![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সূরা: ৯ তাওবা, ১২২ নং আয়াতের অনুবাদ-
১২২। আর মু’মিনদের এটাও উচিৎ নয় যে (জিহাদের জন্য) সবাই একত্রে বের হয়ে পড়বে। সুতরাং এমন কেন করা হয় না যে, তাদের প্রত্যেক বড় দল হতে এক একটি ছোট দল (জিহাদে) বের হয় যাতে অবশিষ্ট লোক ফিকাহ (দীনের গভীর জ্ঞান) অর্জন করতে থাকে। আর যাতে তারা নিজ কওমকে ভয় প্রদর্শন করে, যাতে তারা সাবধান হয়।
* ফতোয়া দিবে ফকিহ।
সূরাঃ ১৬ নাহল, ৪৩ ও ৪৪ নং আয়তের অনুবাদ
৪৩।তোমার পূর্বে আমরা পুরুষ ভিন্ন (বার্তা বাহক) প্রেরণ করিনি। আমরা তাদের প্রতি ওহি প্রেরণ করেছিলাম।অতএব আহলে যিকরকে জিজ্ঞাস কর, যদি তোমরা না জান।
৪৪।সুস্পষ্ট প্রমাণ ও কিতাব সমূহ সহ।আর মানুষকে তাদের প্রতি যা অবতীর্ণ করা হয়েছে তা, সুস্পষ্টভাবে বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য আমরা আপনার প্রতি নাজিল করেছি যিকর। যেন তারা চিন্তা ভাবনা করতে পারে।
* এক জন ফকিহ নয় এক দল ফকিহের পরিষদ ফতোয়া দিবে।
মেশকাত ২২৪ নং হাদিসের (ইলম অধ্যায়) অনুবাদ-
হযরত আওফ ইবনে মালেক আশজায়ী (রা.) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, স্বয়ং আমির অথবা আমীরের পক্ষ থেকে নির্দেশ প্রাপ্ত ব্যক্তি অথবা কোন অহংকারী ব্যতীত অপর কেউ ওয়াজ করতে পারে না।
* ফতোয়া প্রদান করবে আমির অথবা আমির নিযুক্ত পরিষদ।
সহিহ আল বোখারী, ৩৩৮৫ নং হাদিসের (আম্বিয়া কিরাম অধ্যায়) অনুবাদ-
৩৩৮৫। হযরত এমরান ইবনে হুছাইন (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, আমার উম্মতের মধ্যে সর্বোত্তম হলো আমার যামানা। অতঃপর তার পরবর্তী যামানা। অতঃপর তার পরবর্তী যামানা।এমরান বলেন রাছুলুল্লাহ (সা.) তাঁর যামানার পর দু’ যামানার উল্লেখ করেছেন, না তিন যামানার উল্লেখ করেছেন ত’ আমার সঠিকভাবে মনে নেই।এরপর তোমাদের পর এমন কিছু লোকের আবির্ভাব যারা সাক্ষ্য দান করবে অথচ তাদের নিকট সাক্ষ্য চাওয়া হবে না। তারা বিশ্বাস ঘাতকতা করবে। সুতরাং তাদেরকে কখনও বিশ্বাস করা যাবে না। তারা খুবই মোটা সোটা ও হৃষ্টপুষ্ট দেহের অধিকারী হবে।
সহিহ আল বোখারী, ৩৩৮৬ নং হাদিসের (আম্বিয়া কিরাম অধ্যায়) অনুবাদ-
৩৩৮৬। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, লোকদের মধ্যে সর্বোত্তম সময হলো আমার সময়। অতঃপর তৎপরবর্তীদের সময়। অতঃপর তৎপরবর্তীদের সময়। তারপর এমন একদল লোকের উদ্ভব ঘটবে যাদের কেউ শপথ করার পূর্বে সাক্ষ্য দিবে এবং সাক্ষ্য দিবার পূর্বে শপথ করবে। ইব্রহীম নখয়ী বলেন, আমাদের মুরুব্বঈরা আমাদেরকে সাক্ষ্য দিবার জন্য ও ওয়াদা করার জন্য প্রহার করতেন। তখন আমরা ছোট ছিলাম।
* বিশ্বাস ঘাতক যুগের কোন ব্যক্তি বা পরিষদের ফতোয়া গ্রহণযোগ্য নয়।
সূরাঃ ২ বাকারা, ৩৪ নং আয়াতের অনুবাদ-
৩৪। আর যখন আমি ফেরেশতাগণকে বলেছিলাম, তোমরা আদমকে সিজদা কর, তখন ইবলিশ ছাড়া সবাই সিজদা করেছিল; সে অমান্য করল ও অহংকার করল।সুতরাং সে কাফেরদের অন্তর্ভূক্ত হয়েগেল।
* উপরোক্ত শর্তের বাইরের কেউ ফতোয়া দিলে তার পরিচয় হবে অহংকারী, কাফের ও ইবলিশ।
# আমির
সহিহ আবু দাউদ, ৪৫৫৪ নং হাদিসের অনুবাদ-
৪৫৫৪। হজরত হাজার ইবনে হাজার(র.)হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার আমরা ইয়াবাজ ইবনে সারিয়া (রা.) এর কাছে যাই, যাঁর সম্পর্কে এ আয়াত নাযিল হয়, ‘তাদের জন্য কোন অসিুবিধা নেই,যারা আপনার কাছে এ জন্য আসে যে আপনি তাদের জন্য বাহনের ব্যবস্থা করবেন। আপনি বলুন আমি তো তোমাদের জন্য কোন বাহন পাই না’।
রাবী বলেন, আমরা তাঁর কাছে উপস্থিত হয়ে তাঁকে সালামকরি এবং বলি,আমরা আপনাকে দেখার জন্য, আপনার সেবার জন্য এবং আপনার কাছ থেকে কিছু সংগ্রহকরার জন্য এসেছি। তখন তিনি বলেন, একবার রাসূলুল্লাহ (সা.) আমাদের সাথে নামাজ আদায়ের পর,আমাদের দিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভাষণ দেন, যাতে আমাদের চোখ অশ্রু ভারাক্রান্ত হয় এবং অন্তর ভীত-সন্ত্রস্তহয়। আমাদের মধ্যে একজন বললেন,হে আল্লাহর রাসূল! মনেহচ্ছে এটা আপনার বিদায়ী ভাষণ,কাজেই আপনি আমাদেরকে আরোকিছু অসিয়ত করেন। তখন তিনি (সা.)বলেন, আমি তোমাদেরকে তাকওয়া অবলম্বনের জন্য বলছি এবং শুনা ও মানার জন্যও, যদিও তোমাদের আমির হাবশী গোলাম হয়। কেননা তোমাদের মধ্যে যারা আমার পরে বেঁচে থাকবে, তারা বহু মতবিরোধ দেখতে পাবে। এমতাবস্থায় তোমাদের উচিৎহবে আমার ও আমার খুলাফায়ে-রাশেদার সুন্নতের অনুসরন করা। যারা সত্য ও ন্যায়ের অনুসারী। তোমরা তাদের দৃঢ়ভাবে অনুসরন করবে।তোমরা বিদয়াতের অনুসরন করা ও অনুকরণকরা হতে দূরে থাকবে। কেননা প্রত্যেক নতুন কথাই বিদয়াত এবং প্রত্যেক বিদয়াতই পথভ্রষ্টতা।
সহিহ সুনানে ইবনে মাজাহ, ২৭৭৬ নং হাদিসের (জিহাদ অধ্যায়) অনুবাদ-
২৭৭৬। আনাস ইবনে মালেকের (রা.) খালা এবং মহানবির (সা.) দুধ খালা উম্মু হারাম বিনতে মিলহান (রা.) থেকে বর্ণিত।তিনি বলেন, একদিন রাসূলুল্লাহ (সা.) আমার ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন। অতঃপর তিনি হাসতে হাসতে জেগে উঠলেন। আমি বললাম, ইয়া রাসূলুল্লাহ (সা.)! কে আপনাকে হাসালো? তিনি বললেন, আমার উম্মতের কতক লোককে আমার নিকট এমন অবস্থায় পেশ করা হয়েছে যে, তারা এই সমূদ্রের উপর সওয়ার হয়েছে, যেমনভাবে বাদশাহ সিংহাসনে আরোহন করে। উম্মু হারাম বললেন, তিনি তাঁরজন্য দোয়া করলেন। এরপর পুনরায় ঘুমিয়ে পড়লেন। অতঃপর প্রথম বারের ন্যায় জাগ্রত হলেন। তারপর উম্মু হারাম (রা.) অনুরূপ বললেন, রাসূলও (সা.) প্রথমবারের অনুরূপ জবাব দিলেন। উম্মু হারাম (রা.) বললেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) তাঁকে বললেন, তুমি প্রথম দলের অন্তর্ভূক্ত থাকবে। আনাস (রা.) বলেন, অতঃপর তিনি তাঁর স্বামী উবাদা ইবনে সামিতের (রা.) সাথে বের হলেন জিহাদ করার জন্য, যখন মুসলিমগণ মু’আবিয়া ইবনে আবু সুফিয়ানের সাথে সর্ব প্রথম নৌযুদ্ধে রওয়ানা করে। অতঃপর তারা জিহাদ থেকে ফিরে এসে সিরিয়ায় অবতরণ করলেন তখন সওয়ার হওয়ার জন্য তাঁর কাছে একটা জন্তুযান আনা হলো। জন্তুযানটি তাকে ফেলে দিল। এতেই তিনি ইন্তিকাল করলেন।
সহিহ তিরমিযী, ৩৭০১ নং হাদিসের [ রাসূলুল্লাহ (সা.) ও তাঁর সাহাবীগণের মর্যাদা অধ্যায়] অনুবাদ-
৩৭০১। হযরত ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) আল আব্বাসকে (রা.) বললেন, আগামী সোমবার আপনি আমার কাছে আসবেন এবং আপনার সন্তানদেরকেও সাথে নিয়ে আসবেন। আমি আপনার জন্য এবং আপনার সন্তানদের জন্য একটি দোয়া করব, যার দরুন আল্লাহ আপনাকেও উপকৃত করবেন এবং আপনার সন্তানদেরও। সকালে তিনি গেলেন এবং আমরাও তাঁর সাথে গেলাম। তিনি আমাদের গায়ে একখানা চাদর জড়িয়ে দিলেন, এরপর বলেন, হে আল্লাহ আল আব্বাস ও তাঁর সন্তানদের বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ উভয়দিক থেকে এমনভাবে মাফ করে দিন, যার পর তাদের আন কোন অপরাধ বাকি না থাকে। হে আল্লাহ তাঁকে তাঁর সন্তানদের অধিকার পূরণের তৌফিক দিন।
রাযীন এ বাক্যটি অতিরিক্ত বলেছেন, খেলাফত এবং রাজত্ব তার সন্তানদের মধ্যে বহাল রাখ- মেশকাত ৫৮৯৮ নং হাদিস।
* আমির হলেন ১। হযরত আবু বকর (রা.) ২। হযরত ওমর (রা.) ৩। হযরত ওসমান (রা.) ৪। হযরত আলী (রা.)৫। হযরত মুয়াবিয়া (রা.) ও ৬। আব্বাসীয় খলিফা গণ।
আমির ১। হযরত আবু বকর (রা.) ২। হযরত ওমর (রা.) ৩। হযরত ওসমান (রা.) ৪। হযরত আলী (রা.) ও ৫। হযরত মোয়াবিয়া (রা.) নিজেই ফতোয়া দিয়েছেন। আব্বাসীয় খলিফা আবুল আব্বাস আসসাফফা ও আবু জাফর আল মানসুর নিজে ফতোয়া দেননি এবং কোন পরিষদকে ফতোয়া প্রদানের দায়িত্ব প্রদান করেননি। আব্বাসীয় খলিফা আল মাহদী, আল হাদী ও হারুন অর রশিদ আহলে যিকর পরিষদকে ফতোয়া প্রদানের দায়িত্ব প্রদান করেন। হারুন অর রশিদের পর থেকে বিশ্বাস ঘাতক যুগ শুরু হয়।
সহিহ বোখারী ৪৯৯ নং হাদিসের (সালাতের ওয়াক্ত সমূহ অধ্যায়) অনুবাদ-
৪৯৯। হযরত যুহুরী (র.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি দামেশকে আনাস ইবনে মালেকের (রা.) নিকট গিয়ে দেখতে পেলাম, তিনি কাঁদছেন। আমি তাঁকে জিজ্ঞেস করলাম, আপনি কাঁদছেন কেন? তিনি বললেন, আমি যা যা দেখেছি তার মধ্যে এ নামাযই আজ পর্যন্ত অবশিষ্ট ছিল। কিন্তু এখন নামাজও নষ্ট হতে চলেছে।
* প্রথম পাঁচ আমিরের ফতোয়া বিনষ্ট হওয়ায় তা’ আর প্রতিপালনযোগ্য নয়। সুতরাং এখন তিন আমিরের আহলে যিকর পরিষদের ফতোয়ার বিকল্প নেই। তিন আমিরের আহলে যিকর পরিষদের পরের আলেমগণের দায়িত্ব হলো তিন আমিরের আহলে যিকর পরিষদের ফতোয়া অনুযায়ী ফতোয়া প্রদান করা। যারা এ বিধি লংঘণ করে ফতোয়া দিবে তারা অহংকারী, শয়তান, ফিতনাবাজ, বিশ্বাস ঘাতক, দাজ্জাল, কাজ্জাব ও কাফের।তারা, তাদের ভক্ত ও দালাল সবাই পথভ্রষ্ট।
ইসলামে তাফসির কারক, আহলুল হাদিস ও আমির নিযুক্ত নন এমন ফকিহের ফতোয়া প্রদানের অধিকার ছিল না। কেউ তাদের ফতোয়ার অনুসারী হয় কোন আক্কেলে? ইমাম আবু হানিফা (র.), ইমাম শাফেঈ (র.), ইমাম মালেক (র.) ও আহমদ ইবনে হাম্বল (র.) বিভিন্ন বিষয়ে তাঁদের মতামত প্রদান করলেও তাঁরা আমির নিযুক্ত নন বিধায় তাঁদের ফতোয়া প্রদানের অধিকার ছিল না। ইসলামে ফতোয়া প্রদানের অধিকার ছিল শুধুমাত্র ইমাম আবু ইউসুফের (র.) নেতৃত্বধীন আহলে যিকর পরিষদের।
সূরাঃ ৬ আনআম, আয়াত নং ১৫৩ এর অনুবাদ-
১৫৩। আর এপথই আমার সিরাতাম মুসতাকিম (সরল পথ)। সুতরাং তোমরা এর অনুসরন করবে, এবং বিভিন্ন পথ অনুসরন করবে না, করলে তা’ তোমাদেরকে তাঁর পথ হতে বিচ্ছিন্ন করবে। এভাবে আল্লাহ তোমাদেরকে নির্দেশ দিলেন যেন তোমরা সাবধান হও।
সহিহ সুনানে ইবনে মাজাহ, ১১ নং হাদিসের (অবতরনিকা অধ্যায়) অনুবাদ-
১১। হযরত জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা নবি করিমের (সা.) কাছে উপস্থিত ছিলাম। তিনি প্রথমে একটি সরল রেখা টানলেন এবং তার ডান দিকে দুটো সরল রেখা টানলেন এবং বাঁ দিকেও দুটো সরল রেখা টানলেন। অতঃপর তিনি রেখার মধ্যবর্তী স্থানে হাত রেখে বললেন, এটা আল্লাহর রাস্তা। এরপর তিনি এ আয়াত তেলাওয়াত করলেন, ‘আর এপথই আমার সিরাতাম মুসতাকিম (সরল পথ)। সুতরাং তোমরা এর অনুসরন করবে, এবং বিভিন্ন পথ অনুসরন করবে না, করলে তা’ তোমাদেরকে তাঁর পথ হতে বিচ্ছিন্ন করবে’। -(সূরা আল আনআমঃ ১৫৩)।
* ইসলামের একমাত্র আহলে যিকর পরিষদ শয়তানের চার পথ ১। কাফেরদের পথ ২। মুশরিকদের পথ ৩। মোনাফেকদের পথ ও ৪। ফেতনাবাজদের বাহাত্তর পথ থেকে ইসলামকে আলাদা করে ইসলামের সকল বিষয়ে অভিন্ন ফতোয়া প্রদান করেছে এবং এর নাম দিয়েছেন হানাফী মাযহাব। এরপর তেরশ বছরের বেশী সময় উম্মতের সর্ববৃহৎ দল এ মাযহাবের অনুসারী। আর কোরআন ও হাদিস উম্মতের সর্ববৃহৎ দলকে সঠিক সাব্যস্ত করে।
# উম্মতের সর্ববৃহৎ দল
সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ১০৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
১০৩। তোমরা একত্রে আল্লাহর রজ্জু দৃঢ়ভাবে ধর! আর বিচ্ছিন্ন হবে না। তোমাদের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ স্মরণ কর।যখন তোমরা শত্রু ছিলে তখন তিনি তোমাদের অন্তরে প্রীতি সঞ্চার করেছেন, ফলে তাঁর দয়ায় তোমরা পরস্পর ভাই হয়ে গেলে।তোমরাতো অগ্নি কুন্ডের প্রান্তে ছিলে, আল্লাহ উহা হতে তোমাদেরকে রক্ষা করেছেন। এভাবে আল্লাহ তোমাদের জন্য তাঁর নিদর্শনসমূহ স্পষ্টভাবে বিবৃতকরেন যাতে তোমরা সৎপথ পেতে পার।
সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ১০৫ নং আয়াতের অনুবাদ-
১০৫। তোমরা তাদের মত হবে না যারা তাদের নিকট স্পষ্ট নিদর্শন আসার পর বিচ্ছিন্ন হয়েছে ও নিজেদের মাঝে মতভেদ সৃষ্টি করেছে। তাদের জন্য মহাশাস্তি রয়েছে।
সহিহ সুনানে ইবনে মাজাহ, ৩৯৫০ নং হাদিসের (ফিতনা অধ্যায়) অনুবাদ-
৩৯৫০। আনাস ইবনে মালেক (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহকে (সা.)বলতে শুনেছি আমার উম্মত পথভ্রষ্টতার উপর একত্রিত হবে না। যখন তোমরা উম্মতের মাঝে মতপার্থক্য দেখতে পাবে, তখন সর্ববৃহৎ দলের সাথে সম্পৃক্ত থাকবে।
* আয়াত ও হাদিস অনুযায়ী ১। উম্মতের সর্ববৃহৎ দলের সাথে সম্পৃক্ত থাকা ফরজ ২। উম্মতের সর্ববৃহৎ দল থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়া হারাম ৩। উম্মতের সর্ববৃহৎ দলের সাথে মতভেদ করা হারাম।
উম্মতের সর্ববৃহৎ দল ১। সাহাবায়ে কেরামের (রা.)সর্ববৃহৎ দল ২। তাবেঈগণের সর্ববৃহৎ দল ৩। তাবে তাবেঈগণের সর্ববৃহৎ দল ৪। আমিরগণের সর্ববৃহৎ দল ৫। আলেমগণের সর্ববৃহৎ দল ৬। ইমামগণের সর্ববৃহৎ দল ৭। মোয়াজ্জিনগণের সর্ববৃহৎ দল ৮। মুজাহিদগণের সর্ববৃহৎ দল ৯। হাজীগণের সর্ববৃহৎ দল ১০। উমরা আদায়কারীগণের সর্ববৃহৎ দল ১১। মুহাজিরগণের সর্ববৃহৎ দল ১২। আনসারগণের সর্ববৃহৎ দল।
সূরাঃ ৫৪, কামার ১৭ নং আয়াতের অনুবাদ-
১৭। কোরআন আমি সহজ করে দিয়েছি উপদেশ গ্রহণের জন্য; অতএব উপদেশ গ্রহণকারী কেউ আছে কি?
সহিহ বোখারী ৬৯ নং হাদিসের (ইলম অধ্যায়) অনুবাদ-
৬৯। হযরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত। হযরত নবি করিম (সা.) বলেছেন, তোমরা সহজ পথ অবলম্বন কর, কঠিন করে তুলও না এবং সুখবর দাও। বিরক্তি-অস্বস্তি সৃষ্টি করও না।
* দীন সহজ। আর অনুসরনের জন্য ইমাম ও মোয়াজ্জিনগণ সবচেয়ে সহজ। কারণ নামাজ পড়তে মসজিদে গেলেই তাঁদের সাক্ষাৎ ঘটে।আর তাঁদের বিস্তার ইসলামের শুরু থেকে কেয়ামত অবদি। সুতরাং উম্মতের সর্ববৃহৎ দলের অনুসারি হতে ইমাম ও মোয়াজ্জিনগণের সর্ববৃহৎ দলের অনুসারি হতে হবে।
# ইমাম
সূরাঃ ২ বাকারা, ১২৪ নং আয়াতের অনুবাদ-
১২৪। আর যখন তোমার প্রতিপালক ইব্রাহীমকে কয়েকটি বাক্য (কালিমাত) দ্বারা পরীক্ষা করেছিলেন, পরে সে তা পূর্ণ করেছিল; তিনি বললেন নিশ্চয়ই আমি তোমাকে মানব জাতির ইমাম বানাব; সে বলেছিল আমার বংশধরগণ হতেও; তিনি বলেছিলেন, আমার প্রতিশ্রুতি জালেমদের প্রতি প্রযোজ্য হবে না।
সূরাঃ ২৫ ফুরকান, ৭৪ নং আয়াতের অনুবাদ-
৭৪। আর যারা প্রার্থনা করে, হে আমাদের প্রতি পালক! আমাদের জন্য এমন স্ত্রী ও সন্তান-সন্ততি দান কর যারা হবে আমাদের জন্য নয়ন প্রীতিকর এবং আমাদেরকে মুত্তাকীদের জন্য ইমাম কর।
সহিহ আবুদাউদ, ৬০১ নং হাদিসের (নামায অধ্যায়) অনুবাদ-
৬০১। হযরত আনাস ইবনে মালেক (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) ঘোড়ায় চড়েন। তিনি তার পিঠ থেকে পড়ে যাওয়ায় তাঁর শরীরের ডান দিকে আঘাত পান। এমতাবস্থায় তিনি বসে নামাজে ইমামতি করেন এবং আমরাও তাঁর পেছনে বসে নামাজ পড়ি। নামাজ শেষে মহানবি (সা.) বলেন, ইমামকে এ জন্যই নিযুক্ত করা হয়, যেন তার অনুসরন করা হয়। সুতরাং ইমাম যখন দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করবে তখন তোমরাও দাঁড়াবে। এরপর ইমাম যখন রুকু করবে তখন তোমারও রুকু করবে এবং ইমাম যখন মাথা উঠাবে তখন তোমরাও মাথা উঠাবে। এরপর ইমাম যখন ‘সামিয়াল্লাহু লিমান হামিদাহ’ বলবে তখন তোমরা বলবে ‘রাব্বানা ওয়া লাকাল হামদ’। ইমাম যখন বসে নামাজ পড়বে তখন তোরাও বসে নামাজ পড়বে।
সহিহ তিরমিযী, ১৯৮ নং হাদিসের (নামাজ অধ্যায়) অনুবাদ-
১৯৮। হযরত আবু হোরায়রা (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, ইমাম হচ্ছে যামিন এবং মোয়াজ্জিন হলো আমানতদার। হে আল্লাহ! ইমামকে সৎপথ দেখাও এবং মুয়াযযিনকে ক্ষমা কর।
সহিহ সুনানে ইবনে মাজাহ, ৩৯৫০ নং হাদিসের (ফিতনা অধ্যায়) অনুবাদ-
৩৯৫০। আনাস ইবনে মালেক (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহকে (সা.)বলতে শুনেছি আমার উম্মত পথভ্রষ্টতার উপর একত্রিত হবে না। যখন তোমরা উম্মতের মাঝে মতপার্থক্য দেখতে পাবে, তখন সর্ববৃহৎ দলের সাথে সম্পৃক্ত থাকবে।
* অনুসরনের জন্য মুত্তাকীদের দীনের যামিনদার ইমাম নিযুক্ত করা হয়। তাঁদের সর্ববৃহৎ দল অবশ্যই উম্মত এবং হেদায়াত প্রাপ্ত। তাঁরা হানাফী বিধায় হানাফী ইমামগণের সর্ববৃহৎ দলের অনুসারী হওয়া সকল মুসলিমের জন্য ফরজ।
# মোয়াজ্জিন
সূরাঃ ৪১ হা-মীম আস-সাজদা, ৩৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
৩৩। কথায় কে উত্তম ঐ ব্যক্তি থেকে যে আল্লাহর দিকে মানুষকে ডাকে, আমলে সালেহ করে এবং বলে, আমিতো মুসলিমদের মধ্যে গণ্য।
# সূরাঃ ৪১ হা-মীম আস-সাজদা, ৩৩ নং আয়াতের তাফসির- তাফসিরে ইবনে কাছির
৩৩। এ আয়াত দ্বারা মুয়াজ্জিনকে বুঝানো হয়েছে। যিনি সৎকর্মশীলও বটে। সহিহ মুসলিমে রয়েছে, কিয়ামতের দিন মুয়াজ্জিনগণ সমস্ত লোকের মধ্যে সর্বাপেক্ষা উচ্চ গলা বিশিষ্ট হবেন।
সহিহ তিরমিযী, ১৯৮ নং হাদিসের (নামাজ অধ্যায়) অনুবাদ-
১৯৮। হযরত আবু হোরায়রা (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, ইমাম হচ্ছে যামিন এবং মোয়াজ্জিন হলো আমানতদার। হে আল্লাহ! ইমামকে সৎপথ দেখাও এবং মুয়াযযিনকে ক্ষমা কর।
সহিহ সুনানে ইবনে মাজাহ, ৩৯৫০ নং হাদিসের (ফিতনা অধ্যায়) অনুবাদ-
৩৯৫০। আনাস ইবনে মালেক (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহকে (সা.)বলতে শুনেছি আমার উম্মত পথভ্রষ্টতার উপর একত্রিত হবে না। যখন তোমরা উম্মতের মাঝে মতপার্থক্য দেখতে পাবে, তখন সর্ববৃহৎ দলের সাথে সম্পৃক্ত থাকবে।
* দীনের আমানতদার উত্তম কথার মোয়াজ্জিনগণ অবশ্যই মোহানবির (সা.) উম্মত। তাঁদের সর্ববৃহৎ দল অবশ্যই হেদায়াত প্রাপ্ত। তাঁরা হানাফী বিধায় হানাফী মোয়াজ্জিনগণের সর্ববৃহৎ দল অবশ্যই হেদায়াত প্রাপ্ত। সুতরাং হানাফী মোয়াজ্জিন গণের সর্ববৃহৎ দলের সাথে সম্পৃক্ত থাকা সকল মুসলিমের জন্য ফরজ।
# ১। ইমাম ও মোয়াজ্জিনগণের সর্ববৃহৎ দলের সাথে সম্পৃক্ত থাকা ফরজ ২। ইমাম ও মোয়াজ্জিনগণের সর্ববৃহৎ দল থেকে বিচ্ছিন্ন থাকা হারাম ৩।ইমাম ও মোয়াজ্জিনগণের সর্ববৃহৎ দলের সাথে মতভেদ করা হারাম বিধায় যারা তাঁদের সাথে মতভেদ করে তারা পাক্কা শয়তান। এ পাক্কা শয়তানেরা কোন ফতোয়া দিলে তাদেরকে ঝাঁটামেরে তাড়িয়ে দিতে হবে। এরাই হলো ফেতনাবাজ আল্লাহ এদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার আদেশ প্রদান করেছেন।
সূরাঃ ৮ আনফাল, ৩৯ নং আয়াতের অনুবাদ-
৩৯। আর তোমরা তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে থাকবে যতক্ষণ না ফিতনা দূরীভূত হয় এবং আল্লাহর দীন সর্বত্র প্রতিষ্ঠিত হয়।অতঃপর যদি তারা বিরত হয় তবে তারা যা করে আল্লাহতো এর দর্শক।
# মাজারে ও পীরকে সিজদা করা উম্মতের সর্ববৃহৎ দল অনুমোদন করে না বিধায় এটা হারাম। যারা এটাকে জায়েজ মনে করে তারা ফেতনাবাজ। উম্মতের সর্ববৃহৎ দলের আমল বিধায় মীলাদ ও মীলাদুন্নবীর (সা.) বিরোধীতা হারাম। আর উম্মতের সর্ববৃহৎ দলের পরিপন্থি নিয়মে ইবাদত করলে কারো কোন ইবাদত আর।লাহর দরবারে গৃহিত হবে না।
সূরাঃ ৪ নিসা, আয়াত নং ১১৫ এর অনুবাদ-
১১৫। কারো নিকট সৎপথ প্রকাশ হওয়ার পর সে যদি রাসুলের বিরুদ্ধাচরণ করে এবং মু’মিনদের পথ ব্যতিত অন্যপথ অনুসরন করে, তবে সে যে দিকে ফিরে যায় সে দিকেই তাকে ফিরিয়ে দেব এবং জাহান্নামে তাকে দগ্ধ করব, আর উহা কত মন্দ আবাস।
* এখন উম্মতের সর্ববৃহৎ দলের পথ মুমিনদের পথ। কেউ এ পথ ছেড়ে অন্য পথে গেলে তারা সেই পথে জাহান্নামে যাবে।
সহিহ তিরমিযী, ২১১৩ নং হাদিসের (কলহ ও বিপর্যয় অধ্যায়) অনুবাদ-
২১১৩। হযরত ইবনে ওমর(রা.) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, আল্লাহ আমার উম্মতকে অথবা মোহাম্মাদের (সা.)উম্মতকে কখনো গোমরাহীর উপর একত্র করবেন না। আর জামায়াতের উপর আল্লাহর হাত বিস্তৃত। যে ব্যক্তি মুসলিম সমাজ থেকে পৃথক হয়ে গেছে সে পৃথকভাবেই জাহান্নামে যাবে।
* সারা বিশ্বে মুসলিম সমাজ হানাফী সমাজ। মুসলিমদের অন্য কোন দল সারা বিশ্বে নেই। তারা সারা বিশ্বে মুসলিম সমাজ হবে কেমন করে? সংগত কারণে যারা হানাফী মুসলিম সমাজ থেকে থেকে পৃথক হয়ে গেছে, তারা পৃথকভাবেই জাহান্নামে যাবে।
# ঘুষ দিয়ে শয়তানেরা কয়টা স্কলার কিনতে পারবে, কিন্তু ঘুষ দিয়ে ইমাম ও মোয়াজ্জিনগণের সর্ববৃহৎ দলকে কিনেফেলা সম্ভব নয়। ঘুষের বিনিময়ে তাবেঈ স্থানিয় লোকেরা ইমাম হোসেনের (রা.) মাথা পর্যন্ত কেটে ফেলেছে। আর একালের স্কলার তো নস্যি। এরা টাকার বিনিময়ে ইমাম ও মোয়াজ্জিনগণের সর্ববৃহৎ দলের আমলের বিপরীত ফতোয়া দিয়ে মুসলিম সমাজে ফিতনা সৃষ্টি করে। কতিপয় ঘুষখোরকে টিভি ও মাহফিলে এমন ইমাম ও মোয়াজ্জিনগণের সর্ববৃহৎ দলের আমলের বিপরীত ফতোয়া দিতে দেখা যায়। কুকুর থেকে যেমন সাবধান থাকতে হয় তেমনি এদের থেকেও সাবধান থাকতে হবে। এরা হলো খারেজী। আল্লাহ এদেরকে উপুড় করে জাহান্নামে নিক্ষেপ করবেন এবং এরা হবে জাহান্নামের কুকুর। এদের অনুসারী হয়ে কেউ যেন জাহান্নামী না হয় সবাইকে সে দিক খেয়াল থাকতে হবে। হযরত ওসমানের (রা.) দাঁড়ি ধরে যে বেয়াদব টান মেরেছে সে হযরত আবু বকরের (রা.) ছেলে ছিল। আর হযরত মুয়াবিয়ার (রা.) ছেলে হযরত ইমাম হোসেন (রা.) হত্যাকান্ডের হুকুমের আসমী। খারেজী আলেমকে ইয়াজিদকে রাহেমাহুল্লাহু বলতে শুনা যায়। একটা খুনের মামলার যে প্রধান অভিযুক্ত তাকে রাহেমাহুল্লাহু কিভাবে বলা যায়? আরে ভাই একটু তো ফিকাহ চর্চা করুন। তাহলেই বুঝবেন এরা আসলে কারা?
# ফিকাহ
সূরা: ৪ নিসা, ৭৮ নং আয়াতের অনুবাদ-
৭৮। তোমরা যেখানেই থাক মৃত্যু তোমাদেরকে পাকড়াও করবে যদি তোমরা সুদৃঢ় দুর্গেও অবস্থান কর। আর যদি তাদের উপর কোন মঙ্গল অবতীর্ণ হয় তবে বলে, এটা আল্লাহর কাছ থেকে। আর যদি তাদের উপর কোন অমঙ্গল অবতীর্ণ হয় তবে বলে, এটা তোমার কাছ থেকে হয়েছে।তুমি বল সবই আল্লাহর কাছ থেকে হয়। অতএব ঐ সম্প্রদায়ের কি হয়েছে যে তারা ফিকাহের মাধ্যমে (গভীর জ্ঞান) কোন হাদিস বুঝে না?
* হাদিস বুঝতে ফিকাহ লাগবে।
সূরা: ৬ আনআম, ২৫ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৫। তাদের মধ্যে কতক তোমার দিকে কান পেতে রাখে, কিন্তু আমি তাদের অন্তরে আবরণ দিয়েছি যেন তারা এর ফিকাহ (গভীর জ্ঞান) না বুঝে এবং তাদের কানে বধিরতা দিয়েছি। আর তারা সকল নিদর্শন দেখলেও ঈমান আনবে না। এমনকি তারা যখন তোমার নিকট এসে বিতর্কে লিপ্ত হয় তখন কাফিরগণ বলে, এসব তো আগের লোকদের উপকথা ছাড়া কিছুই নয়।
* ফিকাহের অনুপস্থিতি জনিত কারণে কাফিরগণ কোরআন বুঝতে পরেনি। সেজন্য তারা কোরআনের কথাকে আগের লোকদের উপকথা বলেছে। সুতরাং কোরআন বুঝতে ফিকাহ লাগবে।
সূরা: ৬ আনআম, ৬৫ নং আয়াতের অনুবাদ-
৬৫। তুমি বলে দাও- আল্লাহ তোমাদের উর্ধলোক থেকে এবং তোমাদের পায়ের তলদেশ থেকে শাস্তি প্রেরণ করতে যথেষ্ট ক্ষমতাবান। অথবা তোমাদেরকে বিভিন্ন দলে বিভক্ত করতে অথবা এক দলকে অপর দলের সংঘর্ষের আস্বাদ গ্রহণ করাতে তিনি সক্ষম। দেখ আমি কিরূপে বিভিন্ন প্রকারের আয়াত সমূহ বিবৃত করি যাতে তারা এর ফিকাহ (গভীর জ্ঞান) বুঝতে পারে।
* বিভিন্ন প্রকারের আয়াত বিবৃত করা হয়েছে কোরআনের ফিকাহ বুঝার জন্য। সুতরাং কোন আয়াত বুঝা না গেলে সেই আয়াত সংশ্লিষ্ট অন্য আয়াত সমূহ এর সাথে যুক্ত করে সেই আয়াতের ফিকাহ (মর্ম) বুঝতে হবে।
সূরা: ৬ আনআম, ৯৮ নং আয়াতের অনুবাদ-
৯৮। তিনিই তোমাদেরকে একই ব্যক্তি থেকে সৃষ্টি করেছেন। তোমাদের জন্য বেশী সময় এবং অল্প সময়ের বাসস্থান রয়েছে। এসব আয়াত আমি এমন কওমের জন্য সুস্পষ্টভাবে বর্ণনা করলাম যারা এর ফিকাহ (গভির জ্ঞান) বুঝে।
* আল্লাহ যাদের প্রতি কোরআন নাযিল করেছেন তাদের কিছু লোক অবশ্যই এর ফিকাহ বুঝে।
সূরা: ৯ তাওবা, ৮১ নং আয়াতের অনুবাদ-
৮১। যারা পিছনে রয়ে গেল তারা আল্লাহর রাসূলের বিরুদ্ধাচরণ করে বসে থাকাতেই আনন্দ বোধ করল। আর তাদের ধন-সম্পদ ও জীবন দ্বারা আল্লাহর পথে জিহাদ করা অপছন্দ করল। আর তারা বলল, গরমের মধ্যে অভিযানে বের হবে না। বল উত্তাপে জাহান্নামের আগুন প্রচন্ডতম গরম। যদি তারা ফিকাহ (গভীর জ্ঞান) বুঝতো।
* ফিকাহের জ্ঞান না থাকাতেই কিছু লোক মোনাফেক হয়ে রাসূলের (সা.) বিরুদ্ধাচরণ করেছে।
সূরা: ৯ তাওবা, ১২২ নং আয়াতের অনুবাদ-
১২২। আর মু’মিনদের এটাও উচিৎ নয় যে (জিহাদের জন্য) সবাই একত্রে বের হয়ে পড়বে। সুতরাং এমন কেন করা হয় না যে, তাদের প্রত্যেক বড় দল হতে এক একটি ছোট দল (জিহাদে) বের হয় যাতে অবশিষ্ট লোক ফিকাহ (দীনের গভীর জ্ঞান) অর্জন করতে থাকে। আর যাতে তারা নিজ কওমকে ভয় প্রদর্শন করে, যাতে তারা সাবধান হয়।
* ফিকাহের জ্ঞান ছাড়া কওমকে সাবধান করার অধিকার কারো নেই।
সূরা: ৯ তাওবা, ১২৭ নং আয়াতের অনুবাদ-
১২৭। যখনই কোন সূরা নাযিল হয় তখন তারা একে অপরের দিকে তাকায় এবং ইশারায় জিজ্ঞাস করে, তোমাদেরকে কেউ দেখেছে কি? অতঃপর তারা সরে পড়ে। আল্লাহ তাদের অন্তরকে সত্য বিমুখ করেছেন। কারণ তারা ফিকাহ বিহীন (গভীর জ্ঞান) কওম।
* ফিকাহের জ্ঞানের অভাব জনিত কারণে লোকেরা সত্য বিমুখ হয়।
সূরা: ১১ হুদ, ৯১ নং আয়াতের অনুবাদ-
৯১। তারা বলল, হে শুআয়ব! তুমি যা বল তার অনেক কথার ফিকাহ (গভীর জ্ঞান/মর্ম) আমরা বুঝি না। আর আমরা তো আমাদের মধ্যে তোমাকে দূর্বল দেখছি। তোমার স্বজন বর্গ না থাকলে আমরা তোমাকে পাথর ছুড়ে মেরে ফেলতাম। আর আমাদের উপর তুমি পরাক্রমশালী নও।
* ফিকাহ না বুঝায় লোকেরা একজন নবিকে হত্যা করার হুমকী দিয়েছে।
সূরা: ১৭ বনি ইসরাঈণ, ৪৪ নং আয়াতের অনুবাদ-
৪৪। সপ্ত আকাশ, পৃথিবী এবং এগুলোর ভিতরের সব কিছু তাঁর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে। আর এমন কিছু নাই যা তাঁর সপ্রশংস পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে না। কিন্তু ওগুলোর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণার ফিকাহ (গভীর জ্ঞান/মর্ম) তোমরা বুঝ না। নিশ্চয়ই তিনি সহনশীল, ক্ষমাপরায়ন।
* ফিকাহ অধিক বুঝলে সপ্ত আকাশ, পৃথিবী এবং এগুলোর ভিতরের সব কিছুর আল্লাহর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণার বিষয়ও বুঝা যেত। সুতরাং ফিকাহ যত বেশী হয় সঠিক জ্ঞানের পরিধি তত বাড়ে।
সূরা: ১৭ বনি ইসরাঈণ, ৪৬ নং আয়াতের অনুবাদ-
৪৬। আমি তাদের অন্তরে আবরণ দিয়েছি যেন তারা এর ফিকাহ (গভির জ্ঞান) না বুঝে এবং তাদেরকে বধির করেছি। তোমার প্রতিপালক এক, এটা যখন তুমি কোরআন থেকে আবৃত্তি কর তখন তারা পৃষ্ঠ প্রদর্শন করে সরে পড়ে।
* আল্লাহ যে এক এটা লোকেরা বুঝে না ফিকাহ সংক্রান্ত ঘাটতির কারণে।
সূরা: ৫৯ হাসর, ১৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
১৩। প্রকৃতপক্ষে এদের অন্তরে আল্লাহ অপেক্ষা তোমাদের ভয় বেশী। এটা এ জন্য যে এরা ফিকাহ (গভীর জ্ঞান) বিহীন কওম।
* ফিকাহ না থাকায় লোকেরা আল্লাহর চেয়ে তাঁর বান্দাদেরকে বেশী ভয় করে। অথচ আল্লাহ চাইলে মানুষ কারো কোন ক্ষতি করতে পারে না। আল্লাহ কোন লোককে শাস্তি দিলে কোন মানুষ তাকে আল্লাহর শাস্তি থেকে রক্ষা করতে পারে না।
সূরা: ৬৩ মুনাফিকুন, ৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
৩। এটা এজন্য যে এরা ঈমান আনার পর কুফুরী করেছে। ফলে এদের অন্তর মোহর করে দেওয়া হয়েছে। ফলে এরা ফিকাহ (গভীর জ্ঞান/মর্ম) বুঝে না।
* ফিকাহ না থাকলে লোকেরা ঈমান গ্রহণের পর কুফুরী করতে পারে। সেজন্য ঈমান সুরক্ষায় ফিকাহ জরুরী।
সূরা: ৬৩ মুনাফিকুন, ৭ নং আয়াতের অনুবাদ-
৭। তারা বলে তোমরা আল্লাহর রাসূলের সহচরদের জন্য ব্যয় করবে না। যাতে তারা সরে পড়বে। আকাশ মন্ডলী ও পৃথিবীর ধনভান্ডার তো আল্লাহরই। কিন্তু মোনাফিকরা এর ফিকাহ (গভীর জ্ঞান/মর্ম) বুঝে না।
* ফিকাহের অভাবে লোকেরা মোনাফেক হয়ে যায়।
# এসব আল্লাহর কথা। অথচ শয়তানেরা বলে কোরআন ও হাদিস মান। অথচ তারা কোরআন ও হাদিসে বলা ফিকাহ মানার কথা বলে না। অজ্ঞ লোকেরা তাদের শয়তানী ধরতে পারে না বিধায় তাদেরকে স্কলার মনে করে তাদের কথায় বিগলিত হয়ে পথভ্রষ্ট হয়।
©somewhere in net ltd.