![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
প্রথমেই অভিনন্দন ক্রিকেট টাইগারস্,বিশেষ অভিনন্দন মাহমুদুল্লাহ্ রিয়াদকে(যদিও আমি বিশ্বাস করি আমাদের এই সন্তানগুলো সবাই সমান অসীম এক সুপ্ত জ্বালামুখ)।যার একেকটা একেক সময় বিস্ফোরিত হয়,ভাগ্যিস সব এক সাথে বিস্ফোরিত হয়না,তাহলে পুরো ব্রক্ষান্ডে হইচই পড়ে যেত। তবে প্রার্থনা করি সবসময় যাতে সাত আট টা জ্বালামুখ এক সাথে জ্বলে উঠে,যার ঝলকানিতে প্রতিবার পুরো বিশ্ববাসীর নয়ন ধাধিয়ে যায়।
বাংলাদেশের কিছু তরুন ব্যাঘ্র,যারা কিছুদিন আগেও ছিল ব্যাঘ্য-সাবক মাত্র,তারা আজ আমাদের উপহার দিয়েছে এক অসাধারন কির্তী। ব্লু-ব্লাড(রাজ রক্ত) এবং সভ্যতার স্থপতির দাবিদার আজীবন নাক উঁচা এবং ক্রিকেট ইতিহাসের প্রথমসারীর তকমাআটা ব্রিটিশদেরকে পরাজিত করে প্রমান করেছে,আমাদের শিরায় এখনো সুর্যসেন,তিতুমিরদের মতোই টগবগে খুন আছে,শুধু পরিবেশ প্রতিকুলতা আর আমাদের অসাধারন সহনশিলতার(যা কোন কোন ক্ষেত্রে আমার মতে আমাদের প্রধান দূর্বলতা) কারনে আমরা সবসময় সমান ভাবে জ্বলে উঠতে পারিনা। ২০০ বছর যারা আমাদের উপর ছড়ি ঘুড়িয়েছে,আমাদের পূর্বপুরুষেরা যাদের ক্রিকেটের বল কুড়িয়েছে,আজ তাদের অধ:পুরুষরাই তাদের উপর ব্যাট ঘুড়িয়েছে,তাদের দিয়ে বল কুড়িয়েছে। আমরা ঋনী থাকতে পছন্দ করিনা,পূর্বপুরুষের দেনা শোধ করে আমরা আজ দায়মুক্ত।
ক্রিকেট বিশ্বকাপ বেশ কিছুদিন ধরে চলছে,আমি বাংলাদেশের দুই একটা ম্যাচ দেখেছিও;কিন্তু ভারক্রান্ত মনে। তেমন উত্তেজনা বোধ করছিলাম না।বিগত খেলা জয় পরাজয় নিয়ে আমি এবার কোন কিছু লেখার তাগিদ অনুভব করিনি। যদিও মস্তিস্কে আর কলমের ডগায় বলার মত জমছিল হাজারো শব্দ রাশি,তবে? এই নয় যে আমার বাংলাদেশ ক্রিকেট টিম এর প্রতি ক্ষোভ আ্রছে,কিংবা বাংলাদেশের জয় আমাকে উদ্বেলিত করেনা (আমি স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি নই)অথবা খেলাধুলার প্রতি অনাগ্রহ।মূল কারনটা হচ্ছে বাংলাদেশের বর্তমান ভয়ন্কর রাজনৈতিক অস্থিরতা,উন্মততা,আর এই ঘ্রীন্য অপরাজনাতীর স্বিকার হয়ে প্রতিদিন পৈচাশিক ভাবে বলিদান হচ্ছে অসংখ্য সাধারন বা বলা উচিত অতি সাধারন অসহায় কিছু মানব মানবী,আবাল বৃদ্ধ বনিতা কেউ ই হিংস্রতার থাবা থেকে মুক্তি পায়নি। এরাও বাংলার বাঘ,তবে এরা মানুষখেকো উন্মাদ হয়ে যাওয়া ম্যান ইটার টাইগার। আগের কালে বনবিভাগ এ ধরনের উন্মাদ বাঘদের হাত থেকে সাধারন মানুষদের বাচানোর জন্য কালু গাজী, জিম করবেট,খসরু চৌধুরীদের মতো উপকারী শিকারী অথবা উন্নাসিক লোক দেখানো অাভিজাত্যের তকমাকে জ্বল জ্বল করতে সদা প্রস্তুত কোন বন্ধুকধারী সাদা চামড়াকে অনুমতি দেওয়া হতো(ভূল বললাম কাউকে কাউকে অনুরোধ করা হতো) সাধারন মানুষকে বিপদ থেকে বাচাতে এই উন্মাদ,উন্মত্ত,খোলা আম ঘুড়ে বেড়ানো মানুষখেকোকে গুলি করে মারার জন্য। তাদের সফলতার জন্য তাদেরকে সন্মানিত করতো মৃত বাঘের চামড়া মাথা তাদেরকে উপহার দিয়ে।
অবশ্য সেই দিন আজ নেই। বাংলার বাঘ নাকি কমতে কমতে পাচ ছয়শো তে দাড়িয়েছে। কাজেই এদের বিলুপ্ত হতে দেওয়া যাবেনা। পাঁচ ছয়শোর মধ্যে যদি দুই তিন'শ বুড়ো বাঘ যদি উন্মত্ত,উন্মাদ হয়ে যায়,প্রতিদিন প্রান কেড়ে নেয়ে চল্লিশ পঞ্চাশ জনের তাও তাদের কিছু বলা যাবেনা। আদর করে ঘুম পাড়িয়ে তার নিজ বাসস্থলে নিয়ে আস্তে করে শুয়িয়ে দিতে হবে।পাছে না উন্মাদ মহারাজার আবার ঘুম ভেঙ্গে যায়। তবে তো সর্বনাশের পালা,কারন এই মহারাজাতো তাদেরও ছাড়বেনা যারা তাকে নিজ সন্তানের থেকে বেশী আড়াম দিয়ে কোলে করে ঘরে নিয়ে এসেছে। অনেকটা যেন,মহারাজা যুদ্ধ জয় করে এসেছেন,এদিকে যে বিশটা পরিবারের বংশ উজার তা নিয়ে কারও কোন মাথা ব্যাথা নেই।
সবাই এখন সাধু,ইমাম আর দার্শনিক বনে গেছেন। "জন্মিলে মরিতে হইবে এইতো জগতের রিতী"...."আল্লাহ্র মাল আল্লাহ্ নিয়া গেেছ"..."বিধাতা তার আয়ু এতটুকুই রেখেছিলেন..ভবিতব্য মানুষের হাতের বাইরে"। আবার কেউ কেউ আরবী ভাষা ও শিখে ফেলেছেন,ডাইরেক্ট আরবীতে আল-কুরআনের আয়াত বলেন "কুল্লু নাফসিন যায়কাতুল মউত"..সকল প্রানীকে মৃত্যুর সাধ অবশ্যই গ্রহন করতে হবে। আরবীতে বলারও আবার বিশেষ ফায়দা আছে,ভাব বাড়ে..সাধারন মানুষ ভাবে এতো বিশাল জ্ঞানী,পুড়া কুরআন শরীফ এ টু জেড মুখস্ত করে ফেলছে তাও আবার বাংলা অর্থ সহ...সাধু.. সাধু।অন্যদিকে বাংলাদেশের ধর্মপ্রান মুসলমান রা সবাই কম বেশী কুরআন পড়লেও বাংলা অর্থ এবং ব্যাখ্যা সহ পড়া লোক জন অতি নগন্য(আরবী মাধ্যমে পড়াশুনা করা আলেম রা ছাড়া),আর এখানেই দ্বিতীয় সুবিধাটা,যে যার মতো বাংলা তরজমা করে ফেলে নিজের তত্ত্বকে ধর্ম দ্বারা পোক্ত করে সাধারন মানুষের কাছে অসাধারন বনে যাওয়ার জন্য।
এই প্রসঙ্গে ছোট্র একটা রম্য আমরা প্রায় অনেকেই জানি,যার সারাংশটা অনেকটা এমন-"কোন এক গ্রামে হঠাৎ করে একটা গরুর আবির্ভাব ঘটে(হয়তো অন্য কোন গ্রামের হারানো পালিয়ে আসা গরু)।প্রসঙ্গক্রমে উল্লেখ করতে হয় সেটা মূলত: ছিল একটা বলদ।গ্রামের সাধারন সরল মানুষ একে একে খোজ নিয়ে বুঝতে পারলো বলদ টা তাদের কারও না,কারন তাদের কারও কোন বলদ হারানো যাইনি।তখন সবাই বলদ টাকে নিয়ে গেলেন তাদের গ্রামের সবচেয়ে সন্মানিত ইমাম আমিন সাহেবের কাছে এটা জানতে যে মালিকবিহীন কোন বলদ পাওয়া গেলে সেটাকে কি করা হবে,এক উনিই যা শিক্ষিত বাকিত সব বকলম।হুজুর দেখলেন বেশ নাদুশ নাদুশ বলদ। সামনে কোরবানীর কাজটাও হয়ে যাবে। বুঝে ফেললেন এতো দারুন সুযোগ।উনি বেশ গম্ভীর ভাবে অনেক্ষন চিন্তা করলেন,আরো চিহ্নিত ভাবে সামনে থাকা বেশ কিছু কিতাব ঘাটলেন।অত:পর গম্ভীরভাবে বললেন,"মালিকবিহীন বলদ এর ক্ষেত্রে করনীয় একটা মাসলা পাওয়া গেছে, আল কোরআনে পরিস্কার আয়াত আছে --ওয়া হাযা বালাদিল আমিন। এরপর উনি তার তরজমা শুনালেন,আরবী হাযা অর্থ ইহা আর বালাদীল আমিন এর শানে নজুল আরো গম্ভীর সবমিলিয়ে যার মর্মার্থ হইল এই যে, ইহা সেই বলদ, যা আমিনের মতো ভালো বান্দাদের জন্য আল্লাহ্ প্রেরন করেন-পূনাঙ্গভাবে বলতে গেলে -এই বলদ মুলত: আমিনের,যা আল্লাহ্ উনার জন্য তার সৎকর্মের পুরস্কার হিসাবে পাঠিয়ে্ছে।" গ্রামের সকল মানুষ আল্লাহ্র এই কেরামতী আর তাদের ইমাম সাহেবের বিশাল পূর্ণ্য ও জ্ঞানের মহিমায় অভিভূত হয়ে আর ধর্মীয় আবেগে শিহরিত হয়ে সমস্বরে চিৎকার করে উঠলেন সোবাহানাল্লাহ্।অত:পর তারা একটা দায়মুক্তির দুশ্চিন্তা থেকে রেহাই পেয়ে আনন্দ এবং তৃপ্তির সাথে যার যার ঘরে ঘুমাতে চলে গেলেন।"
শিক্ষনীয়: যার তার কাছ থেকে হাদীস কুরআন শুনে নাচবেন না। নিজে পড়ুন,নিজে বুঝুন,তারপর নিজের শিক্ষায় ধর্ম পালন করুন। সেটা যেই ধর্ম ই হোক। কোন ধর্মের সৃষ্টিকর্তাই বলেন নাই যে,বিশ পঞ্চাশজন লোক শুধু ধর্ম নিয়ে পড়াশুনা করবে আর বাকিরা তাদের দেওয়া ব্যাখ্যা শুনেই সেটাকে পরিপূর্ন শুদ্ধ হিসাবে ধরে অন্ধের মতো পালন করবে। কোন ধর্মই কোন একক ব্যক্তির পৈত্তিক সম্পত্তি বা ব্যবসার মূলধন না।কারন যারা ধর্মের ধ্বজাধারী তারাও আপনার আমার মতো সাধারন মানুষ। তাদের ভিতরেও যেমন আল্লাহ্ বা ইশ্বর বাস করে,আবার তাদের ভিতরে শয়তানও বাস করে।
এখানে আরো একটা বিষয় পরিস্কার করে নেই এটা আমার নিজের বানানো কোন গল্প নয়,মাদ্রাসায় পড়া আমার বন্ধু বান্ধবদের কাছ থেকে ছেলে বেলায় শোনা কৌতুক। কাজেই আশা করি এটাকে ইস্যু করে আমাকে নান্তিক বা মূরতাদ বলার স্পর্ধা কোন ধর্মব্যবসায়ী বা ঐ ইমামের মত ধূর্ত কোন লেবাস ধারীরা করবেন না। এবং পাঠকদের জ্ঞাতার্থে আল-কুরআনের প্রতি অত্যন্ত গভীর বিশ্বাস এবং শ্রদ্ধা নিয়ে বলছি,উল্লেখিত অংশটুকু,আল কুরআনের ত্রিশ পারা অংশের ৯৫তম সূরার তৃতীয় আয়াত,যা কিনা তার পূর্ববর্তী দু্ই আয়াতের সাথে একত্রিত ভাবে একটি পূর্ণ অর্থবোধক বাক্যে পরিনত হয়।
©somewhere in net ltd.
১|
১১ ই মার্চ, ২০১৫ সকাল ৯:২৭
পরিশেষের অপেক্ষায় বলেছেন: পড়তে পড়তে কোন বিষয়ে লিখেছেন সেটাই ভূলে গেছিলাম