দুচোখ শান্তির নীড় খুঁজে পায় না

২৪ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ২:৪৪

বেশকিছুদিন ধরে ভালো ঘুম হচ্ছে না। মাঝরাতে ঘুম ভেঙ্গে যায়। এদিক সেদিক কাওকে খুঁজি। কি খুঁজি,কাকে খুঁজি নিজেই ভালমত ঠাহর করতে পারিনা!
কিছুদিন আগে রাতে স্বপ্ন দেখলাম- একটা মেয়ে তার হবু বরের সাথে লাল বেনারশী শাড়ি কিনছে। পরের দিন ভোরে খবর পেলাম মেয়েটা অই শাড়ি দিয়েই ফ্যানের সিলিং এর সাথে ঝুলেছে!
একটা চিরকুট লিখে রেখেছে সে। সম্ভবত এটিকে আমরা সুইসাইড নোট বলি। সে লিখেছে--"তোমার আমার দেখা অই পাড়ে"
অন্য পাড়ের বাসিন্দা হয়ে অপেক্ষা করছে হয়তো তার ভালোবাসার মানুষটির জন্য। বরের বারাবারি সহ্য করার ক্ষমতা তার বুঝি ছিল না!
স্বপ্নেরা অদ্ভুত হয়। স্বপ্নের মানুষেরা আরেকধাপ অদ্ভুত। তাদের না যায় ছোঁয়া,না যায় ধরা। রাত শেষে রেখে যায় একটা দীর্ঘশ্বাস নয়ত বুকফাটা আর্তনাদ।
৩-৪ দিন আগে রাতে অস্পষ্ট ভাবে স্বপ্নে এমন কেও একজনকে বোধয় দেখছি।
..আমি কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে দাড়িয়ে সমুদ্রের ঢেউ গুনছি। কানে হেডফোন লাগিয়ে গান শুনছি-'তুমি বরুনা হলে হবো আমি সুনীল,তুমি আকাশ হলে হবো শঙ্খচীল'
পরিচিত একটা গন্ধ অনুভব করলাম আশেপাশে। পেছন ফিরে তাকিয়ে দেখলাম সেই মহামতি প্রেয়সী! যে আমার ভালোবাসাকে তুচ্ছ ময়লা কাগজের মত ফেলে দিয়েছিল,যে মেয়েটি বহুবছর পর আমাকে বলেছিল--"কি আছে তোমার? পারবে আমাকে অট্টালিকার সুখ দিতে? বেকার যুবকের সাথে প্রেম চলে,বিয়ে না"
আমি চুপ করে দাড়িয়ে ছিলাম সেদিন স্ট্যাচু অফ লিবার্টির মত। নিজেকে আজন্ম অপরাধীর মত কয়েদি মনে হচ্ছিল।
অতীতের কথা ভাবতে ভাবতেই তার কণ্ঠ ভেসে আসলো--"আরে কেমন আছো তুমি? বহুবছর পর দেখা হলো। কি করছ এখন? বিয়েশাদি করেছ কি?"
আমি শুধু তাকে বললাম--"তেল,নুন আর আটার হিসেবে সেদিন হেরে গিয়েছিলাম আমি। আজও সেই তেল,নুন আর আটার হিসেব মিলাচ্ছি। এটাই আমার কাজ,এটাই আমার ভালো থাকা,এটাই আমার সঙ্গী"
সে চলে গেলো। আমি তাকে পেছন ফিরে আর ডাকি নি। শুধু জানতে ইচ্ছে হচ্ছিল--"ভালো আছে তো?"
পকেটের খুচরো-রা টুংটাং বেজে উঠলো। শ্রুতিমধুর গানও হঠাৎ বিষাক্ত হয়ে গেল।
প্রিয় স্বপ্নেরা,
বিধ্বংসী রুপে দেখতে চাই না তোমায়,সুখ হয়ে ধরা দাও। বহুকাল হলো দুচোখ শান্তির নীড় খুঁজে পায় না।

০ টি +০/-০