নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নির্জন বিকেল

রিপন ঘোষ

যেতে চাই বহুদুর

রিপন ঘোষ › বিস্তারিত পোস্টঃ

ঘন্টু মামা (পর্ব-৬)

২৩ শে জানুয়ারি, ২০১৫ সকাল ১১:৩৮


এন্ড্রয়েড মোবাইলে ঘন্টু মামা অনেকটা মানিয়ে নিয়েছেন। এখন তিনি অনায়াসে সব ধরনের এপস ব্যবহার করতে পারেন। ফেসবুক, হোয়াটসএপ আর ক্যান্ডি ক্রাশের তো রীতিমতো প্রেমে পড়ে গেছেন। অবশ্য ঘন্টু মামাকে এন্ড্রয়েডে অভ্যস্ত করাতে আমাকে কম ঝক্কি-ঝামেলা পোহাতে হয়নি! জয়াদি তো হুকুম দিয়েই খালাস; কিন্তু আমি হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছি কতো ধানে কতো চাল। মাঝে মাঝে তো মনে হয়েছে ঘন্টু মামার মতো মানুষদের জন্য ইংলিশ লার্নিং কোর্সের মতো এন্ড্রয়েড লার্নিং কোর্স চালু করা যায় কিনা!

জয়াদি প্রথম যেদিন ঘন্টু মামাকে এন্ড্রয়েড মোবাইল উপহার দিয়েছিলেন সেদিন ঘন্টু মামার চেহারা দেখার মতো হয়েছিল। মানুষ দামী উপহার পেলে খুশী হয় আর আমার ঘন্টু মামা হয়েছিলেন ভয়ার্ত আর বিরক্ত। ঘন্টু মামা ঠিকই আন্দাজ করেছিলেন তার ওপর নজরদারী করতেই জয়াদির এতো আয়োজন।

ঘন্টু মামার ফেসবুক প্রোফাইলে অবিবাহিত মেয়েদের প্রবেশাধীকার নিষিদ্ধ। বিশেষ পদাধীকার বলে জয়াদি এই নিষেধাজ্ঞা জারী করে রেখেছেন। জয়াদির ধারনা সুন্দরী মেয়েরা যখন-তখন এরকম বাউন্ডুলে মানুষের প্রেমে পড়ে যায়। ঘন্টু মামার প্রতি জয়াদির কঠোর হুশিয়ারি কোনভাবেই যেন ফ্রেন্ডলিস্ট হাইড করে রাখা না হয়। অর্থাৎ ঘন্টু মামার প্রোফাইল সবসময় গোয়েন্দা নজরদারীতে থাকে।

জয়াদির এসব কর্মকান্ড দেখে একদিন বললাম, এতো কষ্ট করার কী দরকার! ঘন্টু মামার ফেসবুক পাসওয়ার্ড তুমি জেনে নিলেই হয়। তখন ঘন্টু মামার সকল একটিভিটিজ তুমি ভালোভাবে পর্যবেক্ষন করতে পারবে।

আমার কথা শুনে জয়াদি আমার দিকে এমনভাবে তাঁকালেন যে, আমি আর কোন কথা বলতে সাহস পেলাম না। একটা ব্যাপার আমার মাথায় কিছুতেই ঢুকেনা সুন্দরী মেয়েরা এতো রাগী হয় কেন! তবে জয়াদির কাঠিন্যের মধ্যেও যে জিনিসটা স্পষ্ট বুঝা যায় তা হলো ঘন্টু মামাকে তিনি অনেক ভালোবাসেন। ঘন্টু মামার অনিশ্চিত ভবিষত নিয়েই তার যতো দুঃশ্চিন্তা।

একটু আগে ঘন্টু মামা ভাইবারে কল দিয়েছেন। আজকাল মোবাইল ব্যালেন্স খরচ করতে ঘন্টু মামার বড্ড অনীহা। কল রিসিভ করতেই বললেন, তুই এক্ষুনি আমার বাসায় চলে আয়। জয়ার বাসায় আজ দুপুরে খাওয়ার নিমন্ত্রণ।

খাওয়ার নিমন্ত্রণ শুনে আমি প্রমাদ গুনলাম। ঘন্টু মামার রাক্ষুসে খাই খাই স্বভাবের জন্য আমাকে বেশ কয়েকবারই অস্বস্তির মুখোমুখি হতে হয়েছে। আজ আবার কোন পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয় এই ভেবে আমি বললাম, আমি এখনো স্নান করিনি। এছাড়া আমার একটু জ্বর জ্বর লাগছে। আমি যেতে পারবোনা।

ঘন্টু মামা বললেন, ওই ব্যাটা ফাজিল। আমাকে হাঁদারাম পেয়েছিস? এই বলছিস স্নান করবি আবার বলছিস জ্বর! জ্বর হলে কেউ স্নান করে নাকি!

আমি সামলে নিয়ে বললাম, জ্বর হলে স্নান করতে বাধা কোথায়! বরং জ্বরের মধ্যে ঠান্ডা জল দিয়ে স্নান করলে জ্বর আরো তাড়াতাড়ি পালায়।

ঘন্টু মামা বললেন, কানের নিচে একটা লাগাবোনা। আমাকে শেখাচ্ছিস! জ্বর হোক আর যাই হোক এক্ষুনি আয়! না আসলে বাসা থেকে টেনে আনবো।

আমাকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই ঘন্টু মামা কল কেটে দিলেন। অনিচ্ছাসত্ত্বেও আমাকে বেরুতে হলো। তবে আসন্ন দুর্যোগের কথা চিন্তা করে ঢোক গিললাম।

ঘন্টু মামা সবসময়ই ফ্যাশন সচেতন। এদিক দিয়ে ঘন্টু মামা আমাদেরও আইকন। ঘন্টু মামা আজ চকোলেট রঙের পাঞ্জাবি পড়েছেন। ক্লীন সেইভ, চুল পরিপাটী করে আছড়ানো। গা থেকে সুগন্ধী পারফিউমের গন্ধ ভেসে আসছে। আমি বললাম, যা লাগছে না তোমায়! জয়াদি আজ নতুন করে আবার তোমার প্রেমে পড়ে যাবে।

ঘন্টু মামা আর আমি কথা বলতে বলতে জয়াদির বাসায় হাজির হলাম। দরজা খোলাই ছিলো। কষ্ট করে বেল টিপতে হলোনা। ঘন্টু মামা মোটা পর্দা সরিয়ে ভেতরে তাঁকিয়ে বললেন, আসতে পারি।

ড্রয়িং রুমে কেউ ছিলোনা। ঘন্টু মামার গলার আওয়াজ পেয়ে পাশের রুম থেকে জয়াদি প্রায় দৌড়ে এলো। জয়াদিকে দেখে আমার টাসকি খাওয়ার জোগাড়। জয়াদি লালের মধ্যে কালো ডোরা কাটা শাড়ি পড়ে আছে। মুখমন্ডলে হালকা প্রসাধনী আর সদ্য স্নান সেরে আসা ভেজা চুলে জয়াদিকে একদম অপ্সরার মতো দেখাচ্ছে। জয়াদির চেহারা থেকে একটা স্বর্গীয় সৌন্দর্য্য ঠিকরে পড়ছে।

বেশ খানিকক্ষন স্থির দাঁড়িয়ে থেকে ঘন্টু মামা বললেন, জয়া তুমি তো দিনকে দিন অসামাজিক হয়ে যাচ্ছো!

ঘন্টু মামার কথা শুনে জয়াদি আর আমি দুজনেই মারাত্বকভাবে বিষ্মিত। নিমন্ত্রন খেতে এসে এটা আবার কেমন কথা! এ কথায় জয়াদি কী রি-একশন দেখায় আমি ভাবিত হলাম। জয়াদি নিজের চেহারায় যথেষ্ট বিষ্ময় ফুঁটিয়ে জিজ্ঞেস করলো, আমি আবার কী করলাম!

ঘন্টু মামা বললেন, কতোক্ষণ হলো বাইরে দাঁড়িয়ে আছি। এখনও ভেতরে আসতে বলোনি!

জয়াদি নিজের ভুল বুঝতে পেরেছেন এমন ভঙ্গিতে বললেন, আসো আসো।

ঘরে ঢুকে ঘন্টু মামা চারদিক তাঁকিয়ে বললেন, কাকীমা কোথায়?

জয়াদি উত্তর দিলেন, মা রান্নাঘরে।

ঘন্টু মামা জয়াদির দিকে একদৃষ্টে খানিকক্ষণ তাঁকিয়ে রইলেন। আমার সামনে ঘন্টু মামা এভাবে তাঁকিয়ে আছেন দেখে জয়াদি কিছুটা অস্বস্তিবোধ করছেন। ঘন্টু মামা বললেন, তোমাকে আজ বেশ ভালো লাগছে। কপালে একটা ছোট্ট টিপ থাকলে আরেকটু ভালো লাগতো।

জয়াদি লজ্জ্বা পেয়ে বলল, কী শুরু করেছো? তোমরা বসো। আমি আসছি।

জয়াদি চলে যেতেই আমি ঘন্টু মামাকে বললাম, আমাকে না নিয়ে এলেই ভালো করতে। জয়াদি একান্তে তোমাকে নিমন্ত্রণ করেছেন।

ঘন্টু মামা বললেন, ধুর ব্যাটা হাঁদারাম। যদিও তুই আস্ত একটা আমড়া কাঠের ঢেঁকি তারপরও তোকে ছাড়া আমার চলেই না।

ঘন্টু মামা প্রকাশ্যে আমাকে অপমান করছে দেখে আমি বিরক্ত হয়ে বললাম, আমি চললাম। আর তোমার সাথে কোথাও যাবোনা।

আমি উঠতে যাবো এমন সময় জয়াদি ফিরে এলেন। জয়াদিকে দেখে ঘন্টু মামা বললেন, দেখো জয়া, মুন্না নাকি চলে যাবে!

জয়াদি আমার দিকে তাঁকিয়ে জিজ্ঞেস করলেন, কীরে কী হয়েছে? তুইও আজকাল ভাব দেখানো শুরু করেছিস নাকি!

আমি আমতা আমতা করতে লাগলাম। সত্যি কথা বললে জয়াদি ঘন্টু মামার ওপর চড়াও হবে। আমার সামনে ঘন্টু মামাকে নাস্তানুবাদ হতে দেখলে আমার খারাপ লাগবে তাই আমি মৃদু হাসি দিয়ে ব্যাপারটা এড়িয়ে গেলাম।

হঠাত ঘন্টু মামা জয়াদিকে বললেন, আজ কোন উপলক্ষ্য ছাড়াই হঠাত খাওয়ার নিমন্ত্রন যে?

জয়াদি বললেন, খাওয়ার জন্য কোন উপলক্ষ্যের দরকার আছে কী? আর তাছাড়া তোমার মতো খাদক মানুষের আবার উপলক্ষ্য কীসের!

ঘন্টু মামা হেসে বললেন, যদিও তুমি এইমাত্র আমাকে অপমান করলে তারপরও আমি গায়ে কিছু মাখলাম না। আমার খুব জানতে ইচ্ছে করছে হঠাত কেন খেতে বললে?

জয়াদি বললেন, আমার ইচ্ছে হয়েছে তাই খেতে বলেছি। হেভ ইউ এনি প্রভলেম? ইফ ইউ হেভ এনি প্রবলেম প্লীজ এক্সপ্লেইন মী।

জয়াদির ইংরেজী শুনে ঘন্টু মামা যারপরনাই বিরক্ত হয়ে বললেন, তোমাকে কতোদিন বলেছি ওসব ইংলিশ-ফিংলিশ সব আমার এন্টেনার ওপর দিয়ে যায়।

জয়াদি বললেন, ঠিক করেছি আজ তোমার সাথে ঝগড়া করবোনা। কাজেই আমার মেজাজটা বিগড়ে দিওনা প্লীজ।

ঘন্টু মামা বললেন, আবার ইংলিশ!

জয়াদি চরম বিরক্ত হয়ে বললেন, আরে বাবা প্লীজ, স্যরি এসব খুব সাধারন হয়ে গেছে।

এমন সময় জয়াদির বাবা ভেতরের ঘর থেকে বেরিয়ে এলেন। ঘন্টু মামাকে দেখে তিনি বললেন, কীরে অকালকুষ্মান্ড তুই কখন এলি?

জয়াদির বাবা ঘন্টু মামাকে অকালকুষ্মান্ড বলায় আমার ভালো লাগলো। আমাকে অপদার্থ বলার মজা নিজে বুঝুক এবার! তবে সেই সাথে আরেকবার নিশ্চিত হলাম জয়াদি আর ঘন্টু মামার মিলনে যদি কেউ ভিলেন হয়ে দাঁড়ায় তবে একমাত্র তিনি জয়াদির বাবাই।

হবু শ্বশুর মশাইয়ের এমন সম্বোধন ঘন্টু মামা গায়ে খুব একটা মাখলেন বলে মনে হলোনা। তিনি দাঁত কেলিয়ে বললেন, কাকু কী কোথাও বেরোচ্ছেন?

জয়াদির বাবা অরুনোদয় বণিক পায়ে মুজো পড়তে পড়তে বললেন, পায়ে মুজো পড়ে কেউ নিশ্চয় বাড়িতে ঢেং ঢেং করে হেঁটে বেড়ায় না?

জয়াদির বাবা বেরিয়ে যেতেই ঘন্টু মামা বললেন, তোমার বাবা এতো খাটাশ কেন! উনার নাম অরুনোদয় না রেখে অরুনঅস্ত রাখা উচিত ছিলো।

আমি ভেবেছিলাম ঘন্টু মামার কথায় জয়াদি প্রবলভাবে আপত্তি জানাবে। কিন্তু আমাকে অবাক করে দিয়ে জয়াদি একটা মিষ্টি হাসি দিলেন মাত্র।

ঘন্টু মামা আর জয়াদিকে একান্তে কথা বলার সুযোগ দিয়ে আমি পাশের ঘরে চলে গেলাম। অনেকক্ষণ পর জয়াদির মা আমাদের খেতে ডাকলেন। খেতে বসে ঘন্টু মামা বললেন, কাকিমা আপনারাও বসে পড়ুন।

ঝর্না কাকিমা থালা এগিয়ে দিতে দিতে বললেন, বাব্বা ঘন্টু তুই তো বেশ ভদ্রতা শিখে গেছিস!

“কাকিমা কথায় আছেনা, সৎ সঙ্গে স্বর্গ বাস।” বলেই ঘন্টু মামা জয়াদির দিকে তাঁকিয়ে মুচকি হাসলো।
জয়াদি ভ্রু কুঁচকে ঘন্টু মামার মুচকি হাসিকে সোজা বাউন্ডারি সীমানা পার করে বললেন, বেশী বকোনা। খেতে শুরু করো।

ঘন্টু মামা ঘো ধরলেন, তোমরা না বসলে আমি খাবোনা। অগ্যতা জয়াদিকে আমাদের সাথে বসতে হলো।

টেবিল জুড়ে খাবার আর খাবার। হরেক রকম খাবারের গন্ধে পুরো ডাইনিং রুম মৌ মৌ করছে। খাবারের মাতাল করা গন্ধে আমি যতোটা উচ্ছ্বসিত, ঠিক ততোটাই উৎকণ্ঠিত ঘন্টু মামাকে নিয়ে। জয়াদি আমাদের প্রথমেই আমাদের পাতে নাজিরশাইল চালের ভাত তুলে দিলেন। সাদা ভাত অথচ কি সুন্দর গন্ধ। প্রথমেই বেগুন বড়া আর মুগডাল দিয়ে এক গ্রাস গলধঃকরন করলাম। জয়াদি একেক আইটেম তুলে দিচ্ছেন আর আমরা তৃপ্তি সহকারে খাচ্ছি। এখন পর্যন্ত ঘন্টু মামা সংযত আচরণ করছেন। দাঁত দিয়ে মাংস ছিড়তে ছিড়তে তিনি বললেন, আহ! কি অমৃত! কাকিমার হাতের রান্না এতো ভালো জানা ছিলোনা! কাকিমা এখন থেকে নিয়মিত খেতে ডাকবেন কিন্তু।

ঝর্না কাকিমা হেসে বললেন, এ কী আর রাঁধলাম! আমার স্পেশাল রান্নাগুলো তোদের আরেকদিন রেঁধে খাওয়াবো।

ঘন্টু মামার উপস্থিত বুদ্ধির প্রশংসা করতেই হয়। মহিলাদের রূপ আর রান্নার প্রশংসা করলে তারা একেবারে গলে গলে পড়ে। এবার ঘন্টু মামা যতো বেশীই খাননা কেন ঝর্না কাকিমা কিছু মনে তো করবেনই না উলটো গর্ব করে বলে বেড়াবেন, আমি এমন রান্না করেছিলাম যে ঘন্টু কবজি ডুবিয়ে খেয়েছে!

জয়াদি খাসির রেজালা ঘন্টু মামার পাতে তুলে দিতেই ঘন্টু মামা বলে উঠলেন, কী শুরু করেছো! এতো খেলে চলবে কীভাবে?

জয়াদি আমার দিকে তাঁকিয়ে বললেন, এ কীরে মুন্না! এ দেখি ভুতের মুখে রাম নাম!

ঘন্টু মামা গায়ে কিছু না মেখে বললেন, খেতে আমি ভালোবাসি ঠিক, তাই বলে আমাকে রাক্ষস ভেবোনা।

পাশ থেকে জয়াদির মা বললেন, এই জয়া তুই কী শুরু করেছিস! ছেলেটাকে ইচ্ছে মতো খেতে দে।

জয়াদি বললেন, খাও ঘন্টু সোনা খাও।

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ২৬ শে জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১২:১৫

অঘটনঘটনপটীয়সী বলেছেন: ঘন্টু মামার গল্প আরো চলুক। :)

২| ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১:৫৯

প্রামানিক বলেছেন: রিপন, আরো পর্ব আছে না এখানেই শেষ। সবগুলো পর্বই পড়েছি। তৃপ্তি মিটে নাই।

৩| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১২:৪০

বিজন রয় বলেছেন: সিরিজটি থামিয়ে দিলেন কেন? আবার শুরু করুন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.