![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সকল প্রশংসা বিশ্ব পালনকর্তা আল্লাহর জন্য সমর্পিত। উৎপীতড়ক ও সীমালংঘনকারীগণ ছাড়া আর কেউ আল্লাহর ক্রোধানলে নিপতিত হয় না। সাইয়্যেদুল মোরসালীন ও ইমামুল মোত্তাক্বীন হযরত মুহাম্মাদ মোস্তফা (সাঃ) এর প্রতি সালাম জ্ঞাপন করছি। আরো জ্ঞাপন করছি, তাঁর পরিবারবর্গ ও সাহাবায়ে কেরামের প্রতি।
হাদীসে কুদ্সী কি?
ইসলামী শরীয়তের চার উৎস মূলের অন্যতম হচ্ছে, ‘আল হাদীস’ পবিত্র আল কুরআনের পরেই যার স্থান। হাদীস হচ্ছে - প্রিয় নবী হযরত মোহাম্মাদ মোস্তফা (সাঃ)- এর মুখনিঃসৃত নিজস্ব বাণী ও কর্ম এবং রাসূল (সাঃ) কর্তৃক সাহাবায়ে কেরাম(রাঃ) গনের বক্তব্য ও কর্মের অনুমোদন।
রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর কথা, কাজ ও অনুমোদনের বিপরিত নয়, সাহাবায়ে কেরামের এমন সব কথা, কাজ ও অনুমোদন হাদীসের মধ্যে গণ্য।
হাদীসসমূহের মধ্যে এমন কতগুলো হাদীস রয়েছে যেগুলো আল্লাহর নবী (সাঃ) নিজ জবানে বর্ণনা করলেও তা মহান আল্লাহ তায়া’লার নামে বিবৃত হয়েছে। যেমন - ‘আল্লাহ তায়া’লা বলেছেন’ কিংবা ‘মহান আল্লাহ তায়া’লা বলেন’ এভাবে উল্লেখ হয়েছে। হাদীস শাস্ত্র বিশারদ - মুহাদ্দিসদের কাছে এগুলো ‘হাদীসে কুদসী’ নামে পরিচিত।
কুদ্স শব্দের অর্থ হচ্ছে - পবিত্র (দোষ-ক্রটি থেকে)। যা আল্লাহ তায়া’লার গুনবাচক নামসমূহের একটি নাম। যেহেতু এ হাদীসগুলো সরাসরি আল্লাহর সাথে সম্পৃক্ত তাই এগুলোকে ‘হাদীসে কুদ্সী’ নামে নামকরণ করা হয়েছে।
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) যখন এ হাদীসগুলো ব্যক্ত করতেন, তখন তা সরাসরি আল্লাহর পক্ষ থেকে বর্ণনা করতেন। যেমন - আল্লাহ তায়া’লা বলেছেন বা বলেন, আবার কখনও বা বলতেন, ‘জিবরাঈ’লকে আল্লাহ তায়া’লা বলেছেন, কিংবা ‘জিবরাঈ’ল (আঃ) আমাকে বলেছেন।
মোট কথা যেসব হাদীসের মর্ম রাসূলুল্লাহ (সাঃ) আল্লাহর পক্ষ থেকে ‘ইলহাম’ কিংবা জিবরাঈ’ল (আঃ) এর মাধ্যমে জ্ঞাত হয়ে নিজ ভাষায় প্রকাশ করেছেন, তাই ‘হাদীসে কুদ্সী’ হিসেবে সুপরিচিত।
প্রাথমিক যুগের মুহাদ্দিসগণের মতে - ‘হাদীসে কুদসী’র সংখ্যা একশ’য়ের কিছু বেশি। কিন্তু পরবর্তী কালের মুহাদ্দিসগণ প্রায় সহস্র হাদীসকে ‘হাদীসে কুদসী’ হিসাবে গণ্য করেছেন।
কয়েকটি হাদিসে কুদসি-
১. রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন- সুমহান আল্লাহ্ বলেছেন, “নিশ্চয়ই আমি এবং জিন ও মানব জাতি এক মহাপরিস্থিতিতে অবস্থান করছি। তাদেরকে আমি সৃষ্টি করি, আর তারা অন্যের উপাসনা করে, তাদেরকে আমি জিবিকা দেই, আর তারা অন্যের শুকরিয়া জ্ঞাপন করে।”-আবুদ দারদ (রা) থেকে হাকেম ও তিরমিযী সংগ্রহ করেছেন
২. রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন- কোন মুসলমান বান্দা যখন ‘লা -ইলাহা ইল্লাল্লাহু‘ (আল্লাহ ছাড়া কোন মাবুদ নেই) বলে, তখন তা আকাশসমূহ ছেদন করে যায়, এমনকি তা আল্লাহর সম্মুখে গিয়ে পৌছে। আল্লাহ্ তখন বলেন, “স্থির হও”, তখন এটা বলে, “আমি কিরূপে স্থির হব- আমি যার দ্বারা উচ্চারিত হয়েছি এখনও তাকে মাফ করা হয়নি”। আল্লাহ তখন বলেন, আমি তোমাকে সে লোকের জিহ্বা দ্বারা পরিচালিত করিনি যাকে তার আগ মুহুর্তে মাফ করে দেইনি।”-দায়লামী এ হাদীসটি হযরত আনাস (রাঃ) থেকে সংগ্রহ করেছেন।
৩. রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন- তোমাদের প্রভূ বলেছেন, “যে লোক আমার সৃষ্টির অনুরূপ সৃষ্টি করেছে তার চেয়ে বড় অত্যাচারী আর কে আছে! সামর্থ্য থাকলে তাকে একটি মশা, কিংবা একটি কণা সৃষ্টি করতে বল।”-ইবনুন নাজ্জার এ হাদিসটি হযরত আবূ হুরায়রা (রা) থেকে সংগ্রহ করেছেন।
৪. রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন- মহান মর্যাদাশীল আল্লাহ্ বলেছেন, “যে লোক জানে যে, আমি যাঁবতীয় গুনাহ মাফের অধিকারী, তাকে আমি মাফ করে দেই। আর আমার সাথে কোন কিছুকে শরীক না করা পর্যন্ত আমি কারো কোন দোষ ধরি না।”-তিবরানী ও হাকেম এ হাদিসটি হযরত ইবনে আব্বাস (রা) থেকে সংগ্রহ করেছেন।
(সংকলিত)
©somewhere in net ltd.