নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

রক্ত দান করুন জীবন বাাঁচান

রক্ত দান

অতি সাধারণ

রক্ত দান › বিস্তারিত পোস্টঃ

আল্লাহ ও রাসূলকে (সা.) মানার কথা বলেও কতিপয় আলেম কেন জাহান্নামী হবে?

২৯ শে জানুয়ারি, ২০২২ সকাল ৮:০৭



সূরাঃ ৪ নিসা, ৫৯ নং আয়াতের অনুবাদ-
৫৯। হে মুমিনগণ! যদি তোমরা আল্লাহ ও আখিরাতে বিশ্বাস কর তবে তোমরা আনুগত্য কর আল্লাহর, আর আনুগত্য কর রাসুলের, আর যারা তোমাদের মধ্যে আমির।কোন বিষয়ে তোমাদের মধ্যে বিরোধ দেখাদিলে উহা উপস্থাপিত কর আল্লাহ ও রাসুলের নিকট। ওটা উত্তম এবং পরিনামে ভাল।

সূরা: ৯ তাওবা, ১২২ নং আয়াতের অনুবাদ-
১২২। আর মু’মিনদের এটাও উচিৎ নয় যে (জিহাদের জন্য) সবাই একত্রে বের হয়ে পড়বে। সুতরাং এমন কেন করা হয় না যে, তাদের প্রত্যেক বড় দল হতে এক একটি ছোট দল (জিহাদে) বের হয় যাতে অবশিষ্ট লোক ফিকাহ (দীনের গভীর জ্ঞান) অর্জন করতে থাকে। আর যাতে তারা নিজ কওমকে ভয় প্রদর্শন করে, যাতে তারা সাবধান হয়।

সূরাঃ ১৬ নাহল, ৪৩ ও ৪৪ নং আয়তের অনুবাদ
৪৩।তোমার পূর্বে আমরা পুরুষ ভিন্ন (বার্তা বাহক) প্রেরণ করিনি। আমরা তাদের প্রতি ওহি প্রেরণ করেছিলাম।অতএব আহলে যিকরকে জিজ্ঞাস কর, যদি তোমরা না জান।
৪৪।সুস্পষ্ট প্রমাণ ও কিতাব সমূহ সহ।আর মানুষকে তাদের প্রতি যা অবতীর্ণ করা হয়েছে তা, সুস্পষ্টভাবে বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য আমরা আপনার প্রতি নাজিল করেছি যিকর। যেন তারা চিন্তা ভাবনা করতে পারে।

* আল্লাহর আদেশ অনুযায়ী ১। আল্লাহ ২। রাসূল (সা.) ৩। আমির ৪। ফকিহ ও ৫। আহলে যিকরকে মানা আল্লাহর বান্দাদের জন্য ফরজ। কতিপয় আলেম আল্লাহ ও রাসূলকে (সা.) মানতে বলে; আমির, ফকিহ ও আহলে যিকরকে মানতে বলে না। সুতরাং তারা মুমিনদের পথ ছেড়ে ভিন্ন পথে চলে বিধায় তারা জাহান্নামী হবে।

সহিহ মুসলিম, ৪৬১৪ নং হাদিসের (কিতাবুল ইমারাহ) অনুবাদ-
৪৬১৪। আবু হুরায়রা (রা.) সূত্রে নবি করিম (সা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন যে ব্যক্তি আমার আনুগত্য করল, সে আল্লাহর আনুগত্য করল। আর যে ব্যক্তি আমার অবাধ্যতা করল সে আল্লাহর অবাধ্যতা করল। যে ব্যক্তি আমিরের আনুগত্য করে সে আমারই আনুগত্য করল। আর যে ব্যক্তি আমিরের অবাধ্যতা করল সে আমারই অবাধ্যতা করল।

সহিহ মুসলিম, ৪৪৫৬ নং হাদিসের (কিতাবুল জিহাদ) অনুবাদ-
৪৪৫৬। হযরত ইবনে আব্বাস কর্তৃক বর্ণিত। তিনি বলেন, যখন রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি তার আমিরের মধ্যে এমন কোন ব্যাপার দেখে, যা সে অপছন্দকরে তবে সে যেন ধৈর্য্য অবলম্বন করে। কেননা, যে লোক জামায়াত থেকে কিঞ্চিত পরিমাণ সরে গেল এবং এ অবস্থায় মৃত্যুবরণ করল সে জাহেলিয়াতের মুত্যুই বরণ করল।

সূরাঃ ৪ নিসা, আয়াত নং ১১৫ এর অনুবাদ-
১১৫। কারো নিকট সৎপথ প্রকাশ হওয়ার পর সে যদি রাসুলের বিরুদ্ধাচরণ করে এবং মু’মিনদের পথ ব্যতিত অন্যপথ অনুসরন করে, তবে সে যে দিকে ফিরে যায় সে দিকেই তাকে ফিরিয়ে দেব এবং জাহান্নামে তাকে দগ্ধ করব, আর উহা কত মন্দ আবাস।

* আমিরের মান্যতায় রাসূলের (সা.) বিশেষ আদেশ থাকায় আমিরের অমান্যতায় রাসূলের (সা.) বিরুদ্ধাচারণ হয়, আর এতে মুমিনদের পথ ছেড়ে অন্য পথে চলা হয়। সেজন্য আমির অমান্যকারী আলেম ও তাদের অনুসারীদেরকে আল্লাহ জাহান্নামে দগ্ধ করবেন।

মেশকাত ২২৪ নং হাদিসের (ইলম অধ্যায়) অনুবাদ-
হযরত আওফ ইবনে মালেক আশজায়ী (রা.) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, স্বয়ং আমির অথবা আমীরের পক্ষ থেকে নির্দেশ প্রাপ্ত ব্যক্তি অথবা কোন অহংকারী ব্যতীত অপর কেউ ওয়াজ করতে পারে না।

সহিহ তিরমিযী, ৩৭০১ নং হাদিসের [ রাসূলুল্লাহ (সা.) ও তাঁর সাহাবীগণের মর্যাদা অধ্যায়] অনুবাদ-
৩৭০১। হযরত ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) আল আব্বাসকে (রা.) বললেন, আগামী সোমবার আপনি আমার কাছে আসবেন এবং আপনার সন্তানদেরকেও সাথে নিয়ে আসবেন। আমি আপনার জন্য এবং আপনার সন্তানদের জন্য একটি দোয়া করব, যার দরুন আল্লাহ আপনাকেও উপকৃত করবেন এবং আপনার সন্তানদেরও। সকালে তিনি গেলেন এবং আমরাও তাঁর সাথে গেলাম। তিনি আমাদের গায়ে একখানা চাদর জড়িয়ে দিলেন, এরপর বলেন, হে আল্লাহ আল আব্বাস ও তাঁর সন্তানদের বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ উভয়দিক থেকে এমনভাবে মাফ করে দিন, যার পর তাদের আন কোন অপরাধ বাকি না থাকে। হে আল্লাহ তাঁকে তাঁর সন্তানদের অধিকার পূরণের তৌফিক দিন।

রাযীন এ বাক্যটি অতিরিক্ত বলেছেন, খেলাফত এবং রাজত্ব তার সন্তানদের মধ্যে বহাল রাখ- মেশকাত ৫৮৯৮ নং হাদিস।

* আব্বাসীয় আমিরের পক্ষ থেকে নির্দেশপ্রাপ্ত ওয়ায়েজ হলেন হানাফী ফকিহ ও আহলে যিকরগণ। সুতরাং তাদের অমান্যতায় আল্লাহ রাসূল (সা.) ও আমিরের অবাধ্যতা হয়। যেসব আলেম হানাফী ফকিহ ও আহলে যিকরগণের অবাধ্য তারা রাসূলের (সা.) বিরুদ্ধাচরণ করে এবং মুমিনদের পথ ছেড়ে অন্য পথে চলে বিধায় আল্লাহ তাদেরকে জাহান্নামে দগ্ধ করবেন। কোরআন ও হাদিস হানাফী ফকিহ ইমাম আবু হানিফাকে (র.) সঠিক সাব্যস্ত করে।

# ইমাম আবু হানিফা (র.)

সূরাঃ ৬২ জুমুআ, ২ নং থেকে ৪ নং আয়াতের অনুবাদ।
২। তিনিই উম্মীদের মধ্যে একজন রাসুল পাঠিয়েছেন তাদের মধ্য হতে, যে তাদের নিকট আবৃত করে তাঁর আয়াত সমূহ; তাদেরকে পবিত্র করে এবং শিক্ষা দেয় কিতাব ও হিকমত; এর আগে তো এরা ছিল ঘোর বিভ্রান্তিতে।
৩। আর তাদের অন্যান্যের জন্যও যারা এখনো তাদের সহিত মিলিত হয়নি। আল্লাহ পরাক্রমশালী প্রজ্ঞাময়।
৪। ওটা আল্লাহরই অনুগ্রহ, যাকে ইচ্ছা তিনি ওটা দান করেন। আর আল্লাহ তো মহা অনুগ্রহশীল।

# সূরাঃ ৬২ জুমুআ, ৩ নং আয়াতের তাফসির- তাফসিরে ইবনে কাছির
৩। এ আয়াতের তাফসিরে আবু হুরায়রা হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, একদা আমরা রাসূলুল্লাহর পার্শ্বে বসে ছিলাম, এমন সময় তাঁর উপর সূরা জুমুয়া অবতীর্ণ হয়। জনগণ জিজ্ঞাস করেন হে আল্লাহর রাসূল (সা.)! ‘ওয়া আখারিনা মিনহুম লাম্মা ইয়ালহাকু বিহিম’ দ্বারা কাদেরকে বুঝানো হয়েছে? কিন্তু তিনি কোন উত্তর দিলেন না। তিন বার এ প্রশ্ন করা হয়। আমাদের মধ্যে সালমান ফারসীও (রা.) ছিলেন। রাসূলুল্লাহ (সা.) তাঁর হাতখানা সালমান ফারসীর (রা.) উপর রেখে বললেন, ঈমান যদি সারিয়্যা নক্ষত্রের নিকট থাকত তাহলেও এই লোকগুলোর মধ্যে এক কিংবা একাধিক ব্যক্তি এটা পেয়ে যেত।(ফাতহুলবারী ৮/৫১০, মুসলিম ৪/১৯৭২, তিরমিযী ৯/২০৯, ১০/৪৩৩, নাসাঈ ৫/৭৫, ৬/৪৯০, তাবারী ২৩/৩৭৫)।

সহিহ বোখারী ৪৯৯ নং হাদিসের (সালাতের ওয়াক্ত সমূহ অধ্যায়) অনুবাদ-
৪৯৯। হযরত যুহুরী (র.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি দামেশকে আনাস ইবনে মালেকের (রা.) নিকট গিয়ে দেখতে পেলাম, তিনি কাঁদছেন। আমি তাঁকে জিজ্ঞেস করলাম, আপনি কাঁদছেন কেন? তিনি বললেন, আমি যা যা দেখেছি তার মধ্যে এ নামাযই আজ পর্যন্ত অবশিষ্ট ছিল। কিন্তু এখন নামাজও নষ্ট হতে চলেছে।

* সাহাবা যুগেই ইসলাম বিনষ্ট হয় এবং ইসলাম দুনিয়ায় টিকতে না পেরে সুরাইয়্যা নক্ষত্রের নিকটে চলে যায়।

# সহিহ আল-বোখারী

সহিহ আল বোখারী, ৪৫৩২ নং ৪৫৩৩ নং হাদিসের (তাফসীর অধ্যায় – ৬২. সূরা আল জুমুআ) অনুবাদ
৪৫৩২। হযরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা নবি করিমের নিকট বসা ছিলাম। এমন সময় তাঁর উপর সূরা জুমুআ অবতীর্ণ হল – যাতে এও আছে ‘আর তাদের অন্যান্যের জন্যও যারা এখনো তাদের সহিত মিলিত হয়নি’। তিনি বলেন, তারা কারা হে আল্লাহর রাসূল! তিনবার একথা জিজ্ঞেস করার পরও তিনি এ কথার কোন জবাবই দিলেন না। আমাদের মধ্যে সালমান ফারসীও (রা.) হাজির ছিলেন। নবি করিম (সা.) তার উপর হাত রেখে বললেন, ঈমান ছূরাইয়া নক্ষত্রের নিকট থাকলেও অনেক ব্যক্তিই কিংবা যে কোন একজন তা’ পেয়ে যাবে।
৪৫৩৩। আবু হুরায়রা (রা.) নবি (সা.) হতে বর্ণনা করে বলেন, এদের কিছু লোক তা’অবশ্যই পেয়ে যাবে।

# সহিহ মুসলিম

সহিহ মুসলিম, ৬৩৩৯ নং ও ৬৩৪০ নং হাদিসের [ সাহাবায়ে কেরামের (রা.) মর্যাদা অধ্যায়] অনুবাদ-
৬৩৩৯।হযরত আবু হোরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত। যদি দীন আসমানের দূরবর্তী সুরাইয়া নক্ষত্ররাজির কাছে থাকত, তবে পারস্যের যে কোন ব্যক্তি তা’ নিয়ে আসত; অথবা তিনি বলেছেন, কোন পারসিক সন্তান তা’ অর্জন করত।

সহিহ মুসলিম, ৬৩৪০ নং হাদিসের [ সাহাবায়ে কেরামের (রা.) মর্যাদা অধ্যায়] অনুবাদ-
৬৩৪০। হযরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা নবি করিমের (সা.) নিকট বসা ছিলাম। তখন তাঁর উপর সূরা জুমুয়া অবতীর্ণ হল। যখন তিনি এ আয়াত পড়লেন, ‘ওয়া আখারিনা মিনহু লাম্মা ইয়ালহাকু বিহিম - আর তাদের অন্যান্যের জন্যও যারা এখনো তাদের সহিত মিলিত হয়নি’ তখন জনৈক ব্যক্তি বলল, হে আল্লাহর রাসূল (সা.) এরা কারা? নবি করিম (সা.) তার কোন জবাব দিলেন না। এমন কি সে একবার অথবা দু’ বার কিংবা তিনবার তাঁকে জিজ্ঞাস করল। রাবী বলেন, তখন আমাদের মাঝে সালমান ফারসী (রা.) ছিলেন। রাবী বলেন, নবি করিম (সা.) তাঁর হাত সালমানের (রা.) উপর রাখলেন, এরপর বললেন, যদি ঈমান সূরাইয়া তারকার কাছে থাকত তাহলে অবশ্যই তার গোত্রের লোকেরা সেখান পর্যন্ত পৌঁছত।

# হযরত সালমান আল ফারসী (রা.)

সহিহ তিরমিযী, ৩৭৪৯ নং হাদিসের [ রাসূলুল্লাহ (সা.) ও তাঁর সাহাবীগণের মর্যাদা অধ্যায়] অনুবাদ-
৩৭৪৯। হযরত কাঈসামা ইবনে সাবরা (র.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি মদীনায় এসে আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করলাম, তিনি যেন আমাকে একজন সৎ সাথী মিলিয়ে দেন। অতএব তিনি আবু হোরায়রাকে (রা.) আমার ভাগ্যে ঝুটিয়ে দিলেন। তাঁর পাশে বসে আমি তাঁকে বললাম, আমি আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করে ছিলাম, তিনি যেন আমাকে একজন সৎ সাথী মিলিয়ে দেন।অতএব আপনি আমার জন্য সহজলভ্য হয়েছেন।তিনি (আমাকে) জিজ্ঞাস করেন তুমি কোথা হতে এসেছ? আমি বললাম, আমি কুফার অধিবাসী। আমি ভালোর খোঁজে এসেছি এবং তাই খুঁজছি। তিনি বলেন, তোমাদের মাঝে কি সাদ ইবনে মালেক (রা.) যার দোয়া কবুল হয়, রাসূলুল্লাহর (সা.) অযুর পানি ও জুতা বহনকারী ইবনে মাসউদ (রা.), রাসূলুল্লাহর (সা.) গোপন তথ্যের খাজাঞ্চী হোযায়ফা (রা.), আমারা যাকে আল্লাহর নবির (সা.) ভাষায় আল্লাহ শয়তানের আক্রমণ থেকে বাঁচিয়ে রেখেছেন এবং দুই কিতাবধারী সালমান (রা.) প্রমুখ সাহাবীগণ বিদ্যমাণ নেই? কাতাদা বলেন দুই কিতাব হলো, ইঞ্জিল ও কোরআন।

সহিহ তিরমিযী, ৩৭৩৪ নং হাদিসের [ রাসূলুল্লাহ (সা.) ও তাঁর সাহাবীগণের মর্যাদা অধ্যায়] অনুবাদ-
৩৭৩৪। হযরত আনাস ইবনে মালেক (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, জান্নাত তিনজন লোকের জন্য আগ্রাহান্বিত, আলী, আম্মার ও সালমান (রা.)।

* হযরত সালমান আল ফারসীর (রা.) কুফা এলাকার তাঁর মত অনারব পারসিক সন্তান ইমাম আবু হানিফা (র.) সুরাইয়্যা নক্ষত্রের নিকট থেকে হারানো ইসলাম ফিরিয়ে আনেন। এ তালিকায় তিনি ছাড়া অন্য কারো নাম উপস্থাপিত হয়নি। আর আব্বাসীয় আমিরগণ তাঁর অনুসারী ছিলেন। সুতরাং আল্লাহর বলা সেই ফকিহ হলেন ইমাম আবু হানিফা (র.)। নির্বোধ আলেম বলে আমরা আবু হানিফাকে (র.) মানব কেন? এর সঠিক উত্তর হলো আবু হানিফাকে (র.) না মানলে আল্লাহ তোদেরকে জাহান্নামে দগ্ধ করবেন। সেজন্য ইমাম আবু হানিফার পরবর্তী সকল বড় আলেম ইমাম আবু হানিফার (র.) অনুসারী হয়েছেন। আর অহংকারী শয়তান জাহান্নামী আলেম ইমাম আবু হানিফার (র.) অনুসারী হয়নি।

সূরাঃ ২ বাকারা, ২৮৬ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৮৬। আল্লাহ কারোউপর এমন কোন কষ্ট দায়ক দায়িত্ব অর্পণ করেন না যা তার সাধ্যাতীত।সে ভাল যা উপার্জন করে তার প্রতিফল তার। সে মন্দ যা উপার্জন করে তার প্রতিফল তার। হে আমাদের প্রতিপালক যদি আমরা ভুলে যাই অথবা আমাদের ত্রুটি হয় তবে আমাদেরকে পাকড়াও করো না। হে আমাদের প্রতিপালক আমাদের পূর্ববর্তিগণের উপর যেমন গুরু দায়িত্ব অর্পণ করেছিলে আমাদের উপর তেমন দায়িত্ব অর্পণ করো না।হে আমাদের প্রতিপালক এভন ভার আমাদের উপর অর্পণ করো না যা বহন করার শক্তি আমাদের নেই।আমাদের পাপ মোছন কর, আমাদেরকে ক্ষমা কর, আমাদের প্রতি দয়া কর, তুমিই আমাদের অভিভাবক। সুতরাং কাফির সম্প্রদায়ের উপর আমাদেরকে জয়যুক্ত কর।

মেশকাত ২২৪ নং হাদিসের (ইলম অধ্যায়) অনুবাদ-
হযরত আওফ ইবনে মালেক আশজায়ী (রা.) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, স্বয়ং আমির অথবা আমীরের পক্ষ থেকে নির্দেশ প্রাপ্ত ব্যক্তি অথবা কোন অহংকারী ব্যতীত অপর কেউ ওয়াজ করতে পারে না।

* মানুষ হিসাবে ইমাম আবু হানিফার (র.) ভুল থাকবে। কিন্তু সে ভুল ধরবে আমিরের পক্ষ থেকে নির্দেশ প্রাপ্ত ব্যক্তিগণ। এছাড়া অন্য কারো ইমাম আবু হানিফার (র.) ভুল ধরার অধিকার নেই। অন্য যারা ইমাম আবু হানিফার (র.) ভুল ধরেছে তারা অহংকারী শয়তান। আল্লাহ তাদেরকে জাহান্নামে দগ্ধ করবেন।

সূরাঃ ৬ আনআম, আয়াত নং ১৫৩ এর অনুবাদ-
১৫৩। আর এপথই আমার সিরাতাম মুসতাকিম (সরল পথ)। সুতরাং তোমরা এর অনুসরন করবে, এবং বিভিন্ন পথ অনুসরন করবে না, করলে তা’ তোমাদেরকে তাঁর পথ হতে বিচ্ছিন্ন করবে। এভাবে আল্লাহ তোমাদেরকে নির্দেশ দিলেন যেন তোমরা সাবধান হও।

সহিহ সুনানে ইবনে মাজাহ, ১১ নং হাদিসের (অবতরনিকা অধ্যায়) অনুবাদ-
১১। হযরত জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা নবি করিমের (সা.) কাছে উপস্থিত ছিলাম। তিনি প্রথমে একটি সরল রেখা টানলেন এবং তার ডান দিকে দুটো সরল রেখা টানলেন এবং বাঁ দিকেও দুটো সরল রেখা টানলেন। অতঃপর তিনি রেখার মধ্যবর্তী স্থানে হাত রেখে বললেন, এটা আল্লাহর রাস্তা। এরপর তিনি এ আয়াত তেলাওয়াত করলেন, ‘আর এপথই আমার সিরাতাম মুসতাকিম (সরল পথ)। সুতরাং তোমরা এর অনুসরন করবে, এবং বিভিন্ন পথ অনুসরন করবে না, করলে তা’ তোমাদেরকে তাঁর পথ হতে বিচ্ছিন্ন করবে’। -(সূরা আল আনআমঃ ১৫৩)।

* আব্বাসীয় আমির নিযুক্ত আহলে যিকর পরিষদ শয়তানের চার পথ ১। কাফেরদের পথ ২। মুশরিকদের পথ ৩। মোনাফেকদের পথ ৪। ফেতনাবাজ অহংকারী শয়তান আলেমদের পথ হতে ইসলামকে আলাদা করে সকল ক্ষেত্রে ইসলামের অভিন্ন বিধি-বিধান সাব্যস্ত করে এর নাম দিয়েছেন হানাফী মাযহাব। ইমাম গণের সর্ববৃহৎ দল এ মাযহাবের অনুসারী হয়েছে। কোরআন ও হাদিস ইমাম গণের সর্ববৃহৎ দলকে সঠিক সাব্যস্ত করে।

# ইমাম

সূরাঃ ২ বাকারা, ১২৪ নং আয়াতের অনুবাদ-
১২৪। আর যখন তোমার প্রতিপালক ইব্রাহীমকে কয়েকটি বাক্য (কালিমাত) দ্বারা পরীক্ষা করেছিলেন, পরে সে তা পূর্ণ করেছিল; তিনি বললেন নিশ্চয়ই আমি তোমাকে মানব জাতির ইমাম বানাব; সে বলেছিল আমার বংশধরগণ হতেও; তিনি বলেছিলেন, আমার প্রতিশ্রুতি জালেমদের প্রতি প্রযোজ্য হবে না।

সূরাঃ ২৫ ফুরকান, ৭৪ নং আয়াতের অনুবাদ-
৭৪। আর যারা প্রার্থনা করে, হে আমাদের প্রতি পালক! আমাদের জন্য এমন স্ত্রী ও সন্তান-সন্ততি দান কর যারা হবে আমাদের জন্য নয়ন প্রীতিকর এবং আমাদেরকে মুত্তাকীদের জন্য ইমাম কর।

সহিহ আবুদাউদ, ৬০১ নং হাদিসের (নামায অধ্যায়) অনুবাদ-
৬০১। হযরত আনাস ইবনে মালেক (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) ঘোড়ায় চড়েন। তিনি তার পিঠ থেকে পড়ে যাওয়ায় তাঁর শরীরের ডান দিকে আঘাত পান। এমতাবস্থায় তিনি বসে নামাজে ইমামতি করেন এবং আমরাও তাঁর পেছনে বসে নামাজ পড়ি। নামাজ শেষে মহানবি (সা.) বলেন, ইমামকে এ জন্যই নিযুক্ত করা হয়, যেন তার অনুসরন করা হয়। সুতরাং ইমাম যখন দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করবে তখন তোমরাও দাঁড়াবে। এরপর ইমাম যখন রুকু করবে তখন তোমারও রুকু করবে এবং ইমাম যখন মাথা উঠাবে তখন তোমরাও মাথা উঠাবে। এরপর ইমাম যখন ‘সামিয়াল্লাহু লিমান হামিদাহ’ বলবে তখন তোমরা বলবে ‘রাব্বানা ওয়া লাকাল হামদ’। ইমাম যখন বসে নামাজ পড়বে তখন তোরাও বসে নামাজ পড়বে।

সহিহ তিরমিযী, ১৯৮ নং হাদিসের (নামাজ অধ্যায়) অনুবাদ-
১৯৮। হযরত আবু হোরায়রা (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, ইমাম হচ্ছে যামিন এবং মোয়াজ্জিন হলো আমানতদার। হে আল্লাহ! ইমামকে সৎপথ দেখাও এবং মুয়াযযিনকে ক্ষমা কর।

সহিহ সুনানে ইবনে মাজাহ, ৩৯৫০ নং হাদিসের (ফিতনা অধ্যায়) অনুবাদ-
৩৯৫০। আনাস ইবনে মালেক (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহকে (সা.)বলতে শুনেছি আমার উম্মত পথভ্রষ্টতার উপর একত্রিত হবে না। যখন তোমরা উম্মতের মাঝে মতপার্থক্য দেখতে পাবে, তখন সর্ববৃহৎ দলের সাথে সম্পৃক্ত থাকবে।

* অনুসরনের জন্য মুত্তাকীদের দীনের যামিনদার ইমাম নিযুক্ত করা হয়। তাঁদের সর্ববৃহৎ দল অবশ্যই উম্মত এবং হেদায়াত প্রাপ্ত। তাঁরা হানাফী বিধায় হানাফী ইমামগণের সর্ববৃহৎ দলের অনুসারী হওয়া সকল মুসলিম ও মুছল্লীর জন্য ফরজ। হানাফী আলেমগণ হানাফী ফিকাহের অনুসারী। অথচ শয়তান আলেমগণ কোরআন ও হাদিস মানার কথা বললেও ফিকাহ মানার কথা বলে না। অথচ কোরআন ও হাদিসে বিশেষভাবে ফিকাহ মানার কথা বলা আছে।

# ফিকাহ

সূরা: ৪ নিসা, ৭৮ নং আয়াতের অনুবাদ-
৭৮। তোমরা যেখানেই থাক মৃত্যু তোমাদেরকে পাকড়াও করবে যদি তোমরা সুদৃঢ় দুর্গেও অবস্থান কর। আর যদি তাদের উপর কোন মঙ্গল অবতীর্ণ হয় তবে বলে, এটা আল্লাহর কাছ থেকে। আর যদি তাদের উপর কোন অমঙ্গল অবতীর্ণ হয় তবে বলে, এটা তোমার কাছ থেকে হয়েছে।তুমি বল সবই আল্লাহর কাছ থেকে হয়। অতএব ঐ সম্প্রদায়ের কি হয়েছে যে তারা ফিকাহের মাধ্যমে (গভীর জ্ঞান) কোন হাদিস বুঝে না?

* হাদিস বুঝতে ফিকাহ লাগবে।

সূরা: ৬ আনআম, ২৫ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৫। তাদের মধ্যে কতক তোমার দিকে কান পেতে রাখে, কিন্তু আমি তাদের অন্তরে আবরণ দিয়েছি যেন তারা এর ফিকাহ (গভীর জ্ঞান) না বুঝে এবং তাদের কানে বধিরতা দিয়েছি। আর তারা সকল নিদর্শন দেখলেও ঈমান আনবে না। এমনকি তারা যখন তোমার নিকট এসে বিতর্কে লিপ্ত হয় তখন কাফিরগণ বলে, এসব তো আগের লোকদের উপকথা ছাড়া কিছুই নয়।

* ফিকাহের অনুপস্থিতি জনিত কারণে কাফিরগণ কোরআন বুঝতে পরেনি। সেজন্য তারা কোরআনের কথাকে আগের লোকদের উপকথা বলেছে। সুতরাং কোরআন বুঝতে ফিকাহ লাগবে।

সূরা: ৬ আনআম, ৬৫ নং আয়াতের অনুবাদ-
৬৫। তুমি বলে দাও- আল্লাহ তোমাদের উর্ধলোক থেকে এবং তোমাদের পায়ের তলদেশ থেকে শাস্তি প্রেরণ করতে যথেষ্ট ক্ষমতাবান। অথবা তোমাদেরকে বিভিন্ন দলে বিভক্ত করতে অথবা এক দলকে অপর দলের সংঘর্ষের আস্বাদ গ্রহণ করাতে তিনি সক্ষম। দেখ আমি কিরূপে বিভিন্ন প্রকারের আয়াত সমূহ বিবৃত করি যাতে তারা এর ফিকাহ (গভীর জ্ঞান) বুঝতে পারে।

* বিভিন্ন প্রকারের আয়াত বিবৃত করা হয়েছে কোরআনের ফিকাহ বুঝার জন্য। সুতরাং কোন আয়াত বুঝা না গেলে সেই আয়াত সংশ্লিষ্ট অন্য আয়াত সমূহ এর সাথে যুক্ত করে সেই আয়াতের ফিকাহ (মর্ম) বুঝতে হবে।

সূরা: ৬ আনআম, ৯৮ নং আয়াতের অনুবাদ-
৯৮। তিনিই তোমাদেরকে একই ব্যক্তি থেকে সৃষ্টি করেছেন। তোমাদের জন্য বেশী সময় এবং অল্প সময়ের বাসস্থান রয়েছে। এসব আয়াত আমি এমন কওমের জন্য সুস্পষ্টভাবে বর্ণনা করলাম যারা এর ফিকাহ (গভির জ্ঞান) বুঝে।

* আল্লাহ যাদের প্রতি কোরআন নাযিল করেছেন তাদের কিছু লোক অবশ্যই এর ফিকাহ বুঝে।

সূরা: ৯ তাওবা, ৮১ নং আয়াতের অনুবাদ-
৮১। যারা পিছনে রয়ে গেল তারা আল্লাহর রাসূলের বিরুদ্ধাচরণ করে বসে থাকাতেই আনন্দ বোধ করল। আর তাদের ধন-সম্পদ ও জীবন দ্বারা আল্লাহর পথে জিহাদ করা অপছন্দ করল। আর তারা বলল, গরমের মধ্যে অভিযানে বের হবে না। বল উত্তাপে জাহান্নামের আগুন প্রচন্ডতম গরম। যদি তারা ফিকাহ (গভীর জ্ঞান) বুঝতো।

* ফিকাহের জ্ঞান না থাকাতেই কিছু লোক মোনাফেক হয়ে রাসূলের (সা.) বিরুদ্ধাচরণ করেছে।

সূরা: ৯ তাওবা, ৮৭ নং আয়াতের অনুবাদ-
৮৭। তারা অন্তঃপুরবাসিনীদের (মহিলা) সাথে থাকতে পছন্দ করলো। আর তাদের অন্তরে মোহর লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। এজন্য তারা ফিকাহ (গভীর জ্ঞান) বুঝে না।

* অন্তরে মোহর লাগানোর কারণে অনেকে ফিকাহ বুঝে না।

সূরা: ৯ তাওবা, ১২২ নং আয়াতের অনুবাদ-
১২২। আর মু’মিনদের এটাও উচিৎ নয় যে (জিহাদের জন্য) সবাই একত্রে বের হয়ে পড়বে। সুতরাং এমন কেন করা হয় না যে, তাদের প্রত্যেক বড় দল হতে এক একটি ছোট দল (জিহাদে) বের হয় যাতে অবশিষ্ট লোক ফিকাহ (দীনের গভীর জ্ঞান) অর্জন করতে থাকে। আর যাতে তারা নিজ কওমকে ভয় প্রদর্শন করে, যাতে তারা সাবধান হয়।

* ফিকাহের জ্ঞান ছাড়া কওমকে সাবধান করার অধিকার কারো নেই।

সূরা: ৯ তাওবা, ১২৭ নং আয়াতের অনুবাদ-
১২৭। যখনই কোন সূরা নাযিল হয় তখন তারা একে অপরের দিকে তাকায় এবং ইশারায় জিজ্ঞাস করে, তোমাদেরকে কেউ দেখেছে কি? অতঃপর তারা সরে পড়ে। আল্লাহ তাদের অন্তরকে সত্য বিমুখ করেছেন। কারণ তারা ফিকাহ বিহীন (গভীর জ্ঞান) কওম।

* ফিকাহের জ্ঞানের অভাব জনিত কারণে লোকেরা সত্য বিমুখ হয়।

সূরা: ১১ হুদ, ৯১ নং আয়াতের অনুবাদ-
৯১। তারা বলল, হে শুআয়ব! তুমি যা বল তার অনেক কথার ফিকাহ (গভীর জ্ঞান/মর্ম) আমরা বুঝি না। আর আমরা তো আমাদের মধ্যে তোমাকে দূর্বল দেখছি। তোমার স্বজন বর্গ না থাকলে আমরা তোমাকে পাথর ছুড়ে মেরে ফেলতাম। আর আমাদের উপর তুমি পরাক্রমশালী নও।

* ফিকাহ না বুঝায় লোকেরা একজন নবিকে হত্যা করার হুমকী দিয়েছে।

সূরা: ১৭ বনি ইসরাঈণ, ৪৪ নং আয়াতের অনুবাদ-
৪৪। সপ্ত আকাশ, পৃথিবী এবং এগুলোর ভিতরের সব কিছু তাঁর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে। আর এমন কিছু নাই যা তাঁর সপ্রশংস পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে না। কিন্তু ওগুলোর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণার ফিকাহ (গভীর জ্ঞান/মর্ম) তোমরা বুঝ না। নিশ্চয়ই তিনি সহনশীল, ক্ষমাপরায়ন।

* ফিকাহ অধিক বুঝলে সপ্ত আকাশ, পৃথিবী এবং এগুলোর ভিতরের সব কিছুর আল্লাহর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণার বিষয়ও বুঝা যেত। সুতরাং ফিকাহ যত বেশী হয় সঠিক জ্ঞানের পরিধি তত বাড়ে।

সূরা: ১৭ বনি ইসরাঈণ, ৪৬ নং আয়াতের অনুবাদ-
৪৬। আমি তাদের অন্তরে আবরণ দিয়েছি যেন তারা এর ফিকাহ (গভির জ্ঞান) না বুঝে এবং তাদেরকে বধির করেছি। তোমার প্রতিপালক এক, এটা যখন তুমি কোরআন থেকে আবৃত্তি কর তখন তারা পৃষ্ঠ প্রদর্শন করে সরে পড়ে।

* আল্লাহ যে এক এটা লোকেরা বুঝে না ফিকাহ সংক্রান্ত ঘাটতির কারণে।

সূরা: ১৮ কাহফ, ৫৭ নং আয়াতের অনুবাদ-
৫৭। কোন ব্যক্তিকে তার প্রতিপালকের আয়াত মনে করিয়ে দেওয়ার পর সে যদি তা’ হতে মুখ ফিরিয়ে নেয় এবং তার কৃতকর্ম সমূহ ভুলে যায় তবে তার চেয়ে অধিক জালেম আর কে? আমি তাদের অন্তরে আবরণ দিয়েছি যেন তারা এর (কোরআনের) ফিকাহ (গভীর জ্ঞান) বুঝতে না পারে। আর আমি তাদের কানে বধিরতা এঁটে দিয়েছি। তুমি তাদেরকে সৎপথে আহবান করলেও তারা কখনও সৎপথে আসবে না।

* ফিকায় ঘাটতি থাকলে লোকেরা বড় রকমের জালিম হয়ে যায়।

সূরা: ২০ তাহা, ২৮ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৮। যাতে তারা আমার (মুছা) কথার ফিকাহ (গভীর জ্ঞান/মর্ম) বুঝতে পারে।

* কথার ফিকাহ বুঝতে কথা সুস্পষ্ট হতে হবে।

সূরা: ৪৮ ফাতহ, ১৫ নং আয়াতের অনুবাদ-
১৫। তোমরা যখন যুদ্ধলব্ধ সম্পদ সংগ্রহের জন্য যাবে তখন যারা পিছনে থেকে গিয়েছিল তারা বলবে, আমাদেরকে তোমাদের সাথে যেতে দাও। তারা আল্লাহর প্রতিশ্রুতি পরিবর্তন করতে চায়। বল তোমরা কিছুতেই আমাদের সঙ্গী হতে পারবে না। আল্লাহ পূর্বেই এমন ঘোষণা করেছেন। তারা অবশ্যই বলবে, তোমরা তো আমাদের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করতেছ। বস্তুত তাদের ফিকাহ (গভীর জ্ঞান/বোধশক্তি) সামান্য।

* ফিকাহ কম থাকায় মোনাফেক মুমিনের সঙ্গী হতে পারে না।

সূরা: ৫৯ হাসর, ১৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
১৩। প্রকৃতপক্ষে এদের অন্তরে আল্লাহ অপেক্ষা তোমাদের ভয় বেশী। এটা এ জন্য যে এরা ফিকাহ (গভীর জ্ঞান) বিহীন কওম।

* ফিকাহ না থাকায় লোকেরা আল্লাহর চেয়ে তাঁর বান্দাদেরকে বেশী ভয় করে। অথচ আল্লাহ চাইলে মানুষ কারো কোন ক্ষতি করতে পারে না। আল্লাহ কোন লোককে শাস্তি দিলে কোন মানুষ তাকে আল্লাহর শাস্তি থেকে রক্ষা করতে পারে না।

সূরা: ৬৩ মুনাফিকুন, ৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
৩। এটা এজন্য যে এরা ঈমান আনার পর কুফুরী করেছে। ফলে এদের অন্তর মোহর করে দেওয়া হয়েছে। ফলে এরা ফিকাহ (গভীর জ্ঞান/মর্ম) বুঝে না।

* ফিকাহ না থাকলে লোকেরা ঈমান গ্রহণের পর কুফুরী করতে পারে। সেজন্য ঈমান সুরক্ষায় ফিকাহ জরুরী।

সূরা: ৬৩ মুনাফিকুন, ৭ নং আয়াতের অনুবাদ-
৭। তারা বলে তোমরা আল্লাহর রাসূলের সহচরদের জন্য ব্যয় করবে না। যাতে তারা সরে পড়বে। আকাশ মন্ডলী ও পৃথিবীর ধনভান্ডার তো আল্লাহরই। কিন্তু মোনাফিকরা এর ফিকাহ (গভীর জ্ঞান/মর্ম) বুঝে না।

* ফিকাহের অভাবে লোকেরা মোনাফেক হয়ে যায়।

সহিহ আল বোখারী, ২৮৮৯ নং হাদিসের (জিহাদ অধ্যায়) অনুবাদ-
২৮৮৯। হযরত মুয়াবিয়া (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, আল্লাহ যাকে কল্যাণ দানের ইচ্ছা করেন, তাঁকে তিনি দীন সম্পর্কে ফিকাহ (গভির জ্ঞান) দান করেন। আল্লাহ প্রদানকারী আর আমি বন্টনকারী। আমার এ উম্মত তাদের বিরোধীদের উপর চিরদিন বিজয়ী হবে। এ অবস্থায় আল্লাহর চূড়ান্ত সমাধান এসে যাবে।

* আল্লাহর কল্যাণ যারা পায় তারা ফিকাহ পায়। তারা চির বিজয়ী হয়। হানাফী ফিকাহ প্রাপ্ত হয়েছে সেজন্য বিজয়ী অবস্থায় গঠিত হয়ে অদ্যাবদি তেরশ বছরের বেশী সময় হানাফী বিজয়ী অবস্থায় বিদ্যমান। বিজয়ী অবস্থায় গঠিত হয়ে অদ্যাবদি বিজয়ী মুসলিমদের এমন আর কোন দল নেই। সুতরাং হানাফী ফিকাহ প্রাপ্ত হয়ে আল্লাহর কল্যাণ প্রাপ্ত হয়েছে। আল্লাহর সবচেয়ে বড় কল্যাণ হেদায়াত। কারণ এর বিনিময় জান্নাত। সুতরাং হানাফী হেদায়াত প্রাপ্ত।

সহিহ তিরমিযী, ২৬১৮ নং হাদিসের (ইলম সম্পর্কে অধ্যায়) অনুবাদ-
২৬১৮। হযরত ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, একজন ফকীহ শয়তানের মোকাবেলায় হাজার আবেদ অপেক্ষা বিপজ্জনক।

* ফকিহ সবচেয়ে দরকারী আলেম।

সহিহ সুনানে ইবনে মাজাহ, ২৩০ নং হাদিসের (অবতরনিকা অধ্যায়) অনুবাদ-
২৩০। হযরত যায়েদ ইবনে সাবিত (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি আমার থেকে একটি হাদিস শুনে অতঃপর তা’ অন্যদের কাছে পৌঁছে দেয় আল্লাহ তাকে হাস্যোজ্জল ও আনন্দময় করে দেবেন। কেননা এমন কতক ফিকাহ বাহক রয়েছে, যারা প্রকৃতপক্ষে ফকীহ নয়। কোন কোন ক্ষেত্রে এমনও হয় যে, ফিকাহ শিক্ষাদানকারীর চেয়ে উক্ত বিষয়ের শিক্ষার্থী অধিকতর জ্ঞানী হয়ে থাকে।

* ফিকাহ শিক্ষাদানকারীর চেয়ে উক্ত বিষয়ের শিক্ষার্থী অধিকতর জ্ঞানী হয়ে থাকে, এ সূত্রে ইমাম আবু হানিফা (র.) প্রকৃত ফিকাহ শিক্ষাদানকারী। কারণ বিশ্বের দুই তৃতীয়াংশের বেশী আলেম তাঁকে শিক্ষক মানে। সুতরাং তাঁর শিক্ষার্থীর জ্ঞানের চেয়ে অন্য কারো শিক্ষার্থীর জ্ঞান বেশী হওয়া সম্ভব নয়। সুতরাং তিনি ছাড়া অন্য কেউ প্রকৃত ফিকাহের শিক্ষাদানকারী নয়। সুতরাং তাঁর ছাত্রগণ ফিকাহের প্রকৃত জ্ঞান প্রাপ্ত। কোরআন ও হাদিসে তাঁদের সহিহ হওয়ার প্রমাণ থাকায় তাঁদের অমান্যতার সুযোগ নেই। সেজন্যই ইমাম আলেমগণের সর্ববৃহৎ দল ইমাম আবু হানিফার (র.) ছাত্র ইমলামের একমাত্র আহলে যিকর পরিষদের অনুসারী হয়েছে। আর ফেতনাবাজ অহংকারী শয়তান আলেম তাঁদের পথ ছেড়ে অন্য পথে চলে জাহান্নামী হয়েছে। এদের কোন ইবাদত আল্লাহর দরবারে কবুল হবে না।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.