নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

পরিপ্রেক্ষিত

আমি খুব ভীতু মনের এক মানুষ। মনুষের সাহস দেখলেই আশ্চর্য হই। চারপাশে বড়সড় কোন ঘটনার আভাস পেলেই ভয়ে লুকিয়ে পড়ি সবার আড়ালে। আর তখনই লুকানো অনেক কিছুই দেখতে পাই স্পষ্ট। আর সেই পরিপ্রেক্ষিতের কাহিনীটা সবার সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করাটাই আমার একমাত্র দু:সাহস।

রেজাউল করিম বাক্বি

আত্নকেন্দ্রীক মানুষের মিছিলে খোলামনে থাকতে চাওয়া যদি পাপ হয় তাহলে আমি খুব বড় ধরনের পাপী। আশেপাশের নোংরা, হিংসা, ঘৃণার জগতের কোলাহলে ক্লান্ত হয়ে অবচেতন মনের গভিরে নিজের অজান্তেই গড়ে তুলেছি এক কাল্পনিক জগত। অল্পসংখক প্রীয় কিছু মুখ আর চমৎকার কিছু আনুভূতি দিয়ে সাজানো জগতটি শুধুই ভাল লাগার। স্বপ্নের সেই জগতে আমি প্রায়ই দেখি ১৩/১৪ বছরের অসম্ভব দুষ্ট একটা ছেলে দৌড়ঝাপ আর লাফালাফিতে ব্যাস্ত । আমি অদ্ভুতভাবে লক্ষ করি ওটা আমি নিজেই। আমার অবচেতন মন খুব সচেতন ভাবেই আমার বর্তমান সময়কে প্রত্যাখ্যান করছে। প্রত্যেকটা মানুষেরই তার বাইরের কৃত্রিম আচরণের ভিতরে একটা বিল্ট-ইন স্বভাব থাকে যা সে খুব কাছের মানুষের সামনে মেলে ধরে, আমার মনে হয় ছেলেমানুষি আচরণটা আমার বিল্ট-ইন। পরিবারকেন্দ্রিক আমার জ্ঞানের হাতেখড়ি বাবার হাত ধরেই (যদিও হাতটা পিঠেও পড়েছে অনেকবার) । ব্যবসায়ী বাবার শত ব্যস্ততার মাঝেও গড়ে তোলা ছোট্ট লাইব্রেরিটা আমার চিন্তার খোড়াক জুগিয়েছে বহুবার। পৃথীবির শ্রেষ্ঠ জননী আমার মা সহ সূক্ষরসবোধসম্পন্ন পরিবারের সবার জন্য কিছু করার তৃষ্ণাটা আমাকে তাড়িয়ে বেড়ায় সব সময়। জোছনা রাতে চাঁদের স্নিগ্ধ আলোয় স্নান করে স্মৃতি রোমন্থন করা আমার প্রিয় শখ। সারা জীবন কল্পনা করে এসেছি পূর্ণিমা রাতে বিশাল দিগন্তহীন মরুভূমির মাঝে আমার বেখেয়ালি শরীরটাকে আকাশের দিকে মুখ করে বালিতে শুইয়ে দিয়েছি আর ইয়ারফোনে বাজছে প্রীয় কোন গান............ পুনর্জন্মে আমি বিশ্বাস করি না। যদি করতাম তাহলে চাইতাম জন্ম নিতে পৃথিবীর একমাত্র অসাম্প্রদায়িক দেশ বাংলাদেশে। যে দেশের মানুষেরা এখনও প্রাণ খুলে হাসতে জানে, অন্যের দু:খে কাঁদতেও জানে। আর দু বেলা দুমুঠো খেতে পেয়েই বলতে পারে ভাল আছি!!

রেজাউল করিম বাক্বি › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাধ ভাঙার কাল ও বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্র

২৬ শে এপ্রিল, ২০১৭ দুপুর ১:৩৭


১)
ধরুন, আপনি ৫০ হাজার টাকা বেতনের একটা চাকুরি করেন। ছয় সদস্যের একটি পরিবারের ছেলে-মেয়েদের পড়াশুনা, বাবা-মায়ের ঔষধ, নিজেদের খরচ মেটাবার পাশাপাশি একটু ভালভাবে চলার জন্যে বেতনের উপর একটা লোনও নিলেন। সোজা কথায়, আপনার বর্তমান এবং ভবিষ্যতের অনেক পরিকল্পনাই এই চাকুরিটাকে ঘিরে।
এখন যদি হঠাৎ চাকুরিটা চলে যায় তাহলে কী হবে? সবকিছুই তাসের ঘরের মত ভেঙে গিয়ে দামি ফ্ল্যাট ছেড়ে রাস্তায় দাড়ানো ছাড়া আর কি কোন উপায় আছে?

ঠিক এ ব্যাপারটিই ঘটেছে বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের হাওর এলাকাগুলোতে। চাকুরীর উদাহরনটা দিতে হল ঘটনার ভয়াবহতাটা নিজেদের মত করে উপলব্ধির জন্যে। (কারন, আমাদের অনুভুতি এখন ভোতা হয়ে গেছে। পাশের বাড়িতে ডাকাতি হলেও নিজের বাড়ি আক্রান্ত না হওয় পর্যন্ত চিৎকার দেই না।)


হাওর এলাকাগুলোতে রাতারাতি প্রায় তিন লাখ হেক্টরের বিনিয়োগকৃত চাষ করা জমি “বাধ ভেঙে” তলিয়ে গেছে। হাজার হাজার মন ফষল পাওয়া অবস্থাসম্পন্ন কৃষকেরা এক রাতে সব কিছু হারিয়ে রাস্তার ফকির হয়ে গেছে। অগনিত গরু-ছাগল সহ অন্যান্য পশুদের খাবারের কষ্ট দেখলে শরৎচন্দ্রের মহেশও হয়তবা লজ্জা পেয়ে মুখ লুকাত।
বিস্তীর্ণ এলাকার ফসলহনির এই প্রভাবটা অবধারিতভাবে পড়বে সারা দেশেই।

আমার প্রশ্ন অন্য জায়গায়। এই যে বার বার বলা হচ্ছে বাধ ভেঙে সবকিছু তলিয়ে গেছে। তার মানে বাধ না ভাঙলে হয়তবা সবকিছুই ঠিক থাকত। তাহলে লাখ লাখ মানুষের বেচে থাকার অবলম্বন এই বাধটা কি একটু ভালভাবে তৈরি করা যেত না?

যতটুকু জানি, এই বাধ নির্মাণ ও তদারকির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্তৃপক্ষরা হল পানি উন্নয়ন বোর্ড,প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি আর ঠিকাদার। আর তারা যে পুরোপুরি ব্যর্থ তার তো প্রমান হয়ে গিয়েছে ইতোমধ্যেই।
যদিও “হাওর বাচাও, সুনামগজ্ঞ বাচাও” আন্দোলনের আহ্বায়ক বজলুল মজিদ চেীধুরীর অভিযোগ করেছেন, এই তিন কর্তৃপক্ষ মিলে কোটি কোটি টাকা লুটপাটের মাধ্যমেে এই সর্বনাশটা করেছে।
সর্বনাশটা যেই করুক, এর ঘানিটা যে সাধারন মানুষকেই টানতে হবে এর কোন সন্দেহ নাই্।

আর হবে কী এর শাস্তি? আপনার অবগতির জন্যে জানানো যাচ্ছে, ইতোমধ্যেই এই অপরাধের শাস্তি দেয়া হয়েছে। কাজে গাফিলতির জন্যে পাউবোর সুনামগঞ্জের নির্বাহী প্রকেীশলীকে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। ভদ্রলোক হয়তবা অপ্রত্যাশিত এই ছুটি পেয়ে কোথাও পিকনিক-টিকনিক করতে গেছেন।
আর হাওরের উন্নয়নে দায়িত্বপ্রাপ্ত অন্য এক প্রতিষ্ঠানের উচ্চপদস্ত কর্মকর্তারা এই মুহুর্তে সপরিবারে কানাডা ভ্রমণে থাকায় এই সমস্ত “ফালতু” বিষয় নিয়ে তাদের সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি।

কিন্তু সব হারানো হাওর পারের বৃদ্ধ মজিদ মিয়ার কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই । সে চুপচাপ বসে তাকিয়ে থাকে তার স্বপ্ন ভেঙে ভেসে যাওয়া ফসলের মাঠের দিকে।


২)

এরই মধ্যে আরেকটি বাধ ভেঙে গিয়েছে। ভেঙ্গে গিয়ে স্কুল-কলেজ-মেডিকেল এবং অধুনা চাকুরীর পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাস হয়ে একাকার হয়ে গেছে সবকিছু।

অনেকেই ভাবতে পারেন, এখানে আবার এ প্রসঙ্গের অবতারণা কেন?

এই প্রসঙ্গটি কোন অংশেই কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। এভাবে প্রশ্ন ফাস হতে থাকলে একটি জেনারেশন পুরোটাই বিকলাঙ্গ হয়ে যাবে। দেশের সরকারি-বেসরকারি সব জায়গায় ‍যদি এই অনিয়মটা ঘটতে থাকে তাহলে অচিরেই আমরা একটা দূর্নিতীগ্রস্থ ও অমেধাবী সেবাখাত দেখতে পাব।
অভিযোগগুলো এখন ইতোমধ্যেই প্রমানিত যে, পিএসসি, জেএসসি, এসএসসি ও চলতে থাকা এইচএসসি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ছিল সবার হাতের নাগালে।

আর সম্প্রতি অভিযোগ উঠেছে, রাস্ট্রায়ত্ত একটি ব্যাংকের পরীক্ষার প্রশ্ন ফাস হয়েছে পরীক্ষার আগেই। কিন্তু পরীক্ষা নেয়ার দায়িত্বে থাকা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডীন মহোদয় চমৎকারভাবে বলে দিয়েছেন- ডিজিটাল যুগে সবকিছুই সম্ভব। পিএসসি, জেএসসির প্রশ্নপত্রও তো আউট হয়, তাই বলে কি ওগুলো বাতিল হয়ে যায়? ভদ্রলোক এগুলোকে ডিজিটাল প্রচারনা হিসেবে উড়িয়ে দিয়েছেন।

উনার বক্তব্যে বাংলাদেশের সাবেক এক মন্ত্রীর কথা মনে পড়ে যায়। ঐ যে, মনে নেই, বাংলা ভাইয়ের উত্থানের পর্ যিনি বলেছিলেন-“এগুলো সব মিডিয়ার সৃষ্টি”।

৩)
৭৫ এর আগে আগে তৎকালীন জাসদ এক নতুন তত্ত্ব নিয়ে আসে। তার নাম ছিল “বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্র”। একদল বিপদগামি তরুনদের নিয়ে গঠিত এই মতবাদের উদ্দেশ্য ছিল দেশের তাবৎ অর্থনৈতিক ব্যবস্থা ধ্বংসের মাধ্যমে দেশকে পঙ্গু করে দেওয়া। এ লক্ষে তারা বড় বড় পাটগুদাম পুড়িয়ে দিত, বড় বড় গৃহস্তের ধান ধ্বংস করে দিত। এদের কাজটা হত গোপনে, সবার সাথে মিশে কিন্তু কেউ সহজে বুঝত না। তাহলে এতে লাভটা কী হত?
অর্থনৈতিক ব্যবস্থা ধ্বংস হলে সদ্য স্বাধীন হওয়া দেশটির আর কোন উপায় থাকবেনা, ঠেকানো যাবে না দুর্ভিক্ষ্। আর মানুষ খেতে না পেয়ে এক সময় বিদ্রোহী হয়ে উঠবে। আর এই অস্থিতিশীল পরিস্তিতির সুযোগটা নিবে তারা।

অতিকল্পনা কিনা জানিনা, আমি বর্তমান পরিস্থিতির সাথে ঐ সময়টার একটা মিল খুজে পাই। হাওরে কৃষকের সারা বছরের কষ্টের ধান এভাবে পানিতে ভেসে যাওয়া আর, একজন ছাত্রের সারা বছরের পরিশ্রমের পর প্রশ্নপত্র ফাস হয়ে তার স্বপ্ন চুরি হওয়ার ভাবগত অর্থ আমার কাছে একই।
হতে পারে এভাবেই একটা বিরাটা অংশের মানুষকে খেপিয়ে তুলে সুবিধা নিতে চাইছে কেউ, আবার হতে পারে পুরোটাই আমার কল্পনা।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ২৬ শে এপ্রিল, ২০১৭ দুপুর ২:১১

রাজীব নুর বলেছেন: হুম আপনি ঠিকই বলেছেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.