![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
If u want to know anything about me, just ask।
আমরা অধিকাংশ বাঙ্গালী নামাজ পড়ি না। কিন্তু কিছু বিষয় আমাদের আবেগের সাথে মিশে আছে। কেউ যদি মসজিদে একটা ঢিল ছুড়ে অথবা মসজিদ নিয়ে খারাপ কিছু বলে, সেটা আমাদের দেশের কেউই মেনে নিবে না।
দেখবেন খেটে খাওয়া দরিদ্র মানুষও মসজিদের দানবাক্সে অনেক টাকা গুজে দেয়। একারণেই আজকালকার মসজিদগুলোর শানশওকত দেখলে চোখ ধাধিয়ে যায়। গ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চলে, যেখানে একটা পাকা ঘর নেই, সেখানেও টাইলস করা মসজিদ আপনি পেয়ে যেতে পারেন।
কিন্তু এতকিছুর পরেও কিন্তু মসজিদ "আবাদ" হচ্ছে না। এর কারণ কি?
এর কারণ খুজতে হলে আমাদের রাসুল (সা) এর সুন্নত দেখতে হবে।
রাসুল (সা) এর মসজিদ ছিল সব ধরনের সামাজিক কর্মকান্ডের কেন্দ্র। মসজিদে নববী ছিল একাধারে রাসুল (সা) এর অফিস, তার সভাকক্ষ, শিক্ষাকেন্দ্র, কাজি অফিস, তার খানকা, তার সচিবালয়। দেশ বিদেশ থেকে প্রতিনিধিরা এখানেই তার সাথে দেখা করতেন।
সহিহ বুখারীতে আছে, প্রথমদিকে মসজিদে নববীতে কোন ছাদ ছিল না। খেজুর পাতা দিয়ে কোনক্রমে ছাউনির ব্যবস্থা করা হয়েছিল। বৃষ্টি হলে পানি ঠেকানোর কোন উপায় ছিল না। মসজিদে কোন কার্পেট বা ম্যাটও ছিল না।
তারপরও মসজিদ আবাদ ছিল। কেননা মাটির দেওয়ালের সেই সাদামাটা মসজিদই ছিল সকল সামাজিক ও প্রশাসনিক কাজের কেন্দ্র।
রাসুল (সা) বলেছেন,
"যে আলাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে মসজিদ আবাদ করবে, আলাহ তাআলা জান্নাতে তার জন্য অনুরূপ একটি ঘর তৈরি করে দেবেন।"
-তিরমিজি : ২৯২
"নি:সন্দেহে তারাইতো আল্লাহর মসজিদ আবাদ করবে, যারা ঈমান আনে আল্লাহ ও আখেরাতের প্রতি এবং সালাত কায়েম করে, জাকাত দেয় এবং আলাহ ব্যতীত অন্য কাউকেই ভয় করে না। অতএব আশা করা যায়, তারা সৎপথপ্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে।"
-সুরা তাওবা;১৮
ড. আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর (রহ) বলেছিলেন, আমাদের দেশের মসজিদগুলো দামী টাইলস, এসি দিয়ে সাজানো হলেও ইমাম নিয়োগ দেওয়া হয় সস্তা।
একটা বক্তৃতায় তিনি বলেছিলেন, এদেশে ইমাম হতে গেলে ৪টা প্রি কন্ডিশন মানতে হয়,
১। ইমাম সমাজের কোন অন্যায় নিয়ে কথা বলবে না (মসজিদ কমিটির স্বার্থে লাগলেই চাকরি শেষ)।
২। অল্প বেতন হতে হবে (ইমাম শুধু নামাজ পড়ায়ে চলে যাবে! এরজন্য আবার এত খরচের কি আছে)।
৩। মিলাদ, নামাজ ইত্যাদি সমাজের প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী করতে হবে। কিতাবে কি আছে তা জরুরী নয় (আমরা মাযহাব নিয়ে বাড়াবাড়ি করি, অথচ আমাদের মাযহাবের অনেক বিপরীত রীতি আমাদের সমাজে প্রচলিত) ।
৪। চাকরির কোন শো কজ থাকবে না। এক কথায় চাকরি কেড়ে নেয়া যাবে।
এর ফলে যা হচ্ছে, নতুন মসজিদ তৈরী হচ্ছে ঠিকই কিন্তু মসজিদগুলো প্রকৃতপক্ষে আবাদ হচ্ছে না। সমাজের সকল অন্যায় অনাচারের বিরুদ্ধে মসজিদগুলো দাড়াতে পারছ্র না।
আমরা মাদরাসা বলতে স্কুল বা পাঠশালা বুঝি। কিন্তু ইসলামী পরিভাষায় মাদরাসা অর্থ বিশ্ববিদ্যালয়। রাসুল (সা) এবং পরবর্তী সাহাবাদের যুগে মসজিদই ছিল শিশু কিশোরদের পাঠশালা। মসজিদেই তারা কোরআন হাদিসের দরস নিত। এভাবেই ছোটবেলা থেকে তারা মসজিদে আসা যাওয়া করতে অভ্যস্ত হত।
রাসুল (সা) এর সুন্নত ছিল মসজিদকে সমাজের কেন্দ্র বানানো, আর আমরা মসজিদকে কেবল কিছু লোকজ ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানের স্থান বানিয়ে রেখেছি। এটাকে চেঞ্জ করে রাসুল (সা) এর সুন্নতের প্রকৃত অনুসরণ না করতে পারলে আমরা মসজিদ আবাদ করতে সক্ষম হব না।
আল্লাহ আমাদের সবাইকে সেই তৌফিক দিন। আমীন।
©somewhere in net ltd.