নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

রক্ত দান করুন জীবন বাাঁচান

রক্ত দান

অতি সাধারণ

রক্ত দান › বিস্তারিত পোস্টঃ

ইসলামে একটি মাযহাব ও একটি তরিকার সঠিকতার প্রমাণ আছে, উক্ত মাযহাব ও তরিকার পরিপন্থি কোন কিছুর সঠিকার প্রমাণ নেই

০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০২২ বিকাল ৫:০৫




সূরাঃ ৪ নিসার ৮০ নং আয়াতের অনুবাদ-
৮০। কেউ রাসূলের আনুগত্য করলে সে তো আল্লাহরই আনুগত্য করল এবং মুখ ফিরিয়ে নিলে আমরা তোমাকে তাদের উপর হেফাজতকারী হিসেবে প্রেরণ করিনি (এ অপরাধের শাস্তি থেকে তুমি তাদেরকে হেফাজত বা রক্ষাকরতে পারবে না)।

সহিহ আল বোখারী, ১১৮ নং হাদিসের (কিতাবুল ইলম) অনুবাদ-
১১৮। হযরত আবু হোরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সা.) থেকে দু’প্রস্থ জ্ঞান স্মরণ রেখেছি। তার একটি আমি প্রকাশ করেছি এবং অপরটি এমন যে, আমি তা’ প্রকাশ করলে এ হলকুম কর্তন করা হবে।

* রাসূল (সা.) থেকে ইসলামী জ্ঞানের দু’টি ধারা প্রকাশ পেয়েছে। অনুমতি না থাকায় হযরত আবু হোরায়রা (রা.) একটি জ্ঞানের ধারা প্রকাশ করেছেন, অন্যটি প্রকাশ করেননি।

সহিহ আল বোখারী, ৩৪৩৮ নং হাদিসের (আম্বিয়া কিরাম অধ্যায়) অনুবাদ-
৩৪৩৮। হযরত সাদ (রা.)থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবি (সা.) আলীকে (রা.) লক্ষ্য করে বলে ছিলেন, তুমি কি এতে সন্তুষ্ট যে মর্যাদার দিক হতে মূসা (আ.) এর নিকট হারুণ (আ.) যে পর্যায়ের ছিলেন তুমিও আমার নিকট সে পর্যায়ে আছ।

সহিহ তিরমিযী, ৩৬৫৭ নং হাদিসের [ রাসূলুল্লাহ (সা.) ও তাঁর সাহাবীগণের মর্যাদা অধ্যায়] অনুবাদ-
৩৬৫৭। হযরত হুবশী ইবনে জুনাদা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন. রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন,আলী আমার থেকে এবং আমি আলীর থেকে। আমার কোন কাজ হয় আমি নিজেই সম্পন্ন করি অথবা আমার পক্ষ থেকে তা আলীই সম্পন্ন করে।

সহিহ তিরমিযী, ৩৬৬৪ নং হাদিসের [ রাসূলুল্লাহ (সা.) ও তাঁর সাহাবীগণের মর্যাদা অধ্যায়] অনুবাদ-
৩৬৬৪।হযরত জাবের (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন. তায়েফ অভিযানের দিন রাসূলুল্লাহ (সা.) আলীকে (রা.) কাছে ডেকে তার সাথে চুপিসারে কথাবার্তা বললেন। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, আমি তার সাথে চুপিসারে কথাবলিনি, বরং আল্লাহ তার সাথে চুপিসারে কথা বলেছেন।

সহিহ তিরমিযী, ৩৬৬১ নং হাদিসের [ রাসূলুল্লাহ (সা.) ও তাঁর সাহাবীগণের মর্যাদা অধ্যায়] অনুবাদ-
৩৬৬১। হযরত আলী (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন. রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, আমি প্রজ্ঞার ঘর এবং আলী তার দরজা।

* রাসূল (সা.) থেকে জ্ঞানের উভয় ধারা প্রকাশ পেয়েছে হযরত আলীর (রা.) মাধ্যমে। আর একাজে তাঁর সহায়ক ছিলেন স্বয়ং আল্লাহ।

সূরা: ৯ তাওবা, ১২২ নং আয়াতের অনুবাদ-
১২২। আর মু’মিনদের এটাও উচিৎ নয় যে (জিহাদের জন্য) সবাই একত্রে বের হয়ে পড়বে। সুতরাং এমন কেন করা হয় না যে, তাদের প্রত্যেক বড় দল হতে এক একটি ছোট দল (জিহাদে) বের হয় যাতে অবশিষ্ট লোক ফিকাহ (দীনের গভীর জ্ঞান) অর্জন করতে থাকে। আর যাতে তারা নিজ কওমকে ভয় প্রদর্শন করে, যাতে তারা সাবধান হয়।

* জ্ঞানের সাধারণ ধারার নাম ফিকাহ। কোরআন+হাদিস=ফিকাহ।

সূরাঃ ১৮ কাহফ, ৬০ থেকে ৮২ আয়াতের অনুবাদ-
৬০।যখন মূসা তাঁর সংগীকে বলেছিল, দুই সমুদ্রের সংগমস্থলে না পৌঁছে আমি থামব না অথবা আমি যুগ যুগ ধরে চলতে থাকব।
৬১।তারা উভয়ে যখন দুই সমুদ্রের সংগমস্থলে পৌঁছল তারা নিজেদের মৎসের কথা ভুলেগেল।উহা সুড়ংগের মত নিজের পথ করে সমূদ্রে নেমে গেল।
৬২। যখন তারা আরো অগ্রসর হলো মূসা তার সংগীকে বলল আমাদের নাস্তা নিয়ে আস।আমরা তো আমাদের সফরে ক্লান্ত হয়ে পড়েছি।
৬৩। সে বলল, আপনি কি দেখেছেন? যখন আমরা শিলাখন্ডে বিশ্রাম নিতে ছিলাম তখন আমি মৎসের কথা ভুলে গিয়ে ছিলাম! শয়তান উহার কথা বলতে ভুলিয়ে দিয়েছিল।মৎসটি বিস্ময়করভাবে সমূদ্রে নিজের পথ করে নেমে গেল।
৬৪। মূসা বলল, আমরা তো সেই স্থানটিই খুঁজতেছিলাম।অতঃপর তারা নিজেদের পদচিহ্ন ধরে ফিরে চলল।
৬৫। অতঃপর তারা সাক্ষাৎ পেল আমাদের বান্দাদের মধ্যে একজনের।যাকে আমরা আমাদের নিকট হতে অনুগ্রহ দান করে ছিলাম এবং আমরা তাকে আমাদের নিকট হতে শিক্ষা দিয়ে ছিলাম এক বিশেষ জ্ঞান।
৬৬। মূসা তাকে বলল, সত্য পথের যে জ্ঞান আপনাকে দান করা হয়েছে তা’ হতে আমাকে শিক্ষা দিবেন এ শর্তে আমি আপনার অনুসরন করব কি?
৬৭। সে বলল, আপনি কিছুতেই আমার সাথে ধৈর্য ধরে থাকতে পারবেন না।
৬৮। যে বিষয় আপনার জ্ঞানায়ত্ত নয় সে বিষয়ে আপনি ধৈর্য ধরবেন কেমন করে?
৬৯। মূসা বলল, আল্লাহ চাইলে আপনি আমাকে ধৈর্যশীল পাবেন এবং আপনার কোন আদেশ আমি অমান্য করব না।
৭০। সে বলল, যেহেতু আপনি আমার অনুসরন করবেনই তবে কোন বিষয়ে আমাকে প্রশ্ন করবেন না, যতক্ষণ না আমি সে সম্বন্ধে আপনাকে কিছু বলি।
৭১।অতঃপর উভয়ে চলতে লাগল। পরে যখন তারা নৌকায় চড়লো সে ইহা ফুটো করে দিল।মূসা বলল, আপনি কি আরোহীদিগকে নিমজ্জিত করে দেবার জন্য উহা ফুটো করলেন? আপনিতো গুরুতর অন্যায় কাজ করলেন।
৭২। সে বলল, আমি কি বলিনি যে আপনি আমার সাথে ধৈর্য ধরতে পারবেন না?
৭৩। মূসা বলল, আমার ভুলের জন্য আমাকে অপরাধী করবেন না এবং আমার বিষয়ে অত্যাধিক কঠোরতা অবলম্বন করবেন না।
৭৪। অতঃপর উভয়ে চলতে লাগল।চলতে চলতে ইহাদের সাথে এক বালকের সাক্ষাত হলে সে উহাকে হত্যা করল। তখন মূসা বলল, আপনি এক নিস্পাপ জীবন নাশ করলেন হত্যার অপরাধ ছাড়াই। আপনিতো এক গুরুতর অন্যায় কাজ করলেন।
৭৫।সে বলল, আমি কি বলিনি যে আপনি আমার সাথে ধৈর্য ধরতে পারবেন না?
৭৬।মূসা বলল, এরপর যদি আমি আপনাকে কোন বিষয়ে জিজ্ঞাস করি তবে আপনি আমাকে সংগে রাখবেন না।আমার ওযর-আপত্তি চূড়ান্ত হয়েছে।
৭৭।অতঃপর উভয়ে চলতে লাগল।চলতে চলতে তারা এক জনপদের অধিবাসীদের নিকট পৌঁছে তাদের নিকট খাদ্য চাইল।কিন্তু তারা তাদের মেহমানদারী করতে অস্বীকার করল। অতঃপর তারা এক পতনোন্মুখ দেয়াল দেখতে পেল এবং সে উহা সুদৃঢ় করে দিল।মূসা বলল, আপনিতো ইচ্ছা করলে এর জন্য পারিশ্রমিক গ্রহণ করতে পারতেন।
৭৮। সে বলল, এখানেই আপনার এবং আমার মধ্যে সম্পর্কছেদ হলো।যে বিষয়ে আপনি ধৈর্য ধারণ করতে পারেননি আমি তার তাৎপর্য ব্যাখ্যা করছি।
৭৯।নৌকাটির ব্যাপার-এটা ছিল কতিপয় দরিদ্র ব্যক্তির, উহারা সমূদ্রে জীবিকা অন্বেষণ করত। আমি নৌকাটিতে ত্রুটিযুক্ত করতে ইচ্ছা করলাম। কারণ উহাদের সম্মুখে ছিল এক রাজা, যে বল প্রয়োগে নৌকা সকল ছিনিয়ে নিত।
৮০। আর বালকটি, তার পিতামাতা ছিল মু’মিন। আমি আশংকা করলাম যে সে বিদ্রোহাচরণ ও কূফুরি দ্বারা তাদেরকে বিব্রত করবে।
৮১। অতঃপর আমি চেয়েছি যে তাদের প্রতিপালক যেন তাদেরকে তার পরিবর্তে এক সন্তান দান করেন। যে হবে পবিত্রতায় উত্তম এবং ভক্তিতে ঘনিষ্ঠ।
৮২। আর ঐ দেয়ালটি ছিল নগরবাসী দুই পিতৃহীন বালকের।যার নীচে রয়েছে তাদের গুপ্তধন।আর তাদের পিতাছিল সালেহ বা সৎকর্মপরায়ন।সুতরাং আপনার প্রতিপালক দয়া পরবশ হয়ে ইচ্ছা করলেন যে তারা বয়ঃপ্রাপ্ত হয়ে তাদের ধনভান্ডার উদ্ধার করুক।আমি নিজ হতে কিছু করিনি। আপনি যে বিষয়ে ধৈর্য ধরতে অপারগ হয়েছিলেন এটা তার ব্যাখ্যা।

* জ্ঞানের বিশেষ ধারার নাম মারেফাত বা তাসাউফ। হযরত খিজির (আ.) এ জ্ঞান প্রাপ্ত ছিলেন। হযরত মুসা (আ.) এ জ্ঞান প্রাপ্ত ছিলেন না। আমাদের নবিকে (সা.) উভয় জ্ঞান দেওয়া হয়েছে। যা হযরত আবু হোরায়রার (রা.) হাদিস থেকে জানাগেল।

সূরাঃ ৬২ জুমুআ, ২ নং থেকে ৪ নং আয়াতের অনুবাদ।
২। তিনিই উম্মীদের মধ্যে একজন রাসুল পাঠিয়েছেন তাদের মধ্য হতে, যে তাদের নিকট আবৃত করে তাঁর আয়াত সমূহ; তাদেরকে পবিত্র করে এবং শিক্ষা দেয় কিতাব ও হিকমত; এর আগে তো এরা ছিল ঘোর বিভ্রান্তিতে।
৩। আর তাদের অন্যান্যের জন্যও যারা এখনো তাদের সহিত মিলিত হয়নি। আল্লাহ পরাক্রমশালী প্রজ্ঞাময়।
৪। ওটা আল্লাহরই অনুগ্রহ, যাকে ইচ্ছা তিনি ওটা দান করেন। আর আল্লাহ তো মহা অনুগ্রহশীল।

# সূরাঃ ৬২ জুমুআ, ৩ নং আয়াতের তাফসির- তাফসিরে ইবনে কাছির
৩। এ আয়াতের তাফসিরে আবু হুরায়রা হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, একদা আমরা রাসূলুল্লাহর পার্শ্বে বসে ছিলাম, এমন সময় তাঁর উপর সূরা জুমুয়া অবতীর্ণ হয়। জনগণ জিজ্ঞাস করেন হে আল্লাহর রাসূল (সা.)! ‘ওয়া আখারিনা মিনহুম লাম্মা ইয়ালহাকু বিহিম’ দ্বারা কাদেরকে বুঝানো হয়েছে? কিন্তু তিনি কোন উত্তর দিলেন না। তিন বার এ প্রশ্ন করা হয়। আমাদের মধ্যে সালমান ফারসীও (রা.) ছিলেন। রাসূলুল্লাহ (সা.) তাঁর হাতখানা সালমান ফারসীর (রা.) উপর রেখে বললেন, ঈমান যদি সারিয়্যা নক্ষত্রের নিকট থাকত তাহলেও এই লোকগুলোর মধ্যে এক কিংবা একাধিক ব্যক্তি এটা পেয়ে যেত।(ফাতহুলবারী ৮/৫১০, মুসলিম ৪/১৯৭২, তিরমিযী ৯/২০৯, ১০/৪৩৩, নাসাঈ ৫/৭৫, ৬/৪৯০, তাবারী ২৩/৩৭৫)।

# সহিহ আল-বোখারী

সহিহ আল বোখারী, ৪৫৩২ নং ৪৫৩৩ নং হাদিসের (তাফসীর অধ্যায় – ৬২. সূরা আল জুমুআ) অনুবাদ
৪৫৩২। হযরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা নবি করিমের নিকট বসা ছিলাম। এমন সময় তাঁর উপর সূরা জুমুআ অবতীর্ণ হল – যাতে এও আছে ‘আর তাদের অন্যান্যের জন্যও যারা এখনো তাদের সহিত মিলিত হয়নি’। তিনি বলেন, তারা কারা হে আল্লাহর রাসূল! তিনবার একথা জিজ্ঞেস করার পরও তিনি এ কথার কোন জবাবই দিলেন না। আমাদের মধ্যে সালমান ফারসীও (রা.) হাজির ছিলেন। নবি করিম (সা.) তার উপর হাত রেখে বললেন, ঈমান ছূরাইয়া নক্ষত্রের নিকট থাকলেও অনেক ব্যক্তিই কিংবা যে কোন একজন তা’ পেয়ে যাবে।
৪৫৩৩। আবু হুরায়রা (রা.) নবি (সা.) হতে বর্ণনা করে বলেন, এদের কিছু লোক তা’অবশ্যই পেয়ে যাবে।

# সহিহ মুসলিম

সহিহ মুসলিম, ৬৩৩৯ নং ও ৬৩৪০ নং হাদিসের [ সাহাবায়ে কেরামের (রা.) মর্যাদা অধ্যায়] অনুবাদ-
৬৩৩৯।হযরত আবু হোরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত। যদি দীন আসমানের দূরবর্তী সুরাইয়া নক্ষত্ররাজির কাছে থাকত, তবে পারস্যের যে কোন ব্যক্তি তা’ নিয়ে আসত; অথবা তিনি বলেছেন, কোন পারসিক সন্তান তা’ অর্জন করত।

সহিহ মুসলিম, ৬৩৪০ নং হাদিসের [ সাহাবায়ে কেরামের (রা.) মর্যাদা অধ্যায়] অনুবাদ-
৬৩৪০। হযরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা নবি করিমের (সা.) নিকট বসা ছিলাম। তখন তাঁর উপর সূরা জুমুয়া অবতীর্ণ হল। যখন তিনি এ আয়াত পড়লেন, ‘ওয়া আখারিনা মিনহু লাম্মা ইয়ালহাকু বিহিম - আর তাদের অন্যান্যের জন্যও যারা এখনো তাদের সহিত মিলিত হয়নি’ তখন জনৈক ব্যক্তি বলল, হে আল্লাহর রাসূল (সা.) এরা কারা? নবি করিম (সা.) তার কোন জবাব দিলেন না। এমন কি সে একবার অথবা দু’ বার কিংবা তিনবার তাঁকে জিজ্ঞাস করল। রাবী বলেন, তখন আমাদের মাঝে সালমান ফারসী (রা.) ছিলেন। রাবী বলেন, নবি করিম (সা.) তাঁর হাত সালমানের (রা.) উপর রাখলেন, এরপর বললেন, যদি ঈমান সূরাইয়া তারকার কাছে থাকত তাহলে অবশ্যই তার গোত্রের লোকেরা সেখান পর্যন্ত পৌঁছত।

# সহিহ তিরমিযী

সহিহ তিরমিযী, ৩৮৬৮ নং হাদিসের [ রাসূলুল্লাহ (সা.) ও তাঁর সাহাবীগণের মর্যাদা অধ্যায়] অনুবাদ-
৩৮৬৮। হযরত আবু হোরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা রাসূলুল্লাহর (সা.) নিকট উপস্থিত ছিলাম। তখন সূরা আল-জুমুআ অবতীর্ণ হয় এবং তিনি তা’ তেলাওয়াত করেন। তিনি ‘ওয়া আখারিনা মিসহুম লাম্মা ইয়ালহাকু বিহিম- আর তাদের অন্যান্যদের জন্যও যারা এখনো তাদের সাথে মিলিত হয়নি’ পর্যন্ত পৌঁছলে এক ব্যক্তি তাঁকে বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! এসমস্ত লোক কারা, যারা এখনো আমাদের সাথে মিলিত হয়নি? তিনি তাকে কিছুই বললেন না। সালমান আল –ফারসী আমাদের মাঝে উপস্থিত ছিলেন। রাসূলুল্লাহ (সা.) নিজের হাতখানা সালমানের (রা.) উপর রেখে বললেন সেই সত্তার কসম যার হাতে আমার প্রাণ! ঈমান সুরাইয়া তারকায় থাকলেও এদের কিছু লোক তা’ নিয়ে আসবে।

সহিহ তিরমিযী, ৩২৪৮ নং হাদিসের (তাফসীরুল কোরআন – সূরা আল-জুমুয়া) অনুবাদ-
৩২৪৮। হযরত আবু হোরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, সূরা আল-জুমুয়া অবতীর্ণ হওয়াকালে আমরা রাসূলুল্লাহর (সা.) নিকটেই ছিলাম।তিনি তা’ তেলাওয়াত করেন।তিনি ‘আর তাদের অন্যান্যদের জন্যও যারা এখনো তাদের সাথে মিলিত হয়নি’ (৬২,৩) পর্যন্ত পৌঁছলে এক ব্যক্তি তাঁকে বলেন, হে আল্লাহর রাসূল! যারা এখনো আমাদের সাথে মিলিত হয়নি তারা কারা? নবি করিম (সা.) তার কথায় চুপ রইলেন। বর্ণনাকারী বলেন, তখন সালমান (রা.) আমাদের সাথেই ছিলেন। অতঃপর রাসূলুল্লাহ (সা.) সালমানের (রা.) উপর হাত রেখে বললেন, সেই মহান সত্তার শপথ, যাঁর হাতে আমার জীবন! ঈমান যদি সুরাইয়্যা নক্ষত্রেও থাকে তবুও তাদের মধ্য হতে কিছু লোক তা’ নিয়ে আসবে।

# হযরত সালমান আল ফারসী (রা.)

সহিহ তিরমিযী, ৩৭৪৯ নং হাদিসের [ রাসূলুল্লাহ (সা.) ও তাঁর সাহাবীগণের মর্যাদা অধ্যায়] অনুবাদ-
৩৭৪৯। হযরত কাঈসামা ইবনে সাবরা (র.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি মদীনায় এসে আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করলাম, তিনি যেন আমাকে একজন সৎ সাথী মিলিয়ে দেন। অতএব তিনি আবু হোরায়রাকে (রা.) আমার ভাগ্যে ঝুটিয়ে দিলেন। তাঁর পাশে বসে আমি তাঁকে বললাম, আমি আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করে ছিলাম, তিনি যেন আমাকে একজন সৎ সাথী মিলিয়ে দেন।অতএব আপনি আমার জন্য সহজলভ্য হয়েছেন।তিনি (আমাকে) জিজ্ঞাস করেন তুমি কোথা হতে এসেছ? আমি বললাম, আমি কুফার অধিবাসী। আমি ভালোর খোঁজে এসেছি এবং তাই খুঁজছি। তিনি বলেন, তোমাদের মাঝে কি সাদ ইবনে মালেক (রা.) যার দোয়া কবুল হয়, রাসূলুল্লাহর (সা.) অযুর পানি ও জুতা বহনকারী ইবনে মাসউদ (রা.), রাসূলুল্লাহর (সা.) গোপন তথ্যের খাজাঞ্চী হোযায়ফা (রা.), আমারা যাকে আল্লাহর নবির (সা.) ভাষায় আল্লাহ শয়তানের আক্রমণ থেকে বাঁচিয়ে রেখেছেন এবং দুই কিতাবধারী সালমান (রা.) প্রমুখ সাহাবীগণ বিদ্যমাণ নেই? কাতাদা বলেন দুই কিতাব হলো, ইঞ্জিল ও কোরআন।

সহিহ তিরমিযী, ৩৭৩৪ নং হাদিসের [ রাসূলুল্লাহ (সা.) ও তাঁর সাহাবীগণের মর্যাদা অধ্যায়] অনুবাদ-
৩৭৩৪। হযরত আনাস ইবনে মালেক (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, জান্নাত তিনজন লোকের জন্য আগ্রাহান্বিত, আলী, আম্মার ও সালমান (রা.)।

সহিহ বোখারী ৪৯৯ নং হাদিসের (সালাতের ওয়াক্ত সমূহ অধ্যায়) অনুবাদ-
৪৯৯। হযরত যুহুরী (র.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি দামেশকে আনাস ইবনে মালেকের (রা.) নিকট গিয়ে দেখতে পেলাম, তিনি কাঁদছেন। আমি তাঁকে জিজ্ঞেস করলাম, আপনি কাঁদছেন কেন? তিনি বললেন, আমি যা যা দেখেছি তার মধ্যে এ নামাযই আজ পর্যন্ত অবশিষ্ট ছিল। কিন্তু এখন নামাজও নষ্ট হতে চলেছে।

* সাহাবা যুগেই ইসলাম বিনষ্ট হয়ে সুরাইয়্যা নক্ষত্রের নিকট চলে গিয়েছিল। সেখান থেকে হযরত সালমান আল ফারসীর (রা.) ইরাকের তাঁর মত অনারব পারসিক সন্তান বসরার ইমাম হাসান বসরী (র.) ইসলামী জ্ঞানের তাসাউফ ধারাটি প্রাপ্ত হন। আর হযরত সালমান আল ফারসীর (রা.) ইরাকের তাঁর মত অনারব পারসিক সন্তান কুফার ইমাম আবু হানিফা (র.) ইসলামী জ্ঞানের ফিকাহ ধারাটি প্রাপ্ত হন। এ তালিকায় উক্ত দু’জন ছাড়া আর কারো নাম উপস্থাপিত হয়নি।

ইমাম হাসান বসরী (র.) থেকে তাসাউফ ধারাটি প্রাপ্ত হন খাজা মঈনদ্দিন চিশতি।তাঁর এ জ্ঞান প্রাপ্তির ধারা হলো- ১। হযরত মোহাম্মদ (সা.) ২। হযরত আলী (রা.) ৩। হযরত ইমাম হাসান বছরী (র.) ৪। হযরত আব্দুল ওয়াহিদ বিন যায়েদ (র.) ৫। হযরত ফুযায়েল বিন আয়ায (র.) ৬। হযরত ইব্রাহীম বিন আদহাম (র.) ৭। হযরত হুজাইফা আল-মারশি (র.) ৮। হযরত আবু হুবায়রা আল-বসরী (র.) ৯। হযরত খাজা মুমশাদ উলু আল নিাওয়ারী (র.) ১০। হযরত আবু ইসহাক শামী (র.) ১১। হযরত আবু আহমাদ আবদাল চিশতি (র.) ১২। হযরত আবু মোহাম্মদ চিশতি (র.) ১৩। হযরত আবু ইউসুফ ইবনে সামান মুহাম্মদ মাসআন চিশতি (র.) ১৪। হযরত মওদুদ চিশতি (র.) ১৫। হযরত শরীফ জান্দানি (র.) ১৬। হযরত উসমান হারুনী (র.) ১৭। হযরত খাজা মঈনদ্দিন চিশতি (র.)। হাদিস অনুযায়ী হযরত খাজা মঈনদ্দিন চিশতি মারেফাতের এলেমের দিক থেকে সঠিক লোক ছিলেন।

সহিহ সুনানে নাসাঈ, ৩১৭৭ নং হাদিসের (জিহাদ অধ্যায়) অুনবাদ-
৩১৭৭। হযরত আবু হুরায়রা (রা.)থেকে বর্ণিত।তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) আমাদেরকে হিন্দুস্থানের যুদ্ধের আশ্বাস দিয়েছেন। আমি তা’ পেলে তাতে আমার জান মাল উৎসর্গ করব। আর আমি যদি নিহত হই তবে মর্যাদাবান শহীদ বলে গণ্য হব, আর যদি প্রত্যাবর্তন করি, তাহলে আমি আবু হুরায়রা হব আযাদ বা জাহান্নাম হতে মুক্ত।

সহিহ সুনানে নাসাঈ, ৩১৭৮ নং হাদিসের (জিহাদ অধ্যায়) অুনবাদ-
৩১৭৮। হযরত রাসূলুল্লাহর (সা.)গোলাম সাওবান (রা.)থেকে বর্ণিত।তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন আমার উম্মতের দু’টি দল, আল্লাহ তায়ালা তাদেরকে জাহান্নাম হতে নাজাত দান করেছেন, একদল যারা হিন্দুস্থানের জিহাদ করবে আর একদল যারা ঈসা ইবনে মরিয়মের সাথে থাকবে।

* হিন্দুস্থানের প্রথম সর্বাত্মক যুদ্ধ হলো তরাইনের প্রথম যুদ্ধ তাতে সিহাবদ্দিন মোহাম্মদ ঘুরী জয় লাভ করেননি। এর পর হিন্দুস্থানের দ্বিতীয় সর্বাত্মক যুদ্ধ হলো তরাইনের দ্বিতীয় যুদ্ধ। সে যুদ্ধে হযরত খাজা মঈনদ্দিন চিশতি (র.) অংশগ্রহণ করেছেন এবং তাতে সিহাবদ্দিন মোহাম্মদ ঘুরী জয়লাভ করেন এবং তাতে ভারতের বিশাল এলাকা জুড়ে মুসলিম শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়। সে যুদ্ধে জয়ী সিহাবদ্দিন মোহাম্মদ ঘুরী ও হযরত খাজা মঈনদ্দিন চিশতির (র.) দল ছিল হানাফী। সুতরাং উক্ত যুদ্ধ হানাফীদেরকে নাজাত প্রাপ্ত দল সাব্যস্ত করে। আর হানাফীদের চিশতিয়া তরিকাকে বিশেষ নাজাত প্রাপ্ত সাব্যস্ত করে।

# ইমাম আবু হানিফা (র.) থেকে ইসলামী জ্ঞানের ফিকাহ ধারা প্রাপ্ত হন আহতলে যিকর-

সূরা: ৯ তাওবা, ১২২ নং আয়াতের অনুবাদ-
১২২। আর মু’মিনদের এটাও উচিৎ নয় যে (জিহাদের জন্য) সবাই একত্রে বের হয়ে পড়বে। সুতরাং এমন কেন করা হয় না যে, তাদের প্রত্যেক বড় দল হতে এক একটি ছোট দল (জিহাদে) বের হয় যাতে অবশিষ্ট লোক ফিকাহ (দীনের গভীর জ্ঞান) অর্জন করতে থাকে। আর যাতে তারা নিজ কওমকে ভয় প্রদর্শন করে, যাতে তারা সাবধান হয়।

সূরাঃ ১৬ নাহল, ৪৩ ও ৪৪ নং আয়তের অনুবাদ
৪৩।তোমার পূর্বে আমরা পুরুষ ভিন্ন (বার্তা বাহক) প্রেরণ করিনি। আমরা তাদের প্রতি ওহি প্রেরণ করেছিলাম।অতএব আহলে যিকরকে জিজ্ঞাস কর, যদি তোমরা না জান।
৪৪।সুস্পষ্ট প্রমাণ ও কিতাব সমূহ সহ।আর মানুষকে তাদের প্রতি যা অবতীর্ণ করা হয়েছে তা, সুস্পষ্টভাবে বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য আমরা আপনার প্রতি নাজিল করেছি যিকর। যেন তারা চিন্তা ভাবনা করতে পারে।

মেশকাত ২২৪ নং হাদিসের (ইলম অধ্যায়) অনুবাদ-
হযরত আওফ ইবনে মালেক আশজায়ী (রা.) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, স্বয়ং আমির অথবা আমীরের পক্ষ থেকে নির্দেশ প্রাপ্ত ব্যক্তি অথবা কোন অহংকারী ব্যতীত অপর কেউ ওয়াজ করতে পারে না।

* ফিকাহ সহযোগে কোরআন জানা আমীরের পক্ষ থেকে নির্দেশ প্রাপ্ত ব্যক্তি বর্গের পরিষদকে আহলে যিকর পরিষদ বলে।

# আমির

সহিহ আবু দাউদ, ৪৫৫৪ নং হাদিসের অনুবাদ-
৪৫৫৪। হজরত হাজার ইবনে হাজার(র.)হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার আমরা ইয়াবাজ ইবনে সারিয়া (রা.) এর কাছে যাই, যাঁর সম্পর্কে এ আয়াত নাযিল হয়, ‘তাদের জন্য কোন অসিুবিধা নেই,যারা আপনার কাছে এ জন্য আসে যে আপনি তাদের জন্য বাহনের ব্যবস্থা করবেন। আপনি বলুন আমি তো তোমাদের জন্য কোন বাহন পাই না’।
রাবী বলেন, আমরা তাঁর কাছে উপস্থিত হয়ে তাঁকে সালামকরি এবং বলি,আমরা আপনাকে দেখার জন্য, আপনার সেবার জন্য এবং আপনার কাছ থেকে কিছু সংগ্রহকরার জন্য এসেছি। তখন তিনি বলেন, একবার রাসূলুল্লাহ (সা.) আমাদের সাথে নামাজ আদায়ের পর,আমাদের দিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভাষণ দেন, যাতে আমাদের চোখ অশ্রু ভারাক্রান্ত হয় এবং অন্তর ভীত-সন্ত্রস্তহয়। আমাদের মধ্যে একজন বললেন,হে আল্লাহর রাসূল! মনেহচ্ছে এটা আপনার বিদায়ী ভাষণ,কাজেই আপনি আমাদেরকে আরোকিছু অসিয়ত করেন। তখন তিনি (সা.)বলেন, আমি তোমাদেরকে তাকওয়া অবলম্বনের জন্য বলছি এবং শুনা ও মানার জন্যও, যদিও তোমাদের আমির হাবশী গোলাম হয়। কেননা তোমাদের মধ্যে যারা আমার পরে বেঁচে থাকবে, তারা বহু মতবিরোধ দেখতে পাবে। এমতাবস্থায় তোমাদের উচিৎহবে আমার ও আমার খুলাফায়ে-রাশেদার সুন্নতের অনুসরন করা। যারা সত্য ও ন্যায়ের অনুসারী। তোমরা তাদের দৃঢ়ভাবে অনুসরন করবে।তোমরা বিদয়াতের অনুসরন করা ও অনুকরণকরা হতে দূরে থাকবে। কেননা প্রত্যেক নতুন কথাই বিদয়াত এবং প্রত্যেক বিদয়াতই পথভ্রষ্টতা।

সহিহ সুনানে ইবনে মাজাহ, ২৭৭৬ নং হাদিসের (জিহাদ অধ্যায়) অনুবাদ-
২৭৭৬। আনাস ইবনে মালেকের (রা.) খালা এবং মহানবির (সা.) দুধ খালা উম্মু হারাম বিনতে মিলহান (রা.) থেকে বর্ণিত।তিনি বলেন, একদিন রাসূলুল্লাহ (সা.) আমার ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন। অতঃপর তিনি হাসতে হাসতে জেগে উঠলেন। আমি বললাম, ইয়া রাসূলুল্লাহ (সা.)! কে আপনাকে হাসালো? তিনি বললেন, আমার উম্মতের কতক লোককে আমার নিকট এমন অবস্থায় পেশ করা হয়েছে যে, তারা এই সমূদ্রের উপর সওয়ার হয়েছে, যেমনভাবে বাদশাহ সিংহাসনে আরোহন করে। উম্মু হারাম বললেন, তিনি তাঁরজন্য দোয়া করলেন। এরপর পুনরায় ঘুমিয়ে পড়লেন। অতঃপর প্রথম বারের ন্যায় জাগ্রত হলেন। তারপর উম্মু হারাম (রা.) অনুরূপ বললেন, রাসূলও (সা.) প্রথমবারের অনুরূপ জবাব দিলেন। উম্মু হারাম (রা.) বললেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) তাঁকে বললেন, তুমি প্রথম দলের অন্তর্ভূক্ত থাকবে। আনাস (রা.) বলেন, অতঃপর তিনি তাঁর স্বামী উবাদা ইবনে সামিতের (রা.) সাথে বের হলেন জিহাদ করার জন্য, যখন মুসলিমগণ মু’আবিয়া ইবনে আবু সুফিয়ানের সাথে সর্ব প্রথম নৌযুদ্ধে রওয়ানা করে। অতঃপর তারা জিহাদ থেকে ফিরে এসে সিরিয়ায় অবতরণ করলেন তখন সওয়ার হওয়ার জন্য তাঁর কাছে একটা জন্তুযান আনা হলো। জন্তুযানটি তাকে ফেলে দিল। এতেই তিনি ইন্তিকাল করলেন।

সহিহ তিরমিযী, ৩৭০১ নং হাদিসের [ রাসূলুল্লাহ (সা.) ও তাঁর সাহাবীগণের মর্যাদা অধ্যায়] অনুবাদ-
৩৭০১। হযরত ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) আল আব্বাসকে (রা.) বললেন, আগামী সোমবার আপনি আমার কাছে আসবেন এবং আপনার সন্তানদেরকেও সাথে নিয়ে আসবেন। আমি আপনার জন্য এবং আপনার সন্তানদের জন্য একটি দোয়া করব, যার দরুন আল্লাহ আপনাকেও উপকৃত করবেন এবং আপনার সন্তানদেরও। সকালে তিনি গেলেন এবং আমরাও তাঁর সাথে গেলাম। তিনি আমাদের গায়ে একখানা চাদর জড়িয়ে দিলেন, এরপর বলেন, হে আল্লাহ আল আব্বাস ও তাঁর সন্তানদের বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ উভয়দিক থেকে এমনভাবে মাফ করে দিন, যার পর তাদের আন কোন অপরাধ বাকি না থাকে। হে আল্লাহ তাঁকে তাঁর সন্তানদের অধিকার পূরণের তৌফিক দিন।

রাযীন এ বাক্যটি অতিরিক্ত বলেছেন, খেলাফত এবং রাজত্ব তার সন্তানদের মধ্যে বহাল রাখ- মেশকাত ৫৮৯৮ নং হাদিস।

* আমির হলেন খোলাফায়ে রাশেদা (রা.), আমির মুয়াবিয়া (রা.) ও আব্বাসীয় খলিফা বৃন্দ।খোলাফায়ে রাশেদা ও আমির মুয়াবিয়া (রা.) আমির হিসাবে নিজেরাই ওয়াজ করতেন। আব্বাসীয় খলিফাগণ নিজেরা ওয়াজ না করে সে দায়িত্ব ফিকাহ শিক্ষায় শিক্ষিত আহলে যিকর পরিষদের উপর ন্যাস্ত করেন।এমন আহলে যিকর পরিষদ ছিল শুধুই একটি। এ পরিষদের সভাপতি ছিলেন খেলাফতের প্রধান বিচারপতি ইমাম আবু ইউসুফ (র.) এবং সদস্য ছিলেন সে সময়ের সর্বশ্রেষ্ঠ চল্লিশ আলেম।

# ইমাম আবু ইউসুফ (র.)

সহিহ সুনানে ইবনে মাজাহ, ২৩১৪ নং হাদিসের (আহকাম অধ্যায়) অনুবাদ-
২৩১৪।হযরত আমর ইবনুল আস (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি রাসূলুল্লাহকে (সা.) বলতে শুনেছেন, বিচারক যখন ইজতিহাদ করে বিচার করে এবং তার সে ইজতিহাদ সঠিক হয়, তাহলে তার জন্য হবে দু’টি পুরুস্কার। আর সে যখন ইজতিহাদ করে বিচার করতে গিয়ে ভুল করে, তখন তার জন্য হবে একটি পুরুস্কার।

* হাদিস অনুযায়ী ইজতিহাদকারী মুজতাহিদ বিচারক হবেন। ইসলামে যাদেরকে মুজতাহিদ বলা হয় তাদের মধ্যে ইমাম আবু ইউসুফ (র.) ছাড়া আর কেউ খেলাফতের প্রধান বিচারপতি ছিলেন না।কিন্তু ইমাম আবু ইউসুফ (র.)আল মাহদী, আলহাদী, ও হারূন আল-রশীদ এ তিন খলিফার অধীনে খেলাফতের প্রধান বিচারপতি ছিলেন। সুতরাং ইসলামের একমাত্র মুজতাহিদ খেলাফতের প্রধান বিচারপতি ইমাম আবু ইউসুফ (র.)।

সূরাঃ ৬ আনআম, আয়াত নং ১৫৩ এর অনুবাদ-
১৫৩। আর এপথই আমার সিরাতাম মুসতাকিম (সরল পথ)। সুতরাং তোমরা এর অনুসরন করবে, এবং বিভিন্ন পথ অনুসরন করবে না, করলে তা’ তোমাদেরকে তাঁর পথ হতে বিচ্ছিন্ন করবে। এভাবে আল্লাহ তোমাদেরকে নির্দেশ দিলেন যেন তোমরা সাবধান হও।

সহিহ সুনানে ইবনে মাজাহ, ১১ নং হাদিসের (অবতরনিকা অধ্যায়) অনুবাদ-
১১। হযরত জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা নবি করিমের (সা.) কাছে উপস্থিত ছিলাম। তিনি প্রথমে একটি সরল রেখা টানলেন এবং তার ডান দিকে দুটো সরল রেখা টানলেন এবং বাঁ দিকেও দুটো সরল রেখা টানলেন। অতঃপর তিনি রেখার মধ্যবর্তী স্থানে হাত রেখে বললেন, এটা আল্লাহর রাস্তা। এরপর তিনি এ আয়াত তেলাওয়াত করলেন, ‘আর এপথই আমার সিরাতাম মুসতাকিম (সরল পথ)। সুতরাং তোমরা এর অনুসরন করবে, এবং বিভিন্ন পথ অনুসরন করবে না, করলে তা’ তোমাদেরকে তাঁর পথ হতে বিচ্ছিন্ন করবে’। -(সূরা আল আনআমঃ ১৫৩)।

* ইমাম আবু ইউসুফের (র.) আহলে যিকর পরিষদ শয়তানের চার পথ ১। কাফেরদের পথ ২। মুশরিকদের পথ ৩। মোনাফেকদের পথ ও ৪। ফিতনাবাজদের বাহাত্তর পথ থেকে ইসলামকে আলাদা করে সকল ক্ষেত্রে ইসলামের অভিন্ন বিধি-বিধান প্রণয়ন করে এর নাম দেন হানাফী মাযহাব। সেই থেকে অদ্যাবদি ইমামগণের সর্ববৃহৎ দল হানাফী মাযহাবের অনুসারী।

# ইমাম

সূরাঃ ২ বাকারা, ১২৪ নং আয়াতের অনুবাদ-
১২৪। আর যখন তোমার প্রতিপালক ইব্রাহীমকে কয়েকটি বাক্য (কালিমাত) দ্বারা পরীক্ষা করেছিলেন, পরে সে তা পূর্ণ করেছিল; তিনি বললেন নিশ্চয়ই আমি তোমাকে মানব জাতির ইমাম বানাব; সে বলেছিল আমার বংশধরগণ হতেও; তিনি বলেছিলেন, আমার প্রতিশ্রুতি জালেমদের প্রতি প্রযোজ্য হবে না।

সূরাঃ ২৫ ফুরকান, ৭৪ নং আয়াতের অনুবাদ-
৭৪। আর যারা প্রার্থনা করে, হে আমাদের প্রতি পালক! আমাদের জন্য এমন স্ত্রী ও সন্তান-সন্ততি দান কর যারা হবে আমাদের জন্য নয়ন প্রীতিকর এবং আমাদেরকে মুত্তাকীদের জন্য ইমাম কর।

সহিহ আবুদাউদ, ৬০১ নং হাদিসের (নামায অধ্যায়) অনুবাদ-
৬০১। হযরত আনাস ইবনে মালেক (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) ঘোড়ায় চড়েন। তিনি তার পিঠ থেকে পড়ে যাওয়ায় তাঁর শরীরের ডান দিকে আঘাত পান। এমতাবস্থায় তিনি বসে নামাজে ইমামতি করেন এবং আমরাও তাঁর পেছনে বসে নামাজ পড়ি। নামাজ শেষে মহানবি (সা.) বলেন, ইমামকে এ জন্যই নিযুক্ত করা হয়, যেন তার অনুসরন করা হয়। সুতরাং ইমাম যখন দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করবে তখন তোমরাও দাঁড়াবে। এরপর ইমাম যখন রুকু করবে তখন তোমারও রুকু করবে এবং ইমাম যখন মাথা উঠাবে তখন তোমরাও মাথা উঠাবে। এরপর ইমাম যখন ‘সামিয়াল্লাহু লিমান হামিদাহ’ বলবে তখন তোমরা বলবে ‘রাব্বানা ওয়া লাকাল হামদ’। ইমাম যখন বসে নামাজ পড়বে তখন তোরাও বসে নামাজ পড়বে।

সহিহ তিরমিযী, ১৯৮ নং হাদিসের (নামাজ অধ্যায়) অনুবাদ-
১৯৮। হযরত আবু হোরায়রা (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, ইমাম হচ্ছে যামিন এবং মোয়াজ্জিন হলো আমানতদার। হে আল্লাহ! ইমামকে সৎপথ দেখাও এবং মুয়াযযিনকে ক্ষমা কর।

সহিহ সুনানে ইবনে মাজাহ, ৩৯৫০ নং হাদিসের (ফিতনা অধ্যায়) অনুবাদ-
৩৯৫০। আনাস ইবনে মালেক (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহকে (সা.)বলতে শুনেছি আমার উম্মত পথভ্রষ্টতার উপর একত্রিত হবে না। যখন তোমরা উম্মতের মাঝে মতপার্থক্য দেখতে পাবে, তখন সর্ববৃহৎ দলের সাথে সম্পৃক্ত থাকবে।

* অনুসরনের জন্য মুত্তাকীদের দীনের যামিনদার ইমাম নিযুক্ত করা হয়। তাঁদের সর্ববৃহৎ দল অবশ্যই উম্মত এবং হেদায়াত প্রাপ্ত। তাঁরা হানাফী বিধায় হানাফী ইমামগণের সর্ববৃহৎ দলের অনুসারী হওয়া সকল মুসলিম ও মুছল্লীর জন্য ফরজ।

সহিহ আল বোখারী, ৩৩৮৫ নং হাদিসের (আম্বিয়া কিরাম অধ্যায়) অনুবাদ-
৩৩৮৫। হযরত এমরান ইবনে হুছাইন (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, আমার উম্মতের মধ্যে সর্বোত্তম হলো আমার যামানা। অতঃপর তার পরবর্তী যামানা। অতঃপর তার পরবর্তী যামানা।এমরান বলেন রাছুলুল্লাহ (সা.) তাঁর যামানার পর দু’ যামানার উল্লেখ করেছেন, না তিন যামানার উল্লেখ করেছেন ত’ আমার সঠিকভাবে মনে নেই।এরপর তোমাদের পর এমন কিছু লোকের আবির্ভাব যারা সাক্ষ্য দান করবে অথচ তাদের নিকট সাক্ষ্য চাওয়া হবে না। তারা বিশ্বাস ঘাতকতা করবে। সুতরাং তাদেরকে কখনও বিশ্বাস করা যাবে না। তারা খুবই মোটা সোটা ও হৃষ্টপুষ্ট দেহের অধিকারী হবে।

সহিহ আল বোখারী, ৩৩৮৬ নং হাদিসের (আম্বিয়া কিরাম অধ্যায়) অনুবাদ-
৩৩৮৬। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, লোকদের মধ্যে সর্বোত্তম সময হলো আমার সময়। অতঃপর তৎপরবর্তীদের সময়। অতঃপর তৎপরবর্তীদের সময়। তারপর এমন একদল লোকের উদ্ভব ঘটবে যাদের কেউ শপথ করার পূর্বে সাক্ষ্য দিবে এবং সাক্ষ্য দিবার পূর্বে শপথ করবে। ইব্রহীম নখয়ী বলেন, আমাদের মুরুব্বঈরা আমাদেরকে সাক্ষ্য দিবার জন্য ও ওয়াদা করার জন্য প্রহার করতেন। তখন আমরা ছোট ছিলাম।

* রাসূল (সা.) ঘোষিত সহিহ যুগ হলো ১। সাহাবাযুগ ২। তাবেঈ যুগ ৩। তাবে তাবেঈ যুগ। তারপর বিশ্বাস ঘাতক যুগ। রাসূল (সা.) তাদের কথা বিশ্বাস করতে নিষেধ করেছেন। বিশ্বাস ঘাতকেরা আহলে যিকর পরিষদের সাথে মতভেদ করে ইসলামে ফিতনা আমদানী করেছে। বেকুব জনগণ রাসূলের (সা.) অবাধ্য হয়ে তাদের কথা বিশ্বাস করে আল্লাহর ঘর মসজিদে মারামারি করে। এমনকি তারা ইমাম হত্যার মত জঘণ্য ঘটনাও ঘটিয়েছে। অথচ আহলে যিকরের ফতোয়া বিরোধী কৈান বিশ্বাসঘাতক দলের সঠিকতার কোন প্রমাণ নেই।

সাকুল্যে হানাফী মাযহাব ও চিশতিয়া তরিকাকে সঠিক প্রমাণ করা গেল। তাদের সকল বিরোধীকে সঠিক নয়, বরং বেঠিক প্রমাণ করা যায়। তিনি মাযহাব বেঠিক কারণ তারা ইমাম আবু হানিফা (র.) থেকে ফিকাহ গ্রহণ করেনি। তাদের ফিকাহ গ্রহণের উৎস ছিল বিনষ্ট ইসলাম তাহলে তারা আর সঠিক হয় কেমন করে? তিন তরিকা বেঠিক কারণ এগুলো বিশ্বাস ঘাতক যুগে গঠিত হওয়ার কারণে সাধারণভাবে এগুলো বেঠিক। আর এগুলোকে সঠিক প্রমাণ করার মত কোন বিশেষ ঘটনা ঘটেনি তাহলে আর এগুলোকে কিভাবে সঠিক বলা যায়? সুতরাং ইসলামের সঠিক পথ শুধুই একটি। শরিয়তে হানাফী মাযহাব এবং তরিকাতে চিশতিয়া তরিকা। আর কারো কারামত কারো সঠিকতার কোন প্রমাণ নয়। কারণ এগুলো আমরা কোন নির্ভরযোগ্য সূত্রে প্রাপ্ত হইনি। লোকেরা গল্পের মত করে এসব বলে বিধায় এসবকে গল্পের কাতার থেকে উপরে উঠানো যায় না। ইচ্ছা হলে বিশ্বাস করা যায়, অবিশ্বাস করলেও কারো ঈমানের কোন ক্ষতি হবে ঘটনা এমন নয়।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.