![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
স্বপ্ন দেখি সত্য ও সুন্দরের।আহত হই সত্যের পরাজয়ে।মনের মাঝে কতশত এলোমেলো ভাবনা এসে জড়ো হয়।ভাবনা গুলো চাই সকলের সাথে শেয়ার করতে,কিন্তু সীমাহীন অযোগ্যতায় আর লিখা হয়না।ভাবনা গুলো গুমড়ে মরে সমাধিত হয় নীরবে।
সুর্য্য জাগার আগে ঘুম থেকে জেগে উঠা আমার আর হয়ে উঠেনি। সেই আট টা ন'টায় বিছানা ছাড়া নিত্যদিনের অভ্যাসে পরিনত হয়েছে।যার কারনে ভোরের শরীর জোড়ানো মন ভুলানো নির্মল হাওয়া আমার আর খাওয়া হয়না। খাওয়া হয়না আমার মায়ের হাতের করা চালের রুটি, আলু ভাজি কিংবা ডিম বাজি। কিন্তু প্রতিদিন বাবা মায়ের বকাঝকা খেতে হয়। বকাঝকা খেতে খেতে আমার কান দুটু ভারি হয়ে গেছে। তাই এখন আর বকাঝকা আমার কানের মধ্য দিয়ে যায় না। বরঞ্চ সকালের বকাঝকা না হলে আমার যেন ভালমত ঘুমই হয় না, অনেকটা রবীন্দ্র সংগীতের মত।
আমার বাবা মসজিদে মোয়াজ্জিনের ফজরের আজান দেয়ার আগে ঘুম থেকে জেগে উঠেন। টিভওয়েলে চাপাচাপি করে ওজু করেন। মসজিদের পানে যাত্রার আগে মাকে জাগিয়ে দেন । আমাকেও দু'এক ডাক দেন এবং মাকে বলে যান, আমাকে যেন মা জাগিয়ে দেন। আমি যেন উঠে নামাজ কালাম পড়ি। এই বলার মধ্যেই শেষ। মা আমাকে ডাকলে আমি উঠে গিয়ে প্রশ্রাব করে আবার শুয়ে পড়ি। মা ভাবেন,হয়তো আমি নামাজ পড়ে শুয়েছি।কিছুক্ষণ পর বাবা মসজিদ থেকে ফিরে এলে দু'জনে সুর দিয়ে কুরআন তেলাওয়াত করেন। এক সময় তাদের নিজেদের জীবনের গুনাহের মাফি চেয়ে আল্লাহর দরবারে কান্নাকাটি করে দোয়া করেন। দোয়া করেন আমাদের জন্যও। কিছু বকাঝকা আর আর নামাজি বান্দাহ হওয়ার জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করে তাদের দায়িত্ব শেষ করেন। কোনদিন কাছে ডেকে নিয়ে, মাথায় হাত দিয়ে,কপালে চুমু দিয়ে আদর করে বুঝিয়ে বলেন নি কেন আমাকে সুর্য্য উঠার আগে জাগতে হবে। কেন নামাজ পড়তে হবে। নামাজ পড়া না পড়ার ভালো মন্দ দিক আমাকে বুঝিয়ে দেন নি।
প্রাইমারী স্কুলে যখন পড়ি তখন চমৎকার একটা কবিতা পড়েছি। "আমি হব সকাল বেলার পাখি" কবিতাটা এখনো ভালো লাগে। মাস্টার মশাই খুব ভালোমত মুখস্ত করিয়েছেন কবিতাটা। পরীক্ষায় খাতায় লিখতে পারলেই যে দশ মার্ক। ভালোমত মুখস্ত করেছিলাম বলে আজো পুরো কবিতা মনে আছে। মুখস্ত করেছি,পরীক্ষায় খাতায় লিখেছি, এই যা। মাস্টার মশাই বুঝিয়ে বলেন নি,এই কবিতার মধ্যে কি বলা হয়েছে। তাইতো আমার বেলায় হয়েছে উল্টো ;কবিতায় সুর্য্য উঠার আগে ছেলে উঠে যাওয়ায় মা রাগ করছেন, আর আমি মা উঠার কারনে রাগ করছি। তবুও ভালো, এধরনের কিছু কবিতা আগেকার দিনে পাঠ্য বইয়ে ছিলো,যা এখন নেই।
যখন কালমা কুরআন শিখার জন্য মক্তবে যেতাম তখন হুজুর সুর দিয়ে কুরআন পড়াতেন। হুজুর কালমা শিখিয়েছেন,সুরা কেরাত মুখস্ত করিয়েছেন,কুরআন তেলাওয়াত করতে শিখিয়েছেন,নামাজ শিখিয়েছেন। কিন্তু হুজুর কোনদিন বলেন নি, "লা ইলাহা ইল্লাহ মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ" তার মধ্যে কি আছে। এটা মনে প্রাণে বিশ্বাস করলে পরে আমাকে কোন ধরনের মানুষ হতে হবে। এটাকে বিশ্বাস করে বুকে ধারণ করলে দুনিয়ার সবকিছু থেকে অমুখাপেক্ষী হতে হয় এই শিক্ষা হুজুর আমাকে দেন নি। নামাজ পড়া শিখিয়েছেন,কিন্তু কেন নামাজ পড়তে হবে তা হুজুর আমাকে বলেন নি। সুর দিয়ে কুরআন তেলাওয়াত করতে শিখিয়েছেন,কিন্তু এই কুরআনে কি আছে হুজুর আমাকে বলেন নি। আল্লাহ তায়ালা এই কুরআন কেন নাজিল করেছেন,কিংবা অন্তত সুরা ফাতেহায় কি বলা হয়েছে, হুজুর একটি দিনও আমাকে বলেন নি। একটি আয়াত ব্যাখ্যা বিশ্লেষন করতে হুজুরকেও দেখিনি।শুধু সুর দিয়ে তেলাওয়াত করতে দেখেছি। কুরআন যে আমার জীবনের গাইড লাইন,পথ চলার পাথেয় তা কোনদিন হুজুর বলেন নি। নামাজ যে আমার মুসলমান হওয়ার প্রথম পরিচয় তাও হুজুর বলেন নি। হুজুর কালমা- কুরআন , নামাজ, সবই শিখিয়েছেন, কিন্তু আমাকে মুসলমান বানানোর চেষ্টা করেন নি।
যখন কলেজে পড়ি বলা হলো, বাংলা সাহিত্য একটা রসালো জিনিষ। বাংলা সাহিত্যের শিক্ষকরাও অনেক রসিক। বাস্তবেও তাই দেখলাম। হৈমন্তি গল্প পড়ানোর সময় দেখলাম, শিক্ষকের মন রসে টইটুম্বুর। গল্পটা পড়াতে গিয়ে তিনি সব রস ঢেলে দিলেন।পারলে বাইরে থেকে আরো রস আমদানী করে ক্লাসে ঢেলে দেবেন স্যার। আর আমরাও স্যারের ঢেলে দেয়া রসের বন্যায় একেবারে ভেসে গেলাম। এক একজন গল্পের নায়ক নায়িকার চরিত্র ধারণ করলাম। স্যার তার সমস্ত রস ঢেলে দিয়ে মানব মানবীর প্রেম শিখালেন, অন্তরে ভালবাসার শিহরণ জাগিয়ে দিলেন,কিন্তু মানুষের জন্য যে প্রেম-ভালবাসা তা স্যার শিখালেন না। তাইতো ক্লাস থেকে বের হওয়ার পরই এক ছাত্রের হাতে অন্য ছাত্রকে প্রাণ দিতে দেখি।
রাজনীতি নাকি দেশের জন্য,দেশের মানুষের জন্য। রাজনীতির মাধ্যমেই নাকি দেশের সেবা করা যায়, মানুষের কল্যান করা যায়। ভর্তি হয়ে গেলাম রাজনীতিতে। হা,সত্যি কল্যান হয়। তবে সকলের না,কিছু মানুষের। কিছু মানুষ টাকা পয়সা,গাড়ি-বাড়ির মালিক, চেয়ারম্যান, এম পি মন্ত্রী বনে যায়। আর সাধারণ জনগণ থাকেন সেই তিমিরে। যে নেতার জন্য মিছিল দেই "অমুকের চরিত্র ফুলের মত পবিত্র " বাস্তবে দেখি তার উল্টো। এক একজন নেতার চরিত্র পুতিদুর্গন্ধময়। আমাদের নেতাদের শরীর থেকে প্রস্ফুটিত গোলাপের সৌরভ ছড়ায় না, ছড়ায় সিগারেট,গাজা, হেরোইন আর মদের বুদবুদে গন্ধ। সবচেয়ে বড় দুর্নীতিবাজ মানুষটি মাইকের সামনে দাড়িয়ে ঘুষ দুর্নীতির বিরুদ্ধে বয়ান রাখে। অনেক সময় মাইকের ভাড়াটা পর্যন্ত আদায় করেনা। শহীদ মিনার পবিত্র স্হান বলে জুতা নিয়ে উঠা নিষিদ্ধ করে, কিন্তু রাতের আঁধারে শহীদ মিনারের বেদিতে গরু ছাগলের মত প্রশ্রাব করতে ওদের বিবেক প্রতিবাদি হয় না।
দেশের মানুষের কথা বলে, দেশের কথা বলে কিছু মানুষ ঠিকই মন্ত্রী-এম পি বনে যায় কিন্তু এদেশের ভূখা নাংগা মানুষের ভাগ্যের কোন পরিবর্তন হয় না।
১৩ ই অক্টোবর, ২০১৫ ভোর ৪:৩৩
প্যারিস থেকে আমি বলেছেন: ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
২| ১২ ই অক্টোবর, ২০১৫ দুপুর ২:৪৯
ক্যান্সারযোদ্ধা বলেছেন: মনের কথা বলেছেন..
১৩ ই অক্টোবর, ২০১৫ ভোর ৪:৩৩
প্যারিস থেকে আমি বলেছেন: এটাই আমাদের বাস্তবতা।
৩| ১২ ই অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৩:৩১
নতুন বলেছেন: সব কিছুতেই চলে ভন্ডামী... লোক দেখানো তাই আসল কাজ আর হয়না।
১৩ ই অক্টোবর, ২০১৫ ভোর ৪:৩৫
প্যারিস থেকে আমি বলেছেন: চরম ভন্ডামীর কারনে আমরা মানসিক ভাবে হীনমন্য থাকি।
©somewhere in net ltd.
১|
১২ ই অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ১১:২৮
কাল্পনিক_ভালোবাসা বলেছেন: সহজ ও সাবলীল লেখা যা ভেতরে প্রবেশ করে।