নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সায়েমা খাতুনঃ নৃবিজ্ঞানী, গবেষক ও লেখক
তফাৎ যান!
ইসলামোফোব নারীবাদ শেষপর্যন্ত ফ্যাসিবাদের দোসর!
১৬ জুলাইয়ে রংপুরে শহীদ আবু সাঈদের হত্যা থেকে শুরু হয়ে হাজার তরুণ শিক্ষার্থী নিধনের গোটা সময়টা চুপচাপ থেকে এক দল নারীবাদীদের দেখলাম অগাস্টের ৫ এর পরে ক্ষমতার পট পরিবর্তনে বিপ্লব-পরবর্তী রাষ্ট্রে নারীদের কি হবে বলে দুশ্চিন্তা ও দুর্ভাবনায় নাওয়া-খাওয়া ছেড়ে দিয়েছেন।ছাত্র-জনতার সমর্থনের বিভিন্ন পোস্টে প্রকাশ্যে ও আড়ালে কোন রকম উস্কানি ছাড়াই অযাচিতভাবে এসে "বোরখা পড়ে গর্তে ঢোকা"র ভয় দেখাতে শুরু করেছিলেন।বাংলাদেশের "পাকিস্তান, আফগানিস্তান, মধ্যপ্রাচ্য" হওয়ার ভয় দেখাইছেন।সন্তানের বয়েসী বাচ্চারা যখন জানবাজি রাইখা মাফিয়া রাষ্ট্রের মূল উৎপাটনে রাজপথে সংগ্রাম করছিলো, ঠিক তখনই আবার কিনা এই গোষ্ঠী নারীদের মধ্যে সমানে ইসলাম-ভীতি সঞ্চার করবার চেষ্টা চালায়ে গেছেন!নারীদের মধ্যে বাংলাদেশে "ইসলামী শাসন কায়েম" হয়ে যাওয়ার ভয় ছড়াইসেন।আজ অব্দি তিনারা ননস্টপ আছাড়ি-পিছাড়ি দেশ "শরিয়া আইনের অধীন" এ চলে যাওয়ার জুজু দেখায়েই যাচ্ছেন।
অথচ, কি আজব!গত ১৫ বছর ধরে ভয়, গুম-খুন, ধর্ষণের পরিব্যাপ্ত ভয়াল সংস্কৃতিকে এই ইসলামোফোব নারীবাদী গোষ্ঠীর কাছে ভীতিকর মনে হইল না! আওয়ামী রেজিমের ক্ষমতার বলে বলীয়ান রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী, সাংবাদিক, আমলা, মিডিয়া লর্ড, পুলিশ, মন্ত্রী, আর্মি, এলাকার পাণ্ডা, পুরুষদের একের পর এক যৌন আগ্রাসন ও লাগাতার ধর্ষণের খবরগুলো আপনাদের যথেষ্ট বিচলিত করে নাই কেন? ঘরে-বাইরে, বাসে-ট্রেনে-রাস্তায় - সর্বত্র বিরাজমান যৌন-নিরাপত্তাহীনতার আতঙ্ক আপনাদের গ্রাস করলো না কেন? ফ্যাসিবাদী ক্ষমতার চুড়ায় বসা কতিপয় অত্যাচারী জালেম নারী ধন-সম্পদের পাহাড় বানাল, মিডিয়ার টক শো কাঁপালো, পুরস্কার বাগাল, আর সেই সব গল্প আপনারা নারীদের ক্ষমতায়ন নামে প্রচার করলেন? রোকেয়া আফজাল, রুবিনার ক্ষমতাকে আপনারা ভূমিহীন কৃষকের উদ্বাস্তু মেয়েদের, গার্মেন্টসের নারীদের ক্ষমতায়ন নামে দেশবাসীকে ধোঁকা দিলেন? এই রেজিম শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরীর দাবীকে ডাণ্ডা মেরে ঠাণ্ডা করতে চাইলে আপনাদের দিক থেকে কোন আওয়াজ শোনা গেল কি? গ্রামীণ কৃষক নারীদের কথা আপনারা বেমালুম ভুইলা গেলেন? আদিবাসী কিশোরী প্রীতি উরাং মত গৃহকর্মীর উপর নির্যাতনের ক্রিমিনাল অফেন্সগুলা রীতিমত উপেক্ষা করলেন?
বিচারহীনতার সংস্কৃতিতে তনু, মুনিয়া, সাহসিকার মত ধর্ষণের মামলাগুলোতে ক্ষমতার দাপটের সাথে কিভাবে জোরদার লড়াই চালিয়ে যেতে হয়েছিলো, সেইসব ভুলে যাওয়ার কোন সুযোগ নেই।কতিপয় আওয়ামী সুবিধাভোগী নারীরা ক্ষমতার উচ্চপদে আসীন হয়ে সারাদেশের নারীদের প্রকৃত স্বার্থগুলোর সাথে গাদ্দারি করে গেছে।দেশের নারীদের "পশ্চাদপদ" রাখবার জন্যে গণতন্ত্রহীনতা না, একনায়কতন্ত্র না, দুর্নীতি না, ভারতীয় হিন্দুত্ববাদী আগ্রাসন না, সীমান্তে ফেলানিদের হত্যা না, মিডিয়াতে নারীদের বেশ্যাকরণ না, যৌন নিপীড়ন সেলগুলো হাইজ্যাক করে ফেলা না, বাংলাদেশের নারীর স্বার্থ বিরোধী অগণিত কর্মকাণ্ড আপনাদের কাছে আপত্তিজনক মনে হয় না। আপনাদের একমাত্র সমস্যা ইসলামের অনুসারী নারীদের জীবনধারা!কেবলমাত্র "পশ্চাদপদ" "মৌলবাদী" "ধর্মান্ধ" "মাদ্রাসা" "হুজুর" গোষ্ঠীর জুজু দেখিয়ে আকণ্ঠ দুর্নীতিতে নিমজ্জিত আওয়ামী ফ্যাসিবাদী শাসনের সহায়ক শক্তি হওয়া, নারী উন্নয়নের বুলি কপচানো, নারীমুক্তির বিকল্পহীন ত্রাণকর্তা হিসাবে হাসিনার শাসনকে পরিবেশন করা ছিল আরেক জঘন্য কৌশল।
পৃথিবীর আর সকল ধর্ম অনুসারী নারীরা - হিন্দু ধর্ম প্র্যাকটিস করে, খ্রিস্টান বা ইহুদী মূল্যবোধ ধারণ করে, বৌদ্ধ জীবনধারা অনুসরণ করে - অসংকোচে কোন বাধা ছাড়াই তথাকথিত এই নারী স্বাধীনতার প্রকল্পে ইনক্লুড হইতে পারে, কেবল মুসলমান নারীদের জীবনধারার বিরুদ্ধের যত আক্রমণ? আর কোন ধর্মের সিম্বলিজম বহন করা নিয়ে আপনাদের আপত্তি দেখলাম না। কেবল ইসলামিক সিম্বলিজমের প্রতি আপনাদের অনন্ত বিদ্বেষ। কেবল ইসলাম ধর্ম প্র্যাকটিস করা নারীরা এই নারীবাদে ইনক্লুড হইতে পারে না? এই রহস্যের কোন কিনারা নাই যে, মুসলমান হইলেই নারী সঙ্গে সঙ্গে "Other" হইয়া যায় ক্যান? অদৃশ্য হয়ে যায় কেন?
প্যালেস্টাইনের গাজা উপত্যকায় ইসরাইলের অক্টোবর থেকে আজ পর্যন্ত লাগাতার চলা গণহত্যা থেকে এটা পরিষ্কার যে, ইসলামোফোব নারীবাদ জায়নবাদের সহচর, নিও-লিবারেল যুদ্ধ-কারখানার মতাদর্শিক সঙ্গী! যারা কিনা আমাদেরই দাঁড়ি-টুপী-লুঙ্গী পরা বাপ-ভাইদের আমাদের শত্রু হিসাবে প্রচার করে, দেশে দেশে নিজেদের উপনিবেশকে জারী রাখে, এইসব অঞ্চল পদানত রাখতে "সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে অনন্ত যুদ্ধ" এ তহবিলের ব্যাবস্থা করে। তাদের পা চাটলে সঙ্গী, আর না চাটলে জঙ্গী আখ্যা দেয়। সময় আসছে, এই নারীবাদকে ইতিহাসের আস্তাকুড়ে ছুঁড়ে ফেলার।ফিলিস্তিনের নারীদের কাছ থেকে আমাদের নতুন নারীবাদের দীক্ষা নিতে হবে।হিন্দু-মুসলমান ভাইদের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সকল প্রকার বৈষম্যবিহীন নতুন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে আমাদের সামিল হওয়ার কোন বিকল্প নাই।
ইসলামোফোবদের সাথে আমাদের কোন সম্পর্ক নাই।
খালাস!
অগাস্ট ২৭, ২০২৪
মঙ্গলবার
উইস্কন্সিন, যুক্তরাষ্ট্র
২| ২৮ শে আগস্ট, ২০২৪ রাত ১:৪৬
কামাল১৮ বলেছেন: ইসলাম নারীদের অনেক খারাপ ভাবে দেখে।তাদের কোন মূল্যায়ন করে না।কোরান থেকে আমি অনেক উদাহরণ দিতে পারবো।সারা বিশ্বেই নারী নির্যাতিত।
আপনার লেখা কেমন ধোঁয়াসা।স্পষ্ট করে লিখলে মন্তব্য করতে সুবিধা হয়।আপনি কি নারীবাদের পক্ষে না বিপক্ষে।
৩| ২৮ শে আগস্ট, ২০২৪ ভোর ৪:০৮
আলচুদুরওয়ালবুদুর বলেছেন: নারীবাদ এখন সারা বিশ্বের ক্যান্সার। বিশেষ করে পশ্চীমা বিশ্বে এর প্রভাব ভয়াবহ, ক্ষেত্রবিশেষে প্রাণঘাতী। নারীবাদ শুরু হয়েছিল নারীদের ভোটাধিকার এবং শিক্ষার অধিকার দিয়ে, কিন্তু আজ তা পরিণত হয়েছে উগ্র-নারীবাদে। আর এই উগ্র-নারীবাদ ২০২৪ এ হয়ে উঠেছে শিশুহত্যা, পুরুষ নির্যাতন, ব্যভিচারতন্ত্র, যৌনতন্ত্র, নারীখামখেয়ালীতন্ত্র এবং নারীতোষকতন্ত্র প্রতিষ্ঠার প্রধান অস্ত্র। আর এই নারীতন্ত্র (gynocracy) প্রতিষ্ঠার জন্য এসব নারীবাদিদের সাথে যোগ হয়েছে পশ্চীমা-ইসলাম (westernized Islam)।
এই উগ্র-নারীবাদ এবং পশ্চীমা-ইসলাম ইদানিং আমাদের দেশেও আস্তে আস্তে গেড়ে বসা শুরু করেছে, এদের কে না বলুন।
৪| ২৮ শে আগস্ট, ২০২৪ ভোর ৬:০৭
ক্লোন রাফা বলেছেন: আপনার লেখা ইসলামোফোবদের বিরুদ্ধে / আমি এদের বিরুদ্ধে আজীবন বলছি । এমনকি নারিবাদিদের’কেও আমি একই কাতারের মনে করি। এরাই সবচাইতে বেশি ক্ষতির কারন নারীদের জন্য।বিস্তারিত আলোচনা করলে আপনার পোষ্টের চাইতে বেশি লিখতে হবে।
কিন্তু একটা বিষয় আপনাকে স্বিকার করতেই হবে । দেশটার। নিয়ন্ত্রন কিন্তু এখন জায়নবাদি/ ইসলামোফোব ,অস্র ব্যাবসায়িদের হাতেই। দেখতে থাকুন, আমার বিশ্বাস মিথ্যা প্রমাণিত হোলেই খুশি হবো । কারন দেশটা যেমন আপনার আমিও দেশেরই সন্তান।
বিঃদ্রঃ ইসলামই সবচাইতে বেশি নারীর অধিকারের ন্যায্যতার পক্ষে।
৫| ২৮ শে আগস্ট, ২০২৪ সকাল ১০:২১
প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন বলেছেন:
অথচ এটা নিয়ে নারীবাদী মুখে কুলুপ এটে ছিল। চিন্তা করেন তো এটা কোন দাড়ি টুপি পরা মানুষ করেছে, তাহলে নারীবাদীরা কি অবস্থা করতো! তার মানে নারিবাদের মুল টার্গেট নারী সুরক্ষা নয়, টার্গেট হল ইসলাম কুপানো। এ নিয়ে আমার পোস্টটা এখানে ক্লিক করে পড়তে পারেন।
২৮ শে আগস্ট, ২০২৪ রাত ৮:৪৮
সায়েমার ব্লগ বলেছেন: আপনার লেখাটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি দলিল! আমি সেভ করে রাখলাম। পরে আরও বিস্তারিত লিখবো। ধন্যবাদ এই লেখা আমার সাথে শেয়ার করবার জন্যে! আপনাকে অনুসরণ করলাম! শুভেচ্ছা!
৬| ২৮ শে আগস্ট, ২০২৪ সকাল ১০:২৯
শ্রাবণধারা বলেছেন: আপনার লেখাটি নারীবাদ এবং ইসলামোফোব সম্পর্ক নিয়ে আরেকটু ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ করলে ভালো হত। সেটা হয়নি বলে ধারনা গুলো কিছু মুখস্থ কথনের মত মনে হল।
উন্নত বিশ্বের প্রেক্ষাপটে আপনার ধারনায় সত্যতা আছে স্বীকার করি। কিন্তু বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ইসলামোফোব নয় জংগিবাদ বেশি প্রাসঙ্গিক আলাপ। আর নারীবাদের সাথে যত ভেজালই যুক্ত থাকুক, আমাদের দেশে যেখানে ধর্মান্ধতা নারীদের কবরের অন্ধকারে রাখার জন্য মরিয়া, সেখানে নারীবাদ অতি প্রাসঙ্গিক শুধু যে আলোচনার জন্য তা নয়, সমাজের সকল প্রতিষ্ঠানে অধিষ্ঠিত করার জন্যও।
৭| ২৮ শে আগস্ট, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪
খাঁজা বাবা বলেছেন: ব্যারিষ্টার মইনুল হোসেন এদের বলেছিলেন চরিত্রহীন
আসলেই তারা তাই।
৮| ২৮ শে আগস্ট, ২০২৪ রাত ৮:৫০
সায়েমার ব্লগ বলেছেন: আপনাদের সবার মূল্যবান মন্তব্য পড়লাম। শীঘ্রই সময় নিয়ে প্রত্যেকে জবাব দেব। প্রীতি ও শুভেচ্ছা রইল!
©somewhere in net ltd.
১| ২৮ শে আগস্ট, ২০২৪ রাত ১:১৯
ডেভিড ডি বলেছেন: এক শ্রেণি তো হরহামেশাই এদেশ আফগানিস্তান, পাকিস্তান হয়ে যাওয়ার ভয় দেখায়, সেখানে আপনার এ লেখা তাদের সকলের জন্য এক প্রকার চপেটাঘাত বলা চলে।