নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মন রে, কৃষিকাজ জানো না; এমন মানবজমিন রইল পতিত আবাদ করলে ফলত সোনা! রামপ্রসাদ সেন ([email protected])
প্রত্যন্ত গ্রামের একটা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা সম্পন্ন করেছি। সেমিস্টার ফি ছিল ২ হাজার ১৫ টাকা। আর মেসে থাকা-খাওয়ার খরচ সবমিলিয়ে ২৫০০-৩০০০ টাকা। এই সামান্য টাকা জোগাড় করতে পারতাম না আমি। বাড়ি থেকে টাকা পাঠালেই কেবল এসব খরচ মিটত। খুব চেষ্টা করতাম কিছু একটা করি, নিজের খরচে নিজে চলি। কিন্তু নানান কারণে হয়ে উঠেনি।
স্থান বদল করেছি কেবল, যদিও একটা-দুটো সুযোগ ছিল, কিন্তু সেগুলো কাজে লাগাতে পারিনি। শুধু হা-হুতাশ করে দিন গুজরান করেছি। পিছিয়ে পড়ার কারণ অবশ্যই অন্তর্মুখী স্বভাব। অন্যরা পারলে আমি কেন পারিনি? আসলে তখন কাউকে সমস্যার কথা বলতে পারতাম না। যাদের বলতাম, তাদের অনেকের ইচ্ছা ছিল না আমাকে কিছু করে দেওয়ার, আবার কারও সুযোগও ছিল না।
দিনে দিনে দিন ফুরিয়েছে। নিজের জড়তা কেটেছে। বাস্তবতা বোঝা হয়েছে। নিজের কাজ নিজেকেই করতে হয়। এখন পুরোনো দিনের কথা ভাবি। দুঃখ বিলাস করি। আমার বন্ধু রিফাত আর মোতালিব দুঃখ করে বলে, কখনও বলোনি তো।
আমি কিছু বলি না। ওদের বলা যেত, ওরা সহযোগিতাও হয়তো করত। রিফাত বেশি দুঃখ করে। কারণ, আমার দুঃসময়ে সে থাকতে পারেনি অথচ তার দুঃসময়ে আমি ছিলাম বলে। আমার দুঃসময়ে সে এমন এমন বন্ধুর পেছনে অর্থ খরচ করেছে, যারা এখন পয়সাওয়ালা হলেও তার খোঁজ নেয় না।
যখন অল্প অল্প টাকা উপার্জন করা শুরু করলাম, কারও সমস্যার কথা শুনলে চেষ্টা করতাম উপকার করার জন্য। শুধূ টাকা দিয়ে নয়, আমি যে যে সেক্টরে কাজ করেছি, সেসব সেক্টরে কাজের ব্যবস্থা করে দিয়েছি। অনেকে অবশ্য এসব চাকরি করেনি। তারা আরও ভালো সুযোগ খুঁজত। আমি আফসোস করতাম, আহা আমাকে একটা যেকোনো কাজ যদি কেউ দিত তখন!
কাজ খুঁজতে খুঁজতে জুতার তলা ক্ষয়ে গেছে, পায়ে ব্যথা ধরে গেছে। পদে পদে প্রতারিত হয়েছি। যেখানে নিজেই চলতে পারি না, সেখানে দেখা গেছে ধার করে একে ওকে টাকা দিয়ে ঠকেছি।
তবে এসব অভিজ্ঞতা শিক্ষা দিয়েছে আমাকে অনেক। আপন পর চেনা গেছে। একটা বিষয় ভালো মতো বোঝা গেছে, কেউ সমস্যা্র কথা বলছে মানে এটা সমাধান করতেই হবে; এমন না। আমাদের আশপাশে এমন অনেকেই আছে যারা চাইলে অনেকের জন্য অনেক কিছু করতে পারে, কিন্তু করে না। এর সমালোচনা করা যায়। তবে এটাও সত্যি, সে যেভাবেই করুক নিজের যোগ্যতায় করেছে, অন্যকে সহযোগিতা করতে তো সে বাধ্য না।
অনেককে সহযোগিতা করার পর দেখা গেছে সে আরও বিপদে ফেলে গেছে। সে বুঝতেই পারেনি কোন পরিস্থিতিতে তাকে সহযোগিতা করা হয়েছে।
ছবি
৩০ শে অক্টোবর, ২০২৪ রাত ৮:২১
রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: চমৎকার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
২| ৩০ শে অক্টোবর, ২০২৪ রাত ৯:৪৪
সাইফুলসাইফসাই বলেছেন: যেনো আমার অব্যক্ত কথা প্রকাশ করলেন ভাই।
৩১ শে অক্টোবর, ২০২৪ রাত ১২:৩৯
রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: আমার মতো হতভাগা আরও অনেকেই আছে মনে হয়।
৩| ৩০ শে অক্টোবর, ২০২৪ রাত ১১:২৫
জ্যাক স্মিথ বলেছেন: সমস্যায় জর্জরিত দিনগুলিই আমাদের জীবনের অমূল্য পাথেয়।
৩১ শে অক্টোবর, ২০২৪ রাত ১২:৩৯
রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: একদম ঠিক।
৪| ৩১ শে অক্টোবর, ২০২৪ রাত ১২:১১
আহমেদ জী এস বলেছেন: রূপক বিধৌত সাধু,
আপনার এই লেখাটি পড়ে বহু আগের নিজের কাহিনীটিই মনে পড়লো।
সেই ১৯৬৮ সালে এস,এস,সি'তে যথেষ্ট ভালো রেজাল্টের কারনে পারিবারিক ইচ্ছের তাগিদে তখনকার স্বনামধন্য "ঢাকা কলেজ" এ ভর্তির জন্যে ঢাকা গিয়েছিলুম সুদূর বরিশাল থেকে। ঢাকা কলেজে গিয়ে খোঁজখবর নিয়ে জানলুম, সেখানে ভর্তি হয়ে হোষ্টেলে থাকতে হলে হোষ্টেল খরচ বাবদই মাসে ২০ কি ৪০ টাকা (ঠিক মনে নেই কতো টাকা, তবে এই রেঞ্জটাই মনে আছে) লাগবে। এস,এস,সি'র রেজাল্টের কারনে টিউশান ফ্রি'র সুবিধা পেয়েছিলুম। তবুও পারিবারিক অর্থনৈতিক দিক চিন্তা করে দেখলুম, এই টাকা প্রতিমাসে আমার পরিবারের পক্ষে জোগান দেয়া সম্ভব নয়। ভাবুন তো একবার, মাসে মাত্র ২০-৪০ টাকার অভাবে ঢাকা কলেজে পড়ার স্বপ্নকে সেদিন গলা টিপে মারতে হয়েছে.........
৩১ শে অক্টোবর, ২০২৪ রাত ১২:৪১
রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: মাসে মাত্র ২০-৪০ টাকার অভাবে ঢাকা কলেজে পড়ার স্বপ্নকে সেদিন গলা টিপে মারতে হয়েছে......... কী আর বলব! দুঃখ বাড়ে কেবল।
৫| ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:২১
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
কাজ করতে হবে।
সেটা যে কোন ধরনের কাজ।
কাজ করতে শরম পাবেন না।
চুরি করাই শরমের ব্যাপার।
কাজ হচ্ছে সম্মানের জিনিস।
০৮ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৪৬
রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: ঠিক।
©somewhere in net ltd.
১| ৩০ শে অক্টোবর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৯
নাহল তরকারি বলেছেন: আপনার ব্লগপোস্টটি যেনো আমাদের নিজেদের জীবনের গল্প মনে হলো। কত যে সংগ্রাম, কত যে আক্ষেপ, তবু একটুকরো সুখের খোঁজে এগিয়ে যাওয়া! জীবনের কঠিন বাস্তবতা আর নিঃসঙ্গতার গল্পগুলো এইভাবে প্রকাশের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। অনেকেই আমাদের মতোই কঠিন সময়ের ভেতর দিয়ে যাচ্ছে, তবে আপনার অভিজ্ঞতার কথা পড়ে মনে হলো, আমরাও পারব। প্রতিটি শব্দ যেনো আশার আলো দেখায়, সাহস যোগায়। এই লেখাটা সবার কাছে পৌঁছাবে, আপনাকে কুর্নিশ জানাই।