নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সত্য ই সুন্দর এবং সুন্দর ই সত্য।

.............নিজেকে আবিষ্কার করা সবচেয়ে কঠিনতম কাজ। জীবনে আর কী করতে পেরেছি, জানিনা। মহান সৃষ্টিকর্তার কাছে শুকরীয়া, তিনি আমাকে নিজেকে আবিষ্কার করার ক্ষমতা দিয়েছেন। আমি জানি আমি কী, আমার দূর্বলতা কী, আমার শক্তি কী, আমার উদ্দেশ্য কী এবং আমার গন্তব্য কোথায়।

salopa

এক বাঙালি কন্যা

salopa › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভালবাসার এপিট – ওপিট: বাস্তবতা (১ম ভাগ)

২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১২:০০

ভালবাসার এপিট – ওপিট: বাস্তবতা (১ম ভাগ)
(তথ্যসূত্র: বরিশাল দায়রা জজ আদালতের সেশন ৪৭৭/১৪ নং মামলার আসামী রাসেল মিয়ার ফৌজদারী কারযবিধির ১৬৪ ধারার অধীন জবানবন্দি।)

আমি এইরূপ জবানবন্দী করছি যে, আমি বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বি.বি.এ(অনার্স) ২য় বর্ষে পড়ি ।জর্ডান রোডের শেখেরহাট ভিলা নামক চারতলা বিল্ডিং এর তৃতীয় তলায় আমি থাকতাম । আমি পাথরঘাটা ডিগ্রি কলেজে ইন্টারমেডিয়েট পড়াশুনা করেছি । সা্ওদা (মৃত ভিকটিম ) একই কলেজে ইন্টারমেডিয়েট ১ম বর্ষে পড়তো । ও আমার এক ব্যাচ জুনিয়র ছিল ।একই কলেজে পড়াশুনার সুবাদে আমাদের মধ্যে পরিচয় ছিল । আমি ২০১০ইং সালে H.S.C পাশের পর ঢাকায় কোচিং করতে যাই । ঐ সালে কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির চান্স পাই নাই । ২০১১ইং সালে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ১ম ব্যাচে চান্স পেয়ে ভর্তি হই । ২৯ মে ২০১২ইং তারিখে আমি বরিশাল বি.এম. কলেজে ঘুরতে গেলে সেখানে সা্ওধার সাথে আমার দেখা হয় । অমি জানতে পারি যে, সে বি.এম. কলেজে ভর্তি হয়েছে । ও আমার মোবাইল ফোন নম্বর নেয় । আমাদের মধ্যে নিয়মিত মোবাইলে যোগাযোগ হতো এবং আমরা বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে যেতাম । এভাবে আমাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে । আমি সাওদাকে বলি বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য । সে বললো যে, তার আর্থিক অসুবিধার**কারনে কোচিং করা সম্ভব নয় । আমি তখন ওরে পার্কে, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে, আমার ম্যাচে *
*১[একটি ছেলের সাথে অবাধে চলাফেরা- অথচ তার বাবা নাকি একজন ইমাম। আমি যখন রাসেলের সাথে ব্যক্তিগতভাবে কথা বলি তখন সে জানায়- সাওদার সাথে তার শারীরিক সম্পর্কও হয়েছিল বহুবার। যদিও তার এই বক্তব্যের সত্যতা সম্পর্কে আমি সন্দিহান। একটা মেয়ে কিভাবে এত সহজে তার লজ্জা বিসর্জন দেয়- আমি বুঝিনা। যদিও কোর্টে witness hearing এর সময়ে আমি তাদের অন্তরঙ্গ ছবি দেখেছিলাম- মাথায় ওড়না দেয়া, ভদ্র মনে হচ্ছিল । আমি রাসেলকে প্রশ্ন করেছিলাম – তুমি একটা মেধাবী ছেলে, এমন একটা মেয়ে জীবন থেকে চলে গেলে কি এমন ক্ষতি হতো। তোমার জীবনটাও তো ধ্বংস হয়ে গেল। সে বলল- মানুষের destiny তার জন্মের সময়েই নির্ধারিত হয়ে থাকে। আমার পিছনে আড়াই বছর ঘুরে আমাকে রাজি করাইছে । তাছাড়া সে নাকি শারীরিক ও মানসিক ভাবে সা্ওদার প্রতি অভ্যস্ত হয়ে পড়েছিল।]
সহ বিভিন্ন জায়গায় ভর্তির বিষয়ে আলোচনা করতাম । কোচিং দিতাম । সাওদা তখন নথুল্লাবাদ অবকাশ নামক একটি বাসায় থাকতো । আমার বইপত্র দিয়েও সহায়তা করেছি । ওর বিভিন্ন খরচও দিতাম।*
*২[প্রেম এবং অর্থ এতটা releted কেন- আমি বুঝি না। প্রেমিকের কাছ থেকে খরচ কেন নিতে হবে- আমি বুঝি না। এটা প্রেম ছিল নাকি এখানে উদ্দেশ্য ছিল অর্থনৈতিক সহ অন্যান্য স্বার্থ উদ্ধার।]
আমি ৭/৮ টা টিউশনি করতাম ।
২০১২ইং সালের জুন/জুলাই মাসে আমার বড় বোনের ছেলে আসিফ (০৬) অসুস্থ হলে আমার মা ওকে নিয়ে বরিশালে চিকিৎসার জন্য আসে । সাওদার সাথে আমার মায়ের পরিচয় হয় । তার ব্যবহার দেখে আমার মায়ের ওকে পছন্দ হয়।*
*৩[ব্যবহার তো সবারই ভাল হয়, কার ব্যবহার আসলে কতোটুকু ভাল তা তো কেবল স্বার্থ সংঘাতে জড়ালেই বোঝা যায়।]
সে দিন রাতে সে আমাদের সাথে ছিল**।২০১২ইং সালের রোজার ঈূদের পরে মা, বড় বোন হাফসা তাদের বাসার কাজের মহিলার ছেলে সবুজকে বরিশালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেরে বাংলা মেডিকেলে দেখার জন্য আাসে । তখন সাওদার মা শাহিদা বেগম ও বড় বোন হাফসার সাথে আমার পরিচয় হয় । সাওদাদের কাজের মহিলা সবুজের মা বুঝতে পারে যে, আমাদের মধ্যে সম্পর্ক । সবুজের মায়ের কাছে সাওদার মা বোন আমাদের উভয়ের সম্পর্কের বিষয়ে জানে । সাওদার মা, বড় বোন আমাকে সাওদাকে পড়ানোর অনুরোধ করে।*
*৪[একটা ছেলের সাথে মেয়েকে অবাধে মেশার সুযোগ দিচ্ছেন- ছেলে মেয়ে নষ্টের প্রধান কারন হচ্ছে মায়ের প্রশ্রয়।]
সাওদার বোন বি.এম. কলেজে পড়ে। সে তাজুল ভিলায় (নথুল্লাবাদের কাছে) থাকতো । আমি সেখানে গিয়ে সাওদাকে পড়াতাম ।
সাওদা বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১২ইং সালের অক্টোবর/নভেম্বর মাসের ভর্তি পরীক্ষায় ৩১৯নং সিরিয়ালে উত্তীর্ন হয় । সিট ছিল মোট ২১০ টি । আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করে ওকে একাউন্টিং এন্ড ইনফরমেশন সিস্টেম সাবজেক্টে ভর্তি করাই ।ওকে নথুল্লাবাদ মেচ থেকে বরিশাল মহিলা কলেজের সুফিয়া কামাল ছাত্রী নিবাসের সামনে ফেরদৌসী মঞ্জিল নামক মেচে উঠাই । ওর সাথে নাসিমা নামে ওর এক বান্ধবী থাকতো । পরবর্তীতে সে মেচ পরিবর্তন করে জুন/২০১৩ইং এর ১ তারিখে ঈশ্বর বসু রোডের খান ভিলায় উঠে । সাথে ওর বান্ধবী নাসিমা ওর সাথে তৃতীয় তলায় একই রুমে উঠে । সাওদা ও আমার বাড়ি বরগুনা পাথরঘাটা থানায় ।
০৮/০৬/২০১৩ইং আমি আর সাওদা একই সাথে বাড়ি যাই । ঐ দিন ওর সাথে ওদের বাড়িতে গেলে ওর পিতার সাথে আমার পরিচয় হয় । ওর আব্বা আমার বিষয়ে জানতে চায় । আমাদের পরিবারের বিষয়ে বলি । ৪/৫ দিন পর হঠাৎ একদিন সাওদার, তার মা সহ ওদের সব মোবাইল বন্ধ পাই । আমি স্ওদাদের কাজের মহিলার ছেলে সবুজের মোবাইলে ফোন দিলে সবুজ জানায় যে, সাওদাদের বাড়িতে অনুষ্ঠান, সম্ভবত: সাওদা পিসির আজ বিয়ে । এ কথা শুনে আমার মাথায় যেন বাজ পড়ে । আমি তখুনি ওদের বাসায় যাই ।সেখানে সাওদার পিতার সাথে দেখা হলে জিজ্ঞেস করি সাওদা কোথায়? তখন সাওদার পিতা আমাকে বলে যে, সাওদাকে বিয়ে করতে হলে আমাকে ১(এক) কোটি টাকা কাবিন দিতে হবে ।*
*৫[ইসলাম ধর্মে কাবিন/দেনমোহর নির্ধারিত হয় ছেলের এবং মেয়ের আর্থিক এবং সামাজিক অবস্থান অনুযায়ী। যে পিতার মেয়েকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি কোচিং করানোর আর্থিক সামর্থ নেই সেই পিতা মেয়ের কাবিন দাবি করেন ১(এক) কোটি টাকা!!!!! বোকা ছেলেটা বুঝলোনা যে, ওটা ছিল তাকে ফিরিয়ে দেয়ার একটা কৌশল মাত্র।]
আসি এসব শুনে বাসায় চলে আসি । পরবর্তিতে ১৯/০৬/২০১৩ইং আমি আবার সাওদার বাসায় যাই ।আমি সাওদার পিতার পা ধরে ক্ষমা চেয়ে বলি আমার ভুল হলে ক্ষমা করেন । তখন সাওদার পিতা – মাতা সাওদাকে আমার সাথে দেবে মর্মে আশ্বস্থ করে । আমাকে খাবার দাবার দেয় । পরবর্তিতে আমি চলে আসি । পরদিন সকালে ওর পিতা আমাকে ফোন দিয়া আবার ১ কোটি টাকা কাবিন চায় । আমি কমানোর কথা বললে বলে যে, একটা শূন্য কমাইয়া দিলাম । ১০,০০০০০/- টাকা কাবিন হলে সাওদাকে আমার সাথে বিবাহ দিবে । তা না হলে ফোন দিতে নিষেধ করে ।*
*৬[এখানে কি কোন পিতা তার মেয়ের সুখের চিন্তা করছিল? নাকি এক দালাল life time prostitution শর্তে খদ্দরের কাছে prostitute এর দাম হাঁকাচ্ছিল । এতই যখন মেয়ের সুখকে আর্থিকভাবে মূল্যায়নের চেষ্টা তখন মেযের সমস্ত খরচ সে কেন বহন করেনি? অন্য একটা ছেলে যখন তার মেয়ের খরচ বহন করছিল তখন কেন সে চোখ বুঁজে ছিল? আর এসব যখন চলছিল তখন মেয়েটি কোথায় ছিল? সে যদি সত্যিই ভালবাসতো তবে কেন পিতার এই অমূলক সিদ্ধান্তের বিপক্ষে দাড়ালো না? কেন পিতাকে convince করার চেষ্টা করলো না?]
পরবর্তিতে ২১/০৬/২০১৩ইং তারিখ সকালে সাওদা আমাকে ফোন দিয়া ওদের বাসায় আমার বাবা মা কে পাঠাতে বলে । ঐ দিন আছরের পর আমার মা বাবা চেইন, আংটি সহ ওদের বাসায় যায় । আমার মা বাবা সাওদার বিষয়ে জিজ্ঞেস করে । এবং বিবাহের বিষয়ে বলে । তখন সাওদার বাবা-মা ও দুলাভাই আলী আজীম আমার মা-বাবাকে অপমান করে ।সাওদাকে ওর নানা বাড়ি পাঠিয়ে দেয় । এ দিনই সন্ধ্যার পর আমার মা-বাবা সহ আমি সাওদার নানা বাড়ি যাই । সেখানে গিযা সাওদারে পাইনি । আসি সাওদার ছোট মামীর সাখে কথা বলার সময়ে সাওদার ভগ্নিপতি আলী আজীম ৭/৮ টা ছেলে নিযা আমাকে মারধর শুরু করে । আমার পিতাকেও আক্রমন করে । মা কে অপমান করে ।*
*৭[এই অপমান তো তাদের পাওনা ছিল । যে মেয়ে নিজের family convince না করে, নিজের পিতাকে manage না করে নিজের ভালবাসার মানুষটিকে অপমানিত হতে দেয়, সেই মেযের কথায় এত বড় পদক্ষেপ নেয়া- বোকামি বা উগ্রতা ছাড়া আর কি হতে পারে? এই অপমান তাদের পাওনা ছিল । যে সন্তান পিতা মাতার সম্মানকে মূল্যায়ন না করে নিজের চাওয়া পাওয়াকে বেশি মূল্যায়ন করে সেই সন্তানের জীবনে এমন পরিস্থিতি আসাটা স্বাভাবিক ছিল ।সেই ভ্রুণ থেকে এই পিতা মাতা তাদের সাধ্য অনুযায়ী সন্তানের জন্য চেষ্টা করে, হতে পারে তাদের সাধ্য সন্তানের চাহিদা পূরনে ব্যর্থ, হতে পারে আজ সেই পিতা- মাতা বৃদ্ধ এবং dependent তাই বলে তাদের সম্মানের স্থানটি তো আর নিচে নেমে যায় না । পিতা হচ্ছে মাথা যা নিচু হয়ে গেলে আর কিছু বাকি থাকে না, মা হচ্ছে হৃদয় যা হেরে গেলে আর কোন আশা থাকে না । আগে নিজে নিশ্চিত হয়ে তারপর বাবা্-মা কে পাঠানোর চিন্তা করা উচিত ছিল । আর অতিরিক্ত সন্তান প্রীতি সন্তানের জন্য ক্ষতি ছাড়া ভাল কিছু বয়ে আনে না । একবার অপমানিত হয়ে ঐ বাবা-মায়ের উচিত ছিল ছেলেকে বুঝিয়ে ঐ পথ থেকে ফিরিয়ে আনা।]
আমাকে তারা বলে যে, সাওদাকে ডিস্টার্ব করলে আমাকে মেরে ফেলবে । আমি সাওদার সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তার ফোন বন্ধ পাই । আমরা বাড়িতে চলে আসি ।
আমি জুনের ৩০ তারিখে বরিশাল চলে আসি । সাওদা একই গাড়িতে আসলেও সে আমার সাথে কোন কথা বলে না সাওদা আমতলার মোড়ে নামে । সেখানে সবুজ নামের একটা ছেলে আমাকে বলে যে, সে ডিবির এস.আই. সে আমাকে হুমকি দিয়া সাওদাকে ডিস্টার্ব করতে নিশেধ করে । সাওদা সবুজের সাথে একটা রিক্সায় হাসতে হাসতে চলে যায় । ৪/৫ দিন পর বিশ্ববিদ্যালয়ে সাওদার সাথে যোগাযোগের অনেক চেষ্টা করি । কিন্তু সে কোন রেসপন্স করে না *
*৮[সে রেসপন্স কেন করবে? রাসেল যদি ১০০% সত্য বলে থাকে তবে- সে কখনো রেসপন্স করবে না কারন রাসেলের কাছে তার যে স্বার্থ ছিল তা পূরণ হয়ে গেছে । সে একাকী ছিল, তার physical need ছিল, economic insolvency ছিল, social & mental support দরকার ছিল এবং এসব পূরনের জন্য রাসেলের মতো একটা ছেলের দরকার ছিল । এখন সে রাসেলের চেয়ে better কাউকে পেয়ে গেছে, তাহলে সে রেসপন্স কেন করবে? তবে হ্যাঁ, যদি সে মনে করে যে নতুন সম্পর্কে তার চাওয়া পাওয়া পূরন হচ্ছে না তবে সে রেসপন্স করবে, আবার turn করবে, বলবে- আমার উপর প্রেসার ছিল, আমার কোন উপায় ছিল না, আমাকে ক্ষমা কর ।তখন নিজের চাওয়া পাওয়া পূরনে হয় উভয় relationship continue করবে অথবা better এর কাছে back করবে । কারন এই মানুষগুলো চরম selfish, এরা শুধু নিজেকেই ভালবাসে, নিজের চাওয়া পাওয়া পূরনে যখন যাকে যেভাবে প্রয়োজন তার সাথে সেভাবে ভালবাসার ভান করে, emotional blackmail করে, সামনের জনের অনুভূতি এবং দূর্বলতাকে সুনিপুন ভাবে ব্যবহার করে এবং প্রয়োজন ফুরিয়ে গেলে দূরে সরে যায় ।এই মানুষগুলো নিজ স্বার্থে যে কোন সময়ে যে কোন দিকে turn করতে পারে ।এরকম ছেলেদেরও দেখেছি আমি ।এধরনের মানুষগুলো অনেক ধূর্ত বা চালাক । সহসা এদের চেনা যায় না । শুধুমাত্র স্বার্থ সংঘাত সৃষ্টি হলেই এদের আসল চরিত্র প্রকাশ পায় , অন্যথায় না । কেননা, এরা খুব সুন্দরভাবে ভাল মানুষের বা মানব দরদীর অভিনয় করতে পারে ।]
একদিন সকাল ১১টার দিকে ক্লাস শেষে বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গনে ওর সাথে কথা বলার চেষ্টা করি । ওর হাত ধরে পাশে কথা বলার জন্য চেষ্টা করি । তখন ও আমার হাতে কামড় বসিয়ে ডাক চিৎকার দেয় । বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যারেরা ঘটনা শুণে আমার নিকট থেকে মুচরেকা নেয় যে, আমি সাওদার সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করবো না ।
আমি ওকে ভুলতে পারি না। পাগরের মতো রাস্তায় রাস্তায় হাটি। ও যেখানে যায় ওর পেছনে পেছনে যাই ।
সাওদা আমার ফোন নাম্বার block list করে রাখে গত ২০ দিন আগে সাওদার সাতে আমার ঈশ্বর বসু রোডে দেখা হয় । তার সাথে সাথে যাই । সে আমাকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে*
*৯[আজ সে মৃত, তার কথা শোনার সুযোগ নাই ।কিন্তু এতোটা হৃদয়হীন সে কিভাবে হলো? নিশ্চয়ই তার সাথে খুব খারাপ কোন আচরণ করা হয়েছিল যা সে সহ্য করেনি এবং প্রতিশোধটা এভাবে নিতে চেয়েছিল । যেমনটা তার এই হৃদয়হীন আচরনের প্রতিশোধ নেয়া হয়েছে তাকে হত্যা করে ।প্রতিশোধ এবং প্রতিশোধ । ভালবাসায় কী প্রতিশোধ থাকতে পারে? যেখানে প্রতিশোধ আছে সেখানে কী ভালবাসা ছিল কোন কালে? প্রতিশোধ তো ঘৃনার বহি:প্রকাশ । ভালবাসায় প্রতিশোধ শব্দটা কিভাবে আসে? – আমি বুঝি না।]
সে কাকলীর মোড়ে পুলিশ বক্সে দাড়ায় ।সেখানে পুলিশের কাছে অভিযোগ দেয় যে, আমি ওরে ডিস্টার্ব করি ।আমি ভয়ে সেখান থেকে চলে যাই । সন্ধ্যায় আমি ক্যাম্পাসে ঘুরতে যাই । তখন সবুজ সাথে এক লোক নিয়া আমাকে ডাক দেয় । তখন সবুজ আমাকে ২/৩ টা থাপ্পর মারে আমাকে বিভিন্ন মামলায় জঢ়াবে মর্মে হুমকি দেয় ।আমি বাসায় িচলে যাই । আমি প্রচন্ড ভীতির মধ্যে থাকি ।আমাদের বিভিন্ন স্মৃতির কথা মনে পড়ে । আমি ওকে বিভিন্ন massage দেই ও উত্তর দেয় না । ওর নাম্বারে রাতে অন্য নাম্বার থেকে ফোন দিলে দেখি নাম্বার waiting এ । আমার খুব খারাপ লাগে । আমি সিদ্ধান্ত নেই ওকে না পাইলে আমার জীবন বৃথা । এজন্য ওকেও থাকতে দেব না *
*১০[এটাকে কী ভালবাসা বলে? এটা কোন ধরনের ভালবাসা? যাকে ভালবাসে তার অনিষ্ট কীভাবে চিন্তা করে? কাছে থাকুক বা দূরে থাকুক ভাল থাকুক- এটাই তো ভালবাসা, তাই না? এটা ভালবাসা ছিল না , না ছেলেটার ক্ষেত্রে, না মেয়েটার ক্ষেত্রে । ছেলেটার ক্ষেত্রে ভালবাসা হলে সে মেয়েটাকে হত্যা করার চিন্ত করতে পারতো না । আর মেয়েটার ক্ষেত্রে ভালবাসা হলে যাই ঘটুক না কেন সে এতো দ্রুত অন্যত্র turn করতে পারতো না । হৃদয়ঘটিত সম্পর্ক থেকে এত দ্রুত অন্যত্র সরে যাওয়া অসম্ভব । এটা এমন একটা সম্পর্ক ছিল যার সূত্রপাত ঘটে ছিল need এবং selfishness থেকে এবং সমাপ্তি ঘটেছে প্রতিহিংসা এবং প্রতিশোধের মধ্য দিয়ে।]
আামি ঘটনার ৪/৫ দিন আগে বাজার রোড বরিশাল হইতে ৩৫০/- টাকা দিয়া একটা দা কিনে এনে রুমে রাখি । দোকানটা রাস্তার বাম পার্শ্বে । একটা ২৩/২৪ বছরের কালো ছেলে সেটা বিক্রী করেছে । পাশে একজন মুরুব্বী ছিল । ঘটনার দিন ০৫/০৯/২০১৩ইং তারিখে সকাল অনুমান ০৮.৪৫ মিনিটের সময়ে আমি দাটা একটা ব্যাগে (ব্যাগের নাম Camel) নিয়ে পিঠে করে বের হই । ব্রাউনকম্পাউন্ড মোড়ে এসে দাড়াই । আমি জানতাম যে, সকাল ৯.০০ টার দিকে সাওদা এখান দিয়ে ক্লাসে যেতো । সাওদা আর নাসিমা ৯.০০ টার দিকে সেখান দিয়ে যাচ্ছিল । আমি সাওদাকে দাঁড়াতে । বলি সে দাঁড়ায় না । আমাকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে । আমি তখন ব্যাগ থেকে দাটা বের করে বলি যে,ওকে আমার সাথে যেতে হবে । সাওদা হঠাৎ চিৎকার করে ওঠে । আমি তখন দা দিয়া ওর মাথায় ৩/৪ টা আঘাত করি পেছন থেকে । আমি লোকজন আসায় দৌড় দেই । কিছুদুর যাওয়ার পর রাস্তায়র বাম পার্শ্বে একটা পেয়ারা গাছের কাছে ড়োবা না যেন কি ছিল সেখানে দাটা ফেলে দিয়ে যাই ।
আমি সেদিনই বাসে করে ঢাকা যাই । ঢাকায় এদিক ওদিক বিভিন্ন জায়গায় থাকি । আমার কাছে টাকা ছিল না বিধায় ঢাকা থেকে গাজীপুর শফিপুর গিয়ে্ ঢালাইর কাজ করি । ১৫০০/- টাকা পাই । পরবর্তীতে ধরা পরার ৩ দিন আগে ট্রেনে করে চট্টগ্রাম যাই । ই.পি.জেড এলাকায় কাজের জন্য যাই । আমার মনের মধ্যে পুড়তে ছিলাম ।
ইতোমধ্যে আমি পেপারে সাওদার মৃত্যু সংবাদ পাই । আমি সাওদাকে হত্যা করতে চাইনি । আমি মনোযন্ত্রনার কারনে ওকে ভয় দেখাতে চেয়েছিলাম । কিন্তু হঠাৎ যে কি হলো জানি না! গত ১২/০৯/২০১৩ইং তারিখে ৪.০০ টার (বিকালে) দিকে একটা ফোন আসে । দেখি আমার ছোট বোন শিমু ফোন দিয়েছে । ও কাঁদে । আমি বোনকে থানায় গিয়া আত্মসমর্পণের কথা বলি । আমি বোনকে ১০০০/- টাকা দেয়ার জন্য হালিশহরে একটা বিকাশির দোকানে যাই । বিকাশের মাধ্যমে টাকা পঠাই । আমি দোকানদার কে থানার কথা জিজ্ঞেস করি । লোকটা আমাকে থাকতে বলে । কিছুক্ষন পরই পুলিশ আসে সিবিল ড্রেসে । আমি আমাকে গ্রেফতার করতে বলি । তাদের ঘটনা জানাই । তারা আমাকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে যায় ।
এই আমার জবানবন্দী । আমি আমার কৃতকর্মের জন্য অনুতপ্ত*
*১১[আমি ব্যক্তিগত ভাবে যখন রাসেলের সাথে কথা বলি ০২/১১/২০১৪ইং তারিখে, তখন রাসেলের মধ্যে কোন অনুশোচনা বা অনুতপ্ত বোধ খুঁজে পাইনি । তবে এক আশ্চর্য নিরবতা দেখেছি । গারোদে অন্যরা যখন হাসাহাসি করছিল কথা বলছিল সে তখন চোখ বন্ধ করে শুয়ে ছিল । চেহারায় এক শভ্রতা দেখেছি । সে নাকি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে । পবিত্র কোরআন ও আয়ত্ব করেছে ভালই, তা থেকে আমাকে কিছুটা শোনালো ।আমাকে বললো, শুধু সাওদার সাথে সম্পর্কের দুই বছর নাকি সে বেপরোয়া জীবন যাপন করেছে, এখন তার শাস্তি পাচ্ছে । তবে আচরনে কিছুটা উগ্রতা ও লক্ষ্য করেছি- আমি যখন কথা বলছিলাম তখন পরবর্তী পদক্ষেপের জন্য তার মায়ের উপস্থিতি জরুরী ছিল, পুলিশের বাধায় সে বলে উঠল: টাকা দেব, ৫০০/- টাকা দিলেইে আসতে দেবে । যদিও তার কথা ১০০% সত্য ছিল তবুও কিছু কিছু পরিস্থিতিতে সত্য কথাটিও বলতে হয় না । তখন সে আমাকে জানায়- জেলে সে মহিলাদের পার্চ ব্যাগ বুনায় । এক একটা ব্যাগ ৩৫০/-টাকা করে বিক্র হয় । সে কম্পিউটারের অনেক প্রোগ্রামে কাজ করতে জানে । হ্যাক করতেও জানে । কিছু special Software ছিল, কিন্তু Laptop টা আর ২১০০০/- টাকা সাওদার কাছে ছিল যা আর ফিরে পায়নি । গরীব বাবার মেধাবী, কর্মঠ এক ছেলের জীবন শুধু অপ্রতিরোধ্য এক emotion এর জন্য ধ্বংস হয়ে গেল । মেয়েটাও ঔ একই emotion এর শিকার । the girl is the victim of her own action-motivated love & the boy’s unsuppressed emotion-egotism, wrath. The boy is the victim of his own emotion & situation. That’s why জীবনে কোন অনুভূতিকেই এতটা গুরুত্ব দিতে হয় না যা বিবেকের কাজ করাকে বন্ধ করে দেয় ।]
আমি ভাবতে পারিনি সাওদা মারা যাবে ।
রাসেল মিয়া

জবানবন্দী রেকর্ড করেছেন বরিশাল অতি: চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো: জাহিদুল কবির ১৪/০৯/২০১৩ তারিখে ।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ সকাল ১১:০৬

অপূর্ণ রায়হান বলেছেন: হুম! কি বলবো বুঝে উঠতে পারছি না। মানুষ এমন কেন হয় ? এমন কেন করে!!!!!!!!!!!!!!!!!


ভালো থাকবেন।।

২৫ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:২৬

salopa বলেছেন: মানুষ এমন কেন হয় ? এমন কেন করে!! আমিও বুঝিনা । ধন্যবাদ আপনাকে । আপনিও ভাল থাকবেন ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.