নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
The inspiration you seek is already within you. Be silent and listen. (Mawlana Rumi)
১. যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া তিন শিক্ষার্থীকে হত্যা করা হলো।এদের মধ্যে আবার দু’জন ইয়াং লেডি।সুতরাং এখানে নারী অধিকারের বিষয়টিও চলে আসে।একদল খ্রিস্টান উগ্রবাদীর আক্রমণে তাদের মৃত্যু হয়েছে।আমরা জানি পশ্চিমা বিশ্বে শুধু মানুষ নয় যে কোনো প্রাণীর মৌলিক অধিকারকে অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে দেখা হয়।পশ্চিমা দেশগুলোতে একটি কুকুর যে সুযোগ সুবিধা ভোগ করে আামাদের মতো তৃতীয় বিশ্বের দেশের একজন মানুষ সে সব কল্পনাও করতে পারে না।বাস্তবে আমাদের সাথে ওদের জীবন মানের পার্থক্য আসলে এতটাই।এরপরও আমাদের দেশের কমন দৃশ্য হলো-বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া কোনো শিক্ষার্থী আক্রান্ত হলে হাজার হাজার ছাত্র তার জন্য রাস্তায় নেমে পড়ে।কোনো ছাত্র মারা গেলে বিশাল শোরগোল শুরু হয়।আসলে দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপিঠে উচ্চশিক্ষারত একজন সাধারণ শিক্ষার্থীর মৃত্যকে মানুষ খুব স্বাভাবিকভাবে মেনে নিতে পারে না বলেই এমনটা হয়।পাবলিক সেন্টিমেন্টকে মাথায় রেখে মিডিয়া বিষয়টিকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে তুলে ধরে।
২. কেন এই তিন সংখ্যালঘু মুসলিম শিক্ষার্থীকে হত্যা করা হলো তা জানাতে পারেনি আমেরিকান পুলিশ। তবে ধারণা করা হচ্ছে ইসলাম বিদ্বেষের জের ধরে একদল (বা একজন) উগ্র খ্রিস্টান এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে।একটা ব্যাপার লক্ষ্য করে দেখবেন-আমাদের দেশে আশুরার বড় মিছিল হলেও পশ্চিমামিডয়া তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে।ধর্মীয় স্বাধীনতা যেন ক্ষুণ্ন না হয় এ নিয়ে সতর্কতা অবলম্বনের উপদেশ দেয়।আমাদের দেশের সংখ্যালঘূদের নিয়ে ওদের উৎসাহের কোনো কমতি নেই।ওরা কোনো যুক্তি ছাড়াই তাদের হাতে গড়া আইএস নামক এক অসভ্য সংগঠনের অপকর্মের দায়ভার মুসলিমদের উপর চাপিয়ে দিচ্ছে।
যাই হোক ফেসবুকে এ মৃত্যুর খবরটি পেয়ে আমি গতকাল পশ্চিমা মিডিয়াগুলোতে ঢুঁ মারি।তিন তিনটা তরুণ তাজা প্রাণ স্রেফ সন্ত্রাসী হামলায় ঝরে গেল।যাদের কোনো অপরাধ ছিল না।নিতান্তই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ওরা।আমাদের আশা ছিল পশ্চিমা রাষ্ট্রগুলোর তরফ থেকে বিশেষ কোনো বিবৃতি আসবে এ হত্যাকাণ্ড নিয়ে।মিডিয়াগুলো বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে খবরটি ছাপবে।সম্পাদকীয়তে এ ঘটনার প্রতিবাদ জানাবে।আসলে ঘটেছে ভাবনার ঠিক উল্টোটি।পশ্চিমা মিডিয়া খবরটি প্রকাশের প্রয়োজনও মনে করল না।আমি বেশ আন্তর্জাতিক মিডিয়া বিশেষ করেবিবিসি খুঁজলাম।তাদের প্রচ্ছদে এ সংক্রান্ত কোনো খবর নেই।একদম নিচে এ নিয়ে ছোট্ট একটি বিশ্লেষণমূলক প্রতিবেদন চোখে পড়ল।যা দেখে পড়ার আগ্রহ হারিয়ে ফেলি।শেষ পর্যন্ত আমাকে আল জাজিরা পড়েই সন্তুষ্ট খাকতে হলো।
তাহলে এই তিন খুন নিয়ে পশ্চিমা মিডিয়ার এমন আচরণকে কিভাবো মূল্যায়ন করেব আমরা।আমরা এ পর্যায়ে এসে বলতেই পারি আসলে ধর্ম-বর্ণ তথা সব কিছুর উর্ধ্বে মানবতাকে স্থান দিতে পারেনি পশ্চিমারা।এ ঘটনায় প্রমাণ হলো পশ্চিমা মিডিয়া বর্ণবাদী খ্রিস্টীয় ধর্মবাদে আবদ্ধ।যা অন্যের অধিকার ক্ষুণ্ন তথা প্রাণ হরণকেও সমর্থন করে।আমরা এমন ধর্মীয় বর্ণবাদী আচরণের নিন্দা জানাই।এই সাথে পৃথিবীর প্রতিটি দেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের সহাবস্থান নিশ্চিতের দাবি জানাই।
৩. এতো গেল পশ্চিমা মিডিয়ার কথা।এবার আমার দেশের মিডিয়াগুলো নিয়ে আলোচনা করা যাক।আমরা দেখেছি কয়দিন আগে মহানবী (স.) কে নিয়ে কার্টুন প্রকাশকারী ‘শার্লি এবদো’র অফিসে কথিত মুসলিম আইএস জঙিদের হামলা নিয়ে বিডি মিডিয়ার সেকি উত্তেজনা।যেখানে নানাভাবে ইসলাম ধর্মটাকে কুলষিত করার চেষ্টা করা হয়েছে।
আজ সকালে আমি বাংলাদেশি মিডিয়ায় খবরটি দেখার চেষ্টা করি।না কোথাও নেই এখবরটি।দেশের সর্বাধিক প্রচারিত দৈনিকটি সংক্ষিপ্ত আকারে সংবাদটি ছাপিয়েছে।কয়েকবার তাদের আন্তর্জাতিক পাতা অনলাইন ভার্সনে ঘোরার পর এটা আমার নজরে পড়ল।তাদের প্রতিবেদনে কে হামলা করেছে তার কোনো ধর্মীয় পরিচয় নেই।কারা মারা গেছে তাদেরও তেমন কোনো পরিচয় বলা হয়নি।ধরে নিলাম পত্রিকাটি ধর্মীয় পরিচয়ের বাইরে এ জঘন্য আক্রমণকে নিতান্তই একটি সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড হিসেবে দেখতে চাইছে।যে নীতি তারা মিয়ানমারে বৌদ্ধরা যখন হাজার হাজার রোহিঙা মুসলিমদের পুড়িয়ে মারে, ভারতে যখন উগ্র হিন্দুরা মুসলিমদের হত্যা করে তখন অনুসরণ করে।তারা বিষয়গুলোকে দুই পক্ষের দাঙা হিসেবে আখ্যা দিয়ে খুব ছোট করে উপস্থপন করে।কারা হত্যার শিকার হয়েছে, কারা হত্যা করেছে এসবের উল্লেখ থাকেনা তাদের প্রতিবেদনগুলোতে।
তবে প্রশ্ন হচ্ছে নিজ দেশের বেলায় কি একই নীতি অনুসরণ করে দৈনিকটি।আমরা দেখি অনাহুতই বিভিন্ন সাধারণ ঘটনাকে ধর্মীয় রুপ দিয়ে উপস্থাপন করছে পত্রিকাটি।যেমন বেশ কয়েক মাস আগে বরিশালে ফুটবল মাঠে খেলা নিয়ে বিরোধের জের ধরে একজন খুন হয়।নিহতের ক্ষুদ্ধ স্বজনেরা খূনির বাড়ি আগুণ দিয়ে জ্বালিয়ে দেয়।যে নিহত হয়েছে সে মুসলমান।আর যার বাড়ি আগুণে পুড়েছে সে হিন্দু।দৈনিকটি পরদিন বিশাল্ আকারে নিউজ প্রকাশ করেছে-বরিশালে সংখ্যালঘুর বাড়িতে আগুণ!এখানে তারা সংখ্যালঘুর অধিকারের কথা বলতে গিয়ে একজন মানুষ খুন হওয়ার বিষয়টিকেই বেমালুম চেপে যায়।খেলা নিয়ে দুই পক্ষের এ বিরোধকে তারা শেষ পর্যন্ত ধর্মীয় সংঘাতে রুপ দিয়ে ছাড়ল।এভাবেই আসলে মিডিয়া তাদের একরোখা দৃষ্টিভঙির প্রতিফল ঘটাচ্ছে প্রতিদিন।যেখানে সত্য কোনটা তা জরুরি বিষয় না, উদ্দেশ্য সাধনই প্রধান হয়ে দাঁড়িয়েছে।
৪. এমন নানা কারণে মিডিয়ার কথা এখন খুব মানুষই বিনা বাক্যব্যয়ে বিশ্বাস করে।তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোতে পশ্চিমা মিডিয়াগুলোর বিশ্বাসযোগ্যতা বরাবরই প্রশ্নবিদ্ধ ছিল।আর দেশীয় মিডিয়াকে সাধারণ মানুষ দেখে নিতান্তেই দলীয় দৃষ্টিভঙি থেকে।বাংলাদেশে মিডিয়ায় প্রকাশিত সংবাদের ৫ শতাংশ খবরও সাধারণ মানুষ বিশ্বাস করে বলে আমি মনে করি না।অনেকে সাংবাদিকতাকে দেখেন দুবৃত্তায়ন হিসেবে।কেন এমনটা হচ্ছে তা মিডিয়া মালি ও সংশ্লিষ্টরা ভেবে দেখতে পারেন।আসলে ক্রমবর্ধমান স্যোশাল মিডিয়ার এ যুগে কোনো কিছুই যে বিনা চ্যালেঞ্জে ছেড়ে দেয়া হবে না এ বাস্তবতাকে মেনে সাংবাদিকতা করাটা এখন সময়ের দাবি।সাংবাদ মাধ্যম হিসেবে বিকল্প ধারার স্বাধীন মিডিয়াকে বিবেচনায় না নেয়া মানে নিজের পয়ে নিজেই কুড়াল মারা।
সরোজ মেহেদেী
[email protected]
১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১২:১৬
সরোজ মেহেদী বলেছেন: আমি আসলে ওয়েবসাইটগুলো ফলো করেছি। আপনি বিবিসিসহ বিশ্ব মিডিয়ার ওয়েবগুলো চেক করে দেখতে পারেন। তবে এটা সত্য টিভির খবর বলতে পারব না।
২| ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১২:১২
চাঁদগাজী বলেছেন:
ঠিক এখুনী উলফ ব্লিটযার আবার সেটার উপর রিপোর্টিং করছে।
আপনারা কোন কিছু ঠিকভাবে তুলে ধরতে পারেন না, এটা একটা সমস্যা
৩| ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১২:৫৪
অমিত সাহ৭১ বলেছেন: লেখার মূল থিমের সাথে একমত।মিডিয়ার ভূমিকা নিয়ে আমার বরাবরের মতোই প্রশ্ন আছে।
৪| ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১:২৪
মেহেদী_বিএনসিসি বলেছেন: গত দুইদিন সিএনএন এর ওয়বসাইটের হেডলাইনই এটা নিয়ে.......বিভ্রান্ডিমুলক কথাবর্তা বলে কি লাভ?
http://www.cnn.com/2015/02/12/us/chapel-hill-shooting-hate-crime-explainer/index.html
http://www.cnn.com/2015/02/12/us/chapel-hill-shooting-hate-crime-explainer/index.html
১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ ভোর ৪:১৯
সরোজ মেহেদী বলেছেন: ভাইকি আমার লেখার খালি সিএনএন শব্দটাই পড়ছেন, নাকি পুরো লেখাটা পড়ছেন।আমি এখানে মিডিয়ার ভূমিকা নিয়ে নিজস্ব মূল্যায়ন তুলে ধরার চেষ্টা করছি। মূল বক্তব্যের কয়েকটা শব্দ মাত্র সিএনএন।
এ ঘটনায় পশ্চিমা মিডয়ার নিরব ভূমিকা নিয়ে মানুষ ক্ষুব্দ এ মর্মে খোদ লন্ডনের ইন্ডিপেন্ডেট পত্রিকা প্রতিবেদন করেছে, আল জাজিরা তাদের সংবাদে বিষয়টি উল্লেখ করছে। আপনি চাইলে আল জাজিরায় করা টুইটগুলোও দেখতে পারেন।
তারপরও এ অসতর্কতার জন্য আমি দু:খ প্রকাশ করছি।সিএনএন শব্দটাকে বাদও দিয়ে দিচ্ছি। কিন্তু কথা হচ্ছে মূল বক্তব্য বাদ দিয়ে এই একটা জায়গায় এসে থেমে যাচ্ছেন কেন।মূল বক্তব্যের সাথে দ্বিমত করার সুযোগটা কতটুকু!
©somewhere in net ltd.
১| ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১১:৫৫
চাঁদগাজী বলেছেন:
" সিএনএন, নিউইয়র্ক টাইমস এর প্রচ্ছদে খবরটি নেই। "
-সিএনএন এই ঘটনার উপর গতকাল বিকেল ৩ ঘন্টা সংবাদ, আলোচনাসহ সবকিছু দেখায়েছে।