নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

রক্ত দান করুন জীবন বাাঁচান

রক্ত দান

অতি সাধারণ

রক্ত দান › বিস্তারিত পোস্টঃ

মুসলিম স্কলারগণ! বিভিন্ন পথ নয়, বরং অভিন্ন পথের কথা বলবেন

০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ দুপুর ১২:৩৪



সূরাঃ ৬ আনআম, আয়াত নং ১৫৩ এর অনুবাদ-
১৫৩। আর এপথই আমার সিরাতাম মুসতাকিম (সরল পথ)। সুতরাং তোমরা এর অনুসরন করবে, এবং বিভিন্ন পথ অনুসরন করবে না, করলে তা’ তোমাদেরকে তাঁর পথ হতে বিচ্ছিন্ন করবে। এভাবে আল্লাহ তোমাদেরকে নির্দেশ দিলেন যেন তোমরা সাবধান হও।

# ৬ আনআম, ১৫৩ নং আয়াতের তাফসির - তাফসিরে ইবনে কাছির
১৫৩। আব্বদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত আছে যে, একবার রাসূলুল্লাহ (সা.) মাটিতে স্বহস্তে একটি রেখা টানেন, তারপর বলেন, এটা হচ্ছে আল্লাহর সরল সোজা রাস্তা। এরপর তিনি ডানে ও বামে আরো কতগুলো রেখা টানেন এবং বলেন, এ গুলো হচ্ছে ঐসব রাস্তা যেগুলোর প্রত্যেকটির উপর একজন করে শয়তান বসে রয়েছে এবং ঐ দিকে (মানুষকে) আহবান করছে। এরপর তিনি ‘ওয়া আন্না হাযা সিরাতি মুসতাকিমান ফাত্তাবিউহু - আর এপথই আমার সিরাতাম মুসতাকিম (সরল পথ)। সুতরাং তোমরা এর অনুসরন করবে। আয়াতটি তেলাওয়াত করেন।
সত্য যখন একটি, তখন সত্য পথও একটি। অপর দিকে অসত্য একাধিক এবং এর পথও অনেক –ইবনে কাছির।

সহিহ সুনানে ইবনে মাজাহ, ১১ নং হাদিসের (অবতরনিকা অধ্যায়) অনুবাদ-
১১। হযরত জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা নবি করিমের (সা.) কাছে উপস্থিত ছিলাম। তিনি প্রথমে একটি সরল রেখা টানলেন এবং তার ডান দিকে দুটো সরল রেখা টানলেন এবং বাঁ দিকেও দুটো সরল রেখা টানলেন। অতঃপর তিনি রেখার মধ্যবর্তী স্থানে হাত রেখে বললেন, এটা আল্লাহর রাস্তা। এরপর তিনি এ আয়াত তেলাওয়াত করলেন, ‘আর এপথই আমার সিরাতাম মুসতাকিম (সরল পথ)। সুতরাং তোমরা এর অনুসরন করবে, এবং বিভিন্ন পথ অনুসরন করবে না, করলে তা’ তোমাদেরকে তাঁর পথ হতে বিচ্ছিন্ন করবে’। -(সূরা আল আনআমঃ ১৫৩)

* বিভিন্ন পথ ইসলামের পথ নয়। সুতরাং মুসলিম স্কলারগণ বিভিন্ন পথের কথা বলবে না। বিভিন্ন পথের কথা বলে শয়তান।

সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ১০৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
১০৩। তোমরা একত্রে আল্লাহর রজ্জু দৃঢ়ভাবে ধর! আর বিচ্ছিন্ন হবে না। তোমাদের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ স্মরণ কর।যখন তোমরা শত্রু ছিলে তখন তিনি তোমাদের অন্তরে প্রীতি সঞ্চার করেছেন, ফলে তাঁর দয়ায় তোমরা পরস্পর ভাই হয়ে গেলে।তোমরাতো অগ্নি কুন্ডের প্রান্তে ছিলে, আল্লাহ উহা হতে তোমাদেরকে রক্ষা করেছেন। এভাবে আল্লাহ তোমাদের জন্য তাঁর নিদর্শনসমূহ স্পষ্টভাবে বিবৃতকরেন যাতে তোমরা সৎপথ পেতে পার।

# সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ১০৩ নং আয়াতের তাফসির - তাফসিরে ইবনে কাছির
বেশ কয়েকটি হাদিসে এমন বর্ণিত রয়েছে- একতার সময় মানুষ ভুল ও অন্যায় থেকে রক্ষা পায়। আবার অনেক হাদিসে মতানৈক্য থেকে ভয় প্রদর্শন করা হয়েছে, কিন্তু এতদ সত্ত্বেও উম্মতের মধ্যে মতপার্থক্য ও অনৈক্যের সৃষ্টি হয়ে গেছে এবং তাদের মধ্যে তেয়াত্তরটি দল হয়েগেছে, যাদের মধ্যে একটি দল মাত্র জান্নাতে প্রবেশ করবে এবং জাহান্নামের আগুনের শাস্তি থেকে মুক্তি পেয়ে যাবে। এরা ঐসব লোক যারা এমন বস্তুর উপর প্রতিষ্ঠিত রয়েছে যার উপর স্বয়ং রাসূল (সা.) ও তাঁর সাহাবীগণ (রা.) প্রতিষ্ঠিত ছিলেন।

* অভিন্ন পথ ইসলামের পথ। সুতরাং মুসলিম স্কলারগণ অভিন্ন পথের কথা বলবেন।

সূরাঃ ২১ আম্বিয়া, ৭৮ নং ও ৭৯ নং আয়াতের অনুবাদ-
৭৮। আর স্মরণ কর দাউদ ও সুলায়মানের কথা, যখন তারা বিচার করতেছিল শস্যক্ষেত্র সম্পর্কে, তাতে রাত্রিকালে প্রবেশ করেছিল কোন সম্প্রদায়ের মেষ; আমরা প্রত্যক্ষ করতেছিলাম তাদের বিচার।
৭৯। আর আমরা এ বিষয়ে সুলায়মানকে মীমাংসা বুঝিয়ে দিয়েছিলাম এবং তাদের প্রত্যেককে আমরা দিয়ে ছিলাম প্রজ্ঞা ও জ্ঞান। আমরা পর্বত ও পাখীদেরকে অধীন করে দিয়েছিলাম, উহারা দাউদের সঙ্গে আমাদের পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করতো; আমরাই ছিলাম এ সমস্তের কর্তা।

সহিহ আল বোখারী, ৩১৮১ নং হাদিসের (আম্বিয়া কেরাম অধ্যায়) অনুবাদ-
৩১৮১। হযরত আবু হোরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি রাসূলুল্লাহকে (সা.) বলতে শুনেছেন, ‘আমারও অন্যান্য মানুষের উদাহরণ হলো এরূপ, যেমন এক ব্যক্তি অগ্নি প্রজ্বলিত করল, তাতে ঝাঁকে ঝাঁকে কীট ও পতঙ্গ পড়তে লাগল। রসূলুল্লাহ (সা.) প্রসঙ্গত বললেন, দুজন মহিলা ছিল, তাদের দু’টি শিশু সন্তানও ছিল। হঠাৎ একটি বাঘ এসে তাদের একজনের শিশু সন্তানটিকে নিয়েগেল। তখন একে অপরকে বলল তোমার শিশুকে নিয়েছে।দ্বিতীয় মহিলা বলল, বাঘে নিয়েছে তোমার শিশু।তখন উভয় মহিলা দাউদের (আ.) নিকট বিচার প্রার্থী হল। হযরত দাউদ (আ.) অধিক বয়স্ক মহিলার পক্ষে রায় দিলেন। মহিলা দ্বয় বের হয়ে সুলায়মানের (আ.) নিকট দিয়ে অতিক্রম করছিল। তারা তাঁকে মামলার রায় শুনাল। তখন তিনি বললেন, তুমি একটি ছোরা নিয়ে আস আমি শিশুটিকে দ্বিখন্ডিত করে উভয়ের মধ্যে বন্টন করে দেব।বয়ঃকনিষ্ঠা মহিলা বলে উঠল, আল্লাহ আপনাকে রহম করুন। এরূপ করবেন না। শিশুটি তারই। তখন তিনি বয়ঃকনিষ্ঠা মহিলার পক্ষে রায় প্রদান করলেন। হযরত আবু হুরাইরা (রা.) বলেন, আল্লাহর কসম ছুরি অর্থে ‘সিক্কিনুন’ শব্দ আমি আজই শুনলাম। আমরাতো ছুরিকে ‘মুদিয়াতুন’ বলতাম।

* অভিন্ন পথ হলো মতভেদের মীমাংসার পথ। সেজন্য হানাফী স্কলারগণ মতভেদের কথা বলে তারপর বলেন, এ মতের উপর ফতোয়া। কেউ কেউ মতভেদের কথা বলে ফতোয়ার কথা না বলে নিজমতের কথা বলে, ফলে কেউ কেউ তাদের অনুসারী হয়ে মুসলিমদের মাঝে দলের সংখ্যা বাড়িয়ে চলছে। এরা মূলত মানুষের চেহারায় বিদ্যমান শয়তান।

আয়াতের হেদায়াত হলো একমত হওয়া। সেজন্য হানাফীগণ সাহাবা (রা.), তাবেঈ ও তাবে তাবেঈগণের সর্ববৃহৎ দলের সাথে একমত হয়েছেন। আর এটাই মহানবির (সা.) হেদায়াত।

সহিহ সুনানে ইবনে মাজাহ, ৩৯৫০ নং হাদিসের (ফিতনা অধ্যায়) অনুবাদ-
৩৯৫০। আনাস ইবনে মালেক (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহকে (সা.)বলতে শুনেছি আমার উম্মত পথভ্রষ্টতার উপর একত্রিত হবে না। যখন তোমরা উম্মতের মাঝে মতপার্থক্য দেখতে পাবে, তখন সর্ববৃহৎ দলের সাথে সম্পৃক্ত থাকবে।

* সাহাবা (রা.), তাবেঈ ও তাবে তাবেঈগণকে উম্মত নয় বলার সুযোগ নেই। তাঁদের সর্ববৃহৎ দল অবশ্যই সঠিক। সংগত কারণে তাঁদের সর্ববৃহৎ দলের অনুসারী হিসাবে হানাফীরা অবশ্যই সঠিক। তাঁদের সর্ববৃহৎ দলের অনুসারী হওয়ার কারণে অদ্যাবধি হানাফীরা উম্মতের সর্ববৃহৎ দল হিসাবে সঠিক আছে।

# সাহাবা (রা.)

সূরাঃ ৪৮ ফাতহ, ২৯ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৯। মোহাম্মাদ আল্লাহর রাসুল; তাঁর সহচরগণ কাফিরদের প্রতি কঠোর এবং নিজেদের মধ্যে পরস্পরের প্রতি সহানুভূতিশীল; আল্লাহর অনুগ্রহ ও সন্তুষ্টি কামনায় তুমি তাদেরকে রুকু ও সিজদায় অবনত দেখবে।তাদের লক্ষণ তাদের মুখমন্ডলে সিজদার প্রভাব পরিস্ফুট থাকবে: তওরাতে তাদের বর্ণনা এরূপ এবং ইঞ্জিলেও তাদের বর্ণনা এরূপই। তাদের দৃষ্টান্ত একটি চারা গাছ, যা থেকে নির্গত হয় নতুন পাতা, অতঃপর ইহা শক্ত ও পুষ্ট হয় এবং পরে কান্ডের উপর দাঁড়ায় দৃঢ়ভাবে যা চাষীদের জন্য আনন্দ দায়ক। এভাবে মুমিনদের সমৃদ্ধি দ্বারা আল্লাহ কাফিরদের অন্তর্জালা সৃষ্টি করেন। যারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে আল্লাহ তাদেরকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ক্ষমা ও মহাপুরস্কারের।

সূরাঃ ৯ তাওবা, ১০০ নং আয়াতের অনুবাদ-
১০০। মুহাজির ও আনসারদের মধ্যে যারা প্রথম অগ্রগামী এবং যারা ইহসানের সাথে তাদের অনুসরনের কাজ করে, আল্লাহ তাদের প্রতি সন্তুষ্ট, আর তারাও তাঁর প্রতি সন্তষ্ট।তিনি তাঁদের প্রতি প্রস্তুত রেখেছেন জান্নাত, যার নিম্নদেশে নদী প্রবাহিত, যেথায় তারা চিরস্থায়ী থাকবে। এটা মহাসাফল্য।

মেশকাত ৫৭৬৪ নং হাদিসের (সাহাবীদের ফজিলত ও মর্যাদা অধ্যায়) অনুবাদ-
৫৭৬৪। হযরত ওমর ইবনে খাত্তাব (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেছেন, আমি রাসূলুল্লাহকে (সা.) বলতে শুনেছি, আমি আমার প্রতিপালককে আমার ইন্তেকালের পর আমার সাহাবীদের মধ্যে মতভেদ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি অহীর মাধ্যমে আমাকে জানিয়ে দিলেন যে, হে মোহাম্মদ! আমার নিকট তোমার সাহাবীদের মর্যাদা হল আসমানের নক্ষত্রদের তুল্য। এর একটি আরেকটির তুলনায় অধিক উজ্জ্বল। অথচ প্রত্যেকটির মধ্যেই আলো বিদ্যমান; সুতরাং তাদের মতভেদ হতে যে কোন ব্যক্তি কোন একটি অভিমত গ্রহণ করবে, সে আমার নিকট হেদায়াতের উপরই প্রতিষ্ঠিত। হযরত ওমর (রা.) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) আরও বলেছেন, আমার সাহাবীগণ হল তারকাসদৃশ। অতএব তোমরা তাদের মধ্য হতে যে কোন এক জনের অনুসরন করবে হেদায়াত লাভ করবে – রাযীন।

সহিহ মুসলিম, ৬৩২৯ নং হাদিসের [সাহাবীদের (রা.)মর্যাদা] অনুবাদ-
৬৩২৯। হযরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, তোমরা আমার সাহাবীদের গালমন্দ করবে না। সেই সত্তার কসম, যাঁর হাতে আমার প্রাণ, যদি তোমাদের মধ্যে কেউ উহুদ পাহাড় বরাবর স্বর্ণ ব্যয় করে, তবুও তাঁদের কারোর এক মুদ বা অর্ধ মুদের সমান হবে না।

* আল্লাহ এবং রাসূল (সা.) যাদের এমন সুনাম করেন তাঁরা অবশ্যই শ্রেষ্ঠ উম্মত। যারা তাঁদের সর্ববৃহৎ দলের অনুসারী নয় তারা পথভ্রষ্ট।

# তাবেঈ, তাবে তাবেঈ

সূরাঃ ৬২ জুমুআ, ৩ নং আয়াতের অনুবাদ।
৩। আর তাদের অন্যান্যের জন্যও যারা এখনো তাদের সহিত মিলিত হয়নি। আল্লাহ পরাক্রমশালী প্রজ্ঞাময়।

* রাসূলের (সা.) সাথে যারা মিলিত হয়নি তারা তাবেঈ। সাহাবায়ে কোরামের (রা.) সাথে যারা মিলিত হয়নি তারা তাবে তাবেঈ।

সহিহ আল বোখারী, ৩৩৮৬ নং হাদিসের (আম্বিয়া কিরাম অধ্যায়) অনুবাদ-
৩৩৮৬। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, লোকদের মধ্যে সর্বোত্তম সময হলো আমার সময়। অতঃপর তৎপরবর্তীদের সময়। অতঃপর তৎপরবর্তীদের সময়। তারপর এমন একদল লোকের উদ্ভব ঘটবে যাদের কেউ শপথ করার পূর্বে সাক্ষ্য দিবে এবং সাক্ষ্য দিবার পূর্বে শপথ করবে। ইব্রহীম নখয়ী বলেন, আমাদের মুরুব্বঈরা আমাদেরকে সাক্ষ্য দিবার জন্য ও ওয়াদা করার জন্য প্রহার করতেন। তখন আমরা ছোট ছিলাম।

* রাসূলের (সা.) সময়ে ছিলেন সাহাবা (রা.), তারপর ছিলেন তাবেঈ, তারপর ছিলেন তাবে তাবেঈ। রাসূল (সা.) তাবেঈ ও তাবে তাবেঈগণের সঠিকতা সাব্যস্ত করায় তাঁদের সর্ববৃহৎ দল অবশ্যই সঠিক। হানাফী ইমাম আবু হানিফা (র.) সহাবা (রা.), তাবেঈ ও তাবে তাবেঈ তিন দলের সাক্ষাৎ পেয়েছেন। তিনি তাঁদের সর্ববৃহৎ দলের সাথে সম্পৃক্ত থাকায় সঠিক ছিলেন।

# কোরআন ও হাদিস হানাফী ইমাম আবু হানিফাকে (র.) সঠিক সাব্যস্ত করে।

সূরাঃ ৬২ জুমুআ, ৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
৩। আর তাদের অন্যান্যের জন্যও যারা এখনো তাদের সহিত মিলিত হয়নি। আল্লাহ পরাক্রমশালী প্রজ্ঞাময়।

* রাসূলের (সা.) সাথে যারা মিলিত হয়নি তারা তাবেঈ। সাহাবায়ে কোরামের (রা.) সাথে যারা মিলিত হয়নি তারা তাবে তাবেঈ। সাহাবা যুগের পর তাদের অনুসারী হতে হবে এ কথা আল্লাহ স্পষ্ট করেই বললেন।

সহিহ মুসলিম, ৬৩৩৯ নং ও ৬৩৪০ নং হাদিসের [ সাহাবায়ে কেরামের (রা.) মর্যাদা অধ্যায়] অনুবাদ-
৬৩৩৯।হযরত আবু হোরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত। যদি দীন আসমানের দূরবর্তী সুরাইয়া নক্ষত্ররাজির কাছে থাকত, তবে পারস্যের যে কোন ব্যক্তি তা’ নিয়ে আসত; অথবা তিনি বলেছেন, কোন পারসিক সন্তান তা’ অর্জন করত।

সহিহ মুসলিম, ৬৩৪০ নং হাদিসের [ সাহাবায়ে কেরামের (রা.) মর্যাদা অধ্যায়] অনুবাদ-
৬৩৪০। হযরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা নবি করিমের (সা.) নিকট বসা ছিলাম। তখন তাঁর উপর সূরা জুমুয়া অবতীর্ণ হল। যখন তিনি এ আয়াত পড়লেন, ‘ওয়া আখারিনা মিনহু লাম্মা ইয়ালহাকু বিহিম - আর তাদের অন্যান্যের জন্যও যারা এখনো তাদের সহিত মিলিত হয়নি’ তখন জনৈক ব্যক্তি বলল, হে আল্লাহর রাসূল (সা.) এরা কারা? নবি করিম (সা.) তার কোন জবাব দিলেন না। এমন কি সে একবার অথবা দু’ বার কিংবা তিনবার তাঁকে জিজ্ঞাস করল। রাবী বলেন, তখন আমাদের মাঝে সালমান ফারসী (রা.) ছিলেন। রাবী বলেন, নবি করিম (সা.) তাঁর হাত সালমানের (রা.) উপর রাখলেন, এরপর বললেন, যদি ঈমান সূরাইয়া তারকার কাছে থাকত তাহলে অবশ্যই তার গোত্রের লোকেরা সেখান পর্যন্ত পৌঁছত।

* হাদিসে বলা তাবেঈ হলেন ইমাম আবু হানিফা (র.) কারণ তিনি ছাড়া হযরত সালমানের (রা.) এলাকার অনারব লোক আর কোন মুজতাহিদ তাবেঈ নেই। সংগত কারণে তাবেঈ হিসেবে তিনি অবশ্যই সঠিক।

# কোরআন ও হাদিস হানাফী মাযহাবের অন্যতম প্রধান প্রতিষ্ঠাতা ইমাম আবু ইউসুফকে (র.)সঠিক সাব্যস্ত করে।

সূরাঃ ৬২ জুমুআ, ৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
৩। আর তাদের অন্যান্যের জন্যও যারা এখনো তাদের সহিত মিলিত হয়নি। আল্লাহ পরাক্রমশালী প্রজ্ঞাময়।

* রাসূলের (সা.) সাথে যারা মিলিত হয়নি তারা তাবেঈ। সাহাবায়ে কোরামের (রা.) সাথে যারা মিলিত হয়নি তারা তাবে তাবেঈ। সাহাবা যুগের পর তাদের অনুসারী হতে হবে এ কথা আল্লাহ স্পষ্ট করেই বললেন।

সহিহ সুনানে ইবনে মাজাহ, ২৩০ নং হাদিসের (অবতরনিকা অধ্যায়) অনুবাদ-
২৩০। হযরত যায়েদ ইবনে সাবিত (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি আমার থেকে একটি হাদিস শুনে অতঃপর তা’ অন্যদের কাছে পৌঁছে দেয় আল্লাহ তাকে হাস্যোজ্জল ও আনন্দময় করে দেবেন। কেননা এমন কতক ফিকাহ বাহক রয়েছে, যারা প্রকৃতপক্ষে ফকীহ নয়। কোন কোন ক্ষেত্রে এমনও হয় যে, ফিকাহ শিক্ষাদানকারীর চেয়ে উক্ত বিষয়ের শিক্ষার্থী অধিকতর জ্ঞানী হয়ে থাকে।

* মহানবির (সা.) পক্ষ থেকে দু’জন ফকিহ তাঁর হাদিসের দায়িত্ব প্রাপ্ত।তাঁদের একজন ফিকাহ শিক্ষাদানকারী এবং অন্যজন উক্ত বিষয়ের শিক্ষার্থী, যিনি তাঁর ফিকাহ শিক্ষাদানকারীর চেয়ে উক্ত বিষয়ে অধিকতর জ্ঞানী। ইতিহাসে এমন শুধু একটি জুটি আছে, তাঁরা হলেন ইমাম আবু হানিফা (র.) ও তাঁর শিক্ষার্থী ইমাম আবু ইউসুফ (র.) যিনি তাঁর ফিকাহ শিক্ষাদানকারী ইমাম আবু হানিফার চেয়ে উক্ত বিষয়ের অধিকতর জ্ঞানী ছিলেন। কারণ ইমাম আবু ইউসুফের (র.) খেলাফতের প্রধান বিচার পতির যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা ছিল। কিন্তু ইমাম আবু হানিফার খেলাফতের প্রধান বিচারপতির যোগ্যতা থাকলেও তাঁর খেলাফতের প্রধান বিচারপতির অভিজ্ঞতা ছিল না। আবার ইমাম আবু ইউসুফের (র.) জ্ঞানের সাথে ইমাম আবু হানিফার (র.) জ্ঞান যোগ হয়ে ইমাম আবু ইউসুফের (র.) জ্ঞান বেড়ে গিয়েছিল। কিন্তু ইমাম আবু ইউসুফের (র.) জ্ঞান ইমাম আবু হানিফার (র.) সাথে যোগ না হওযায় ইমাম আবু হানিফা (র.) থেকে ইমাম আবু ইউসুফের (র.) জ্ঞান বেশী ছিল। সংগত কারণে তাবে তাবেঈ হিসেবে ইমাম আবু ইউসুফ (র.) অবশ্যই সঠিক।

# কোরআন ও হাদিস হানাফী মাযহাবের অন্যতম প্রধান প্রতিষ্ঠাতা আব্বাসীয় খলিফাগণকে সঠিক সাব্যস্ত করে।

সূরাঃ ২ বাকারা, ১২৪ নং আয়াতের অনুবাদ-
১২৪। আর যখন তোমার প্রতিপালক ইব্রাহীমকে কয়েকটি বাক্য (কালিমাত) দ্বারা পরীক্ষা করেছিলেন, পরে সে তা পূর্ণ করেছিল; তিনি বললেন নিশ্চয়ই আমি তোমাকে মানব জাতির ইমাম বানাব; সে বলেছিল আমার বংশধরগণ হতেও; তিনি বলেছিলেন, আমার প্রতিশ্রুতি জালেমদের প্রতি প্রযোজ্য হবে না।

সহিহ সুনানে ইবনে মাজাহ, ৩৯৫০ নং হাদিসের (ফিতনা অধ্যায়) অনুবাদ-
৩৯৫০। আনাস ইবনে মালেক (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহকে (সা.)বলতে শুনেছি আমার উম্মত পথভ্রষ্টতার উপর একত্রিত হবে না। যখন তোমরা উম্মতের মাঝে মতপার্থক্য দেখতে পাবে, তখন সর্ববৃহৎ দলের সাথে সম্পৃক্ত থাকবে।

* উম্মতের সর্ববৃহৎ দল হানাফী মান্যতায় ৫৩ জন আব্বাসীয় খলিফা হযরত ইব্রাহীমের বংশীয় মুসলিমদের বিশ্ব ইমাম হিসাবে সঠিক ছিলেন। হানাফী অমান্যতায় এ তালিকা থেকে তিনজন খলিফা বাদ পড়েছেন। তাদের অমান্যতার কারণ তারা জালিম ছিলেন।

সহিহ আল বোখারী, ৩২৪৭ নং হাদিসের (আম্বিয়া কিরাম অধ্যায়) অনুবাদ-
৩২৪৭।হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত। নবি করিম (সা.) বলেছেন, এ দায়িত্ব (মুসলিম নেতৃত্বের) চিরকাল কুরাইশদের হাতেই থাকবে। যতদিন তাদের দু’জন লোক অবশিষ্ট থাকবে।

* উম্মতের সর্ববৃহৎ দল হানাফী মান্যতায় ৫৩ জন আব্বাসীয় খলিফা কুরাইশ বংশীয় মুসলিমদের বিশ্ব আমির হিসাবে সঠিক ছিলেন।

সহিহ আল বোখারী, ৩৪৪২ নং হাদিসের (আম্বিয়া কিরাম অধ্যায়) অনুবাদ-
৩৪৪২। হযরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত। যখন অভাব অনটন দেখা দিত তখন ওমর ইবনে খাত্তাব (রা.) আব্বাস ইবনে আব্দুল মুত্তালিবের উছিলায় বৃষ্টির জন্য প্রার্থনা করতেন। তিনি বলতেন হে মাবুদ! আমরা আমাদের নবির (সা.) উছিলায় তোমার নিকট প্রার্থনা করতাম যে, তুমি আমাদের উপর বৃষ্টি বর্ষণ কর তখন প্রবল বর্ষণ করতে। এখন আমরা আমাদের নবির চাচা আব্বাসের (রা.) উছিলায় প্রার্থনা করছি। তুমি আমাদের উপর বৃষ্টি বর্ষণ কর। তখন ভারী বর্ষণ শুরু হত।

* উছিলায় হযরত আব্বাস (রা.) ছিলেন মহানবির (সা.) ধারাবাহিক ব্যক্তি এবং তাঁর বংশের খলিফাগণ ছিলেন মহানবির (সা.) ধারাবাহিক ইসলামী নেতা।

সহিহ তিরমিযী, ৩৭০১ নং হাদিসের [ রাসূলুল্লাহ (সা.) ও তাঁর সাহাবীগণের মর্যাদা অধ্যায়] অনুবাদ-
৩৭০১। হযরত ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) আল আব্বাসকে (রা.) বললেন, আগামী সোমবার আপনি আমার কাছে আসবেন এবং আপনার সন্তানদেরকেও সাথে নিয়ে আসবেন। আমি আপনার জন্য এবং আপনার সন্তানদের জন্য একটি দোয়া করব, যার দরুন আল্লাহ আপনাকেও উপকৃত করবেন এবং আপনার সন্তানদেরও। সকালে তিনি গেলেন এবং আমরাও তাঁর সাথে গেলাম। তিনি আমাদের গায়ে একখানা চাদর জড়িয়ে দিলেন, এরপর বলেন, হে আল্লাহ আল আব্বাস ও তাঁর সন্তানদের বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ উভয়দিক থেকে এমনভাবে মাফ করে দিন, যার পর তাদের আন কোন অপরাধ বাকি না থাকে। হে আল্লাহ তাঁকে তাঁর সন্তানদের অধিকার পূরণের তৌফিক দিন।

রাযীন এ বাক্যটি অতিরিক্ত বলেছেন, খেলাফত এবং রাজত্ব তার সন্তানদের মধ্যে বহাল রাখ – মেশকাত ৫৮৯৮ নং হাদিস।

* আব্বাসীয়গণ মহানবির (সা.) দোয়ায় খলিফা হওয়ায় তারা মুসলিম বিশ্ব আমির হিসেবে সঠিক ছিলেন।

সহিহ সুনানে ইবনে মাজাহ, ১৪১ নং হাদিসের (অবতরনিকা অধ্যায়) অনুবাদ-
১৪১। আব্দুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, আল্লাহ তা’য়ালা আমাকে প্রিয় বন্ধুরূপে গ্রহণ করেছেন যেমন প্রিয় বন্ধুরূপে গ্রহণ করেছেন ইব্রাহীমকে (আ.)। কিযামতের দিন জান্নাতে আমার ও ইব্রাহীমের আসন সমানা-সামনি হবে। আর আব্বাস (রা.) আমাদের দুই বন্ধুর মাঝখানে একজন মুমিন হিসেবে অবস্থান করবেন।

মেশকাত ৫৮৯৭ নং হাদিসের (সাহাবীদের ফজিলত ও মর্যাদা অধ্যায়) অনুবাদ-
৫৮৯৭। হযরত ইবনে আব্বাস হতে বর্ণিত। তিনি বলেছেন, রাসূলুল্লাহ (সা.)ইরশাদ করেন, আব্বাস (রা.) আমার সঙ্গে জড়িত এবং আমি তার সাথে জড়িত।

* সংগত কারণে আব্বাসীয় খলিফাগণের ৫৩ জন যারা মুসলিম বিশ্বের আমির সাব্যস্ত তাদের সাথে মহানবি (সা.) জড়িত। মহানবি (সা.) যাদের সাথে জড়িত তারা অবশ্যই সঠিক ছিলেন।

# হানাফী মাযহাবে কোরআন ও হাদিস সাব্যস্ত সঠিক লোক ৫৫ জন। অহানাফী কোন দলে কোরআন ও হাদিস সাব্যস্ত কোন সঠিক লোক নেই। তথাপি হানাফীরা সঠিক না হয়ে তারা সঠিক হয় কেমন করে?

# মুসলিমদের চিরন্তন সঠিক পাঁচটি দলও হানাফী। তারা হলেন ১। ইমামগণের সর্ববৃহৎ দল ২। আলেমগণের সর্ববৃহৎ দল ৩। মুজাহিদগণের সর্ববৃহৎ দল ৪। হাজীগণের সর্ববৃহৎ দল ও ৫। উমরা আদায়কারীগণের সর্ববৃহৎ দল।

# ইমাম

সূরাঃ ২ বাকারা, ১২৪ নং আয়াতের অনুবাদ-
১২৪। আর যখন তোমার প্রতিপালক ইব্রাহীমকে কয়েকটি বাক্য (কালিমাত) দ্বারা পরীক্ষা করেছিলেন, পরে সে তা পূর্ণ করেছিল; তিনি বললেন নিশ্চয়ই আমি তোমাকে মানব জাতির ইমাম বানাব; সে বলেছিল আমার বংশধরগণ হতেও; তিনি বলেছিলেন, আমার প্রতিশ্রুতি জালেমদের প্রতি প্রযোজ্য হবে না।

সূরাঃ ২৫ ফুরকান, ৭৪ নং আয়াতের অনুবাদ-
৭৪। আর যারা প্রার্থনা করে, হে আমাদের প্রতি পালক! আমাদের জন্য এমন স্ত্রী ও সন্তান-সন্ততি দান কর যারা হবে আমাদের জন্য নয়ন প্রীতিকর এবং আমাদেরকে মুত্তাকীদের জন্য ইমাম কর।

সহিহ আবুদাউদ, ৬০১ নং হাদিসের (নামায অধ্যায়) অনুবাদ-
৬০১। হযরত আনাস ইবনে মালেক (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) ঘোড়ায় চড়েন। তিনি তার পিঠ থেকে পড়ে যাওয়ায় তাঁর শরীরের ডান দিকে আঘাত পান। এমতাবস্থায় তিনি বসে নামাজে ইমামতি করেন এবং আমরাও তাঁর পেছনে বসে নামাজ পড়ি। নামাজ শেষে মহানবি (সা.) বলেন, ইমামকে এ জন্যই নিযুক্ত করা হয়, যেন তার অনুসরন করা হয়। সুতরাং ইমাম যখন দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করবে তখন তোমরাও দাঁড়াবে। এরপর ইমাম যখন রুকু করবে তখন তোমারও রুকু করবে এবং ইমাম যখন মাথা উঠাবে তখন তোমরাও মাথা উঠাবে। এরপর ইমাম যখন ‘সামিয়াল্লাহু লিমান হামিদাহ’ বলবে তখন তোমরা বলবে ‘রাব্বানা ওয়া লাকাল হামদ’। ইমাম যখন বসে নামাজ পড়বে তখন তোরাও বসে নামাজ পড়বে।

সহিহ তিরমিযী, ১৯৮ নং হাদিসের (নামাজ অধ্যায়) অনুবাদ-
১৯৮। হযরত আবু হোরায়রা (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, ইমাম হচ্ছে যামিন এবং মোয়াজ্জিন হলো আমানতদার। হে আল্লাহ! ইমামকে সৎপথ দেখাও এবং মুয়াযযিনকে ক্ষমা কর।

* ইমাম তালিকায় মুসলিম জাতির পিতা ইব্রাহীম (আ.) থাকায়, মুমিনগণ মুত্ত্তকীগণের ইমাম হওয়ার প্রার্থনা করায়, মহানবি (সা.) ইমামগণের অনুসারী হতে বলায় এবং তিনি তাদের সৎপথের দোয়া করায় তাঁদের সর্ববৃহৎ দল অবশ্যই সঠিক।

# আলেম

সূরাঃ ১৬ নাহল, ৪৩ ও ৪৪ নং আয়তের অনুবাদ
৪৩।তোমার পূর্বে আমরা পুরুষ ভিন্ন (বার্তা বাহক) প্রেরণ করিনি। আমরা তাদের প্রতি ওহি প্রেরণ করেছিলাম।অতএব আহলে যিকরকে জিজ্ঞাস কর, যদি তোমরা না জান।

* আলেমগণকে আহলে যিকির বলে। কোন কিছু না জানলে তাঁদের কাছ থেকে জানা ফরজ।

সূরাঃ ৩৫ ফাতির, ২৮ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৮। এভাবে রং বেরং- এর মানুষ, জন্তু ও আন’আম রয়েছে। নিশ্চয়ই আল্লাহর বান্দাদের মধ্যে আলেমরাই তাঁকে ভয় করে।নিশ্চয়্ই আল্লাহ পরাক্রমশালী ক্ষমাশীল।

* আলেমরা আল্লাহকে ভয় করে বলে তাঁরা আল্লাহর বিষয়ে সত্যকথা বলে।

সহিহ আবু দাউদ, ৩৬০২ নং হাদিসের (জ্ঞান-বিজ্ঞান অধ্যায়) অনুবাদ-
৩৬০২। কাছীর ইবনে কায়েস (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার আমি দামেশকের মসজিদে আবু দারদার (রা.) কাছে বসে ছিলাম। এ সময় এক ব্যক্তি এসে বলে, হে আবু দারদা (রা.) আমি রাসূলুল্লাহর (সা.) শহর মদীনা থেকে আপনার কাছে একটা হাদিস শোনার জন্য এসেছি। আমি জানতে পেরেছি আপনি উক্ত হাদিসটি রাসূলুল্লাহ (সা.) হতে বর্ণনা করেন। এছাড়া আর কোন কারণে আমি এখানে আসিনি। তখন আবু দারদা (রা.) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহকে (সা.) বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি ইলম অর্জনের জন্য কোন পথ অতিক্রম করে, আল্লাহ তাকে জান্নাতের পথসমূহের একটি পথ অতিক্রম করান। আর ফেরেশতারা ত্বলেবে এলেম বা জ্ঞান অন্বেষণকারীর জন্য তাদের ডানা বিছিয়ে দেন এবং আলেমের জন্য আসমান ও জমিনের সব কিছুই ক্ষমা প্রার্থনা করে, এমনকি পানিতে বসবাসকারী মাছও তাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে। আর আবেদের উপর আলেমের ফজিলত এরূপ যেমন পূর্ণিমার রাতে চাঁদের ফজিলত সকল তারকা রাজির উপর। আর আলেমগণ হলেন নবিদের ওয়ারিছ এবং নবিগণ দীনার ও দিরহাম মীরাছ হিসেবে রেখে যান না; বরং তাঁরা রেখে যান ইলম।কাজেই যে ব্যক্তি ইলম অর্জন করল সে প্রচুর সম্পদের মালিক হলো।

* কোন কিছু না জানলে আল্লাহ আলেমগণের নিকট থেকে সেই জিনিস জেনে নেওয়া ফরজ করায়, আলেমগণ আল্লাহকে ভয় করেন বলে এবং আলেমগণ নবিগণের ওয়ারিশ হওয়ায় তাঁদের সর্ববৃহৎ দল অবশ্যই সঠিক।

# মুজাহিদ

সূরাঃ ২২ হাজ্জ, ৭৮ নং আয়াতের অনুবাদ
৭৮।আর জিহাদ কর আল্লাহর পথে যেভাবে জিহাদ করা উচিত। তিনি তোমাদেরকে (জিহাদের জন্য) মনোনীত করেছেন।তিনি দ্বীনের ব্যাপারে তোমাদের উপর কোন কঠোরতা আরোপ করেননি। এটা তোমাদের পিতা ইব্রাহীমের মিল্লাত বা জাতি।তিনি পূর্বে তোমাদের ‘মুসলিম’ নাম করণ করেছেন। আর এতে (এ কোরআনেও তোমাদের ‘মুসলিম’ নাম করণ করা হয়েছে) যেন রাসুল তোমাদের জন্য সাক্ষ্যি হন এবং তোমরা স্বাক্ষী হও মানব জাতির জন্য। অতএব তোমরা সালাত বা নামাজ কায়েম কর, যাকাত দাও এবং আল্লাহর সাথে যুক্ত থাক। তিনি তোমাদের অভিভাবক। কত উত্তম অভিভাবক এবং কত উত্তম সাহায্যকারী তিনি।

সহিহ আল বোখারী, ২৬৮৮ নং হাদিসের (জিহাদ অধ্যায়) অনুবাদ-
২৬৮৮। হযরত আবু সাঈদ (রা.)কর্তৃক বর্ণিত।। নবি করিম (সা.) বলেছেন, এমন এক যামানা আসবে যখন একদল লোক আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করতে থাকবে। তাদেরকে জিজ্ঞাস করা হবে তোমাদের সঙ্গে কি নবি করিমের (সা.) কোন সাহাবা (রা.) আছেন? বলা হবে হ্যাঁ আছেন। তাদেরকে বিজয় দান করা হবে। এরপর এমন এক সময় আসবে,তাদেরকে জিজ্ঞাস করা হবে, নবি করিমের (সা.) সাহাবায়ে কেরামের (রা.) সাহচর্য লাভ করেছেন, এমন লোক কি তোমাদের সঙ্গে আছেন? বলা হবে হ্যাঁ আছেন। সুতরাং তাদেরকে বিজয় দান করা হবে। এরপর আরো একটি যুগ এমন আসবে, তখনও তাদেরকে জিজ্ঞাস করা হবে, তোমাদের সাথে এমন কোন ব্যক্তি আছেন কি? যিনি নবি করিমের (সা.) সাহাবাদের (রা.) সহচরদের (র.)সাহচর্য লাভ করেছেন? বলা হবে হ্যাঁ আছেন। সুতরাং তাদেরকেও বিজয় দান করা হবে।

* যারা আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করে এবং আল্লাহ যাদেরকে বিজয় দান করেন তাঁদের সর্ববৃহৎ দল অবশ্যই সঠিক।

# হাজী ও উমরা আদায়কারী

সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ৯৬ নং আয়াতের অনুবাদ-
৯৬। নিশ্চয়ই সর্বপ্রথম ঘর, যা মানব জাতির জন্য প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছে। তাতো মক্কায়। উহা বরকতময় ও বিশ্বজগতের জন্য হেদায়াত।

সহিহ সুনানে নাসাঈ, ৩১২৫ নং হাদিসের (জিহাদ অধ্যায়) অুনবাদ-
৩১২৫। হযরত আবু হোরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত।তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, আল্লাহর প্রতিনিধি তিন শ্রেণীর, যোদ্ধা, হাজী এবং উমরাহ আদায়কারী।

* কাবার হেদায়াত তারা পায় যারা হেদাযাতের জন্য সেখানে আসে। তাদের হাজী ও উমরাহ আদায়কারী আল্লাহর প্রতিনিধি হিসাবে তাঁদের সর্ববৃহৎ দল অবশ্যই সঠিক।

# মুসলিমদের উপরোক্ত পাঁচটি দল যখন যে দলের সাথে ছিল তখন সে দল সঠিক ছিল। এখন তারা যে দলের সাথে আছে তারা এখন সঠিক আছে। ভবিষ্যতে তারা যাদের সাথে থাকবে তারা তখন সঠিক থাকবে। তেরশ বছরের বেশী সময় ধরে তারা হানাফীদের সাথে আছে বিধায় এসময় তারা সঠিক আছে। ভবিষ্যতে তারা ইমাম মাহদীর (আ.) দলের সাথে থাকবে তখন ইমাম মাহদীর (আ.) দল সঠিক থাকবে। তখন আবার যারা হানাফীতে পড়ে থাকবে তারা তখন সঠিক থাকবে না।

সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ১০৫ নং আয়াতের অনুবাদ-
১০৫। তোমরা তাদের মত হবে না যারা তাদের নিকট স্পষ্ট নিদর্শন আসার পর বিচ্ছিন্ন হয়েছে ও নিজেদের মাঝে মতভেদ সৃষ্টি করেছে। তাদের জন্য মহাশাস্তি রয়েছে।

সূরাঃ ৬ আনআম, আয়াত নং ১৫৯ এর অনুবাদ-
১৫৯। যারা দীন সম্বন্ধে নানা মতের সৃষ্টি করেছে এবং বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়েছে তাদের কোন দায়িত্ব তোমার নয়। তাদের ব্যবস্থ্যা করার দায়িত্ব আল্লাহর।আল্লাহ তাদেরকে তাদের কাজ সম্পর্কে জানিয়ে দিবেন।

সূরাঃ ১০ ইউনুস, ১৯ নং আয়াতের অনুবাদ-
১৯। মানুষ ছিল একই উম্মত। পরে উহারা মতভেদ সৃষ্টি করে।তোমার প্রতিপালকের পূর্ব-ঘোষণা না থাকলে তারা যে বিষয়ে মতভেদ ঘটায় তার মিমাংসাতো হয়েই যেত।

সূরাঃ ২৩ মুমিনূন, ৫৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
৫৩। কিন্তু তারা নিজেদের মধ্যে তাদের দীনকে বহুভাগে বিভক্ত করেছে। প্রত্যেক দলই তাদের নিকট যা আছে তা নিয়ে আনন্দিত।

সূরাঃ ৩০ রূম, ৩২ নং আয়াতের অনুবাদ-
৩২। যারা নিজেদের দীনে মতভেদ সৃষ্টি করেছে এবং বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়েছে। প্রত্যেক দল নিজ নিজ মতবাদ নিয়ে উৎফুল্ল।

সূরাঃ ৪৩ যুখরুফ, ৬৫ নং আয়াতের অনুবাদ-
৬৫। অতঃপর তাদের বিভিন্ন দল মতানৈক্য সৃষ্টি করলো, সুতরাং সুতরাং যালিমদের জন্য দূর্ভোগ ভয়ংকর শাস্তির দিনে।

* হানাফীদের সাথে যারা নমতভেদ করে তাদের হিসাব কি? সংগত কারণে মুসলিম স্কলারগণ! বিভিন্ন পথ নয়, বরং হানাফীদের অভিন্ন পথে


মন্তব্য ৪ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:১৮

তারেক ফাহিম বলেছেন: রক্তের বিনিময়ে ব্লগ!


অনেক বড় পোস্ট পুরোটা পড়া হয়নি।

ওইযে অলসতা।

২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ সকাল ৯:২১

রক্ত দান বলেছেন: কিছুটা পড়েছেন বলে ধন্যবাদ।

২| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:২৮

চাঁদগাজী বলেছেন:



প্রয়াত ব্লগার সিরাজ সাঁই'এর ছবি দিয়েছেন আপনি; আপনি কি উনাকে জানতেন?

২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ সকাল ৯:২২

রক্ত দান বলেছেন: তাঁর ছবি সংগৃহিত। জানার বিষয়টা অন্য সবার মতই।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.