![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আত্নকেন্দ্রীক মানুষের মিছিলে খোলামনে থাকতে চাওয়া যদি পাপ হয় তাহলে আমি খুব বড় ধরনের পাপী। আশেপাশের নোংরা, হিংসা, ঘৃণার জগতের কোলাহলে ক্লান্ত হয়ে অবচেতন মনের গভিরে নিজের অজান্তেই গড়ে তুলেছি এক কাল্পনিক জগত। অল্পসংখক প্রীয় কিছু মুখ আর চমৎকার কিছু আনুভূতি দিয়ে সাজানো জগতটি শুধুই ভাল লাগার। স্বপ্নের সেই জগতে আমি প্রায়ই দেখি ১৩/১৪ বছরের অসম্ভব দুষ্ট একটা ছেলে দৌড়ঝাপ আর লাফালাফিতে ব্যাস্ত । আমি অদ্ভুতভাবে লক্ষ করি ওটা আমি নিজেই। আমার অবচেতন মন খুব সচেতন ভাবেই আমার বর্তমান সময়কে প্রত্যাখ্যান করছে। প্রত্যেকটা মানুষেরই তার বাইরের কৃত্রিম আচরণের ভিতরে একটা বিল্ট-ইন স্বভাব থাকে যা সে খুব কাছের মানুষের সামনে মেলে ধরে, আমার মনে হয় ছেলেমানুষি আচরণটা আমার বিল্ট-ইন। পরিবারকেন্দ্রিক আমার জ্ঞানের হাতেখড়ি বাবার হাত ধরেই (যদিও হাতটা পিঠেও পড়েছে অনেকবার) । ব্যবসায়ী বাবার শত ব্যস্ততার মাঝেও গড়ে তোলা ছোট্ট লাইব্রেরিটা আমার চিন্তার খোড়াক জুগিয়েছে বহুবার। পৃথীবির শ্রেষ্ঠ জননী আমার মা সহ সূক্ষরসবোধসম্পন্ন পরিবারের সবার জন্য কিছু করার তৃষ্ণাটা আমাকে তাড়িয়ে বেড়ায় সব সময়। জোছনা রাতে চাঁদের স্নিগ্ধ আলোয় স্নান করে স্মৃতি রোমন্থন করা আমার প্রিয় শখ। সারা জীবন কল্পনা করে এসেছি পূর্ণিমা রাতে বিশাল দিগন্তহীন মরুভূমির মাঝে আমার বেখেয়ালি শরীরটাকে আকাশের দিকে মুখ করে বালিতে শুইয়ে দিয়েছি আর ইয়ারফোনে বাজছে প্রীয় কোন গান............ পুনর্জন্মে আমি বিশ্বাস করি না। যদি করতাম তাহলে চাইতাম জন্ম নিতে পৃথিবীর একমাত্র অসাম্প্রদায়িক দেশ বাংলাদেশে। যে দেশের মানুষেরা এখনও প্রাণ খুলে হাসতে জানে, অন্যের দু:খে কাঁদতেও জানে। আর দু বেলা দুমুঠো খেতে পেয়েই বলতে পারে ভাল আছি!!
আমাদের মধ্যে একটা প্রবণতা আছে কোন কিছু ভালভাবে না জেনে না বুঝে মন্তব্য করার । ব্যাপারটা এমন, যেন, কথা বলে বলে জেতাটাই আসল । আমরা তর্কে হারতেও চাইনা আবার কোন বিষয় নিয়ে একটু গভীরে গিয়ে জানতেও চাইনা। চলমান রোহিঙ্গা সংকট নিয়েও চলছে এরকম তর্কাতর্কি ।
হঠাত করে বেফাঁস স্থূল মন্তব্য করা আমাদের অনেকেরেই একটা অভ্যেস হয়ে দাঁড়িয়েছে। আবার আলোচনার একটা পর্যায় পর্যন্ত আমরা মানি কিন্তু যখনই সেটা আমাদের মতের বিরুদ্ধে চলে যায় তখনই বেঁকে বসি।
রোহিঙ্গা সংকট যেমন এই অঞ্চলে এক মানবিক বিপর্যয় ডেকে এনেছে তেমনি এটা পুরো অঞ্চলটিতেই একটা অস্থিতিশীল অবস্থার সৃষ্টি করেছে। আর বাংলাদেশ হচ্ছে এটার এক নির্দোশ শিকার ।
আমি মনে করি, এই রোহিঙ্গা ইস্যুটির ব্যাপারে খোঁজ-খবর রাখা প্রত্যেকটা সচেতন নাগরিকেরই কর্তব্য। কারণ অনেক বিশ্লেষকের মত আমারও মনে হয় স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সংকটই হল এই রোহিঙ্গা সংকট।
প্রায় দশ লাখ মানুষ যাদের, সত্যিকার অর্থে কোন দেশই নাগরিক হিসেবে স্বীকার করেনা হঠাৎ করেই চলে এসেছে আমাদের এই ছোট্ট দেশে, তাই এই ইস্যুটা সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আর বিভিন্ন তথ্যে বিভ্রান্ত না হয়ে উচিৎ সত্যটা জানা, একতাবদ্ধ হওয়া।
কিন্তু এই ইস্যুটিকে ঘিরে এত বেশী খবর প্রকাশিত হয়েছে যে এতে করে একটা বিশৃংখল অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। আমার এই লিখাটা একটা মেগা পোস্ট। এতে চেষ্টা করেছি গত প্রায় এক মাস ধরে যে খবরগুলো বিভিন্ন অথেনটিক মিডিয়াতে প্রকাশিত হয়েছে, তার একটা পর্যায়ক্রমিক অনুসন্ধানের, এবং এতে জেগে ওঠা কিছু প্রশ্নের উত্তর খোঁজা হয়েছে একেবারে সরাসরি। আর উত্তরগুলো দেয়া হয়েছে সরাসরি মিডিয়ার লিংক দিয়ে, যাতে করে এতে কোন প্রকার বিভ্রান্তির সুযোগ না থাকে। এখানে আমার নিজের লেখা যতটুকু তার চেয়েও বেশী আছে বিভিন্ন বিশ্লেষকদের। তাহলে শুরু করা যাক………
***কী ঘটছে মিয়ানমারে? গনহত্যা নাকি শুধু শুধুই দেশ ত্যাগ করছে রোহিঙ্গারা?***
শুধুমাত্র কমন সেন্স দিয়েই বুঝা যায় যে, লাখ লাখ মানুষ শুধু শুধু জীবন বাজি রেখে সীমান্ত পারি দেয়না, তার উপর আবার উত্তাল সমুদ্র পারি দিয়ে একেবারেই হঠাৎ করে। নিশ্চিতভাবেই সেখানে ভয়ংকর কিছু ঘটছে। জাতিসংঘ সরাসরিই বলছে সেখানে “জাতিগত নিধন” সংগঠিত হচ্ছে। জাতিসংঘের এই মন্তব্য দেখতে পারেন নিচে দেয়া লিংক থেকে।
view this link
অ্যামনেস্টি বলছে, “রোহিঙ্গাদের নিধনের জন্য পোড়ামাটির নীতির কৌশল নিয়েছে মিয়ানমার। ২৫ শে আগস্ট এর পর থেকে অন্তত ৮০ টি এলাকায় সুপরিকল্পিতভাবে পুড়িয়ে দেওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে স্যাটেলাইট চিত্রে। অগ্নিসংযোগের তথ্য, স্যাটেলাইটের মাধ্যমে পাওয় ছবি, তোলা ছবি, ভিডিও, প্রত্যক্ষদর্শীদের সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে অ্যামনেস্টি নতুন তথ্যপ্রমাণ পেয়েছে। এসব থেকে প্রমাণিত হয়, প্রায় তিন সপ্তাহ ধরে মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের গ্রামকে লক্ষ্যবস্তু করে পরিকল্পিভাবে অভিযান ও অগ্নিসংযোগ চালিয়েছে।”
তারা আরো বলছে, এসব তথ্যপ্রমাণ অকাট্য। রোহিঙ্গাদের দেশ থেকে তাড়াতেই মিয়ানমারের সেনাবাহিনী রাখাইনে অভিযান চালাচ্ছে । নি:সন্দেতে এটি জাতিগত নির্মূল অভিযান।
এরকম বড় বড় আন্তর্জাতিক সংস্থা বিভিন্ন তথ্য প্রমাণ দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে কী বিভৎস নিধনযজ্ঞ ঘটাচ্ছে সে দেশের সেনাবাহিনী। গণহত্যা যদি নাই হয়ে থাকে তাহলে সেখানে আন্তর্জাতিক কর্তৃপক্ষকে দেখতে যেতে বাধা দেয়ার কারন কি?
সিএনএন গত বৃহস্পতিবার এক রিপোর্টে বলেছে, রোহেঙ্গাদের বাস্তব অবস্থা দেখতে গত বৃহস্পতিবার মিয়ানমারে প্রতিনিধিদল পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে রাখাইন কর্তৃপক্ষ স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দেয়, মার্কিন উপসহকারী পররাস্ট্রমন্ত্রী প্যাট্রিক মার্ফিকে রাখাইনের সহিংসতাকবলিত এলাকাগুলোতে যেতে দেওয়া হবেনা । তিনি শুধু নির্ধারিত স্টেট কাউন্সিলের সাথে আলোচনা করতে পারবেন। এর মানে কী দাঁড়ায়?
বিস্তারিত দেখুন::
দেখতে দেওয়া হবেনা সহিংসতা
আবার বিশ্ববিখ্যাত মার্কিন জেনোসাইড বিশেষজ্ঞ ড. গ্রেগরি এইচ স্ট্যনটন স্পষ্ট ভাষায় বলেন, আরাকানে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে যা চলছে তাকে বর্ণনা করতে আমরা ২০১২ সালে প্রথম “জেনোসাইড” শব্দ ব্যবহার করি। ওই সময় আরাকানে একজন বৌদ্ধ মহিলার হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে সারা বার্মায় ১(এক) হাজার মুসলমান নিধনের ঘটনা ঘটে।
পুরো সাক্ষাৎকারটি পড়ুন:
view this link
view this link
অপরদিকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও স্পষ্টভাবে “জাতিগত নিধন” শব্দটি উল্লেখ করেছেন। তিনি মিয়ানমারে সহিংসতা ও 'জাতিগত নিধন' নি:শর্তে বন্ধ করে রোহিঙ্গাদের সমস্যা স্থায়ী সমাধানে এখনই কার্যকর উদ্যোগ নেয়ার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে ভাষণে তিনি এই মানবিক সংকট নিরসনের জন্য পাঁচটি প্রস্তাব তুলে ধরেছেন।
দেখুন:
জাতিসংঘে শেখ হাসিনার ভাষণ
সুতরাং মিয়ানমারে জাতিগত নিধন হচ্ছে এ বিষয়ে কোন সন্দেহের অবকাশ নেই।
বিবিসির তোলা কিছু ছবিতে দেখুন রোহিঙ্গাদের অসহায়ত্ব।
বিবিসির চোখে রোহিঙ্গাদের দুর্দশা
নির্যাতনের স্বরুপ, কারা ঘটাচ্ছে এই নিধনযজ্ঞ ও কেন ঘটাচ্ছে? ব্যাপারটা কি ধর্মীয়? এর শিকার কি শুধু মুসলমানেরা?
পৃথিবীর ইতিহাসে গণহত্যার উদাহরন এই প্রথম নয়। কোন না কোন সময় অনেক জাতিই শিকার হয়েছে এই গণহত্যার। বাংলাদেশেও এই নির্মমতার শিকার হয়েছে একাত্তরে। তবে আমার কাছে রোহিঙ্গা গণহত্যার ধরনটা একটু ব্যতিক্রম ঠেকেছে। এখানে রাষ্ট্রীয় বাহিনী ছাড়াও সরাসরি জড়িয়ে আছে বৌদ্ধ নেত্রীবৃন্দ ও সাধারন বৌদ্ধ ভিক্ষুরাও ।
এই গণহত্যার সঙ্গে ধর্মের যোগসাযোশের ব্যাপারে নিরাপত্তা বিশ্লেষক ও Institute of peace and strategic studies এর সভাপতি এ এন এম মুনিরুজ্জামান বলেন, “তারা মুখে না বললেও এখানে একটা ধর্মীয় দিক আছে। অন্য ধর্মের হলে হয়তো প্রতিক্রিয়াটা অন্যরকম হত”
দেখুন ভদ্রলোকের সাক্ষাৎকারটি: এম মুনিরুজ্জামানের সাক্ষাৎকার
এই নিধনযজ্ঞের অন্যতম উস্কনিদাতা হল মুসলিম বিরোধী এক উগ্র বৌদ্ধ ভিক্ষু আশ্বিন উইরাথু, যাকে টাইম ম্যাগাজিন সন্ত্রাসী আখ্যা দিয়ে দিয়ে প্রচ্ছদ করেছিল ২০১৩ সালে। ধারণা করা হয় এই নিধনযজ্ঞের অংশীদার হল তার প্রতিষ্ঠিত গ্রুপ 969 । ক্রমাগত মুসলিম বিরোধী বক্তব্য দিয়ে জনপ্রিয়তা পেয়েছেন এবং সহিংসতা উস্কে দিয়েছেন বারবার। বলা হয়ে থাকে সেনাবাহিনী বা বার্মীজ সরকার যা সরাসরি বলতে পারত না তা তাকে দিয়ে বলানো হত।
দেখুন টাইম ম্যাগাজিনের লিংক:বৌদ্ধ সন্ত্রাসীর ছবি
তাকে নিয়ে করা বিবিসির প্রতিবেদন: একে নিয়ে করা প্রতিবেদন
রাখাইন রাজ্যে সহিংসতার জন্যে যে সাধারণ বৌদ্ধদের অনেকেই জড়িত তা মিয়ানমারে যাওয়া বিদেশী সাংবাদিকেরা পরবর্তীতে বিভিন্ন মাধ্যেমে সে কথা জানিয়েছেন। আবার একবার খবর বেড়িয়েছিল যে , এগুলো সাজানো নাটক; মুসলমানেরা নিজেরাই নিজেদের ঘরে আগুন দিচ্ছে, ছবিও বেড়িয়েছিল কিছু। স্থানীয় হিন্দু জনগোষ্ঠিকেও বাধ্য করে মিথ্যা কথা বলিয়ে নেয়া হয়েছিল । এসবের প্রমাণ মিলবে নিচের এই লিংকটিতে ঢুকলেই। একটু মনযোগ দিয়ে পড়ুন এই খবরটি।
বিস্তারিত: মিথ্যাচারের প্রমাণ
এমনকি হাজার হাজার রোহিঙ্গা মুসলিমদেরকে মিয়ানমারের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের এক দূর্গম এলাকায় আটকে রেখেছে “বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী দুস্কৃতিকারীরা”। এদেরকে মেরে ফেলার হুমকি পর্যন্ত দেয়া হচ্ছে। স্খানীয় প্রশাসনও এই সব আটকে পড়া মানুষদের সাহায্য করবেনা বলে জানায়, কারন, এতে নাকি রাখাইনের বৌদ্ধরা ক্ষুব্ধ হবে এবং সম্প্রীতি নষ্ট হবে!!
বিস্তারিত দেখুন:সাধারণ বৌদ্ধদের কর্মকান্ড
এমনকি স্থানীয় বৌদ্ধরা রেডক্রসের ত্রাণবাহী নৌকায়ও হামলা চালায় যাতে কোন সাহায্য না পৌছায় আটকে পড়া মানুষের কাছে।
বিস্তারিত: রেডক্রসের নৌকায় বৌদ্ধদের হামলা
ধর্মের এই ব্যাপারটি আরেকটু স্পষ্ট হয় সূচির সর্বশেষ বক্তব্যে। “শান্তিতে নোবেলবিজয়ী” এই মহিলা তার সর্বশেষ বক্তব্যে সরাসরি “মুসলিম” শব্দটি ব্যবহার করেছেন । তিনি বলেছেন, “মুসলিমরা কেন বাংলাদেশে চলে যাচ্ছেন, তা তিনি জানেন না”।
তবে,সত্যিকার অর্থে নির্যাতিত হচ্ছে রাখাইন রাজ্যের সবাই। হিন্দু-মুসলমান নির্বিশেষে। বাংলাদেশে ইতোমধ্যেই প্রায় ৫০০ হিন্দু পরিবার আশ্রয় নিয়েছে , যাদের অনেকেই বলছে তাদের পরিবারের অন্য সদস্যদের “কেটে ফেলা” হয়েছে। কী বিভৎস!!
নির্যাতনের কথা আর কি লিখব? ভাবতে অবাক লাগে পৃথিবীর এত বয়স হওয়া সত্যেও, এত উন্নত সভ্যতায় পৌছিয়েও যখন মানুষকে জীবন্ত পুড়িয়ে মারা হয়, তখন নির্যাতনের আর কীইবা বর্ণনার বাকি থাকে।
এই বিষয়ে বিস্তর লেখালেখি হয়েছে। আমি খুব বেশি কিছু লিখছিনা । শুধু কয়েকটা লিংক দিচ্ছি যেন মোটামোটি বুঝতে পারা যায় কী হচ্ছে সেখানে।
ছোট্ট শিশুর ছটফটানি
বিবিসি’র প্রতিবেদনে ধর্ষণের প্রমাণ
নৃশংস নির্যাতনের বর্ণনা
হত্যা করা হচ্ছে পুরুষদের
হিন্দুদের উপরে অত্যাচারের বর্ণনা
***নেপথ্যের নায়ক***
নেপথ্যের নায়ক আপাত দৃষ্টিতে বর্তমান সেনাপ্রধান মনে হলেও এ শুরুটা বহু পুরনো। এত লম্বা ইতিহাসে যাবনা। যুক্তরাষ্ট্রের ইলিয়ন স্টেট ইউনিভার্সিটির রাজনীতি ও সরকার বিভাগের অধ্যাপক আলী রিয়াজ মনে করেন, রোহিঙ্গা বিষয়ে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ও সরকারের পরিকল্পনা দীর্ঘদিনের। তিনি এ ব্যাপারে প্রেসিডেন্ট থেইন সেনের বক্তব্য আমাদের স্মরণ করান। তিনি বলেছিলেন , “রাখাইনের বিরাজমান সমস্যার একমাত্র সমাধান হচ্ছে রোহিঙ্গাদের তৃতীয় কোন দেশে পাঠানো । এ কথা ২০১২ সালে বলা হলেও অনুসরণ করা হচ্ছে ১৯৭৪ সাল থেকে ।
সেই সময় জরুরী অভিবাসন আইনের আওতায় রোহিঙ্গাদের জাতীয় রেজিস্ট্রেশন কার্ডের বদলে বিদেশি রেজিস্ট্রেশন কার্ড প্রদান করা তার প্রথম পদক্ষেপ। ১৯৮২ সালে নাগরিকত্ব আইনে তাদের নাগরিকত্ব ছিনিয়ে নেওয়া এবং ২০১৫ সালে আদমশুমারি থেকে রোহিঙ্গদের বাদ দেওয় এসব পদক্ষেপেরই অংশ।”
ব্স্তিারিত: এক দীর্ঘ ষড়যন্ত্র
***কী বললেন সু চি?***
অং সান সু চি'র ভাষণ নিয়ে অনেকের মাঝে ব্যাপক আগ্রহ থাকলেও, তাঁর ভাষণে কিছু কথা নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। অনেকে অভিযোগ করছেন, সু চি বাস্তবতা এড়িয়ে গেছেন।
অং সান সু চি তাঁর ভাষণে বলেছেন, চার লক্ষ রোহিঙ্গা মুসলমান কেন বাংলাদেশে পালিয়ে গেছে, সে সম্পর্কে তিনি কিছু জানেন না।
মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গা শব্দটি ব্যবহার করে না। তারা রোহিঙ্গাদের 'বাঙালি মুসলিম' হিসেবে বর্ণনা করে। সু চি তাঁর বক্তব্যে 'রোহিঙ্গা' শব্দটি ব্যবহার করেননি। একেতে বাঙালী তার উপর আবার মুসলিম, সো, কোনো ভয় নাই, চালিয়ে যাও!!
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে রাখাইনে বসবাসরত মুসলিমদের জীবন মান উন্নয়নের জন্য স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা এবং অবকাঠামো উন্নয়নের পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে বলে সু চি উল্লেখ করেন। কিন্তু এটি ডাহা মিথ্যা। রোহিঙ্গাদের সার্বিক দিক থেকে কোনঠাসা করে রাখা হয়েছে সেই ১৯৭৪ সাল থেকেই। তাদের নির্দিষ্ট জায়গা থেকেও বের হতে দেওয়া হতনা। এমনকি বিয়ে করতে পর্যন্তও অনুমতির প্রয়োজন লাগে।
সু চি তাঁর ভাষণে বলেছেন, সেপ্টেম্বর মাসের পাঁচ তারিখের পর থেকে রাখাইনে কোন অভিযান চালানো হয়নি। কিন্তু এ বিষয়টি সত্য নয়। বিবিসি'র সাংবাদিক জোনাথন হেড বলছেন, সেপ্টেম্বর মাসের পাঁচ তারিখের পর তিনি যখন মিয়ানমার সরকারের তত্ত্বাবধানে রাখাইনে গিয়েছিলেন, তখন তিনি সেখানে রোহিঙ্গাদের বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ করতে দেখেছেন।
আবার রোহিঙ্গা নেতারা অং সান সু চি'র ভাষণকে সেনাবাহিনীর বক্তব্যেরই প্রতিধ্বনি বলে চিহ্নিত করেছেন।
আমাদের প্রতিবেশিরা মিয়ানমারকে প্রকাশ্যে সমর্থন দিলেও সমালোচনায় মুখর বিশ্ব নেতারা।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন সু চিকে ফোন করে বলেছেন যে, তার বক্তব্যকে তিনি স্বাগত জানান যেখানে বলা হয়েছে শরণার্থীদের যাচাই করে ফিরিয়ে নেয়া হবে। কিন্তু তিনি একই সাথে ভয়াবহ মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনার দিকেও নজর দিতে বলেন।
ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রঁ বলেছেন, "রাখাইনে সামরিক অভিযান অবশ্যই বন্ধ করতে হবে। মানবিক সহায়তার সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে। জাতিগত নিধন বন্ধে আইনের শাসন পুন:প্রতিষ্ঠা করতে হবে"। তিনি বলেন সহিংসতা বন্ধ করে মানবিক সহায়তা পৌঁছানোর জন্য তারা নিরাপত্তা পরিষদের মাধ্যমে একটি উদ্যোগ নেবেন।
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তনিও গুতেরেসও সামরিক অভিযান বন্ধ করে রোহিঙ্গাদের ক্ষোভের দিকে দৃষ্টি দেয়ার জন্য মিয়ানমার সরকারের প্রতি আহবান জানিয়েছেন।
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রেচেপ তায়েফ এরদোয়ান সংকট নিরসনে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সক্রিয় হওয়ার আহবান জানিয়েছেন যতক্ষণ না পর্যন্ত মিয়ানমারের ট্রাজেডির অবসান না হয়।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের একজন মুখপাত্র বলেছেন আন্তর্জাতিক কূটনীতিকদের মিয়ানমার পরিদর্শনে যে আহবান জানিয়েছেন মিস সু চি তা এক ধাপ অগ্রগতি, কারণ আগে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় যাওয়ার আবেদন প্রত্যাখ্যাত হয়েছে।
ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী টেরেজা মেও রাখাইনে সামরিক অভিযান বন্ধ করার কথাই বলছেন।
আর অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল মিজ সু চির সমালোচনা করে বলেছে তিনি বালিতে মাথা গুঁজে আছেন।
বিশ্বনেতাদের প্রতিবাদের বিস্তারিত:
view this link
view this link
view this link
view this link
***কী বলছে আমাদের “বন্ধুরাষ্ট্রগুলো”***
এক কথায় বলতে গেলে বাংলাদেশ যাদের বন্ধুরাষ্ট্র হিসেবে মনে করে, তাদের বিন্দুমাত্র সহায়তা তো পাইনি বরং উল্টো তারা সরাসরি মিয়ানমারের সমর্থন করেছে। এ প্রসঙ্গে অধ্যাপক আলী রিয়াজ বলেছেন, “ চীন, রাশিয়া, ভারতের অবস্থান তাদের বন্ধু মিয়ানমার সরকারের পক্ষে এবং বর্তমান মানবিক সংকটের জন্যে তারা ২৫ আগস্টের চরমপন্থী সহিংসতাকেই দায়ী করছে। তাদের বক্তব্য এই ধারণাই দেয় যে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সবকিছু ২৪ আগস্ট কিংবা ৯ অক্টোবরের আগে ছিল শান্তিপূর্ণ ও স্বাভাবিক। ”। এটা সর্বৈব মিথ্যা।
মিয়ানমারের পক্ষে সরাসরি আন্তর্জাতিক সমর্থন চাইছে চীন। আর চীনই বা কীভাবে মানবাধিকারের পক্ষে সাফাই গাইবে। উইঘুরো মুসলমানের বিরুদ্ধেতো তারা নিজেরাই বিভিন্ন অত্যাচার নির্যাতিনের দায়ে অভিযুক্ত। এছাড়া তিয়েনআনমেন গণহত্যার দগদগে ইতিহাস তো আছেই।
দেখুন:view this link
view this link
প্রকাশ্যে ভারতও মিয়ানমারের কর্মকান্ডের কোন সমালোচনা তো করেইনি বরং তারা এ বিষয়ে জাতিসংঘের ভূমিকায় হতাশ। গণহত্যা নিয়ে প্রকাশিত বিষয়গুলোকে তারা বিচ্ছিন্ন ঘটনা হিসেবে উল্লেখ করেছে। বিভিন্ন বিশ্লেষকরা এর জন্যে বলছেন মিয়ানমারের সম্ভাবনাময় খনিজ সম্পদের কথা এবং ক্রমবর্ধমান অস্ত্র চাহিদার কথা। ভারত এ বছরই মিয়ানমারের কাছে ৩৮ মিলিয়ন ডলারের অস্ত্র বিক্রি করেছে । এছাড়া দক্ষিণ-পূর্ব অঞ্চলের বিদ্রোহীদের দমনে মিয়ানমারের সহযোগীতা প্রয়োজন রয়েছে ভারতের ।
দেখুন মিয়ানমারের অস্ত্র ক্রয়ের ইতিহাস:অস্ত্র ক্রয়ের ইতিহাস
দেখুন তাদের হতাশার খবর:view this link
পরিস্থিতি দেখে মনে হয় ভারত একটা উভয়সংকটেই পড়েছে । তারা একইসাথে দুই পক্ষকেই সন্তুষ্ট রাখার চেষ্টা করছে।
কিন্তু তারা তাদের দেশে আশ্রিত ৪০ হাজারের মত রোহিঙ্গাদের হঠাত করেই মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর কথা বলছে, যেখানে চাকমা, হাজংদের নাগরিকত্ব দেয়ার কথা বলছে। তাহলে কী বার্তা পেলাম আমরা?
দেখুন: view this link
আর একধাপ এগিয়ে রাশিয়া মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক না গলানোর জন্যে অন্যান্য দেশকে রিতীমতো সতর্ক করে দিয়েছে।
***কী করণীয় আমাদের?***
শরণার্ত্রীরা কী সবসময়ই খারাপ? দেখুন তো এই নামগুলো কি চিনতে পারেন কিনা? স্টিভ জবস, বিজ্ঞানী আইনস্টাইন, এঁরা ছিলেন শরণার্থী, মধ্যযুগের মুসলমান জ্ঞানীরা ইউরোপে ছড়িয়ে গিয়ে রেঁনেসা ও আলোকায়নের বীজ বুনেছিলেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে বিতাড়িত ইউরোপের ইহুদি জ্ঞানীরা যুক্তরাষ্ট্রকে এগিয়ে নিয়েছিলেন, কার্ল মার্ক্স, লেনিন, ট্রটস্কি, ফিলিস্তিনি কবি মাহমুদ দারবিশও ছিলেন নির্বাসিত।
এমনকি হজরত মুসা (আ) ও তার জাতি , মহামতি যিশু ও বুদ্ধও ছিলেন শরণাগত পরিব্রাজক।
আজকের মগদের অত্যাচারে মিয়ানমারের রাখাইনরা যেমন ব্ংলাদেশে বসতি করে, তেমনি অনেক বার্মিজ জাতিগোষ্ঠি কম্বোডিয়া-ভিয়েতনাম প্রভৃতি অঞ্চল থেকে আজকের মিয়ানমারে এসে থিতু হয়। আজকে যেমন তার নির্বিচার হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছে ঠিক তারাও গণহত্যার শিকার হয়েছিল একাদশ-দ্বাদশ শতকে সেন রাজাদের হাতে।
এমনকি আদিবাসি ও বহিরাগত জাতি-গোষ্ঠি মিলেই আজকের বাংলাদেশ। বাংলাদেশিদের তাই সংকর জাতি বলা হয়। আজকের বাংলাদেশিরা শরণার্ত্রীদের প্রতি এত যে উদার তার কারন হয়ত এই ঐতিহাসিক অভিজ্ঞতা।
আর আমার মনে হয় বর্তমান রোহিঙ্গা সংকট একটু ভিন্ন। একটা বিশাল জনগোষ্ঠিকে হঠাৎ করেই এভাবে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠিয়ে দেওয়াটা আমার কাছে কিছুটা অস্বাভাবিকই মনে হচ্ছে। আমি এর মধ্যে আন্তর্জাতিক রাজনীতির এক বিশাল ষড়যন্ত্রের আভাষ পাচ্ছি। মধ্যপ্রাচ্য এখন প্রায় ধ্বংসস্তুপে দাঁড়িয়ে, তাই এই অঞ্চলকে যদি অস্থিতিশীল করা যায় তাহলে নতুন একটা অস্ত্র ব্যবসার মোক্ষম জায়গা হবে। আর যুগে যুগে এটাই প্রমাণিত যে, বড় দেশগুলো স্বার্থের জন্যে তারা সব কিছুই করতে পারে। মিয়ানমার এখন উদীয়মান অর্থনীতির দেশ । আর তাদের অস্ত্র ব্যাবসার সবচেয়ে ভাল অংশীদার হল চীন, রাশিয়া, ভারত, ইসরাইল। এবং এটা ইতিমধ্যেই প্রমাণিত যে, আমরা আমাদের এই ভয়াবহ সংকটের সময় কাউকেই পাশে পাইনি। তাই , যাই করতে হবে একেবারে ভেবেচিন্তে ঠান্ডা মাথায় করতে হবে।
পিনাকী ভট্টাচার্য একটা নতুন বিষয়ের প্রতি ইঙ্গিত করেছেন, তার মতে, “রাখাইনের রোহিঙ্গা অধ্যুষিত অঞ্চলটা দেখেন। এইবার সেইটা কক্সবাজারের সাথে মিলাইয়া দেখেন। তাইলে দেখবেন বংগপোসাগরে সবচেয়ে বড় নিয়ন্ত্রণ এই ভুখণ্ডের। এই ভুখণ্ডের মালিকানা যদি মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ঠ এমন জনগোষ্ঠীর হাতে থাকে তাহলে সেটা অনেকের জন্যই বিপদ। চীন, ইণ্ডিয়া আর রাশিয়ার অস্বস্তি কেন রোহিঙ্গাদের নিয়ে সেটার আংশিক উত্তর এখানে আছে। ইণ্ডিয়া এই অঞ্চল থেকে গনহত্যার মাধ্যমে রোহিঙ্গা বিতারন করে মায়ানমারের পক্ষে থেকে আসলে আখেরে বংগোপসাগরে তার ভবিষৎ বিপদ কমাতে চায়।
আপনি নিশ্চিত থাকেন ইণ্ডিয়া আর চীনের এই খায়েশ আমেরিকা রুখে দিতে চাইবে। আমার অনুমান রোহিঙ্গা ইস্যুতে আমেরিকা ইন্টারভেইন করবে। আমেরিকা এমন ব্যবস্থাও নিতে পারে যেন রাখাইন একটা স্বাধীন কিন্তু আমেরিকার প্রভাব বলয়ে থাকে এমন একটা রাষ্ট্র হিসেবে উত্থিত হয়।
এই পরাশক্তির লড়াইয়ে বাংলাদেশ নিরপেক্ষ থাকতে পারবেনা। আমাদের অনিচ্ছাসত্ত্বেও এই জটিল পরাশক্তির লড়াইয়ের পরোক্ষ দায় নিতে হবে।
এই আসন্ন বিপদ থেকে আমাদের বাঁচাতে পারে বাংলাদেশের জনগনের একশিলা ঐক্য। এই ঐক্যই আমাদের সব বিপদ মোকাবেলার রক্ষাকবচ।”
আমি ব্যক্তিগতভাবে আক্রান্ত হলে আক্রমনে বিশ্বাসী । ব্যাক্তিগত দর্শন আর রাষ্ট্রিয় দর্শন এক না। তবে বাংলাদেশকে আরেকটু শক্তিশালি মনোভাব দেখানো উচিৎ বলে মনে করি আমি । চীন-ভারতের কাছে মিয়ানমার খুব প্রয়োজনীয় হলেও আমরাও যে একেবারেই ফেলনা নয় এটাও তাদের বুঝিয়ে দিতে হবে। আর আন্তর্জতিক রাজনীতির মারপ্যাচ না বুঝলেও এটা বুঝি যে , দক্ষিণ এশিয়ায় কারোরই এই মুহুর্তে যুদ্ধ করার মত অবস্থান নেই। যেই যুদ্ধ করতে যাবে তাকেই আবার শুন্য থেকে শুরু করতে হবে। এত বড় রিস্ক কেউ নিবেনা, যতই হম্বিতম্বি করুক।
আমাদের এটাও মনে রাখতে হবে, আমাদের বর্তমান বাংলাদেশের উন্নয়ন কর্মকান্ডের বেশিরভাগ অংশিদার এই চট্টগ্রাম অঞ্চল। প্রস্তাবিত সোনাদিয়া গভীর সমুদ্রবন্দর , চিটাগং পোর্ট, পৃথিবী বিখ্যাত পর্যটন কেন্দ্র, মেরিন ড্রাইভ, বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র, স্পেশাল ইকোনোমিক জোন ইত্যাদি সহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প প্রস্তাবিত অবস্থায় আছে ওখানটায়। তাই একটু কঠোর হতে হলেও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা করতে হবে একেবারে সর্বোচ্চ মানদন্ডে। রোহিঙ্গাদের মধ্যে এই মুহুর্তে মাদক সহ অন্যান্য অবৈধ ব্যবসায় জড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে, আবার আন্তর্জাতিক জঙ্গিবাদের দিকেও ঝুকে পড়তে পারে তারা। সব হারানো মানুষেরা যে কোন কিছুই করে বসতে পারে। তাই একটু যদি কঠোর হতে হয় তবে তাই হতে হবে।
সবশেষে, একাবিংশ শতাব্দির এই ঘৃণ্য গণহত্যার প্রতিবাদ জানাই মন-প্রাণ দিয়ে । বর্তমানে যেন পৃথিবী ফিরে যাচ্ছে আবার সেই ধর্মীয় মধ্যযুগের সময়টাতে, যেখানে ধর্মীয় পরিচয়ই ছিল মুখ্য আর মানুষ ছিল গৌণ। রোহিঙ্গারও আমাদের মতই মানুষ। তাদেরও জীবন আছে, পরিবার আছে। কিছুদিন আগে শ্রদ্ধেয় ফারুক ওয়াসিফ এর একটা লেখায় পড়েছিলাম একজন ইতালীয় দার্শনিকের কথা। একসময় রোমান সাম্রাজ্যের আইনে এক ধরণের মানুষকে “হোমো সাসের” বলা হত। এই হোমো সাসেরদের হত্যায় অপরাধ হতোনা। আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ তো ছিলই না বরং মৃত্যুর পরেও ছিলনা তাদের কোন মর্যাদা ।
আজ দেখা যাচ্ছে, কালো, মুসলিম, আরব, রোহিঙ্গা, দরিদ্র ও ক্ষমতাবঞ্চিত মানুষদের মর্যাদা হল এই হোমো সাসেরদের মর্যাদার মতো। পৃথিবীর কোনায় কোনায় এদেরকে এমনভাবে হত্যা করা হচ্ছে যেন এদের হত্যায় কোন অপরাধ নেই।
আর এই ধরনের বিচারহীনতার সংস্কৃতিই সৃষ্টি করে খারাপ উদাহরণের, যা পরবর্তীতে নির্যাতীতদের সহিংস হতে উষ্কানি দেয়।
তবে, ইতিহাসের শিক্ষা হল কী জানেন, মানুষ ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেয়না।
২| ২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:৫৯
মাহিরাহি বলেছেন: এই পোষ্টে অনেক মন্তব্য আশা করা যায়।
৩| ২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ৮:৪৩
প্রশ্নবোধক (?) বলেছেন: জ্ঞানহীন একশটা পোষ্টের চেয়ে সুচিন্তিত একটা পোষ্টই যথেষ্ট। ধন্যবাদ ব্লগারকে।
২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ১১:৫১
রেজাউল করিম বাক্বি বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকেও।
৪| ২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ১০:০২
গড়াই নদীর তীরে বলেছেন: রোহিঙ্গা বিষয়ক এই পোস্টটি স্টিকি করার দাবী জানাচ্ছি।
©somewhere in net ltd.
১|
২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:০৬
চাঁদগাজী বলেছেন:
"আবার বিশ্ববিখ্যাত মার্কিন জেনোসাইড বিশেষজ্ঞ ড. গ্রেগরি এইচ স্ট্যনটন স্পষ্ট ভাষায় বলেন, আরাকানে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে যা চলছে তাকে বর্ণনা করতে আমরা ২০১২ সালে প্রথম “জেনোসাইড” শব্দ ব্যবহার করি। "
-বিশ্ববিখ্যাত মার্কিন জেনোসাইড বিশেষজ্ঞ ড. গ্রেগরি এইচ স্ট্যনটন যা বলেছেন, টেকনাফের সাম্পানের মাঝিরা রোহিংগা জেনোসাইড সম্পর্কে আরো বেশী জানেন