স্বপ্ন

৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ৯:৩২

বয়স ২০-২১। রাত্রি বাড়লে সবাই যখন ঘুমিয়ে পড়ে তখন ঐ বয়সী ছেলে পেলের মাথায় অশ্লীল চিন্তাভাবনাই যে বেশি আসে তা অস্বীকার করছিনা।
কিন্তু এ বয়সেই ছেলেপেলেদের মন কতটা বিলাসী হয় জানেন? দুঃখ বিলাস করতেও যেমন তাদের জুড়ি নেই, আনন্দ বিলাস করতেও নেই।
তেমনি স্বপ্নবিলাসেও এরা গিয়ে। দুনিয়ার হেন স্বপ্ন নেই যে তারা দেখেনা। হিমালয়ের চূড়ায় যাওয়া থেকে শুরু করে, মংগলে যাওয়ার মত বড় কিংবা ক্যাম্পাসের সবচেয়ে সুন্দরী মেয়ের সাথে প্রেম করার মত দুষ্ট কোন স্বপ্নই বাদ থাকেনা।
এগুলো ঘুমিয়ে স্বপ্ন দেখা, কিন্তু আসলেই তারা কিছু স্বপ্ন দেখে পূরণ করবার ইচ্ছা নিয়ে। সে নিজের ইচ্ছার সবটুকু ঢেলে কোন স্বপ্ন সাজাতে শুরু করে, সাজাতে সাজাতে একসময় নিজেই ভেংগে দেয়।
কেন? বলছি। সে ভয় পায়, কিসের ভয়?
সে যখন ক্লাস ফাইভে পড়ত তখন তার বাবা তাকে বলেছিলেন ভাল রেজাল্ট করলে তাকে ঐ বড় লাল গাড়িটা কিনে দিবেন। তাই সে ভাল করে পড়ালেখা করত। এস.এস.সি তে বললেন গোল্ডেন পেলে নতুন বাজারে আসা দামী মোবাইলটা তোমার। ভাল করে ছেলেটা পড়ল।বাবা মার ইচ্ছা পূরণ করতেই উচ্চশিক্ষায় আসা।
তার বাবা মা তার কাছে একটা জিনিসই এখন চায়। ভাল একটা রেজাল্ট করে বড় একটা ইঞ্জিনিয়ার হবে তার ছেলে।
কিন্তু তার স্বপ্ন এর বিপরীতে। হয়ত তার স্বপ্ন এই পড়ালেখা জুড়ে নয়। অন্য কিছু নিয়ে! হয়তবা তার স্বপ্ন পূরণ করতে গিয়ে তার রেজাল্ট খারাপ হবে! ইশরে তাহলেই তো গেল! বাবা-মার স্বপ্ন শেষ। ভাল চাকরি হবেনা, কোন বাবা তার সুন্দরী মেয়ে দিবেন না।
আর মধ্যবিত্তদের কথাতো বাদই। বাবা মা বুড়ো হচ্ছেন। ছেলেকে এত কষ্ট করে পড়ালেখা করিয়েছেন। এখন সংসারের হাল ধরা চাই। ছেলে যদি পড়ালেখা না করে ভাল চাকরি না করে তাহলে সংসার চালাবে কে?
এমন করুণ ভবিষ্যতের কথা ভাবতে গিয়ে হয়ত তার তরুণ মনের দারুণ বুদ্ধিটা চাপা পড়ে যায়! সে ভয় পেয়ে যায়। নিজের স্বপ্ন বিসর্জন দিয়ে নিজেই নিজের চাকর হয়ে যায়।
নতুন বছরে যেন এমনভাবে কারও নিজের স্বপ্ন নিজের এভাবে বিসর্জন করতে নাহয়। একবার নাহয় আমরা নিজেদের স্বপ্নের পেছনে ছুটি? দেখি তা আমাদের কোথায় নিয়ে যায়?
স্বপ্ন যারা দেখে তারাই জয়ী হয়, স্বপ্নে দেখার ক্ষমতা সবার থাকেনা।
অসম্ভব বলতেতো কিছু নেই। সে তা মংগলে যাওয়া হোক কিংবা কোন রমণীর মন আরোহণ করা হোক।

০ টি +০/-০