নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

চমকে উঠি হঠাৎ..

অদ্ভূত বিষয়গুলোতে বিস্ময়াভূত হওয়া একটি চমকপ্রদ ব্যাপার!!

রীতিমত লিয়া

লেখকের লেখা কপি করার আগে একবার ভাবুন যে এটা আপনার নিজস্ব সম্পত্তি না, ইচ্ছা হলেই তা কপি করতে পারবেন না।

রীতিমত লিয়া › বিস্তারিত পোস্টঃ

ইলেকশনে দাড়াইছিলাম একবার। তারপর...

১৬ ই জুন, ২০১৩ সকাল ১১:৪২

ইলেকশনে দাড়াইছিলাম একবার। তারপর...





টিভি অন করলেই পাচ্ছি নির্বাচনী আবহাওয়া। টিভিতে নির্বাচনী রিপর্টিং দেখে ছোটকালের একটা ঘটনা মনে পড়ে গেল। আর সেটা আপনাদের সাথে শেয়ার না করে পারতেছি না। B-)



ছোটবেলায় আমরা বছরে একবার করে হলেও গ্রামের বাড়ি যেতাম। আর সেটা অবশ্যই বার্ষিক পরীক্ষা শেষে। তো তেমনি একটা সময়ে একবার গ্রামের বাড়ি গেলাম। তখন পড়ি ক্লাস ফোর কি ফাইভে। অনেকদিন পরপর গ্রামে যাওয়ায় চাচাতো ভাইবোন সবাই মুখিয়ে থাকে আমরা এলেই আমাদেরকে নিয়ে কি কি করবে? কি কি খেলবে? কোথায় কোথায় যাবে? ইত্যাদি ইত্যাদি। অর্থাত তারা সবাই আমাদের জন্য পাগল ছিল। আমরাও ছিলাম। আর আমাদের ভাইবোনদের মধ্যে ছিল খুব মিল। আমরা বেশিরভাগই সমবয়সী কিংবা কাছাকাছি বয়সের। আর যারা বড় তারা তাদের মত করে থাকত। যাহোক, সেবার এলাকায় কিসের যেন নির্বাচন চলছিল। সারাদিন কেবল মাইকিং "অমুক মার্কায় ভোট দিন, সুখে থাকুন রাতদিন", "অমুক ভাইয়ের চরিত্র ফুলের মত পবিত্র" ইত্যাদি ইত্যাদি।



একরাতে আমরা সবাই উঠানে পাটি বিছিয়ে শুয়ে বসে গল্প করছি। নিজেরা নিজেরা ভাইয়া আপুদের নাম দিয়ে নির্বাচনী স্লোগান বানাচ্ছি আর হাসাহাসি করছি। এমন সময় আমার এক ভাই প্রস্তাব দিল চল আমরাও ইলেকশন ইলেকশন খেলি। ;) ইলেকশন ইলেকশন সে আবার কেমন খেলা? এইভাবে আলোচনা করতে করতে বের করলাম যেকোন দুজন ইলেকশনে দাড়াবে আর আমরা ভোট দিব। খেলাটা মজার হবে ভেবে সবাই রাজী হলাম। ঠিক হল কাল আমরা এই খেলা খেলব। কিন্তু বিপত্তি বাধঁল কে ইলেকশনে দাড়াবে। সবাই পিড়াপিড়ি করতে লাগল আমাকে ইলেকশনে দাড়াতে হবে। :| আমি আবার ইলেকশনে কি দাড়াব? আমি তো ইলেকশন মানেই বুঝি না। তবু সবার গুতাগুতি পিড়াপিড়ি আর মন কষাকষিতে ইলেকশনে দাড়াইয়াই গেলাম! বড় আপু ভাইয়ারাও ওদের সাথে যোগ দিল। তাদের সবার একটাই যুক্তি আমি শহরে থাকি আর মাঝে মাঝে আসি, আর যারা সত্যি সত্যি ইলেকশনে দাড়ায় তারাও শহরে থাকে এবং মাঝে মাঝে গ্রামে আসে। কিন্তু সমস্যা হয়ে দাড়ালো আমার এন্টি পার্টি হবে কে? বুদ্ধিটা বের হল আমার আরেক ভাইয়ের মাথা থেকে। সে বলল, পাশের বাড়ির খোকার সাথে নাকি কিছুদিন আগে ওদের ঝগড়া ঝাটি হইছে। এইবার তাঁকে ইলেকশনে হারিয়ে উপযুক্ত শিক্ষা দেওয়া যাবে। আমি বললাম, কিন্তু আমরাই যে জিতব তাঁর গ্যারান্টি কি? ওরা বলল, “ওমা আমরা এতগুলো ভাইবোন তোকে ভোট দিব। তাইলেই তুই জিতে যাবি।” ব্যাপারটা খারাপ না ভেবে সায় দিলাম। ওদের-ই একজন প্রস্তাবটা নিয়ে খোকার কাছে গেল। খোকাও এক পায়ে খাড়া। :D



পরদিন সকাল বেলা শুরু হল আমাদের প্রচার অভিযান। একজন একটা মোটাসোটা পাইপ নিয়ে এল। আর ঐ পাইপ মুখে লাগিয়েই চিৎকার করতে লাগল, “কলম মার্কায় দিলে ভোট সুখে থাকবে দেশের লোক।” :P আমি জানতামও না মার্কা টার্কা সব ঠিক করা হয়ে গেছে। যাহোক মুটামুটি জটলা করে সবাই হেটে হেটে বাড়ি বাড়ি গিয়ে আমাদের কাছাকাছি বয়সী সবাইকে বলে এলাম আমাকে একটা ভোট দিও। ;)

ওদিকে খোকার কোন খবর নাই। ভাবলাম ও আবার মত পাল্টালো নাকি। কিন্তু না দুপুরের দিকে সেও দেখি কিছু সাঙ্গ-পাংগো নিয়ে মিছিল করতে বের হল। ওর মার্কা কি ছিল তা এই মুহুর্তে মনে পরছে না। তবে মনে আছে আমার বড় ভাইয়া বলছিল, “খোকা ফিডার মার্কায় দাড়ালেই মানাইতো”। :P

এরমধ্যে বড় আপু আর ভাইয়ারা ব্যাপক আগ্রহ নিয়ে আমাদের জন্য ব্যালট পেপার তৈরি করেছে। মাঝখানে খোকাও একবার দেখে গেল কাজ কারবার। তারপর কালি যোগার করাও হল। বড় কাকার একমাত্র ফাউন্টেন পেনের কালির বোতলটা চুরি করলাম আমার পাকা হাত দিয়ে। :) এটাই বৃদ্ধাঙ্গুলে লাগিয়ে টিপ সইয়ের মত করে ভোট দেওয়া হবে। কলা গাছের বাকল দিয়ে তৈরি করা হল থলের মত একটা বাক্স। দুপুরে খেয়ে দেয়ে আমরা সবাই চলে এলাম আমাদের বাড়ির মসজিদের সামনে। ওখানেই ইলেকশন হবে। মসজিদের পাশে একটা বড় খাল আছে আর সেই খালের একপাশ দিয়ে বয়ে গেছে একটি ছোট খাল। এই খালটাকে আমরা বলি সাব-খাল। সাব-খালের প্রস্থ পাঁচ হাত হবে। এই সাব-খাল বয়ে গেছে মসজিদের ঠিক সামনে দিয়ে। যারা ভোট নিবে তারা এই সাব-খালের ওপারে বসেছে। আর ভোটারদের লাইন ছিল এপারে। একজন একজন করে সাঁকো পার হয়ে খালের ওপারে গিয়ে ভোট দিয়ে আসবে। ওদের দল থেকে একজন আর আমাদের দল থেকে একজন গিয়ে ব্যালট বাক্স চেক করল। বাক্স ঠিকঠাক দেখার পর ভোট শুরু হল। অনেক ছেলেমেয়ে এসেছিল আগ্রহ নিয়ে ভোট দিতে। ভোটা ভুটি শেষ হয়ে গেলে গুনাগুনির পালা।

ভোট গুনে টুনে আমাদের সবার মাথায় হাত। কারণ খোকার ভোটের সংখ্যা বেশী। আমি হেরে গেলাম। ওরা আনন্দ মিছিল বের করবে তাঁর আগে আগে আমি বাঁধা দিলাম। কারণ ভাই-বোনের সংখ্যা তো আমার বেশী। ভোট কেমনে পায় খোকা বেশী? রাগে গা জ্বলে যাচ্ছে। X( বললাম, আমরা আবার ভোট চেক করব। ওরা এটা মানতে চায় না। তবুও আমরা জোর করে ভোট চেক করলাম। ব্যালট পেপার গুনে দেখা গেল যতগুলা ব্যালট পেপার ততজন ভোটারও এখানে ছিল না। যদিও ভোটারের সংখ্যা আমরা গুনি নাই। তবু চোখে দেখা একটা আন্দাজ আছে না? তারপর ভোটের কালি চেক করে দেখি আমাদের ফাউন্টেন পেনের কালি ছাড়াও আরেকটা কালি দেখা যাচ্ছে। বুঝলাম এইভাবে, ফাউন্টেন পেনের কালি নিঃসন্দেহে অনেক গাঢ় আর ঐ কালিটা কেমন নরমাল। তাঁরপরই আমরা বুঝে গেলাম খোকা ভোট চুরি করেছে। কিন্তু ওরা এটা মানতেই চায় না। তারা মিছিল বাইর করল। আমরাও তক্কে তক্কে আছি প্রতিশোধ নিব।

বাড়ি ফিরে সবাই বসে প্ল্যান করলাম। তারপর দু-তিনটে বরশি বানিয়ে আমরা খোকাদের পুকুরের একটা ঝোপের আড়ালে গিয়ে চটপট অনেকগুলো তেলাপিয়া মাছ ধরে ফেললাম। একসময় কেউ একজন দেখে ফেললে চিৎকার চেচামেচী করল। আমরা এক দৌড়ে বাড়ি চলে এলাম। পরে ভাল মানুষ সেজে আবার বাইরে বের হলাম। ছোট কাকা আমদেরকে ধরল। বলল, “ঐ পুকুর থেকে কে মাছ ধরছে রে?” আমরা পটাপট মাথা নাড়ালাম। পুকুর থেকে কে মাছ ধরছে এটা আমরা কি করে জানব? তারপর কাকা কোন একজনের নাম বলল সে নাকি খুব চেচামেচী করছে। ঐ লোক নাকি এই পুকুরটা লিজ নিয়েছে। এবার আমরা মওকা পেয়ে গেলাম। B-) ভেবেছিলাম খোকাদের পুকুর থেকে মাছ চুরি করে খোকাকে ক্ষেপাবো কিন্তু এখন তো আরো ভাল সুযোগ এল প্রতিশোধ নেবার। X(( বললাম, কে মাছ ধরছে জানি না, তবে খোকাকে দেখেছিলাম বরশি নিয়ে পুকুর পাড়ে যেতে। তারপরের কথা আর কি বলব, খোকাদের বাড়ির সামনে ঐ লোক গিয়ে ইচ্ছেমত বকাঝোকা করল খোকাকে। এমনকি খোকার মা-ও খোকাকে ধরে বেদম পিটালো। বেচাড়া খোকা তারপর থেকে আর আমাদের সাথে কথা বলত না। অবশ্য পরেরবার বাড়ি গিয়ে আবার আগের মত আমরা একসাথে খেলেছি। ঐসব কথা খোকা মনে রাখে নাই। আমরাও ভুলে গেছি ওর ভোট চুরির কথা। :):)

মন্তব্য ২৮ টি রেটিং +৮/-০

মন্তব্য (২৮) মন্তব্য লিখুন

১| ১৬ ই জুন, ২০১৩ সকাল ১১:৫১

হেডস্যার বলেছেন:
আপনে তাইলে ফেল করা চেয়ারম্যান !! ;)

১৬ ই জুন, ২০১৩ দুপুর ১২:০২

রীতিমত লিয়া বলেছেন: X(( X(( X((

২| ১৬ ই জুন, ২০১৩ দুপুর ১২:০১

মাহবু১৫৪ বলেছেন: :P :P

১৬ ই জুন, ২০১৩ দুপুর ১২:০৩

রীতিমত লিয়া বলেছেন: :P :P

৩| ১৬ ই জুন, ২০১৩ দুপুর ২:২৯

আমিনুর রহমান বলেছেন:


হেরে গেলে সবাই এমনই বলে :P :P :P

১৮ ই অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ১১:৫৯

রীতিমত লিয়া বলেছেন: X( X( X(

৪| ১৬ ই জুন, ২০১৩ দুপুর ২:৪৬

বটবৃক্ষ~ বলেছেন: হেডস্যার বলেছেন:
আপনে তাইলে ফেল করা চেয়ারম্যান !!

hhaha!! bepok moja pelam Apuni!!:):)
অনেকদিন পর লিখলেন!

১৮ ই অক্টোবর, ২০১৩ দুপুর ১২:০০

রীতিমত লিয়া বলেছেন: ধন্যবাদ। হুম অনেকদিন পর লিখলাম। :)

৫| ১৬ ই জুন, ২০১৩ বিকাল ৫:৫৪

কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
অনেকদিন পর ব্লগে আপনার লেখা পেলাম।

হেরে যাওয়ার সান্তনা এমনই হয়।

১৮ ই অক্টোবর, ২০১৩ দুপুর ১২:০১

রীতিমত লিয়া বলেছেন: :) :) :) আপনাকে ধন্যবাদ। অনেক দেরীতে উত্তর দিচ্ছি বলে দুঃখিত।

৬| ১৬ ই জুন, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:১৬

আমার মন বলেছেন: আমিও একবার দাড়াইছিলাম কাগু :-B
তো হইছিল কি! বললো বক্তব্য দিতে, আমি ইলেকশন বক্তব্যে বলে বসলাম,

ভাইসব আপনারা সবাই আমাকে একটা করে বিয়া দিবেন( ভোট দিবেন বলার কথা ছিল!)

দাদা, আব্বা সবাইতো হাসিতে............ আমি লজ্জাই :#> :#>

১৮ ই অক্টোবর, ২০১৩ দুপুর ১২:০২

রীতিমত লিয়া বলেছেন: িহিহিহিহিহি। কাহিনী আমাদের সাথে শেয়ার করেন পিলিজ।

৭| ১৬ ই জুন, ২০১৩ রাত ১০:০৭

মিজানুর রহমান মিলন বলেছেন: আপু অনেক দিন ব্লগে দেখলাম !

তাহলে আপনি হারু পার্টি B-) B-) B-)

১৮ ই অক্টোবর, ২০১৩ দুপুর ১২:০৩

রীতিমত লিয়া বলেছেন: হ্যাগো ভাইয়া হারু পার্টি। তবে এভাবে বলবেন না পিলিজ। কষ্ট লাগে ;)

৮| ১৬ ই জুন, ২০১৩ রাত ১১:৩৬

ঘুড্ডির পাইলট বলেছেন: ছোটবেলায় ভোট ভোট খেলতাম , ভোটে যে জিততো তারে চেয়ারম্যান বইলা ডাকতাম :)

১৮ ই অক্টোবর, ২০১৩ দুপুর ১২:০৪

রীতিমত লিয়া বলেছেন: সবারই দেখি একই স্মৃতি আছে। :)

৯| ১৬ ই জুন, ২০১৩ রাত ১১:৪৬

সেলিম আনোয়ার বলেছেন: মায়াবতী নীলকন্ঠি বলেছেন: কিনুদির জন্য শুভকামনা...ফতুয়া আর বেড কাভারটা জোস

১৮ ই অক্টোবর, ২০১৩ দুপুর ১২:০৫

রীতিমত লিয়া বলেছেন: B:-) B:-)

১০| ১৬ ই জুন, ২০১৩ রাত ১১:৪৮

সেলিম আনোয়ার বলেছেন: দেখেন কিসের মধ্যে কি কমেন্ট ?হাসবেন না প্লিজ ?আপনার লেখা পরে ভালই হাসছি। ভাল লিখেছেন।

১৮ ই অক্টোবর, ২০১৩ দুপুর ১২:০৬

রীতিমত লিয়া বলেছেন: আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

১১| ১৭ ই জুন, ২০১৩ দুপুর ২:৫৩

হাসান মাহবুব বলেছেন: হাহাহা! দারুণ! ছোটদের ইলেকশনেও বড়দের জটিলতা। এইজন্যেই তো আপনি 'রীতিমত' লিয়া! B-)

১৮ ই অক্টোবর, ২০১৩ দুপুর ১২:০৬

রীতিমত লিয়া বলেছেন: ধন্যবাদ......ধন্যবাদ

১২| ১৮ ই জুন, ২০১৩ বিকাল ৩:৫৮

তামিম ইবনে আমান বলেছেন: Nice :D

১৮ ই অক্টোবর, ২০১৩ দুপুর ১২:০৭

রীতিমত লিয়া বলেছেন: আপনের প্রোফাইল ছবিটা Nice :D

১৩| ১৮ ই জুলাই, ২০১৩ দুপুর ২:৫৮

ইখতামিন বলেছেন:
ইলেকশন কি এখনও শেষ হয় নাই :( ??

১৮ ই অক্টোবর, ২০১৩ দুপুর ১২:০৮

রীতিমত লিয়া বলেছেন: সামনে ইলেকশন

১৪| ১২ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ৩:১৯

দিকভ্রান্ত*পথিক বলেছেন: ৮ম প্লাস। আপনাকে অনিয়মিত দেখতে খুব খারাপই লাগে। :( :(

১৮ ই অক্টোবর, ২০১৩ দুপুর ১২:১১

রীতিমত লিয়া বলেছেন: বেশ কিছুদিনের অসুস্থতা, পরীক্ষাকালীন ব্যস্ততা ও নানা ঝুট-ঝামেলায় ইচ্ছে থাকা সত্বেও অনিয়মিত হয়ে পরছি। দেরীতে মন্তব্যের জন্য দুঃখিত।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.