোগ করতে আর আনন্দ পেতে। পশ্চিমাদের উৎসব পালন করতে করতে ওদের মত আমরাও আনন্দ উপভোগ করাটাকেই জীবনের উদ্দেশ্য করে নিয়েছি। ৯০ ভাগ মুসলমান অধ্যুষিত এই বাংলাদেশের যুবকরা আজ জীবনের মানে বলতে আনন্দ উপভোগকে বোঝে থাকে। অথচ তারা একটু চোখ মেলে দেখে না পশ্চিমারা জীবনের এই মানে নিয়ে কতটা ভাল আছে। অথবা আদৌ ভাল আছে কি না?
আমরা যদি পশ্চিমাদের দিকে তাকাই তাহলে দেখব ওদের জীবনের লক্ষই ম্যাক্সিমাম ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য আনন্দ উপভোগ করা। আর এই ইন্দ্রিয় তৃপ্তি পেতে তারা এক সময় নারী-পুরুষ অবাধ মেলামেশা করেছে। এরপর একসময় একঘেয়েমি চলে আসলে, তাদের মনে হয়েছে আরেকটু ভিন্নতা আনা দরকার। তখন তারা ছেলে-ছেলে, মেয়ে-মেয়ে সম্পর্ক স্থাপন করেছে। আর এখন তারা আরো ভিন্ন আনন্দ পেতে পশুর সাথে, রোবটের সাথে সম্পর্ক করছে!! কিন্তু এত কিছু করেও তারা প্রকৃত অর্থে কোন সুখ পাচ্ছে না। পাওয়া সম্ভবও নয়। আর তাই তাদের মধ্যে নানা হতাশা দানা বাঁধছে। যার ফলশ্রুতিতে পশ্চিমা বিশ্বের যুবসমাজের ৬০ ভাগই মাদকাসক্ত। তাছাড়া সেখানে যখন তখন মানুষ আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছে। জীবনের মানে যখন হয় উপভোগ করা, আর সেই উপভোগ যদি কোন কারণে না হয় তাহলে তো জীবনের লক্ষ অর্জন হল না। তাই বেঁচে থেকে কী লাভ?
যুক্তরাষ্ট্রের দ্যা সেন্টার ফর ডিজিস কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) কর্তৃক প্রদত্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী সেদেশে শুধুমাত্র ২০১২ সালে ৪০,৬০০ টি আত্মহত্যার ঘটনা ঘটে। অর্থাৎ যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি ১২.৯ মিনিটে একজন করে মানুষ আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়। ওদের অনুসরণ করার ফলে আজকাল আমাদের দেশেও এমন ঘটনা ঘটতে দেখা যায়। গত বছর পত্রিকাতে খবর হয়েছিল, থার্টি ফার্স্ট নাইটে বাসা থেকে বের হতে দেয়নি বলে এক স্কুল ছাত্রী আত্মহত্যা করেছে।
পশ্চিমারা বিশ্বাস করে, মৃত্যুর পরে তাদের কোন জবাবদিহিতা নেই। তাই ওরা এসব করতেই পারে। কিন্তু বাংলাদেশের মত একটি মুসলিম অধ্যুষিত দেশের যুবসমাজ কোন কারণে পশ্চিমাদের চিন্তা , পশ্চিমাদের বিশ্বাস দিয়ে জীবন চালাবে? তারা কি ভুলে গেছে মৃত্যুর পরে তাদেরকে প্রতি একটি কাজের জন্য আল্লাহ তায়ালার কাছে জবাবদিহি করতে হবে? “খাও, দাও, ফূর্তি করো”-এটি কোন মুসলিমের চিন্তা হতে পারে না। একজন মুসলিমের সুখ, আনন্দ এসব কিছুতে নিহিত নেই। বরং একজন মুসলিম তো তখনই সুখ পায়, আনন্দ পায় যখন সে আল্লাহর আদেশ-নিষেধ মেনে চলে আল্লাহকে সন্তুষ্ট করতে পারে। আর আল্লাহকে সন্তুষ্ট করাই তো একজন মুসলিমের জীবনের একমাত্র উদ্দেশ্য। পবিত্র কোরানে আল্লাহ পাক বলেছেন, “আমি জ্বীন ও মানুষকে শুধু মাত্র আমার ইবাদতের জন্য সৃষ্টি করেছি।” (সূরা যারিয়াত: ৫৬)
©somewhere in net ltd.