আধুনিকতা মানে কি ব্লাউশ এর নিচে শাড়ির আঁচল পড়া

২৪ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১:৫২

সেদিন ট্রেন এর টিকেট কাটতে গিয়েছিলাম ত সেখানে বেশ কিছুক্ষণ বসেছিলাম, তখন এক পরিবারকে দেখছিলাম ফুটপাথ এর পাশে অবস্থান করে। স্বামীকে দেখে মনে হচ্ছিল যে মাদকাসক্ত। দুইটা মেয়ে আছে,আনুমানিক তাদের বয়স ৭-৮এর মত হবে। দেখে মনে হচ্ছে প্রচন্ড বদরাগী মহিলা তিনি। বাড়িটা পলেথিন দিয়ে বানানু। এই নিয়ে তার সংসার।স্বামীর সাথে ঝগড়া চলতেই থাকে। স্বামি বেদম মারেন তাকে। সেই মহিলা তারপর মারে তার মেয়েকে।
এই দেখে ভাবছিলাম যে, তাদের দুপুরে খেলে তাদের রাতে খাবারের চিন্তা করতে হয় । রেলগেটের কিছু হোটেল থেকে উচ্ছিষ্ট পান, তাই দিয়ে চলে যায়। গোসল করা হয় দু একদিনে একবার। তিনি শুধু একাই নন, ফুটপাথে আরও কয়েকটি সংসার এমন আছে। অনেকে অপরাধ জগতের সাথে জড়িয়ে আছে। তারা একসাথেই থাকে, মহিলাটির পড়নের শাড়ীর অবস্থা বেহাল। ময়লা হয়ে কালো হয়ে গেছে, ছিঁড়ে ফেঁটে গেছে অনেক জায়গায় তার ভাগ্যের মতন। কয়েক প্যাচ দিয়ে শাড়ি পড়েন, শরীর ঢাকেন। ফুটপাথ খুব খারাপ জায়গা। রাতে খারাপ মানুষ আসে। মেয়েকে নিয়ে ভয়ে থাকে ঘোরে থাকা স্বামীর পাশে। মহিলাটি ব্লাউজ পড়েন না। অভাবে খাবার জোটে না, ভাঙা বেড়ার ঘরে এগুলো বিলাসিতা। এটা না পড়ার আরেকটা সুবিধা, গরম কম লাগে দিনে। তবে রাস্তা ঘাটের মানুষ আড়চোখে তাকায়। কাপড় ঠিক করতে করতে খিস্তি ছোটান তিনি। চোখ গেলে দিতে মন চায় তখন তাদের। বদরাগ টা এজন্যই তৈরী করেছেন, কাছে ঘেষতে সবাই দুইবার ভাবে।
এই রকম মহিলার অস্তিত্ব থাকতেও পারে, আবার নাও থাকতে পারে। থাকলেও তাদের দিকে আপাতত তাকানোর কেউ নেই। আপাতত শাড়ির উপর না নীচে ব্লাউজ পড়তে হবে তা ঠিক হোক। কোনটা শালীন তা ঠিক হোক। শালীনতা ওই সমূহ মহিলার জন্য নয় বোধহয়। কখনও ছিলোও না। তাদের টিভি চ্যানেলও নেই, গোসলের জন্য সুগন্ধী সাবানও নেই। যেদিন হবে, সেদিন বোধহয় তাদের জন্য শরীর ঢাকার বস্ত্রের যোগান হবে।
আচ্ছা, আধুনিকতা মানে কি ব্লাউশ এর নিচে শাড়ির আঁচল পড়া।
আধুনিকতা মানে কি মেয়েদের বুকের
ওড়না গলায়
ঝুলানো?
আধুনিকতা মানে কি এমন ড্রেস
পরা যেটা দিয়ে আপনার
শরীরের গোপন অঙ্গ গুলো দেখা জায় এমন?
গ্লাস অর্ধেক খালি না অর্ধেক ভর্তি তা নিয়ে তর্ক করতে করতে আমরা ভুলেই গেছি অনেকের কাছে সেই গ্লাসের পানিটুকু নেই। কখনো ছিলো না।

০ টি +০/-০