![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
"দেখুন আপনি শুধু শুধুই আমাকে সবসময় কথা শোনান, আমি যে কাজগুলো করিনি সেগুলোর জন্যেও আমাকে কথা শুনতে হয় আপনার কাছ থেকে; আমার এরকম একদমই পছন্দ নয়। আমার কাছে আপনার আচরণগুলো বড্ড বাড়াবাড়ি রকমেরই মনে হয়..! প্লিজ, দরকার হলে আমার সাথে আপনি যোগাযোগ করাই বন্ধ করে দিন, তবুও এমন করবেন না। আমি এরকম আচরণে অভ্যস্ত নই!"
এক নি:স্বাসে যেন ভিতরে জমিয়ে রাখা সব বিরক্তি,রাগ আর আক্ষেপগুলো প্রকাশ করে দেয় ভোর। কথাগুলো শুনে রাশেদের মাথা নিচু হয়ে যায়। একরকম অদ্ভুত শূন্যতায় ভরে যায় যেন ওর চারপাশ। এরকম শূন্যতাবোধ রাশেদ তার সমগ্র জীবনে খুব কমই অনুভব করেছে। খুব ছোটবেলায় গ্রামের এক বৃদ্ধার কবরে তিন মুঠ মাটি দিতে দিতে ওর ভেতরটায় কেমন যেন একটা শূন্যতা তৈরি হয়েছিল। ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষায় যখন রেজাল্ট খুব খারাপ হয়েছিল রাশেদের, তখনও যেন শূন্যতা ওকে গ্রাস করে নিয়েছিল। কিন্তু, আজকের এই শূন্যতাটা একটু বেশিই অদ্ভুত! এই শূন্যতার সাথে বুকের কোথাও সদ্য জন্মানো সুক্ষ্ম চিনচিনে ব্যাথার চমৎকার একটা বন্ধন আছে যেন। এই শূন্যতা আর বুকের কষ্টগুলো দল বেধে যেন রাশেদের শ্বাসপ্রশ্বাসের স্বাভাবিক ক্রিয়াতেও আজ ব্যাঘাত ঘটাতে চাইছে ক্রমশ।
তবে না! রাশেদ চায়না সবার মত ভোরও ওকে ভুল বুঝুক। তাই আর মৌনতা নয়। আজ না হয় ভোরকে বুঝিয়েই বলবে সব! ওতো কিছু ভুল করেনি, শুধু ভোরকে নিজের করে পেতে চেয়েছে! ভোর শুধু শুধুই যে কেন ওকে ভুল বুঝছে সেটাই বরং রাশেদ বুঝে উঠতে পারছে না! ভালোবাসাটা কি অন্যায়? ভালোবাসার মানুষটাকে দেখতে চাওয়াটাও কি অন্যায়? ভালোবাসার পবিত্রতায় ভোরকে বাঁধার মনবাসনাটা কি পাপ? নাহ, আজ রাশেদকে ওর সবগুলো কথা বলতেই হবে। যদি তাতে ওকে আরও অপমান হতে হয় তবে তাই সই! নিজের ভালোবাসার কথাগুলো এতটা দিন ধরে নিজের বুকের মাঝে চেপে রেখেইবা কতটা সুখে আছে ও? এর চাইতে ভালো আজই এসপারওসপার হয়ে যাক। তবুও আজ মনের গহীনে জমিয়ে রাখা স্বপ্নগুলোকে সে আজ পরিপূর্ণতা দেয়ার চেষ্টা করবেই। এরকম শত-শত এলোপাথাড়ি ভাবনাগুলোকে একত্রিত করে কিছুটা শক্তির সঞ্চার করে রাশেদ। মাথা নিচু করেই বলতে শুরু করে,
- দেখ, আমি জানিনা আমি তোমাকে কীভাবে কষ্ট দিয়েছি। তবুও তোমার সবগুলো অভিযোগ আমি মাথা পেতে নিচ্ছি। তবে আজ আমি তোমায় কিছু বলতে চাই। জানি, তোমার ভালো লাগবেনা, তবুও! শোনো..
এটুকু বলেই রাশেদ ভোরের চোখের দিকে মুখ তুলে তাকায়..! মুহুর্তেই সব গুছিয়ে রাখা ভাবনাগুলো যেন এলোমেলো হয়ে যায় রাশেদের।
ভোর কি আজ চোখে কাজল দিয়েছে? এমন অদ্ভুত মায়াবী চোখ মানুষেরও হয় বুঝি? এ যেন ভালোবাসার রাজ্য থেকে নেমে আসা সাক্ষাত অপ্সরী! এতটা কাছ থেকে দেখে যেন ভোরের আসল রঙটা আজ রাশেদের চোখে পরে। বাংলায় একটা বিশেষণ আছে, 'দুধে আলতা'! এই কি সেই রঙ? আর ঠোঁট? লাস্যময়ী ঠোঁট জীবনে রাশেদ অনেকই দেখেছে! কই, কোন ঠোঁট দেখেতো সেই ঠোঁটের কোণে চুমু একে দিতে ইচ্ছে হয়নি কোনদিন! তবে, আজ কেন...? এসব ভাবতে ভাবতেই হঠাৎ ভোরের কথায় রাশেদের কল্পনার জগতের সুতো ছিঁড়ে যায় যেন..
- বলুন? শোনো বলে চুপ করে আছেন কেন?
রাশেদ মনে মনে হাসে। নাহ, কথাগুলো আর বলার প্রয়োজন মনে করছে না রাশেদ। এতটা কাছ থেকে ও ভোরকে কখনোই দেখেনি আগে। আজ খুব কাছ থেকে দেখে রাশেদের ভ্রম ভেংগে যায়। দূর থেকে দেখে এতদিন ও ভোরকে সুন্দর ভেবেছিল, কল্পনার জালে চমৎকার বুননে বাসাও বেধেছিল। কিন্তু আজ এতটা কাছ থেকে দেখে রাশেদের সকল ভুল ভেঙে গিয়েছে। ছেঁড়া কাথায় শুয়ে শুয়ে ও যে এতদিন লাখ টাকার স্বপ্ন দেখে আসছিলো সেটা খুব ভালোভাবেই বুঝতে পারে ও। ওর ঘরে সর্বোচ্চ ভালোবাসার রাজ্যের সামান্য দাসী বউ হয়ে আসতে পারে, তাও সেটা হলে হবে প্রচন্ড ভাগ্যগুণে! তাই বলে রাশেদ যদি ভালোবাসার দেবি ভেনাসকেই চেয়ে বসে তবে সেটা নিশ্চয়ই বাড়াবাড়িই হয়ে যাবে? এটা যে স্বপ্নেও দু:সাহস করার মত কিছু..!! তাই নিজের ভাবনাগুলোকে নিজেই নাকচ করে দিয়ে মাথা নাড়ায় রাশেদ, ভোরের দিকে তাকিয়ে বলে ওঠে..
- আমি এমনই! সবাই বলে..! আমি খারাপ। আর খারাপ মানুষরাতো এমনই করবে..! তবে হ্যাঁ, আমি খুবই দু:খিত। কথা দিচ্ছি, এমনটা আর কখোনই হবেনা। ভালো থেকো তুমি ভোর........
কথাগুলো বলেই দরজা দিয়ে বের হয়ে যায় রাশেদ। বিরক্ত চোখে কিছুক্ষণ খোলা দরজার দিকে তাকিয়ে থাকে ভোর। মনে মনে 'Idiot' গালি দিতে দিতে দরজাটা ভেজিয়ে পড়ার টেবিলের দিকে এগিয়ে যায় ও। কাল কয়েকটা আইটেম আছে ওর, এসব ফালতু মানুষের জন্য সময় নষ্ট করার কোন মানেই হয়না এখন!
২| ১৫ ই আগস্ট, ২০১৬ বিকাল ৩:১৬
আহারু বলেছেন: ছোট গল্পেতো বৈশিষ্ট্যই এই. ঐযে কবিগুরুর সংজ্ঞায় '..শেষ হয়েও হইলোনা শেষ..!'
©somewhere in net ltd.
১|
১৫ ই আগস্ট, ২০১৬ সকাল ৯:০৬
আলগা কপাল বলেছেন: আগামাথা কিছুই বুজলাম না। প্রারম্ভের কথাগুলো আরেকটু পরিষ্কার হলে ভাল হত। শেষটুকু চমৎকার। সবসময় বড় বড় উপন্যাস আর গল্প পড়ে অভ্যস্ত তো তাই ছোট কিছু পড়লে মনে হয় আরেকটু থাকলে ভাল হত। খিসু মনে খরিয়েন না বাই।