![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমার রাজনীতির হাতে খড়ি হচ্ছিল স্কুলে যাবার পথে। হচ্ছিল বলছি এই কারণে যে শেষ পর্যন্ত তা আর হয়ে ওঠেনি। তখন জাসদের যুগ। দেয়ালে দেয়ালে চিকা দিয়ে তারা ভরিয়ে ফেলেছে। স্কুলে যাওয়া আসার পথে এসডিওর বাড়ির দেয়ালে লেখা দেখি ‘খেয়েছে হোচট হয়েছে খোড়া শেখ মুজিবের লাল ঘোড়া’। স্কুলে ছেলেরা ছড়া কাটে ‘কোসিগিন দিচ্ছে ডিম ইন্দিরা দি দিচ্ছে তা’ বাংলাদেশে ফুটছে শুধু মুজিব বাদের ছা’। একদিন এই ছড়া আওড়াতে গিয়ে আব্বার সামনে পড়ে কানধরে উঠা বসা করতে হলো। যশোর তো তখন বিপ্লবীদের জায়গা। আমাদের বাসার নীচতলায় থাকতেন জাসদের তরুণ নেতা মসিউর ভাই। তাঁর বাহারি বাবরি, কলারের দৈর্ঘ্য আর প্রতিবাদী কথাবার্তার চমকে জাসদের প্রেমে পড়ে গেলাম। এদিকে বাড়ির পাশে জাতীয় ছাত্রদলের (আজকাল এই দলের নাম শুনিনা, বাম ধারার ছাত্রদের দল ছিলো এটা) অফিস, বিকালে খেলতে যাবার আগে পরে সেখানে উঁকি দেই। সেখানে কামরুল হাসান মঞ্জু, ইকবাল কবির জাহিদরা আমাকে চিনতেন। তাদের পয়সায় বাদাম খাবার সময় জাসদ না ছাত্র দল এই নিয়ে কনফিউজড হয়ে যেতাম। এর মধ্যে একদিন মসিউর ভাইএর হাঁক শুনে নিচে নেমে এলাম। তিনি বললেন রাজাকার (তিনি কোন এক অজ্ঞাত কারণে আমাকে রাজাকার ডাকতেন আর আমার বোনকে ডাকতেন আলবদর) এট্টু ঘরে এইসে দেখে আয়তো কারা এইয়েছে। আমি ঘরে ঢুকে অবাক হয়ে গেলা। ঘরের মেঝেতে পাটি পাতা সেখানে শোয়া বসা বেশ কয়েকজন লোক। এর মধ্যে ঝাকড়া চুল আর দাঁড়িওয়ালা মেজর জলিল কে চিনতে পারলাম। পত্রিকায় তাঁর ছবি দেখেছি কয়েকবার।
ঢাকা থেকে কেন্দ্রীয় নেতারা যশোরে এসেছেন জনসভার জন্যে। তখন পার্টির এত পয়সা ছিলো না। কর্মীদের বাড়িতেই তাঁদের থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা হত। মসিউর ভাই একা একা তাদের সেবা যত্ন করতে হিমসীম খাচ্ছেন। আমি মোটে ফোরে পড়ি আমাকে দিয়ে তেমন কাজ হবে না। তবে দোকান থেকে পান সিগারেট এনে দেওয়া, ভ্রমণক্লান্ত নেতাদের হাত পা টিপে দেওয়ার কাজটা করতে পারলাম। বিকেলে মসিউর ভাইএর রিক্সায় চেপে শহীদ মসিউর রহমান স্কুলের মাঠে জন সভায় গিয়ে সামনের দিকে বসতেও পারলাম। জনসভা শেষ হতে হতে সন্ধায় হয়ে গেল। সন্ধায় মশাল মিছিল। সবার সাথে আমিও একটি মশাল নিতে চেয়েছিলাম মসিউর ভাইয়ের কারণে তা হলনা। তিনি আমার হাতে একটি প্ল্যাকার্ড ধরিয়ে দিলেন। সেখানে লেখা মুজিববাদের অপরনাম ১০০ টাকা চালের দাম। (তখন ১০০ টাকা চালের মণ হয়েছিলো, তাতেই নাভিশ্বাস উঠে যেত মানুষের)। আমার প্রায় চারফুট শরীরের সাথে সে প্ল্যাকার্ড ও মানানসই নয়। মিছিলে শ্লোগানের সাথে প্ল্যাকার্ডও ঝাকাতে হচ্ছিল মাঝে মধ্যে। মিছিল শহর প্রদক্ষিণ করতে করতে আমার বাসার সামনে চলে আসার পর হঠাত কানে প্রচন্ড টান অনুভব করতে করতে ডান পাটি শূণ্যে উঠে যাচ্ছে টের পেলাম। প্ল্যাকার্ড সামলাতে সামলাতে দেখি আব্বা পাশে দাঁড়ানো, তার হাতে আমি কান ধরা হয়ে ঝুলে আছি। লম্বা কলারের মসিউর ভাই, ঝাকড়া চুলের জলিল সাহেব এবং প্ল্যাকার্ড ফেলে আমি বাবার অনুগামী হলাম। তিনি বললেন বললেন প্ল্যাকার্ড ফেলিস নে, তোর জন্যে আবার কোথায় লাঠি খুঁজতে যাবো!
১৮ ই জুলাই, ২০১৫ রাত ৮:১৬
শাহেদ সাইদ বলেছেন: আপনাকে ধন্যবাদ
২| ০৪ ঠা জুলাই, ২০১৪ রাত ৩:৪৮
শেখ আজিজুর রহমান বলেছেন: পড়তে ভালই লাগল…… তবে কথা হল এখন আর আগের মত আন্দুলন হয়না কারন নেতারা ত আর রিক্স চরে আসেনা, এখন নেতা-কর্মীরা সাধারন মানুষের গাড়ির উপর হামলা চালায় আর সরকার তাদের উপর চালায় গুলি.
১৮ ই জুলাই, ২০১৫ রাত ৮:১৭
শাহেদ সাইদ বলেছেন: সহমত
৩| ০৭ ই জুলাই, ২০১৫ সকাল ৮:০৪
মন্জুরুল আলম বলেছেন: খোদায় রহম করছিল তাই রাজনীতি আপনারে ধরে নাই।
মেজর জলিলরা ফাঁসিতে ঝুলে আর ইনুরা মন্ত্রী হয়। সেলুকাস।
১৮ ই জুলাই, ২০১৫ রাত ৮:১৮
শাহেদ সাইদ বলেছেন: মেজর জলিলরা ফাঁসিতে ঝুলে আর ইনুরা মন্ত্রী হয়
সত্যিই বিচিত্র
©somewhere in net ltd.
১|
০৪ ঠা জুলাই, ২০১৪ রাত ৩:২৬
সচেতনহ্যাপী বলেছেন: তারপরও বেচে আছেন বলে স্বাগতম।