![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দিগন্ত ৯/৫, সিলেট শহর। ভার্সিটি পড়ুয়া পাঁচ কিসিমের পাঁচ চিড়িয়া সেখানে থাকতাম। আমরা সবরকম বান্দরামির পাশাপাশি পার্ট টাইম পড়ালেখাও করতাম মাঝে মাঝে। বিশেষ করে পরীক্ষার আগের রাতে। কিন্তু সেই পরীক্ষার আগের রাতেও আবার ডিস্টার্ব করার জন্য হাজির হয়ে যেত হুমায়ূন আহমেদ, শাওন কিংবা এরকম সেলিব্রেটিরা বা সমসাময়িক কোনো ইস্যু।
সেরকমই একবার কোনো এক জটিল পরীক্ষার আগের রাত। সবাই খুব সিরিয়াস। হঠাত করে কোনো একজনের পড়া থেকে মন চলে গেল হুমায়ূন আহমেদ আর শাওন এর বিয়ের দিকে। প্রসঙ্গ খালি উঠতে দেরী। সঙ্গে সঙ্গে তিনজনের সরস অংশ গ্রহণ। বাকি যেই জন (আমাদের বাসার পড়া লেখার একমাত্র ব্র্যান্ড এম্বাসেডার মারুফ) পরীক্ষার আগে সাত বার রিভিশন দেয়ার পর কি করবে ভেবে পাচ্ছিলনা সেও হাজির। পড়ার ফাঁকে ফাঁকে শেহাব চশমার ফাঁকে দিয়ে বৈজ্ঞানিক সামাজিক ব্যখ্যা দিত তার মত করেই। শেহাব তখনও এমন ছিল। সিজার তার প্রেমিক মন দিয়ে বুঝার এবং আমাদের বুঝানোর চেষ্টা করত। অনিন্দ্য হাত মুষ্টি করে উত্তেজিত ভঙ্গিতে পারলে তখনই সব ন্যায় অন্যায় এর দফা রফা করে ফেলে। আর আমি ছিলাম নিপাট ভাল ছেলে। আমার পরীক্ষা এমনিতেই গেছে, বাকিদেরটাও ততক্ষণে নিশ্চিত করে ফেলেছি।
আমাদের আলোচনার মূল বিষয় বস্তু ছিল হুমায়ূন আহমেদ আর শাওন বিয়ে করে ঠিক করেছে কিনা, গুলতেকিন আর তার ছেলেমেয়েদের কি হবে, এর সামাজিক প্রভাব কি, যুব সমাজের উপর এটা কি প্রভাব ফেলবে, বিশ্বসাহিত্যে এর স্থান কোথায়, দেশের আর্তসামাজিক প্রেক্ষাপটে এটার প্রয়োজনীয়তা কিংবা হুমায়ূন আহমেদ এর জনপ্রিয়তার জন্য এটা কতটুকু ক্ষতিকর। আমাদের পাঁচ জনের পাঁচ মত। কেউ এই বিয়ের পক্ষে, কেউ বিপক্ষে। ভাবটা এমন আমরা পাত্র পাত্রীর বাবা মা মুরুব্বি। আমাদের মতামত ছাড়া বিয়ে আটকে আছে।
যাই হোক সব আলোচনা সমালোচনা আর সংশ্লিষ্টদের চৌদ্দগুষ্টি উদ্ধার শেষে ক্লান্ত হয়ে চা খাওয়ার জন্য সবাই আম্বরখানা টং এর দিকে রওনা দেই। এখানেই কিন্তু শেষ নয়। চা খেয়ে বাসায় এসে এই বিয়ের পক্ষ বিপক্ষ সবাই মিলে বহুব্রীহির একটা পর্ব দেখা শেষে খেয়াল হলো আমাদের কালকে খুব জটিল একটা পরীক্ষা, সেটা আবার হুমায়ূন আহমেদের ভাইয়ের। তখন আবার ভোর রাত চারটা। না ঘুমালে আবার পরীক্ষার সময় মাথা ঠান্ডা থাকবেনা। সকালে ঘুম থেকে উঠে দৌড় ভার্সিটির দিকে। ফলাফল যা হওয়ার তাই হলো। একমাত্র শেহাব পরীক্ষার খাতায় নতুন কিছু সার্কিট ডিজাইন করার জন্য শূন্য এড়াতে পেয়েছিল। বাকিরা নতুন সার্কিট ডিজাইন করার মত জিনিয়াস হয়ত ছিলামনা। এর পরে আমাদের এই ফলাফল বিপর্যয়ের কারনে হুমায়ূন আহমেদ আর শাওনকে ক্ষমা করতে অনেক সময় লেগেছিল। এই ধরনের সেলিব্রেটিরা বিয়ে শাদির আগে পোলাপাইনের পরীক্ষার কথাটা মাথায় রাখলে একটু ভাল হয় আর কি।
[[ যেখানেই আছো ভাল থেকো হুমায়ূন আহমেদ তোমার মত করেই। দেশি ব্র্যান্ড এর মূল্য না বুঝা এই জাতির কাছে তুমিই মনে হয় একমাত্র দেশী ব্র্যান্ড যে কিছুটা স্থান আদায় করে নিতে পেরেছ। সব ব্যাক্তিগত দোষ ত্রুটি, আলোচনা সমালোচনা একপাশে সরিয়ে রেখে তোমায় ভালবাসি তোমার সৃষ্টির জন্য। তোমায় সম্মান করি আমাদের কিছু সুন্দর সময় দেয়ার জন্য। ]]
২| ২০ শে জুলাই, ২০১৪ বিকাল ৪:৪৪
আদম_ বলেছেন: বহুদিন পর একটা অতি চমতকার লেখা পড়লাম। অনেক হাসলাম। খুবই মজা পেয়েছি। সময় করে আপনার সব লেখাই পড়বো। ভালো থাকবেন।
৩| ২০ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ৮:০১
সাইফুল২০৫৮ বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১|
২০ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ১২:১০
সাইফুল২০৫৮ বলেছেন: এই লেখা আমার ফেসবুক স্ট্যাটাসেও দিয়েছি। Click This Link