নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মুখে আমার উসখুস করছে বারুদ-\nবুকে আমার জ্বলে উঠবার দুরন্ত উচ্ছ্বাস ;\nআমি একটা দেশলাইয়ের কাঠি ।.....

সদানন্দ দেবনাথ

অমৃতস্য পুত্র

সদানন্দ দেবনাথ › বিস্তারিত পোস্টঃ

স্বপ্নময়

০৭ ই আগস্ট, ২০১৭ সকাল ১১:১২

স্বপ্নময়


যাবো না যাবো না করেও শেষে চলে এলাম।যদিও কেমন যেন লাগছে।। মা তো বেশ অবাক হয়েছে।যে ছেলে কোথাও যায় না।সে এসেছে,বিয়ে বাড়ি!!তাও আবার বিয়ের আগের দিন!!!!।বিয়ে হচ্ছে মিমির। মিমি আমার কাজিন। অর্থাৎ,পিসির মেয়ে।আমি এসেছি,পিসি তো সেই খুশি।সবাই খুশি।কিন্তু আমি তো খুশি না।যার জন্য এলাম,তাকে তো পাচ্ছি না।আমি এসেছি রিধিমার জন্য।ও মিমির ফ্রেন্ড।আর আমার ইয়ে, মানে ঐ আর কি।সারপ্রাইজ দেবো বলে,কাল বলেছি আসবো না।তার পর সে কি ঝগড়া।আমি অবশ্য কিছুই বলি নি।ও বলেছে আর আমি শুনেছি।কিন্তু এখন মহারাণীকে কোথাই পাই?এদিকে আমার ফোনে তো চার্জ নেই।কি যে করি।ফোন নিয়ে সোজা মিমির ঘরে চলে গেলাম।ওরে বাব্বা!!এ তো ফোন চার্জে দিয়েই প্রেমালাপে ব্যস্ত!
->বাহ্ বাহ্
->আরে দাদা!!! তুই!!!!কখন এলি??
->এই তো মাত্র। তা, আর দেরি সহ্য হচ্ছে না?
->আমার না হয় সহ্য হচ্ছে না।আর তুই??(এখন রাখি। পরে আবার কল দিবো।বাই)
->আমি কি??হু
->এই যে আগে এসে হাজির!কার জন্য?? হু??কিছু বুঝি না??
->আচ্ছা পরে আরও বুঝবি।এখন আমার ফোন চার্জে দে।আর ঘর খালি কর।ঘুমাবো।
->জ্বি না।আমি ঘর ছাড়ছি না।ফোন দে।

আশেপাশে কেউ আছে কি না দেখে নিয়ে মিমিকে বললাম,
->রিধি কই?
->আহা...... এখন??
->ফাজলামো বাদ। কোথায় ও?
->এতক্ষন আমাকে ধমকাচ্ছিলি।এবার??মামি কে বলবো?
->মার খেতে চাইলে বল।

হঠাৎ বাইরে থেকে রিধির আওয়াজ

->ওই মিমি তুই কই?

ঘরে ঢুকে আমাকে দেখে অবাক হয়ে গেছে।যেন কথা বলতে ভুলে গেছে।

->কি হলো?? হা করে আছো কেনো?
->তুমি এসেছো!!""
->কেন বিশ্বাস হচ্ছে না?
->না মানে..তুমি তো বললে আসবে না।
->আচ্ছা তোরা গল্প কর।আমি বাইরে থাকছি।
(মিমি বাইরে চলে গেলো)
->আমার না ঠিক বিশ্বাস হচ্ছে না!!
(রিধির হাত টা ধরে বললাম)
->এখনও বিশ্বাস হচ্ছে না?
->হু..হচ্ছে।কিন্তু কাল এত নাটক করলে কেন?
->আমি কি নাটক করলাম!!!তুমিই তো আমাকে কত কি বললা।
->তুমি তো আসতে চাচ্ছিলে না। তাই বলেছি।
->আমি তো এসেছি।এখন??
->এখন কি???
->আমাকে, আমার শশুর বাড়ি নিয়ে যাবা না?
->ইশ্ শখ কত!সাহস থাকলে একা যাও।
->আমি কিন্তু যেতে পারি।
->দেখা যাবে সময় মত।
->হুমম....দেখাবো।
->ঐ তোরা পরে রোমান্স করিস এখন চল।খাবার দিচ্ছি।তুই ফ্রেশ হয়ে আয়।আর রিধি আমার সাথে আয়।
->তাড়া তাড়ি এসো।

রিধি আর মিমি চলে গেলো।আমি ফ্রেশ হয়ে খেতে গেলাম।দুজন মিলে ঠেসে ঠেসে খাওয়ালো আমাকে।তার পর সবাই মিলে আড্ডায় বসলো।পাড়ার আরও ছেলে মেয়ে এসে যোগ দিলো।সবাই আড্ডা দিচ্ছে আর আমি ওদের কথা শুনছি আর দেখছি।দেখছি মানে, রিধিকে দেখছি।কিছু মানুষ আছে, এরা মনের কথা লুকিয়ে রাখতে পারে না।চেহারা তে ফুটে ওঠে।তাদের মধ্য রিধি একজন।ও যে খুব খুশি।সেটা ওর দিকে তাকালে বোঝা যাচ্ছে। দুই চোখে যেন খুশি উপচে পড়ছে।মনে হচ্ছে,ঐ চোখের দিকে তাকিয়ে থাকি সারাক্ষণ। আমি সেটাই করছি।আমি তাকিয়ে আছি তার ওই মায়া ভরা চোখের দিকে।মাঝে মাঝে চোখে চোখ পড়তেই ও অন্য দিকে তাকাচ্ছে। যেন খুব মজা পাচ্ছে।পাশ থেকে মিমি চিমটি কেটে আস্তে আস্তে বললো,
->কেস খেয়ে যাবি কিন্তু।
->কেন??
->পাড়ার আরও অনেকে আছে।পরে রোমাঞ্চ করিস।

কি আর করা।লুকিয়ে লুকিয়ে দেখি।
কিভাবে যে দিন চলে গেলো।বুঝতেই পারলাম না।আজ মিমির বিয়ে।আমাকে তো এত্ত গুলো কাজ ধরিয়ে দিয়েছে সকাল থেকে দম ফেলার সময় পাচ্ছি না।আর ওরা সব সাজগোছ নিয়ে ব্যস্ত। দেখতে দেখতে সন্ধা হয়ে গেলো।বর আসার সময় হয়ে গেছে।আমি চিন্তা করছি কি ভাবে ছুটি পাওয়া যায়।ওরে বাবা!সামনে পিসেমশায়। দেখতে পেলে আবার কিছু কাজ ধরিয়ে দেবে।তার থেকে পিসির কাছ থেকে ছুটি মঞ্জুর করে আসি।
->ও পিসি?
->হ্যাঁ।কি বলবি বল।
->সারা দিন তো অনেক কাজ করেছি।এখন আমার ছুটি।
->আচ্ছা,যা,অতিথিদের আপ্যায়ন করে তোর ছুটি।

ধুর..এখনও বরযাত্রী আসবে জল খাবার দিবো। তার পর!!! ভাল্লাগে না।
এখনও বরযাত্রী আসতে দেরি আছে।ভেতরে গিয়ে দেখে আসি।এই রে...এখনে তো পিসেমশায়!!! পালাই।
-> এই সুব্রত?? সুব্রত??
->হ্যাঁ পিসেমশায়। বলুন।
->তোর আর অন্য কাজ করতে হবে না।তুই এদের সাথে থাক।দেখ, এদের কি কি লাগবে।
->আচ্ছা আমি দেখছি।

ইয়াহু....এ তো মেঘ না চাইতে বৃষ্টি!!!।ঘরে গিয়ে আমি পুরাই অবাক।মিমির পাশে রিধি বসে আছে।ধামাকা সাজ দিয়েছে।শুধুই দুচোখ ভরে দেখতে মন চায় ।আমিও রিধির পাশে গিয়ে বসলাম।আস্তে করে বললাম,
->চলো বিয়ে করে ফেলি।
->চলো
->সত্যি!!!
->না মিথ্যা।আগে বাড়ি গিয়ে, সবাইকে রাজি করাও।তারপর।
->ঠিক হ্যায় মহারাণী।
->হুমম দেখবো কি করো।এখন দুরে সরে বসো।সবাই দেখছে।
->দেখুক।আসো একটা সেলফি তুলি।
->ঐ পাশে গিয়ে তোলো।

তার পর সবার সাথে কিছু ছবি তুললাম।এর পর বরযাত্রীরা চলে এলো।লগ্ন শুরু হলে বিয়ে পড়ানো আরম্ভ হলো।আমি আর রিধির পাশে দাড়িয়ে বিয়ে দেখছি।রিধি একটু পর পর আড় চোখে তাকাচ্ছে। আস্তে করে বললাম
->দেখে রাখো কাজে লাগবে।
->তুমি দেখে রাখো।আমার মনে না থাকলে তুমি মনে করিয়ে দিবে।
দুজনেই হেসে উঠলাম।
দুই জোড়া চোখ তখন স্বপ্নময়

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.