নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সায়েমা খাতুনঃ নৃবিজ্ঞানী, এথনোগ্রাফার এবং গল্পকার

সায়েমার ব্লগ

সায়েমা খাতুনঃ নৃবিজ্ঞানী, গবেষক ও লেখক

সায়েমার ব্লগ › বিস্তারিত পোস্টঃ

কমলা হ্যারিসঃ পশ্চিমা নারীবাদের জঘন্য হিপক্রেসি

০৮ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১২:৫৯

কমলা হ্যারিসের নির্বাচনী প্রচারণার একটা বিরাট অংশ জুড়ে ছিল নারীদের অধিকার, ক্ষমতায়ন এবং এগিয়ে যাওয়ার গাল-গল্প। ডেমোক্রাটদের ভাব দেখে মনে হচ্ছিল, যেন কমলারা হোয়াইট হাউজের গদিতে বসলেই নারীরা রাষ্ট্র ক্ষমতা দখল করে ফেলবে।অথচ, কমলা যখন নির্বাচনী প্রচারণায় আমেরিকাতে নারীর অধিকার নিয়ে কথা বলছিল, গোটা বিশ্ব তখন দেখছিল, প্রগতিশীলতার ধ্বজাধারী ডেমোক্রাটরা টানা ১৩ মাস ধরে গাজায় নারী ও শিশুদের হত্যায় মার্কিন নাগরিকের ট্যাক্সের টাকা নিয়ে যুদ্ধের জন্যে বিলিয়নকে বিলিয়ন ডলার তহবিল পাঠিয়ে যাচ্ছে।অথচ, দেশে মুদ্রাস্ফীতি অসহনীয় আর অর্থনীতির বারোটা বেজে গেছে।পাকিস্তানী লেখক ফাতেমা ভূট্টো ডেমোক্রেসি নাউকে দেয়া আজকের সাক্ষাৎকারে বলছিলেন, যেখানে গাজায় নিহত ৪৩,০০০ মানুষের ৭০% ভাগ নারী ও শিশু - ইসরাইলের তৈরি করা কৃত্রিম দুর্ভিক্ষ ও চিকিৎসার অভাবে প্রতিদিন অগণিত মানুষের মৃত্যু হচ্ছে - নবজাতক বাচ্চাদের মরতে হয়েছে হাসপাতালের ইলেক্ট্রিসিটি বন্ধ করে দেয়ার জন্যে, ডেমদের সরকার যেখানে নিজেরাই গণহত্যার সবচেয়ে বড় শরীক, সেখানে প্রো-চয়েসের আলাপ, গর্ভপাতের অধিকারের আওয়াজ তোলা অশালীন, নারীবাদের প্রতি চূড়ান্ত বেইমানী।নারীবাদের যেখানে নারীদের জীবনের অধিকার রক্ষায় দাঁড়ানোর কথা ছিল, নারীদের মুক্ত জীবনের অধিকারের জন্যে লড়াই করবার কথা, জীবন শেষ করার কথা নয়, যেখানে নারীদের রক্ষার জন্যে ঝাঁপিয়ে পড়বার কথা যখন তারা সবচাইতে বিপন্ন ও নাজুক, তার কোন লক্ষণ কি এইসব প্রগতিশীলদের মধ্যে দেখা গেছে? নৈতিক দেউলিয়াপনা কতটা হলে তারা ভেবেছে, বিয়ন্সে, জেনিফার লোপেজদের মত সেলিব্রেটিদের দিয়ে মানুষকে বোকা বানানো যাবে? তারা ভেবেছিল, সেলিব্রেটিদের মা হওয়ার আনন্দ ও গৌরবগাঁথা শেয়ার করে ভোটারদের উজ্জীবিত করবে, যখন তারা নিজেরাই প্রতিদিন গাজার মায়েদের বিধবা করছে, তাঁদের সন্তানদের এতিম করে ফেলছে! আর আমরা সারা বিশ্বের বাদবাকীরা এভাবে নিষ্ক্রিয় হয়ে প্রতিদিন দেখবো ফিলিস্তিনী মায়েদের দুঃসহ ও অবর্ণনীয় যন্ত্রণা?

কমলার দলের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে ঘটে গেছে বিশ্বের ইতিহাসের প্রথম লাইভ টেলিকাস্ট মহানরমেধযজ্ঞ। মার্কিন ভোটারদের অসন্তোষ, ক্রোধ, হতাশা, বিভীষিকা, দুর্ভাবনা নিয়ে প্রগতিশীলদের শিবিরের দিক নির্দেশনা দেয়ার মত কিছুই অবশিষ্ট ছিল না।বক্তৃতাগুলো ছিল শূন্যগর্ভ বাকোওয়াজ আর পুরনো ভাঙা রেকর্ড।মার্কিন গণতন্ত্রের দেউলিয়াত্ব পুরোপুরি উদাম হয়ে গিয়েছে।নাগরিকদের সামনে না আছে আশাব্যাঞ্জক যোগ্য নেতৃত্ব, না আছে কোন সত্যিকারের বিকল্প। নিতান্তই ট্রাম্প এখনও পর্যন্ত গণহত্যা করবার সুযোগ পায় নাই।মুসলমানরা কালেক্টটিভভাবে ডেমদের শাস্তি হিসাবে ট্রাম্পকে ভোট দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল।ট্রাম্পের নির্বাচনে স্পষ্ট বিজয়ের দিনটি গতকাল ৬ নভেম্বর ছিল সূর্যবিহীন বিষণ্ণ।তিনদিন পর আজ সূর্যের দেখা মিলল।নতুন সূর্যের আলোয় দেখা যায়, যেমনটি যুদ্ধবিরোধী মার্কিন রাজনীতিবিজ্ঞানী ইহুদী লেখক নরমান ফিনকেলস্টেইন বলেন নির্বাচনে যেই জিতুক, হারছি আমরা, বিশ্বের যুদ্ধবিরোধী, শান্তিকামী বৈষম্যবিরোধী জনগণ। কমলা হ্যারিস মার্কিনী উদারনৈতিক সেই নারীবাদের প্রতিনিধি, যারা ফিলিস্তিনি নারীদের সন্তান নিয়ে পরিবারের সাথে সুস্থ-স্বাধীনভাবে নিজের ভূমিতে বেঁচে থাকার অধিকারের সাথে চরমভাবে বেঈমানি করেছে।বিশ্বের নারীদের কমলাদের পশ্চিমা নারীবাদকে এমনভাবে পরিত্যাগ করা উচিৎ, ঠিক যেমনটি তারা গাজার নারীদের করেছে।

বৃহস্পতিবার, ৭ নভেম্বর ২০২৪

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ২:৩৫

সৈয়দ কুতুব বলেছেন: ইসরায়েল কে আরো বেশি সহায়তা করবে ট্রাম্প। ইরানের সাথে যুদ্ধ হওয়ার সম্ভাবনা আছে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.