নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ক্যানভাস এর ছেড়া পাতা. . .

হৃদয়ের ক্যানভাস

জীবনের প্রতিটা মূহুর্তকে উপভোগ করার চেষ্টা করছি . . .

হৃদয়ের ক্যানভাস › বিস্তারিত পোস্টঃ

"জানা যায়নি. . ."

২৭ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ৯:৪৮

দুইদিন যাবত না খেয়ে আছে রনি। দুমুঠো খাবারের জন্য রাস্তায় রাস্তায় ঘুরছে। লোকের কাছে চাওয়া ছাড়া আর কিইবা করতে পারত ১০ বছরের রনি?? কিন্তু এই নিষ্ঠুর দুনিয়ায় খাবার পাওয়া যে সহজ নয়। চাইলেই খাবার পাওয়া যায়না এখানে।



ঘরে অসুস্থ মা। খাবার নেই, ঔষধ নেই। মা সুস্থ থাকলে তাকে খাবারের জন্য হাত পাততে হতনা। রনির মা কাজ করে যা পেত তাতে মা ছেলে দুবেলা অন্তত খেতে পারত। কাজ না করলে দুটাকা দেয়ার মত ওদের কেও নেই ঢাকার শহরে। তাই দুদিন যাবত অনাহারে দিন কাটছে। মাথায় পানি, জলপট্টি কোন কিছুতেই জ্বর কমছেনা।



মা অসুস্থ, পেটে ক্ষিদে কি করবে কিছুই বুঝে উঠতে পারে না রনি। একবার ভাবে বড় রাস্তার মোড়ের হোটেল থেকে সিঙ্গারা চুরি করবে। সিঙ্গারার ট্রে টা একেবারে সামনেই থাকে সবসময়। কিন্তু পরক্ষেনেই আর সাহস হয়না ছোট্ট রনির।







রনিরা যে বস্তিতে থাকে সেখানে একজনের নাম বাবু। সবাই তাকে বাবু ভাই বলে ডাকে। তারচেয়ে অনেক বড়রাও তাকে বাবু ভাই ডাকে, টাকা দেয়। সে নাকি রাজনীতি করে। হরতালের সময় নাকি বাবু ভাইয়ের অনেক কদর।



রনি বাবু ভাইকে চেনে। রনির ইচ্ছা, বড় হয়ে বাবু ভাইয়ের মত হবে। সবাই সালাম দেবে। তারচেয়ে বড় কথা বস্তির সবাই তাকে টাকা দেবে। তাহলেই আর খাবারের কষ্ট হবেনা।







রনি এখন যেখানে বসে আছে, এটা বস্তির শেষ প্রান্ত। এখানে বাবু ভাই সাথে আরো কয়েকজন মিলে সিগারেটে কি যেন ভরে খায়। রনি জানে ভাত চিবিয়ে খেতে হয়, কিন্তু তারা আগুনে পুড়ে কিভাবে কি খায় তার মাথায় ধরে না। বাবু ভাইদের আসতে দেখে রনি চলে যাচ্ছিল। বাবু তাকে ডাক দেয়-



-ঐ ছ্যারা এদিক আয়



_ভয়ে ভয়ে রনি সামনে যায়



-দেইখা তো মনে অয় খাস্নাই কিছু। ট্যাঁকা দিমু, কাম করবি একটা ??



-কি কাম ??



-করবি নি তাই ক। কামডা করতে পারলে ৫০০ ট্যাঁকা দিমু



-হ। এবার রনি বিনাবাক্যে রাজি হয়ে যায়



-এই বলডা ধর। কেও যেন না দেখে। সুজা বড় রাস্তায় যাবি। পুলিশ তরে কিচ্ছু কইবনা। যদি বড় গাড়ি আইতে দেহস, জোরে গাড়িত ফেইকা মারবি। কিরে পারবি না ??



-হ পারমু







রনি জানে আজকে হরতাল। আসলেই হরতাল কি তা সে জানেনা। হরতাল বলতে সে বোঝে- দোকান, গাড়ি সব বন্ধ। এটাই হরতালের নিয়ম। তাই হরতালে গাড়ি পেলে বাবু ভাইরা গাড়ি ভাঙ্গে, আগুন দেয়। সে তো বল ছুড়বে এ আর এমন কি!!



রনি বলটা নিয়ে বড় রাস্তার মোড়ে সেই হোটেলটার সামনে যায়। হোটেলটা আজ বন্ধ। তার একটু সামনেই রাস্তার পাশে কিছু মানুষ দাঁড়িয়ে আছে বাসের অপেক্ষায়।



দূরে একটা বাস দেখা যাচ্ছে। রনির মনটা খুশি হয়ে ওঠে। বাস যত কাছে আসছে তার ভেতরের উত্তেজনা ততই বাড়ছে। যাত্রী তোলার জন্য একটু স্লো করতেই রনি দৌড়ে গিয়ে সজোরে বলটা ছুড়ে মারে বাসকে লক্ষ্য করে। তারপর শুধুই অন্ধকার।







কিছুক্ষণ পর টিভি চ্যানেলগুলোতে ব্রেকিং নিউজ দেখা যায়- “হরতালে রাজধানীতে হাতবোমা বিস্ফোরণে ৩ জন নিহত, গুরুতর আহত ৭ জন”



রনি বেঁচে আছে নাকি মারা গেছে জানা যায়নি. . .

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৮ শে অক্টোবর, ২০১৩ বিকাল ৩:১৮

স্বপনচারিণী বলেছেন: ভাল লাগেনা এসব কাহিনী। মনটা খারাপ হোয়ে যায়।

২৯ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ৮:৩৫

হৃদয়ের ক্যানভাস বলেছেন: ভাল না লাগারই কথা

২| ২৮ শে অক্টোবর, ২০১৩ বিকাল ৩:২৫

বটবৃক্ষ~ বলেছেন: :( :( :(

২৯ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ৮:৩৬

হৃদয়ের ক্যানভাস বলেছেন: :(

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.