নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সাইদুল ইসলাম

শাহেদ সাইদ

এখনও বেঁচে আছি

শাহেদ সাইদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

রাজীব হত্যাকান্ড ,গণজাগরণ চত্বর এবং সত্য বলার স্বাধীনতা

২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৩:২৯

কাল রাতে শাহাবাগ গিয়েছিলাম বউ বাচ্চা নিয়ে। আমার ১১ বছরের শিশু কন্যাটিও যখন ফাঁসি চাই স্লোগানে গলা ফাটাচ্ছিল আমি তখন নব্বইএর আন্দোলনের কথা ভাবছিলাম। নব্বইএ মখা আলমগীরের নেতৃত্বে জনতার মঞ্চ হয়েছিল এরশাদের বিরুদ্ধে। আজ এরশাদ মখা আলমগীরদের সহযোদ্ধা। টিএসসিতে ছাত্রদের পাশাপাশি সাংষ্কৃতিক কর্মীরাও জানবাজি রেখে ছিল। রাজনৈতিক দলগুলোর যুগপত আন্দোলনের তীব্রতায় এরশাদের পতন হয়। এরশাদের পতনের পরবর্তী তিনদিন ঢাকার আইন শৃংখলা পরিস্থিতিও ছিল স্মরণকালের মধ্যে সবচেয়ে ভালো। ট্রাফিক পুলিশ ছাড়াই গাড়ি চালকরা লালবাতি সবুজ বাতি মানতে শুরু করেছিল। তবে সে তিন দিনই।

র । সেই আন্দোলনে আওয়ামীলীগ, বিএনপি, জামায়াত একজোট হয়েছিল এরশাদের জাতীয় পার্টির বিপক্ষে। ভোটের আওয়াজ ওঠার সাথে সাথে বিএনপির সাথে আওয়ামীলিগের মিথ্যে প্রণয় শেষ হয়ে গিয়েছিল। এর পর দেখলাম আওয়ামীলীগের সাথে জামায়াতের প্রেম। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবীতে জমে ওঠা সে আন্দোলনে প্রথমে ভাসুরের ভূমিকায় ছিল জাতীয় পার্টি। আন্দোলনের শেষ দিকে এসে আওয়ামীলীগ, জামায়তের সাথে দূরত্ব ঘুঁচে যায় জাতীয়পারটির। এরশাদ তাঁর সব কটি আসনে জিতে সংসদ সদস্য হন। জাতীয় সংসদ এলাকার নকসা পরিবর্তন করে এরশাদের জন্যে সাব জেল নির্মাণ করা হয়। সংসদ অধিবেশনে তোফায়েল আহমেদ এরশাদকে মহান নেতা হিসাবে স্বীকৃতি দিয়ে সংসদ ভবনের নকসা বিকৃতির ব্যাপারটা ধামা চাপা দেবার চেষ্টা করেন। ২০০৬ এ জামায়াত বিএনপির গভীর প্রেমে গণতন্ত্রের নাভিশ্বাস ওঠে। মৃতপ্রায় গণতন্ত্র ওই বছর অক্টোবরে লগি বৈঠার আঘাতে একেবারে কোমায় চলে যায়। গণতন্ত্রের মানসকণ্যা চিকিৎসার জন্যে বিদেশে যাবার আগে সেনা সমর্থিত সরকারের প্রসংসা করেন এবং ক্ষমতায় গেলে ওই সরকারের সকল কর্মকাণ্ডকে বৈধতা দেবেন বলে জন সমক্ষে অঙ্গীকার করেন (যদিও উপজেলা এবং পৌরসভা নিরবাচনে ভরা ডুবির পর তিনি এবং তাঁর স্তাবকরা উল্টো গাইতে শুরু করেছেন)। অন্যদিকে বিএনপি নেত্রী ৯৬এর সেই দুঃসময়ে সংবিধানের রক্ষাকর্তা হিসাবে নিজেকে জাহির করতে যতটা ততপর ছিলেন জনতার মনের ভাষা বোঝার ব্যাপারে ততটাই ছিলেন ঊদাসীন। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবীর বিষয়ে জনগণের ভাষা তাঁর কানে পৌছাতে পৌছাতে ৯৪টি হরতাল পার হয়ে গিয়েছিল। জনতার ভাষা বোঝার ব্যাপারে বিএনপির অবস্থার এখনও তেমন উন্নতি হয়নি। শাহাবাগের আন্দোলনকে প্রথমে তারা ব্লগারদের বালখিল্যতা ধরে নিয়েছিলেন। প্রায় সমগ্র জাতি যখন এই আন্দোলনের সাথে একত্ব হয়েছে তখনও বিএনপির ভাবালুতা কাটেনি।

বাংলাদেশে অনেক আপাত অনায্য দাবীও এক সময় নায্য হয়ে যায় জনতার আন্দোলনের কারনে আর জনতা না চাইলে রাজনীতিবিধ দের কোন কূটনীতিই হালে পানি পায়না। আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামের মুক্তিযুদ্ধ পর্বই তার সবচেয়ে বড় উদাহরণ। ৭০ এর নির্বাচনে বিজয়ের পর আওয়ামীলীগ যখন সংসদে যাবো কী যাবো না এরকম দ্বিধাদন্দ নিয়ে খুনী পাকিস্তানিদের সাথে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছিল, ছাত্ররা তখন নিঃসংসয়ে স্বাধীনতার ইস্তেহার পাঠ করেছে, স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা ঊড়িয়েছে এবং জনগণকে জনযুদ্ধ শুরুর এমন একটা জায়গায় নিয়ে গিয়েছে যেখান থেকে আর ফিরে আসার উপায় ছিল না। এর পরও যারা দোদুল্যমান ছিলেন, ২৫ মার্চ পাকিস্তানিদের আক্রমণের সাথে সাথেই তাদের দ্বিধা ঘুঁচে গিয়েছে। বাঙ্গালির আত্ন রক্ষার মরীয়া চেষ্টা সেই লগ্নেই সূচনা করেছে মুক্তি বেশির ভাগ নেতাই পরবর্তীতে সক্রিয় হয়েছেন।

আমি রাজনীতি বুঝি না, সংবিধানও কম বুঝি। রাজীব হত্যাকান্ডের পর জামায়াত নিষিদ্ধ করার যে দাবী ঊঠেছে তার সাথে একমত পোষণও সম্ভবত করি না। সম্ভবত বললাম ওই সংবিধান বা রাজনীতি না বোঝার কারণেই।কোন দলের রাজনীতি বাতিলের জন্যে যদি সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে করতে হয় তা হলে আওয়ামীলীগের সে ক্ষমতা আছে। নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতার বলে তারা সংবিধান সংশোধণ করে জামায়াতের রাজনীতি বাতিল করতে পারে। মাহাবুবুল আলম হানিফ বিএনপির সহযগিতা চাইছেন কেন বুঝতে পারছি না।তবে দুর্জনেরা এর দুটি কারণ খুঁজে পেয়েছেন। একটি ভোটের রাজনীতি আর একটি সন্ত্রাসের সম্প্রসারণ।ক্ষমতাসীন দল জামায়াতের রাজনীতি নিষিদ্ধ করলেও জামায়েত সমরথকদের ভোটাধিকার কেড়ে নিতে পারবেন কী না ভেবে দেখতে হবে।

আর দ্বিতীয়ত, এই মুহূর্তে জামায়াত নিষিদ্ধ করলে তাদের দাগী কর্মীরা যে চোরা গুপতা হামলা শুরু করবে না এটা বলা মুশকিল। সারা দেশে সন্ত্রাস ছড়িয়ে পড়লে তার চেয়ে দুর্ভাগ্য জনক আর কিছু হবে না। সম্ভবত এ কারণেই দীপু মণি ব্রিটেন কে জামায়াত নিষিদ্ধ না করার ব্যাপারে আশ্বস্ত করেছেন। এক এক মন্ত্রীর এক এক কথা শুনে শেষ পর্যন্ত মন্ত্রীদের পদ্মা সেতু বাতচিতই বার বার মনে পড়ছে।

শেষ করার আগে রাজীবের কথা মনে পড়ছে। রাজীবকে আমি চিনতাম না। রাজীব হত্যাকান্ডের আগে তার ব্লগের কথা আমার জানা ছিলনা। গত কয়েকদিন ধরে রাজীবের ব্লগ এবং রাজীবের নামে প্রচারিত (সহ ব্লগারদের ভাষায়)অনেক গুলি ব্লগ আমি পড়েছি। রাজীবের ব্লগের ভাষা ভালো, তবে মুসলমান না হয়ে শুধু মানুষ হিসাবে পড়লেও তা আমার কাছে সুখ পাঠ্য নয়। বিতর্কিত ব্লগ গুলি বাদ দিয়েই একটি উদাহরণ দেই, ১৯।১২। ২০১২তে তিনি ওমর ফারুক লুক্সের একটি পোষ্টে মহানবী সম্পরকে মন্তব্য করেছেন চাপাবাজ একটা লোক, এখন নাকি মহাপুরুষ!

এত চেয়ে অনেক ছোট ঘটনায় কয়েকদিন আগে রামু কান্দ ঘটেছিল। বিশবের বেশ কয়েকটি দেশে ভ্রমণের অভিজ্ঞতা থেকে আমি বলতে পারি, আমাদের দেশের মত সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি খুব কম দেশেই আছে। এ ধরণের অসতর্ক মন্তব্য শুধু সাম্প্রদায়িকতায় ঊষ্কে দেয়।



তবে রাজীবকে যে বা যারা খুন করেছে, তাদের বিচার হওয়া খুবই জরুরী। এ ধরণের ঘৃণ্য হত্যাকান্ড চলতে দেওয়া যাবে না।

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৩:৩৬

ওরাকল বলেছেন: আমি তখন নব্বইএর আন্দোলনের কথা ভাবছিলাম। নব্বইএ মখা আলমগীরের নেতৃত্বে জনতার মঞ্চ হয়েছিল এরশাদের বিরুদ্ধে

-- ভুল মখা জনতার মঞ্চ করেছিল খালেদার বিরুদ্ধে ৯৬ এ

২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৫:৩০

শাহেদ সাইদ বলেছেন: ভুলটা ধরিয়ে দেবার জন্যে ধন্যবাদ।

২| ২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৩:৪৬

সুনীল রায় বলেছেন: আপনি যে আসলে কি লিখতে চেয়েছেন তা বোধ হয় নিজের কাছেই পরিষ্কার নয়। আপনি লিখেছেন, নব্বইএ মখা আলমগীরের নেতৃত্বে জনতার মঞ্চ হয়েছিল এরশাদের বিরুদ্ধে। এই আপনার জ্ঞানের বহর! মখা আলমগীর জনতার মঞ্চে যোগ দিয়েছিলেন ৯৬ এর আন্দোলনের সময়। জনতার মঞ্চ গঠন করেছিলেন ঢাকার তৎকালীন মেয়র মোঃ হানিফ। মখা তাতে যোগ দিয়েছিলেন। চাকরি থেকে অবসরের পর তিনি আওয়ামীলীগে যোগ দেন এই সুবিধাবাদী দূর্তীতিবাজ আমলা।

আগে নলেজ লেভেল বাড়ান তারপর ব্লগে লিখুন।

২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৫:২৯

শাহেদ সাইদ বলেছেন: ভুলটা ধরিয়ে দেবার জন্যে ধন্যবাদ। আপনি ঠিক ধরেছেন। বিভিন্ন রকম মেরুকরণে আমি আসলে বিভ্রান্ত। আমার জ্ঞানও সামান্যই। এই সুযোগ নিয়েই, আমাদের মত সবাইকে আপনারা নানান সবক দিচ্ছেন।

৩| ২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৩:৪৭

এ আই শ্রাবণ বলেছেন: রাজীবের লেখার তীব্র প্রতিবাদ জানাই. জানাই দাবী, রাজীব হত্যার বিচার চেয়ে... # ধন্যবাদ লেখক কে.

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.