নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সায়েমা খাতুনঃ নৃবিজ্ঞানী, এথনোগ্রাফার এবং গল্পকার

সায়েমার ব্লগ

সায়েমা খাতুনঃ নৃবিজ্ঞানী, গবেষক ও লেখক

সায়েমার ব্লগ › বিস্তারিত পোস্টঃ

শকুনি মামার প্লে-বুক থেকে সাবধান!

০৩ রা ডিসেম্বর, ২০২৪ রাত ১১:০৮

হিন্দুত্ববাদী ভারতের আয়নায় নিজেদের না দেখুন!পাতা ফাঁদ থেকে দূরে থাকুন!

ভারতীয় হিন্দুত্ববাদী আধিপত্যের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের লড়াই এখন চূড়ান্ত অবস্থায় আছে।এটা আমাদের সকল পক্ষের জন্যে এক অগ্নি পরীক্ষা!দাঙ্গা বাঁধানোর সকল চেষ্টা ব্যর্থ করে দিতে হবে।আমাদের সকলকে হতে হবে শান্তির অতন্দ্র প্রহরী।

এই অগ্নি পরীক্ষায় বাংলাদেশের প্রথম কাজ হল, নৈতিক শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করা।নৈতিক শ্রেষ্ঠত্ব এমন এক শক্তিশালী অস্ত্র, যেখানে বিশাল ভৌগোলিক আকার-আকৃতি, বড় জনসংখ্যা, বিরাট আর্মি - কিছুই কাজে লাগবে না।নৈতিক শ্রেষ্ঠত্ব নিয়ে বেঁচে থাকাও সুখের, মরে গেলেও সুখ!

বাংলাদেশীদের দায়িত্ব হবে, হিন্দুত্ববাদী নীতিতে ভারতীয় মুসলমানদের উপর দশকের পর দশক দশক ধরে যে কাঠামোগত নিপীড়ন চলে আসছে, সেই দমন-পীড়নের প্রতিক্রিয়ায় কোনভাবেই আমাদের হিন্দু ভাই-বোনদের জান-মাল, সম্পত্তি, ব্যাবসা-বানিজ্য, ধর্মস্থান, মন্দির, তাদের আবেগ-অনুভূতির উপর আঘাত না করা, এবং কাউকে আঘাত করতে না দেয়া, বরং শতভাগ "Responsibility to Protect" (R2P)এর অবস্থানে থাকা।এভাবে সমস্ত ভারতীয় "distraction" এর ফাঁদ থেকে নিজেদের রক্ষা করা।সম্প্রীতি বিনষ্টের জন্যে একের পর এক চাল থেকে, থেকে নিজেদের দূরে রাখা।প্রতিটি ভারতীয় ষড়যন্ত্র ও উস্কানির সামনে অটল ধৈর্য ও প্রতিজ্ঞা নিয়ে অবিচলভাবে নতুন স্বাধীন বাংলাদেশকে গড়ে তোলার কাজ করে যাওয়া।দূরদর্শীতার সাথে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে বিরামহীন ভারতীয় কূট প্রোপাগান্ডার যোগ্য জবাব দেয়া।

ভারতে একের পর এক মসজিদ ভাঙা, সারাদেশে মসজিদ-মাজার-খানকাহসহ মুসলমানদের শত শত সকল স্থাপনা, বাড়িঘরের উপর, জানমালের উপর একের পর এক হামলা, আক্রমণ, ও আঘাতের নেতিবাচক প্রতিক্রিয়াতে বাংলাদেশে হিন্দুদের স্থাপনার একটাও ইটও যেন স্পর্শ করা না হয়।কেননা, এটাই আপনার-আমার জন্যে চরম নৈতিক পরীক্ষা।ভারতীয় মুসলমান ভাইবোনদের সুরক্ষার জন্যে আমাদের আরও বেশী নৈতিক, বুদ্ধিদীপ্ত, ও দূরদর্শী উপায় খুঁজে বের করতে হবে।

পবিত্র কোরআনে সুরা ফীলে পরিষ্কারভাবে মুসলমানদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে, যে আল্লাহ্‌র ঘরের হেফাজতের জন্যে কোন মানুষের যুদ্ধ করবার প্রয়োজন নাই, আল্লাহ্‌ স্বয়ং তাঁর ঘরের হেফাজতের জন্যে যথেষ্ট।কেয়ামত পর্যন্ত আল কোরআনের হেফাজতের প্রতিশ্রুতি স্বয়ং আল্লাহ্‌র পক্ষ থেকে দেয়া হয়েছে।কোরআনের হেফাজত, ইসলামের হেফাজতের দায়িত্ব স্বয়ং আল্লাহ্‌র। বিশ্বাসীদের জন্যে এতে কোন সন্দেহ বা অনাস্থার সুযোগ নাই।ফলে বাংলাদেশের মুসলমানেরা সেই প্রতিশ্রুতিতে সম্পূর্ণ আস্থা রেখে দেশ গড়বার কাজে জীবন উৎসর্গ করুন - এই প্রার্থনা করি।হেফাজত করা দরকার নিজের বিশ্বাস ও চরিত্রের, যাকে বলা হয়েছে শ্রেষ্ঠ জিহাদ!আমাদের গড়ে তোলা দরকার উৎপাদন, বাণিজ্য সমৃদ্ধি, সুষম বণ্টন এবং ইনসাফের রাষ্ট্র।হিন্দুভাইদের নিজেদের পবিত্র আমানত হিসাবে গণ্য করুন।তবেই স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভারতীয় কূটনীতি ব্যর্থ হয়ে যাবে।নতুন সংবিধানে সকল সংখ্যালঘুদের বাংলাদেশের নাগরিক হিসাবে পূর্ণ সুরক্ষা ও বিকাশের সুযোগ প্রশস্ত করুন।এভাবে বাংলাদেশ রাষ্ট্র দুনিয়ার বুকে নৈতিক শ্রেষ্ঠত্বের আদর্শ স্থাপন করুক।

এই নতুন বাংলাদেশে আমাদের মনে রাখতে হবে যে, বাংলাদেশের হিন্দুদের বিপন্নতা ও নাজুকতার সবচাইতে বড় ফসল তুলবে হিন্দুত্ববাদী ভারত।দেখতেই পাচ্ছেন, ভারত বাংলাদেশের হিন্দুদের হেফাজতকারী সেজে বাংলাদেশের সকল অভ্যন্তরীণ বিষয়ে একের পর এক হস্তক্ষেপের উসিলা তৈরি করে যাচ্ছে, যেমন খলের ছলের কোন অভাব হয় না।আমাদের আরও মনে রাখতে হবে, ভারতীয় জনগণ ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক সূত্রে আমাদের রক্তের ভাইবোন। তাদের জানা প্রয়োজন যে, ভারতীয় জনগণের জন্যে আমাদের প্রেম-হামদর্দি-ভ্রাতৃত্ব ছাড়া আর কোন অনুভূতি নাই।ভারতীয় বিপুল সংখ্যক গরীব, ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু, নিম্নবর্ণ, অচ্ছুৎ, আদিবাসী, নারী, গৃহহীন, বেকার, - নিম্নবর্গের সকল নিপীড়িত মানুষের জন্যে আমাদের হৃদয় প্রেম ও করুণায় পূর্ণ!ভারতীয় জনতার সাথে বাংলাদেশের জনতার 'পিপল টু পিপল' ঐক্য ও মৈত্রী সুদৃঢ় করে তোলাও এই রাজনীতি ব্যর্থ করে দেয়ার এক মোক্ষম অস্ত্র।সেই দায়িত্বও আমাদের নিতে হবে।আমরা জন্ম জন্ম ধরে হাজার হাজার বছর প্রতিবেশী হিসাবে সুখে-দুঃখে পদ্মা-মেঘনা-যমুনা এবং বঙ্গোপসাগর বিধৌত এই ভূমিতে বাস করে এসেছি।মাত্র দুইশ বছরের ইংরেজ শাসনের আগ পর্যন্ত কোন বড় ধরণের দাঙ্গার ইতিহাস এখানে ছিল না।দক্ষিণ এশিয়ায় কেবল হিন্দু আর মুসলমান সর্বস্ব নয়। বহু ধর্ম-বর্ণ-জাতির বাসভূমি এই অঞ্চল।হিন্দু-মুসলমান বাইনারি, বৈরিতা ও দাঙ্গা একটা কলোনিয়াল হাং ওভার।সেই ইতিহাস চিরতরে অতীতের বিষয়ে পরিণত করে ফেলতে হবে।আমাদের গভীর প্রজ্ঞার অধিকারী পরম বিক্রশালী অসম সাহসী জেন-জি'রা সেটা পেরে উঠবে বলে বিশ্বাস রাখি।ব্রাহ্মণ্যবাদী উচ্চবর্গীয় কর্পোরেট বিলিয়নিয়ারদের করায়ত্ব ভারতীয় রাষ্ট্রযন্ত্র ও মিডিয়ার উন্মাদনার মুখে নিশ্চয়ই বৈষম্য-বিরোধী এই জাতি ত্যাগ ও তিতিক্ষার পরীক্ষা দিয়ে খাঁটি সোনার মত হৃদয় ও রয়েল বেঙ্গলের সাহস নিয়ে প্রশান্ত ও স্থিরচিত্তে এই কঠিন সময় পাড়ি দেবে।

ডিসেম্বর ৩, ২০২৪

#সায়েমারলেখা
#BangladeshIndiaRelations
#SouthAsia
#HinduMuslimWeAllStandTogether

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০২৪ রাত ১১:১৭

জেনারেশন৭১ বলেছেন:



বেকুবী ধরণ্বের ভাবনাচিন্তা।

২| ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০২৪ রাত ১১:২৯

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: চমৎকার লিখেছেন।

আমাদের প্রথম কর্তব্য হলো প্রতিক্রিয়াশীল না হওয়া। একটা ভালো দিক হলো, ইতিমধ্যে অনেক ভারতীয়র মধ্যে পরিবর্তন এসেছে, তারা শেখ হাসিনাকে ভারতে আশ্রয় দেয়াকে পর্যন্ত সাপোর্ট করে না। জুলাই বিপ্লবের সময়ে পশ্চিম বঙ্গের মানুষ আমাদের ছাত্র-জনতার পক্ষে কথা বলেছেন। কিছু উগ্র মৌলবাদী ও মিডিয়াকর্মী অস্থিরতা সৃষ্টির চেষ্টা করছে, সেগুলো ইগনোর করতে হবে।

৩| ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০২৪ রাত ১১:৫৪

উদাসীন মেঘ ১২১৯ বলেছেন: সুন্দর চিন্তা। আপনার এই চিন্তাধারাই বাংলাদেশ। সীমান্তের ওপাশ-এপাশ, দুপাশেই কিছু উগ্রবাদী আছে, যারা অস্থিরতা সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে। আশা করি দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ শুভবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষ এই ধরণের অপেচেষ্টা রুখে দিবে।
ব্লগেও 'জেনারেশন ৭১' জাতীয় কিছু পতিত স্বৈরাচারের দোসর রয়েছে, আপনার কথা যাদের ভালো লাগবে না, ভালো না লাগারই কথা। কারণ এরা 'আগেই ভালো ছিলাম' চিন্তাধারার অর্থাৎ পালিয়ে যাওয়া চোর রাজবংশের একনিষ্ঠ সমর্থক।

৪| ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৪ রাত ২:৪৮

কোমলমতিরপ্যাদানি বলেছেন: উদাসীন মেঘ ১২১৯ বলেছেন: সুন্দর চিন্তা। আপনার এই চিন্তাধারাই বাংলাদেশ। সীমান্তের ওপাশ-এপাশ, দুপাশেই কিছু উগ্রবাদী আছে, যারা অস্থিরতা সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে। আশা করি দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ শুভবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষ এই ধরণের অপেচেষ্টা রুখে দিবে।
ব্লগেও 'জেনারেশন ৭১' জাতীয় কিছু পতিত স্বৈরাচারের দোসর রয়েছে, আপনার কথা যাদের ভালো লাগবে না, ভালো না লাগারই কথা। কারণ এরা 'আগেই ভালো ছিলাম' চিন্তাধারার অর্থাৎ পালিয়ে যাওয়া চোর রাজবংশের একনিষ্ঠ সমর্থক।

৫| ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৪ সকাল ১০:৫২

সৈয়দ মশিউর রহমান বলেছেন: ভারত এখন হিংস্র হায়েনার মতো আক্রমনের চেষ্টা করছে বিভিন্ন উপায়ে তাই এই সঙ্কটকালে আমাদেরকে অসীম ধৈর্য্যের সংগে বিচক্ষণতার সহিত মোকাবেলা করতে হবে। এখন আমাদের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন ঐক্যের।

৬| ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:২৭

রাজীব নুর বলেছেন: বিরক্তকর পোষ্ট।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.