নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

চারুশিল্পী , লেখক

শাহ আজিজ

চারুশিল্পী , লেখক

শাহ আজিজ › বিস্তারিত পোস্টঃ

শাহ্‌ সাহেবের ডায়রি ।। আমের গল্প

০২ রা জুলাই, ২০২৪ দুপুর ১২:২৫



ভোররাত থেকে রিমঝিম শব্দে বৃষ্টি মনটা ভরে গেল খুশিতে । কাঁথা টেনে মুড়িয়ে দিলাম শরীর । হৃদয় মাঝে গুনগুন করে উঠলো - কি সুর বাজে আমার প্রানে আমি জানি মন জানে----------------------------
সকালের নাস্তায় আম পেলাম । আম প্রিয় ফল । এতে সুগার বাড়ে তবু কোন বাধাই আর বাধা হয়ে ওঠে না । আষাঢ় ভাদ্র মাসের বৃষ্টির সাথে আমের এক দারুন সখ্যতা রয়েছে । আম নিয়ে কিছু তথ্য দিই , আমি নিজেও জানতাম না এত কিছু । তবে আমি পাকিস্তান , ফিলিপাইন আর ভারতের আম খেয়েছি । বাংলাদেশের হাড়িভাঙ্গা আমই বেষ্ট সবগুলোর মধ্যে ।


১.তিনটি দেশের জাতীয় ফল এটি। পাকিস্তান, ভারত আর ফিলিপাইনের জাতীয় ফল আম। আর বাংলাদেশের জাতীয় বৃক্ষ হলো আম গাছ।
২. আমের রয়েছে শত শত জাত। বহু বৈচিত্র্যময় জাতের আম রয়েছে অঞ্চল ভেদে এমনকি রয়েছে স্বতন্ত্র জাত। কোনটা রসালো আর মিষ্টি, কোনটা টক, কোনটা আনারসের মতো স্বাদের, আবার সুপারমার্কেট প্রায়শই এমন আমও কিনতে পাওয়া যায় যেগুলো মিশ্র স্বাদের।
৩. ম্যাঙ্গো শব্দটির উৎপত্তি ভারতে। ইংরেজিতে ম্যাঙ্গো শব্দটি সম্ভবত তামিল 'ম্যানকেই' কিংবা তামিল 'মানগা' শব্দ থেকে এসেছে। যখন পর্তুগিজ ব্যবসায়ীরা দক্ষিণ ভারতে বসতি স্থাপন করে, তারা নাম হিসেবে 'ম্যাংগা' শব্দটি গ্রহণ করে।
৪. সারাবিশ্বে প্রায় ৪ কোটি ৬০ মিলিয়ন টন আম উৎপন্ন হয়। প্রায় সবই টমি এটকিন্স জাতের আম। এগুলো দ্রুত বৃদ্ধি পায়, আকারে বড় এবং রঙও সুন্দর, অনেক ধরনের ছত্রাক প্রতিরোধী আর সহজে নষ্টও হয় না এবং দীর্ঘ সময় সুপারমার্কেটে সাজিয়ে রাখা যায়। আর এইসব বৈশিষ্ট্যের জন্যেই এগুলো সারা পৃথিবীজুড়ে রপ্তানি হয়।
৫. পৃথিবী জুড়েই আম পাওয়া যায়। সুপারমার্কেটগুলো বিশ্বের প্রায় সব অঞ্চল থেকেই আম সংগ্রহ করে থাকে। বছরের শুরুর দিকে আম আসে পেরু থেকে, এরপর পশ্চিম আফ্রিকা আর তারপর আসে ইসরায়েল থেকে। মিশর থেকে আম আসে বছরের তৃতীয় ভাগে আর তারপর আমের উৎস হলো ব্রাজিল।
৬. বিশ্বের সবচেয়ে বেশি আম উৎপন্ন হয় ভারতে। দক্ষিণ এশিয়ার দেশটিতে বছরে ১ কোটি ৮০ লাখ টন আম উৎপন্ন হয়- যা কিনা বিশ্বের মোট আম উৎপাদনের ৪০%। কিন্তু আন্তর্জাতিকভাবে বাণিজ্যে এক শতাংশেরও কম আম তারা যোগান দেয়, বেশিরভাগ দেশটির অভ্যন্তরীণ চাহিদাতেই লেগে যায়।
৭. ভারতে প্রথম আম জন্মে পাঁচ হাজার বছর আগে। হিমালয় পর্বতমালার পাদদেশে ভারত এবং মিয়ানমারে প্রথম বন্য আম উৎপন্ন হয় বলে মনে করা হয়। আর প্রথম পাঁচ হাজার বছর আগে আমের চাষ করা হয় ভারতের দক্ষিণ অংশ, মিয়ানমার এবং আন্দামান দ্বীপপুঞ্জে (বঙ্গোপসাগরের একটি দ্বীপপুঞ্জ)।
৮. আমের বিশ্ব ভ্রমণ। আমের উদ্ভব এশিয়ায়, কিন্তু এখন পুরো পৃথিবী জুড়েই আম দেখা যায়।
বলা হয় যে, ১০ম শতাব্দীর শুরুর দিকে আফ্রিকাতে আমের চাষ হয়। ১৪শ শতাব্দীর উত্তর আফ্রিকার মহান পর্যটক ও পণ্ডিত ইবনে বতুতার লেখাতে আমের বিবরণ পাওয়া যায়, তিনি মোগাদিসুতে আম দেখেছেন বলে উল্লেখ করেন। বর্তমানে প্রচুর পরিমাণে আম জন্মে ক্যারিবিয়ান অঞ্চল, ব্রাজিল এমনকি আন্দিজের উষ্ণতম অঞ্চল যেমন পেরুতে। স্পেন হলো একমাত্র ইউরোপীয় দেশ যেখান আম জন্মে- মালাগার তুষারপাত মুক্ত এলাকায়।
৯. সবচেয়ে প্রাচীন আম গাছটি বেঁচে আছে শতাব্দী পর শতাব্দী জুড়ে। বয়স প্রায় ৩০০ বছর। মধ্য ভারতের পূর্ব কান্দেশে আছে গাছটি, আর সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হলো যে প্রাচীনতম গাছটিতে ফল দিচ্ছে!
১০. কাজু বাদাম এবং পেস্তা বাদামের সাথে আমের মিল রয়েছে। আম ড্রুপ জাতীয় ফল: এ ধরনের ফল রসালো এবং পাতলা আবরণ যুক্ত হয়, এর মধ্যভাগে থাকে শক্ত যাকে বলে এন্ডোক্রাপ যেখানে ফলটির বীজ থাকে।
জলপাই, খেজুর এবং চেরিও ড্রুপ জাতীয়। এমনকি যতই বাদাম বলা হোক- কাজু এবং পেস্তাও এই ড্রুপ জাতীয়ই, তাদের কে আমের দু:সম্পর্কের আত্মীয় বলা যায়।
১১. বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের জন্যে আম গাছ খুব পবিত্র। বলা হয়, বুদ্ধ তাঁর সঙ্গী সন্ন্যাসীদের নিয়ে এক শান্তিময় আম বাগানে বসে ধ্যানরত ছিলেন এবং সেখানে বিশ্রাম নিয়েছিলেন।
এরপর থেকে বৌদ্ধদের কাছে আম গাছ পবিত্র বৃক্ষ হিসেবে বিবেচিত হয়।
১২. আম আপনার জন্যে খুবই উপকারী। এক কাপ আমে থাকে ৬০ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি, যুক্তরাজ্যে ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিস-এর প্রস্তাব অনুযায়ী ১৯ থেকে ৬৪ বছরের পূর্ণবয়স্ক মানুষের প্রতিদিন ৪০ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি প্রয়োজন, আর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবিত খাদ্যতালিকায় যা ৬০ মিলিগ্রাম।
আমে রয়েছে ২০ টি ভিন্ন ভিন্ন ভিটামিন এবং খনিজ পদার্থ, যার মধ্যে অধিক পরিমাণে ভিটামিন এ, পটাশিয়াম এবং ভিটামিন বি এর একটি উপাদান ফোলাইট থাকে। আর আছে প্রচুর আঁশ।
১৩. গিনেস বুক এর বিশ্ব রেকর্ড বলছে, বিশ্বের সবচেয়ে বড় আমটির ওজন ৩.৪৩৫ কেজি আর দৈর্ঘ্য ৩০.৪৮ সেন্টি মিটার, পরিধি ৪৯.৫৩ সেমি এবং প্রস্থ ছিল ১৭.১৮ সেমি। ২০০৯ সালে ফিলিপাইনের সার্জিও ও মারিয়া সিকোরো বোডিওনগানের বাগানে আমটি হয়েছিল।

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা জুলাই, ২০২৪ রাত ৮:০৭

সাদা মনের মানুষ বলেছেন: আম আমার খুবই প্রিয় ফল। ফিলিপাইনের বড় আমটা খাওয়া দরকার।

০২ রা জুলাই, ২০২৪ রাত ৯:০৪

শাহ আজিজ বলেছেন: কেউনা কেউ দেশেই ফলাচ্ছে মনে হয় ।

২| ০২ রা জুলাই, ২০২৪ রাত ৮:২৯

ঢাকার লোক বলেছেন: আম সম্বন্ধে অনেক কিছু জানলাম !
আমাদের দেশের জনপ্রিয় ফজলি বা ল্যাংড়া আমও ভালো আম। জাপানি কি যেন এক আম আছে যা দুনিয়ার সব চেয়ে দামি। আজকাল আমাদের দেশেও নাকি কেউ কেউ উৎপাদন করছেন। কিছুদিন আগে কোথাও পড়েছিলাম , ব্রুনাইয়ে কাজ করতেন এক লোক সেদেশ থেকে চাড়া এনে দেশে ৩-৪ কিলো ওজনের আম উৎপাদন করছেন। আমেরিকায় দোকানে মেক্সিকো থেকে অনেক আম আসে। আফ্রিকার নাইজেরিয়াতেও ভালো আম হয়।
আপনার ৪ নম্বরে "৪ কোটি ৬০ মিলিয়ন" লিখেছেন, সম্বভত "৪ কোটি ৬০ লক্ষ " লিখতে চেয়েছিলেন !

০২ রা জুলাই, ২০২৪ রাত ৯:০৩

শাহ আজিজ বলেছেন: ধন্যবাদ মনোযোগী পাঠক । বেশ কয়েক ধরনের আম এসে পড়ায় আমার মুখের স্বাদ বদলে গেছে । গতমাসে মেয়ে চায়না থেকে আম এনেছিল একদম ফিলিপিনো টেস্ট । সম্ভবত ১২ মাসি আম।

৩| ০২ রা জুলাই, ২০২৪ রাত ৮:৩২

ঢাকার লোক বলেছেন: সম্ভবত বানানটা ভুল করেছি, দুঃখিত

০২ রা জুলাই, ২০২৪ রাত ৯:০৬

শাহ আজিজ বলেছেন: সিরিয়াস কোন বিষয় নয় , বোঝা গেলেই হল ।

৪| ০২ রা জুলাই, ২০২৪ রাত ১০:২৩

কামাল১৮ বলেছেন: অনেক নতুন তথ্য জানাগেলো।এখানে অনেক দেশের আম পাওয়া যায়।তবে বেশি আশে মেক্সিকো থেকে।বাংলা টাউনে গেলে বাংলাদেশি আমের ছড়াছড়ি।

০৩ রা জুলাই, ২০২৪ সকাল ৯:৩১

শাহ আজিজ বলেছেন: আম প্রায় সবারই প্রিয় ফল ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.