নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

এভারেষ্ট জয় করতে যাচ্ছি....

ধুত্তোর ডাইনোসরের ডিম

নাসা’র মা

..... searching .....

নাসা’র মা › বিস্তারিত পোস্টঃ

একজন পর্ণস্টারের আত্মকথন (পার্ট-৩: শেষ কথন)

০২ রা অক্টোবর, ২০১২ রাত ৩:১০





পর্ব-১



পর্ব-২





[এটি একটি গল্প মাত্র। কারো বাস্তব জীবনের সাথে মিল খুঁজতে যাবেন না প্লিজ। আর এটি সম্পূর্ণ আমার মনগড়া গল্প। আমি কোন পর্ণস্টারের সাক্ষাৎকার নিয়ে এটা লিখতে বসিনি। ধন্যবাদ।]





শুনেছি কোন সিনেমা প্রথমদিন শ্যুটিং এর আগে তার মহরত হয়, পার্টি হয়। এই সিনেমা শুরুর আগে যেহেতু সেইরকম কিছু হয়নি তাই ভেবেছিলাম সেদিনই হয়তো শ্যুটিং এর আগে কোন অনুষ্ঠান হবে। তাই বেশ যত্ন নিয়ে সেজ়েগুজে ডিরেক্টরের পাঠানো গাড়িতে চেপে নির্দিষ্ট সময়ের অনেক আগেই আমি পৌছে গেলাম। কিন্তু যেখানে পৌছালাম সেখানে কোন অনুষ্ঠানের আয়োজনই ছিল না, এমনকি শ্যুটিং এর যে নূন্যতম ব্যস্ততা থাকে, তার কিছুই নেই। পুরানো একটা চার তলা বিল্ডিং এর সামনে আমি দাঁড়িয়ে আছি একা। আমাকে নামিয়ে দিয়ে গাড়িও চলে গেছে। এতক্ষণ উত্তেজনার পর প্রথম খেয়াল করলাম যে আশেপাশে শ্যুটিং এর কোন গাড়িও নেই। আমার তখন মনে হলো আমি নির্ঘাত ভুল জায়গায় এসে পড়েছি। পরক্ষণেই মনে হলো ড্রাইভার নিশ্চয় জানে আমকে কোথায় যেতে হবে। সুতরাং আমি কোন ভুল জায়গায় আসিনি। এইটাই সেই জায়গা। খুবই মন খারাপ করা পরিবেশ। আশেপাশে এতই বেশী নিরিবিলি ছিল যে আমার সবকিছু মিলিয়ে কেমন জানি একটু ভয় ভয় করতে লাগলো। তবে কি ডিরেক্টর আমাকে কোন খারাপ উদ্দ্যেশে এরকম নিরিবিলি জায়গায় ডেকে পাঠিয়েছে?! মনের মধ্যে হাজারো প্রশ্ন। ঠিক সেই সময়ই ডিরেক্টরের ফোন এলো।

- হ্যালো!

- তুমি কোথায়???

- আমি জানি না কোথায়। একটা চারতলা বিল্ডিং এর সামনে আমাকে আপনার ড্রাইভার নামিয়ে দিয়ে গেল। কিন্তু আশেপাশে কেউ নেই।

- ও! তাহলে তো তুমি এসে গেছো। একটু কষ্ট করে সিঁড়ি দিয়ে উঠে উপরে ছাদে চলে এসো। এখানে সেট করা হয়েছে।

- ঠিক আছে।

আমি মনে মনে বেশ শান্তি পেলাম।

সিঁড়ি দিয়ে উপরে উঠে যাওয়ার সময় অনেক ধরণের জিনিস সিঁড়িতে পড়ে থাকতে দেখলাম।

ছাদে উঠে দেখি বিশাল ছাদের দুই দিকে দু’টি তাবু পাতা। খোলা একটা জায়গায় দাঁড়িয়ে ডিরেক্টর কয়েকজনের সাথে হাত নেড়ে নেড়ে কথা বলে কি যেন বুঝাচ্ছেন। হঠাৎ আমাকে দেখতে পেয়ে উনি উল্লসিত ভাবে বলে উঠলেন, “এই তো ক্যান্ডি চলে এসেছে।”

আমি আমার আশেপাশে তাকিয়ে দেখলাম কার কথা বলা হচ্ছে। আমার ভাব দেখে ডিরেক্টর হেসে উঠে বললেন, “আরে তুমিই হচ্ছো ক্যান্ডি। সিনেমায় তোমার নাম ক্যান্ডি। পছন্দ হয়েছে নামটা?”

আমি হ্যাঁ সূচক মাথা নাড়লাম। নামটা আমার আসলেই পছন্দ হয়েছে। নামের মধ্যে বেশ কেমন যেন একটা আদর আদর ভাব আছে। নাম শুনে মনে হলো আমি কোন বড়লোকের আদুরে কন্যা।

আমি হাসিমুখে উনার দিকে এগিয়ে যেতেই আমাকে একটা তাবু দেখিয়ে বললেন,

- মেকাপ নিয়ে আসো একেবারে। তাড়াতাড়ি কাজ শুরু করতে পারলে তাড়াতাড়ি শেষও করতে পারবো।

আমি অবাক হয়ে বললাম, “কোন অনুষ্ঠান হবে না??”

- কিসের অনুষ্ঠান?

- নতুন কোন সিনেমা শুরুর আগে কি যেন সব অনুষ্ঠান হয়।

- ওহ! আরে হবে তো। একেবারে সিনেমা শেষে সবাইকে চমক দিয়ে অনুষ্ঠান করবো।

এই বলে উনি একটু হাসলেন। আমি যেহেতু এইসব কাজের ভেতরকার কোন খবরই জানি না তাই উনি যা বললেন সেটাই মেনে নিলাম। খুব ভাল হতো যদি অন্যবারের মত ‘ক’ আর ‘খ’ আমার সাথে আসতো। ওদের কে আমি খুব মিস করছিলাম। কিন্তু সেদিন সেই ঝগড়ার পর ‘ক’ এর সাথে দেখা সাক্ষাৎ বন্ধ আর ‘খ’ তো এখন শহরেই নাই। খুব একা একা লাগছিল।

আজ সেটের মানুষগুলোও একদম অপরিচিত।একদম কাউকেই চিনি না। অন্যান্য নায়িকাদের মত একবার মা কে সাথে আনবো ভেবেছিলাম, কিন্তু সেটাকে ন্যাকামি মনে করে আর আনিনি। মা কে অবশ্য বলিওনি যে আজই প্রথম শ্যুটিং। পরে একবারে সারপ্রাইজ দেবো ভেবেছিলাম।

আমি হেঁটে ডিরেক্টরের দেখানো তাবুতে গিয়ে ঢুকলাম। আমার পিছুপিছু ডিরেক্টরও নিজে চলে এলেন। এসে বললেন,

- তুমি তাহলে মেক-আপ নিয়ে নাও। আমাদের নতুন মেক-আপ ম্যানের সাথে তোমার পরিচয় করিয়ে দেই। এর নাম ‘ব’।আর ‘ব’ এই হচ্ছে আমাদের সিনেমার নায়িকা। যত্ন করে মেক-আপ দিও।

আমি মেক-আপ ম্যানের দিকে তাকিয়ে ছোট করে ভদ্রতামূলক হাসি দিলাম। বদলে সে আমাকে শয়তানী ভরা একটা ফিচলে হাসি দিল। আমি কিছু না বলে ডিরেক্টরের সাথে কথা বলা শুরু করলাম। তাকে জিজ্ঞেস করলাম,

- আমার কস্টিউম কি হবে??

- আরে, আজ তুমি যেটা পরে এসেছো এটাই একদম ঠিক আছে। এটাতেই হবে। শুধু একটু মেক-আপ টা ঠিক করে নিলেই একদম পারফেক্ট হয়ে যাবে।

এ কথা বলার পর মেক-আপ ম্যান আবার ফিচলে হাসি দিল। এইবার আমি বিরক্ত হয়ে বললাম,

- আপনি এইভাবে হাসছেন কেন?

আমার এ প্রশ্ন শুনে উনি থতমত খেয়ে চুপ করে গেলেন। তাড়াতাড়ি ডিরেক্টর বললেন, “আরে ও তো সবসময়ই হাসে। ও কিছু না। তাহলে তুমি মেক-আপ শেষ করে ফেলো, আমি তোমার জন্য ড্রিংকস পাঠিয়ে দিচ্ছি।”

আমি তখন উনাকে আরেকটা কথা বললাম। এখানে আসার পর থেকে আমি যাকে খুঁজছি, সিনেমার নায়ক!!

কে সে? আমি চিনি কিনা! কোথায় আছে এখন! সেটে এসে পৌছেছে কিনা!

ডিরেক্টর আবার একটা হাসি দিয়ে বললেন, “তুমি মেক-আপ নিতে থাকো, আমি পাঠিয়ে দিচ্ছি।”

উনি চলে যাবার পর আমি বহু বাতি জ্বলে থাকা আয়নার সামনে চেয়ারে বসে পড়লাম। চোখ বন্ধ করে ভাবতে থাকলাম, আর কিছুক্ষণের মধ্যে আমার কাজ দিয়ে আমার জীবনও এই বাতিগুলোর আলোর মত উজ্জ্বল হয়ে যাবে। আমি মেক-আপ নিতে নিতে প্রতিজ্ঞা করলাম, আমি অনেক মেহনত করে কাজ করবো যাতে কেউ আমার বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ আনতে না পারে। ভবিষ্যতে ডিরেক্টররা আমাকে তাদের সিনেমায় নেওয়ার জন্য যেন ব্যস্ত থাকে।

আমার চিন্তায় ছেদ পড়লো ‘ব’ এর কথায়। ‘মেক-আপ শেষ।’

আমি বেশ অবাক হয়ে চোখ মেলে তাকালাম। সিনেমার নায়িকা আমি, আর এত তাড়াতাড়ি মেক-আপ করা শেষ। আমার অবাক হওয়ার পালা বাকী ছিল আরো তখনও। আয়নায় নিজেকে দেখে মনে হলো ‘মেক-আপ নিয়েছি’ না বলে ‘মেক-আপ তুলেছি’ বললে কথাটা বেশী ঠিক শোনাতো। কেননা, আমি বাসা থেকে যে মেক-আপ নিয়ে এসেছিলাম, তা উঠিয়ে দিয়ে আমার মুখে নতুন কোন মেক-আপ দেওয়া হয়নি। কিন্তু মুখে একদম সাদামাটা একটা সুশ্রী ভাব আছে। আর ঠোঁটে হালকা পিংক কালারের একটা প্রলেপ রয়েছে। আমার অবাক ভাব কাটতে না কাটতেই অপরিচিত বেশ সুদর্শন দু’জন ছেলে তাবুতে ঢুকলো। তাদের পিছনে ডিরেক্টর সাহেব আর তারও পিছনে স্পট বয়ের হাতে এক গ্লাস জুস। ডিরেক্টর জুসের গ্লাসটা আমার হাতে দিয়ে ছেলে দু’জনের সাথে পরিচয় করিয়ে দিলেন। একজনের নাম ‘জ’ আরেকজন ‘ফ’।

হাই-হ্যালো পর্ব শেষে ডিরেক্টর বললেন, “তোমরা বসে কথা বলো আমি সেট-ক্যামেরার পজিশন সবকিছু ফাইনাল করে তোমাদের ডাক দিচ্ছি।”

উনি চলে যাবার পর জুস খেতে খেতে আমি তাদের সাথে কথা বলতে লাগলাম। দুইজনই বেশ ভাল। গল্পবাজ। আমার পছন্দ হলো। কথা প্রসঙ্গে একটা সময় তাদের কাছে জানতে চাইলাম তারা এই সিনেমার নাম কিংবা কেমন গল্প তা জানে কিনা! আমার এ প্রশ্ন শুনে ওরা অবাক হয়ে উলটো আমাকেই জিজ্ঞেস করে বসলো, “কেন আপনি জানেন না?” আমার উত্তর ‘না’ শুনে ওরা ভদ্রতার একটা আড়াল রেখে নিজেরা হাসাহাসি করতে লাগলো। ওদের হাসি দেখে আমার খুব লজ্জা লাগছিল। মনে হচ্ছিলো বোকার মত এই কথাটা না জিজ্ঞেস করলেই পারতাম। এতক্ষণ অপেক্ষা করে ছিলাম, আর একটু সময়ই তো! ধুর!! নিজের উপরে রাগ হচ্ছিলো খুব। রাগের পরিমানটা মনে একটু বেশী হয়ে গিয়েছিল, কেননা হঠাৎ আমার মনে হতে লাগলো আমার মাথা ঘুরাচ্ছে, আমি চোখে ঝাপসা দেখছি আবার পরক্ষণেই ঠিক দেখছি। আমি বার কয়েক চোখ বন্ধ-খোলা-বন্ধ এমন করে পুরোপুরি চোখ মেলে তাকালাম। এখন দেখি অবস্থা আরো খারাপ। আমার সামনে বসে ওরা দু’জন এখনও হাসছে কিন্তু আমি ওদের হাসির কোন আওয়াজ পাচ্ছি না। শুধু ওদের হাসি না, আমি কোন কিছুরই আওয়াজ পাচ্ছিলাম না। মনে হচ্ছিলো হঠাৎ করে আমি যেন বধির হয়ে গেছি। এমন সময় আরেকটা কাহিনি হলো। হঠাৎ আমার মনে হতে থাকে কে যেন আমার পায়ের নিচে পাখির পালক দিয়ে সুড়সুড়ি দিচ্ছে। আমার হাসি পেল।

কিছুপরে কেউ একজন আমাকে কোলে তুলে নিয়ে কোথায় যেন নিয়ে গেল। তারপর ঝাপসা ঝাপসা আমি কয়েকজনের চেহারা দেখেছি। ওরা আমার উপরে ঝুকে কি যেন বলছিল। আমি ওদের কোন কথাই শুনতে পাইনি। আমার মনে আছে একটা সময় আমি টের পেয়েছিলাম কেউ একজন আমার গায়ের জামা-কাপড় বেশ যত্ন নিয়ে খুলছে।

এরপরে আমি দেখেছি, ‘জ’ আর ‘ব’ কে। ওরা আমার শরীর নিয়ে খেলছিলো।

কোন কিছুতে বাধা দেবার মত শারিরীক শক্তিটুকুও আমার মধ্যে তখন ছিল না। ওরা আমাকে নিয়ে যা ইচ্ছে করছিল। আমি বুঝতে পারছিলাম সবই, কিন্তু কিছু বলতে বা করতে পারছিলাম না। কিছু বলে লাভও বা কতটুকু হতো। একা বোকাসোকা আমাকে পেয়ে তারা যেভাবেই হোক তাদের কাজ উদ্ধার করে নিত।

কিই-ই বা বয়স ছিল তখন আমার। আমি কিই-ই বা বুঝতাম! মানুষের শরীর নিয়ে যে এভাবে খেলা করা যায় তাই পর্যন্ত জানতাম না।

অনেক স্বপ্ন আর আশা নিয়ে আমি ফিল্মস্টার হতে এসেছিলাম। বোকা আমাকে পেয়ে আমার সে স্বপ্নের কবর দিয়ে আমাকে বানানো হয়েছিল পর্ণস্টার। আমি হলাম বিখ্যাত পর্ণস্টার 'ক্যান্ডি'।

প্রথম একটা পর্ণ করেই তুমুল হিট। সব খবর আমি বাড়ি বসে পেতাম। কেননা এরকম একটা ঘটনার পর আমি গৃহবন্দী ছিলাম কিছুদিন। আমার এ আমূল পরিবর্তনে মা অনেক কথা জিজ্ঞেস করেছিল। লজ্জায় বলতে পারিনি কিছুই। এখন মনে হয় সেদিন মা কে সব খুলে বললে পরবর্তী ভয়ংকর ঘটনাটা হয়তো ঘটতো না।

আমাকে দিয়ে আরো টাকা কামাবার আশায় সেই ডিরেক্টর আবার আমাকে কাজের অফার দেয়। আমি তাকে সোজাসুজি ‘না’ করে দেই। তখনই আমি তার আসল খারাপ রূপটা দেখতে পাই। আমাকে হুমকি দেওয়া হয় এই গোপন কাজের খবর সে অ্যাড মিডিয়ায় ছড়িয়ে দিবে।তখন কিভাবে আমার আকাশ্চুম্বী জনপ্রিয়তা মাটির ধুলোয় না লুটিয়ে থাকে তা উনি দেখে নেবেন। এ ধমকিতে আমি আমার জনপ্রিয়তা হারানোর ভয় পেলাম ঠিকই, কিন্তু আমি আমার ডিসিশনে অনড় ছিলাম। আর তখনই হলো সব থেকে বাজে ব্যাপারটা।

একদিন ডাকে বাবা’র নামে একটা প্যাকেট এলো। বাবা প্রায়ই অর্ডার দিয়ে কালেকশনে রাখার মত গানের সিডি কিংবা মুভ্যি সিডি আনাতেন। এ প্যাকেট টাও ওরকম দেখতে ছিল। কিন্তু ভিতরে কোন গান বা মুভ্যির সিডি ছিল না। ছিল পর্ণের সিডি। আমার পর্ণ।

ভিডিও দেখে মা অসুস্থ হয়ে পড়লেন। বাবা আমার কোন কথা না শুনেই তখনই আমাকে বাড়ি থেকে বের হয়ে যেতে বললেন। আমি অনেক কিছু তাকে বলতে চেয়েছি, কিন্তু বাবা যেন কোন কথাই শুনতে প্রস্তুত ছিলেন না। তার একটাই কথা "এখনই আমার বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাও। যে মেয়ে এই বয়সেই এইসব করতে শিখে যায়, সে নিজের ভবিষ্যত গড়ে নিতে হয় কিভাবে তাও শিখে যাবে। চাই না আমার এমন মেয়ে।"

সত্যি সত্যি সেদিন আমাকে বাড়ি থেকে বের হয়ে যেতে হয়েছিল। কান্নাভরা চোখে নিচে নেমে দেখি বাইরের গেটের সামনে ডিরেক্টর তার গাড়ি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। আমাকে দেখে হাসি দিল শুধু। যেন এমনভাব সে জানতোই আমি নেমে আসবো আর অমনি সে পাকড়াও করবে। তাকে দেখে আমার রাগে সমস্ত শরীর জ্বলে গেল। আমি কিল-ঘুষি-চড় দিয়ে তার উপরে রাগ ঝাড়তে না ঝাড়তেই মাথায় বাড়ি খেয়ে অজ্ঞান হয়ে গেলাম।

যখন চোখ মেললাম, তখন বুঝতে কষ্ট হলো না আমি কোথায় আছি, কার কাছে আছি। আর সেই সাথে এটাও বুঝে গেলাম আমার এখান থেকে বের হবার রাস্তা বন্ধ। এমন সময় ডিরেক্টর হাসতে হাসতে আমার কাছে এগিয়ে এল, কিছু বললো না। যেন নিঃশব্দে আমাকে পর্ণ জগতে ওয়েলকাম করছে।

অনেক প্রতিবাদ করেও আমি পারিনি নিজেকে ক্যান্ডি হওয়া থেকে বাঁচাতে। পারিনি আমি আমার স্ব-নাম নিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে। পারিনি কোনদিন স্বাভাবিক অভিনয় জগতের বাসিন্দা হতে। হবো কিভাবে? পর্ণ জগতে তখন আমার খুব ডিমান্ড। পরিচালকরা আমাকে তাদের পর্ণে রাখতে চায়, ভিউয়াররা আমাকে দেখতে চায়। সেদিনের ম্যাক-আপ রুমের আয়নার বাতি গুলোর মতই উজ্জ্বল হলো আমার পর্ণস্টারের ক্যারিয়ার।

যখন মোটামুটিভাবে অনেকেই জেনে গেল আমি পর্ণগ্রাফীতে কাজ করছি, তখন আমি না চাইতেই আমার অ্যাডের কাজ কমতে থাকে। অথচ এ কাজ দিয়েই আমার এ জগতে প্রবেশ। আমি সে কাজই একেবারে হারিয়ে ফেলি। আমাকে কেউ ভদ্র অ্যাড করতে ডাকে না। মাঝে মধ্যে ডাক পড়লে দেখা যেত সেগুলোতে এত বেশী বাজে সিন থাকে যে সেন্সর বোর্ড থেকে তা ছাড়াই পায় না অনেক সময়। মোট কথা আমি কোন ভদ্র অভিনয়ের কাজ পেতাম না। সে অ্যাড হোক আর যাই হোক। অগত্যা আমি আমার সবটুকু শ্রম একজন সফল পর্ণস্টার হওয়ার জন্য ব্যয় করলাম।

আমি আসলেই সফল। আমার অর্থ-বিত্ত-নাম (বিখ্যাত পরিচিত পর্ণস্টার হিসেবে) সবই হলো। শুধু পেলাম না কোন সম্মান। চাইলেও কোন স্বাভাবিক কাজ আমি পেতাম না। সবাই খালি আমাকে দিয়ে বাজে বাজে সিন করাতে চায়। একবার এক ম্যাগাজিনের সাক্ষাতকারে বলেছিলাম আমি টিভি সিরিয়ালে অভিনয় করতে চাই। সেটা নিয়ে মিডিয়া জগতে হুলস্থূল লেগে গেল। যেন মনে হলো আমি কোন উপাসনালয় অপবিত্র করার কথা বলেছি। আমি এতটাই পাপ করেছি। কেননা আমি অপবিত্র। সত্যিই যদি আমি অপবিত্র হয়ে থাকি তবে তা কাদের জন্য? কারা আমার পর্ণগ্রাফী আগ্রহ নিয়ে দেখে, তাই নিয়ে আলোচনা করে!

আমি ভাল কিছু করতে চাইলে এরাই সবার আগে আঙ্গুল তোলে আমাকে খারাপ বলার জন্য। এরা লোভী, এরা স্বার্থপর। ছোটবেলায় বাড়িতে বেড়াতে আসা সেই সুযোগসন্ধানী লোকটা, ডিরেক্টর, পর্ণ ভিউয়ার এরা সবাই লোভী। কারো লোভ দেহের, কারো লোভ টাকার তো কারো লোভ মনে মনে, চোখের ক্ষুধা মেটানোর।

এদের সবার স্বাভাবিক জীবন আছে। নেই শুধু আমার। আমি একা। জীবনের এ শেষবেলায় আমি একদমই একা। মা মারা যাবার পর থেকে যেন একাকীত্বটা আমি প্রকটভাবে অনুভব করি। বাবা সেদিনের পর থেকে আমার সাথে আর কোন সম্পর্ক রাখেন নি।

অ্যাড মিডিয়ার কাজ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল সেই কবেই। পর্ণের কাজেও আর এখন ডাকে না। ডাকবেই বা কেন? ভিউয়ারদের আমার যা কিছু ছিল সব নাকি দেখা শেষ। তারা আর আমাকে চায় না। নতুন চায়। ডিরেক্টরদের নতুন নতুন ক্যান্ডি তৈরি করতেও কোন আলসেমী নেই। আমি জানি না কয়টা মেয়ে স্বেচ্ছায় পর্ণস্টার হতে আসে। তবে আমি পর্ণস্টার হতে আসিনি এটা আমি জানি। কিন্তু ভাগ্যক্রমে হয়ে গেছি। এখন আর স্বাভাবিক অভিনয় জগতে আসতে চেয়েও তা পারি না। আমাকে নিয়ে তখন হাজারো কথা উঠে। হাজারো কথা আমি উপেক্ষা করতে শিখে গেছি অনেক আগেই। যাও দু একটা কাজ আমি পেয়েছিলাম, কাজ করতে গিয়ে দেখি অন্য সমস্যা। যে কাজে আমি থাকবো, সেখানে অন্য নামী-দামী আর্টিস্টরা থাকবেন না। তাদের নাকি অপমান হবে। অথচ এই তারাই যখন তাদের ভদ্র সিনেমায় সেমি ন্যাকেড কিংবা ন্যাকেড সিন করেন তখন সেটা হয়ে যায় খুব সাহসের কাজ। মানুষ তাই নিয়ে প্রশংসার বুলি আওড়ায়।

সেই প্রথম কাজের পর আমি যদি বাসায় এসে সব কিছু খুলে বলতাম কিংবা সেদিন যদি বাবা একটু আমার কথা শুনতেন হয়তো আমার ভাগ্য অন্য রকম হতে পারতো। এ ধরণের নির্যাতনের মুখে আমাকে পড়তে হতো না। একটা ভুল করার পরও হয়তো আমি ফিরে পেতাম আমার স্বাভাবিক জীবন। কিন্তু তা যখন হয়নি, তখন আমার এই জীবনের জন্য দায়ী করবো কাকে?

আমার হয়তো আসলে দায়ী করার মত কেউ নেই। কিংবা দায়ী আমি নিজেই।

এখন আমি একা। নিজের ভাগ্যকে মেনে নিয়ে একাকীত্ব জীবন পার করাতেই আমাকে অভ্যস্ত হতে হবে। যৌবনে এই আমাকে নিয়ে উম্মত্ততার অন্ত ছিল না, সেই আমারই শেষ জীবনে কথা বলার মত একটা মানুষও পাশে নেই। কি ভয়াবহ একাকীত্ব। আমার সহ্য হয় না। আমি সহ্য করতে পারিনা। অর্থ-বিত্ত সবই থাকার পরও একাকীত্ব ঘোচানোর কেউ নেই আমার। কেন এমন হলো? কেন? আমি জীবনের বাকী সময়টা স্বাভাবিক জীবন চেয়েছিলাম। আমি মানুষের মাঝে থাকতে চেয়েছিলাম। আমি স্বাভাবিক ভাবে বাঁচতে চেয়েছিলাম। আমার চাওয়াটা কি খুব বেশী কিছু?









ফটো কার্টেসিঃ সাদিয়া সুলতানা

মন্তব্য ১৯ টি রেটিং +৭/-০

মন্তব্য (১৯) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা অক্টোবর, ২০১২ রাত ৩:৩২

আমি আমার চেয়ে বড় হতে চাই বলেছেন: হুম। মন্তব্য করা উচিত হবে না।

০২ রা অক্টোবর, ২০১২ সকাল ৯:৪৬

নাসা’র মা বলেছেন: কেন?

২| ০২ রা অক্টোবর, ২০১২ রাত ৩:৪৩

বিতর্কিত উন্মাদ মানব বলেছেন: ৩টা পর্ব একসাথে পড়লাম। আপনি লেখেন ভাল। তবে মূল গল্প আরো জোরালো হওয়া প্রয়োজন। ভালো থাকবেন :)

৩| ০২ রা অক্টোবর, ২০১২ ভোর ৬:৪৪

তারেক বলেছেন: নায়ীকা আমেরিকা গেলেই পারে। সেখানে অনেক সুবিধা

৪| ০২ রা অক্টোবর, ২০১২ সকাল ৭:১৭

কনিফউজড_েনিটেজন বলেছেন: ধন্যবাদ।
আপনি কি dirty picture ছবিই দেখেছেন?
Vidya Balan ভীষণ Gracefully ফুটিয়ে তুলেছেন silk smita কে।

আপনার content selection চমৎকার , কিন্তু মনে হল আপনি আপনার তৈরি character এর প্রতি যথেষ্ট শ্রদ্ধাশীল নন।

০২ রা অক্টোবর, ২০১২ সকাল ৯:৪৫

নাসা’র মা বলেছেন: আমি dirty picture এর উলা-লা আর ইশক সুফিয়ানা গান ছাড়া আর কিছুই দেখিনি।

আমি আমার character কে যত্ন নিয়েই গল্পটা শুরু করেছিলাম, কিন্তু শেষের দুইটা পর্বে এসে সেটা আর রাখতে পারিনি, প্রথম পর্বের পর, বিশেষ একজনের একটা কথায় আমি বিশেষভাবে (বলা যায় খারাপভাবে) প্রভাবিত হয়েছিলাম। আমার এই পোষ্ট কন্টিনিউ করার ইচ্ছা শক্তিই হারিয়ে ফেলেছিলাম। তবুও শেষ করলাম জোর করে। আর এ কারণের হেলায় আমি character কে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়েছি।

৫| ০২ রা অক্টোবর, ২০১২ সকাল ৮:২৭

সুদীপ্ত কর বলেছেন: +++

৬| ০২ রা অক্টোবর, ২০১২ সকাল ৯:১৭

আরিফ নাওগাঁ বলেছেন: ১ম টা ভাল লাগসিলো। ২য় & ৩য় টা একটা ইংরেজী গলপের বাংলা মনে হলো। ভাল লিখছেন। ++

৭| ০২ রা অক্টোবর, ২০১২ সকাল ১০:১৭

সত্যচারী বলেছেন: যেহেতু পোষ্টের শুরুতেই বলেছেন এটা সম্পূর্ন আপনার কল্পনাপ্রসূত, তাই এটাকে আপনার সৃষ্ট একটা গল্প হিসেবেই নিলাম। গল্প হিসেবে বলব ভালই হয়েছে।

আমার মত: পর্নস্টার আর বাজারী মেয়ে যদিও একই গোত্রের, তথাপি তাদের মধ্যে একটা সূক্ষ পার্থক্য রয়েছে। সেই পার্থক্যটা আপনি ফুটিয়ে তুলতে পারতেন যদি পর্ন ইন্ডাষ্ট্রী অথবা নামকরা কয়েকজন পর্নস্টারের বায়োগ্রাফী আপনি পড়তেন। জোর করে বা ব্ল্যাকমেইলিং করে পর্নস্টার বানানোটা খুবই কঠিন একটা কাজ, পশ্চিমা বিশ্বে পর্ন জগৎকে ভিন্ন ধারার শিল্পের পর্যায়ে ভাবা হয়। মূলধারার মুভিগুলোর মত পর্ন মুভিতেও প্রি/পোষ্ট প্রোডাকশান, বাজেট, কন্ট্রাক্ট সাইন, ট্যাকনিকাল ইন্সট্রুমেনট ব্যাভার করা হয়। সুতরাং সেই ক্ষেত্রে নেশা করিয়ে বা ব্ল্যাকমেইলিং করে খ্যাতিমান পর্নস্টার বানানো অনেক কঠিন কাজ।

৮| ০২ রা অক্টোবর, ২০১২ দুপুর ১২:৪২

কনিফউজড_েনিটেজন বলেছেন: creative writer রা emotional হবেই, বিচিত্র নয়।
তারপরও show must go on.
আশা করছি এর পরের লেখাটা আরও পাঠক প্রিয় হবে।

৯| ০২ রা অক্টোবর, ২০১২ দুপুর ১:০৪

জালিমের দুশমন বলেছেন: :||

১০| ০২ রা অক্টোবর, ২০১২ দুপুর ১:১৮

শার্লক বলেছেন: হুম । তবে মিডিয়াতে বা ফিল্মে কাজ করতে গেলে অলিখিত পর্ণস্টার হতেই হয়।

১১| ০২ রা অক্টোবর, ২০১২ দুপুর ১:৩৮

আমি তুমি আমরা বলেছেন: গল্প বলার ভঙ্গীটা ভাল, তবে কাহিনী প্রেডিক্টেবল।

+++

১২| ০২ রা অক্টোবর, ২০১২ সন্ধ্যা ৭:৩০

আমি ফয়সাল বলছি বলেছেন: শুরুটা বড় ভালো হয়েছিলো তাই আশা করেছিলাম পুরো গল্পটা আরো ভালো লাগবে কিন্তু ২ এবং ৩ নম্বর কিস্তি পরে মনে হয়েছে দায়সারা গোছের লেখা!
যাই হোক লেখার ধরন ভালো চালিয়ে যান!
বরাবরের মতই শুভকামনা রইলো :) :) :) :) :)

১৩| ০২ রা অক্টোবর, ২০১২ রাত ৯:৪২

লিন্‌কিন পার্ক বলেছেন: অনুবাদ মনে হল :#)

১৪| ০২ রা অক্টোবর, ২০১২ রাত ৯:৫৫

অদ্ভুত স্বপ্ন বলেছেন: হুমম।

আপনি তো ভাল লেখেন। এরকম আরও লেখা চাই আপনার কাছ থেকে।

ওহঃ আরেকটা কথা!, নাসা কেমন আছে? নাসা'কে নিয়ে একদিন একটা লেখা দিন। ;)

১৫| ০১ লা নভেম্বর, ২০১২ ভোর ৬:২৩

রাইয়ান মনসুর বলেছেন: ৩টা পর্ব একসাথে পড়লাম... ১মটাই খালি ভাল লাগছে... শেষের ২টা ভাল লাগে নাই...

১৬| ৩০ শে নভেম্বর, ২০১২ ভোর ৫:০০

shaontex বলেছেন: B:-) B:-) B:-) B:-)

১৭| ২৪ শে জুন, ২০১৩ রাত ১২:৪৯

ইরফান আহমেদ বর্ষণ বলেছেন: 1st টাই ভাল লাগছে। +++++++

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.