নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সাধারণ একজন মানুষের কথা

রীফাত

রীফাত › বিস্তারিত পোস্টঃ

রাজনৈতিক অস্থিরতা কি বাজারের ভারসাম্য নষ্ট করে?

৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ৮:১৫

হরতাল বাজার অর্থনীতির ভারসাম্য নষ্ট করে। বাজারে সৃষ্টি হয় মনোপলী। বড় বড় মার্কেট লীডারদের মার্কেট শেয়ার (বাজার দখল বা হিস্যা) আরো বেশি হারে বাড়ে, হারিয়ে যায় ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা।
বিজনেস এর অন্যতম দুটি অবজেকটিভ হল প্রফিট ম্যাক্সিমাইজেশন ও মার্কেট শেয়ার বৃদ্ধি। দুই এর মধ্যে বিজনেস অবজেকটিভ হিসেবে মার্কেট শেয়ার বৃদ্ধি বেশি সাসটেইনেবল। আর তাই বড় বড় কোম্পানিগুলো মার্কেট শেয়ার বৃদ্ধির জন্য কোটি কোটি টাকা খরচ করে। ধরুন হঠাত করে কস্টিং এর চেয়েও কম প্রাইসিং করবে, এতে করে মার্কেট থেকে ছোট প্লেয়াররা হারিয়ে যাবে। আর ওই মার্কেট শেয়ার দখল করে ওই বড় কোম্পানি। আর যেহেতু কম্পিটিটররা হারিয়ে গেছে, competitive market আর এক্সিস্ট করবে না। মার্কেট হয়ে পড়বে ইনইফিসিয়েন্ট মার্কেট। তখন ওই বড় কোম্পানি ইচ্ছেমত প্রাইসিং করবে, মার্কেটের আচরণ হবে মনোপলিস্টিক। দেখুন, এই মনোপলিস্টিক মার্কেট কিন্তু প্রো-অ্যাকটিভলি সৃষ্টি করা হয়েছে।
সরকার যখনই তামাকের উপর ভ্যাট বাড়ায়, ব্রিটিশ আমেরিকান টোবাকো'র মার্কেট শেয়ার আরো বাড়ে। NRB টেলিকম কোম্পানিগুলোর উপর যখন নানা ট্যাক্স ইম্পোজ করে, উৎস কর বসায় জিপি'র মার্কেট শেয়ার লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ে। কারণ, এই ধরণের অভিঘাতে বড় কোম্পানি যত ভালো ভাবে সাড়া দিতে পারে ছোট কোম্পানি তা পারে না। দক্ষতা, অভিজ্ঞতা, ক্যাপিটাল এর কাছেই ছোট কোম্পানিগুলো মার খায়, এক পর্যায়ে হয় তারা মার্কেট লীডার এর কাছে বাই-আউট হয়ে যায় নতুবা ব্যবসা গুটিয়ে ফেলে।
আমাদের কৃষি ভিত্তিক ব্যবসা ঐতিহাসিকভাবে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের ব্যবসা হিসেবে পরিচিত। এই ব্যবসাগুলোর কর্পোরেটাইজেশন হচ্ছে এখন। কাজী ফার্ম, আফতাব বহুমুখী ফার্ম পোল্ট্রি হ্যাচিং ব্যবসায় নেতৃত্ব দিচ্ছে। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা যেটা করতে পারছে না সেটা হল ডাইভারসিফিকেশন, যেটা কাজী ফার্ম খুব সফলভাবে করছে। ধরুন রংপুরে এবার বার্ড-ফ্লু'র মহামারী হয়েছে। এর ফলে রংপুর'স্থ কাজী ফার্ম এর পোল্ট্রি ফার্ম যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হবে, একই সাথে ক্ষতিগ্রস্ত হবে ওই এলাকার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরাও। কিন্তু নরসিংদীতে হয়ত কাজী ফার্ম এর আরেকটা পোল্ট্রি ফার্ম আছে যেখানে বার্ড-ফ্লু হয় নি। ফলে কাজী ফার্ম সাপ্লাই চেইন এর মাধ্যমে রংপুরে তার ব্যবসা অব্যাহত রাখতে পারবে, এবং আগের চেয়ে বেশি দামেই পারবে যেহেতু ওখানকার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা মার্কেটে এক্সিস্ট করছে না। ফলে কাজী ফার্ম এর মার্কেট শেয়ার তো বাড়লই, প্রফিটিবিলিটিও বাড়ল। .
এখন ধরুন, এই বছর কোন বার্ড-ফ্লু হয় নি। তবে ব্যাপক হরতাল, অবরোধ হচ্ছে। হরতালের কারণে রংপুরের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা তাদের সাপ্লাই চেইনে যতটা ক্ষতিগ্রস্ত হবে, কাজী ফার্ম অতটা ক্ষতিগ্রস্ত হবে না; কারণ তাদের ফার্ম দেশ জুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। আমরা আশাবাদী যে একদিন হরতাল, অবরোধ বন্ধ হবে, দেশে শান্তি আসবে; কিন্তু ততদিনে ওইসব ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী হারিয়ে যাবে। আর ওই মার্কেট শেয়ার দখল করবে বড় মার্কেট প্লেয়াররা। ফলে মার্কেটের আচরণ হবে মনোপলিস্টিক। যে ছোট কোম্পানিগুলো হারিয়ে যাবে, তাদের উপর নির্ভরশীল লোকগুলো আনএমপ্লয়েড হয়ে যাবে। আর মনোপলিস্টিক মার্কেট স্বভাবতই ইনইফিসিয়েন্ট মার্কেট। বাজারে পণ্যের দাম বাড়বে লাফিয়ে লাফিয়ে, এন্ড অব দ্য ডে কনজ্যুমার তার পারচেসিং পাওয়ার হারাবে। বাই প্রডাক্ট হিসেবে পাওয়া কাস্টোমার (মূলত সাধারণ জনগন) ডিস্যাটিশফেকশন ও ইনভলান্টারি আনএমপ্লয়েড এর কাপলিং এ সৃষ্টি হবে সামগ্রিক জনসাধারণের মধ্যে অসন্তোষ। আবার শুরু হবে রাজনৈতিক ও সামাজিক অস্থিরতা।
হরতাল-অবরোধ কিভাবে মার্কেটে মনোপলি সৃষ্টি করে তা নিয়ে দারুণ ইন্টারেস্টিং একটা রিসার্চ হতে পারে।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৪:২০

বিজন রয় বলেছেন: অবশ্যই করে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.