নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সাইদুল ইসলাম

শাহেদ সাইদ

এখনও বেঁচে আছি

শাহেদ সাইদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

উনিশশ' একাত্তর ৯

০৯ ই জুলাই, ২০১৪ রাত ৯:৫১



২৪ মার্চ রাত ২টায়*, ব্রাম্মণবাড়িয়ার নিয়াজ পার্কের কাছের পুলে বাঁধা পেয়ে থেমে গেল মেজর খালেদ মোশাররফের বহর। সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় কুমিল্লা থেকে ২৮ টি গাড়ি আর আড়াইশ সৈন্য নিয়ে শমসের নগরের পথে রওনা হয়েছিলেন তিনি।

সকালে ফোর (৪) বেঙ্গলে তাঁর অভ্যর্থনাটা ভালো হয়নি। বেশ কয়েক মাস ব্রিটিশ আর্মির সাথে কাটিয়ে মার্চের তৃতীয় সপ্তায় ঢাকায় ফিরেই তিনি শুনতে পেলেন তাঁর পোষ্টিং হয়েছে কুমিল্লায়, ফোর বেঙ্গলের উপঅধিনায়ক হিসাবে। বিদেশে যাবার আগে তিনি ছিলেন ঢাকার ৫৭ ব্রিগেডের ব্রিগেড মেজর। ব্রিগেডের সব অপারেশনের নাড়ি নক্ষত্র তাঁর জানা ছিলো। কমান্ডারসহ অন্যন্য অফিসারদের সাথেও তার সম্পর্ক ছিলো চমৎকার। কিন্তু ফেরত আসার পর থেকে মনে হচ্ছিলো কোথায় যেন একটা ছন্দ পতন ঘটেছে, আসার প্রায় সাথে সাথেই ১৯ তারিখে তাঁকে ধরিয়ে দেওয়া হলো বদলির আদেশ। কম্যান্ডার বললেন, ‘দেরি করা ঠিক হবেনা। ফোর বেঙ্গল অনেক ঝামেলায় আছে, খিজির প্রায় প্রতিদিনই টু আইসি চাচ্ছে। তুমি দ্রুত গিয়ে জয়েন কর। খালেদ বুঝলেন, তারমানে জয়েনিং টাইম দেওয়া হবে না ( স্থায়ী বদলির সময় গোছগাছ, দায়িত্ব বুঝিয়ে দেবার অফিসারদের কয়েকদিনের ছুটি দেওয়া হয়)। তিনি দুই মেয়ে আর স্ত্রীকে ঢাকায় রেখে ২২ তারিখে পৌছালেন কুমিল্লায়। প্রজাতন্ত্র দিবসের ছুটির কারণে পরদিন আর অফিসে না গিয়ে ২৪ তারিখ সকালে রিপোর্ট করলেন, অধিনায়ক লেঃ কর্নেল খিজির হায়াতের কাছে। তিনি বললেন, ‘কত রকম সমস্যায় যে আছি , তুমি এসেছো, হাফ ছেড়ে বাঁচলাম। ১ তারিখ থেকে সাদিক নওয়াজ আর শাফায়েত জামিল কোম্পানি নিয়ে রয়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়, বামপন্থীদের যে উৎপাত





বেড়েছে, তোমাকেও একটি কোম্পানি নিয়ে শমশের নগর যেতে হবে। খালেদ রাজী হলেন না। বললেন, ‘আমি আজ কেবল জয়েন করলাম, এখনও তো কিছুই বুঝে নেই নাই। আর কোম্পানি নিয়ে টু আই সি কে যেতে হবে কেন? জুনিয়ার কাউকে পাঠাই’। খিজির বুঝলেন খালেদকে সহজে সরানো যাবে না। বললেন, ‘ ঠিকাছে তুমি অফিসে গিয়ে দায়িত্ব বুঝে নাও পরে ডাকবো’। অফিসে যাবার সময় খালেদের মনে হলো, তাদের ইউনিটের চারিদিকে অন্য ইউনিটের সৈনিকরা ট্রেঞ্চ খুঁড়েছে।

দশটার দিকে আবার ডাক পড়লো অধিনায়কের অফিসে। খিজির বললেন, ‘কমান্ডার ডেকেছেন’। কুমিল্লার ৫৩ ব্রিগেডের কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার ইকবাল শফি। কুমিল্লা থেকে শুরু করে তার অপারেশনাল এরিয়া উত্তরে সিলেট আর পূর্বে চট্টগ্রাম পর্যন্ত বিস্তৃত। তিনি খালেদকে বললেন, I have chosen you for a very important task. কিছু বললেন না খালেদ। কমান্ডার বললেন, The situation at Sylhet area is very volatile. The communists are up to something. Although there are 2 EPR companies, but you know they are not dependable. এবারও কিছু বললেন না খালেদ। ইকবাল শফি বললেন, we need a responsible Bengalee officer there. এতক্ষণে মুখ খুললেন খালেদ, ‘ আপনি যে সিচুয়েশন বললেন স্যার, তাতে আমার মনে হয় এক কোম্পানি সৈনিকে হবেনা। আর অটোমেটিকস বেশি লাগবে। যোগাযোগের জন্যে এইচ এফ সেট লাগবে আর ব্যাটালিয়ন মর্টারও নিতে হবে। খিজির আপত্তি করলেন, ‘না এত ওয়েপন নিয়ে কী করবে? খালেদ অনড়, তিনি বললেন কমান্ডার যে সিচুয়েশনের কথা বলেছেন তার মোকাবেলা করতে দিজ আর বেয়ার এসেন্সিয়াল। ইকবাল শফি আর কথা বাড়ালেননা। বললেন গিভ হিম হোয়াটেভার হি ওয়ান্টস’।

ইউনিটে ফিরে এসে ক্যাপ্টেন গাফফারকে** ডাকলেন খালেদ। ইউনিটের এডজুটেন্ট এই তরুণ ক্যাপ্টেন চোখ-কান খোলা অফিসার। সেনানিবাস এবং সেনানিবাসের বাইরের পরিস্থিতি সম্পর্কে কম বেশি তাঁর জানা। টু আইসির কাছ থেকে নির্দেশ পেয়ে তিনি পুরো ব্যাটালিয়ন থেকে বেছে ২৫০ জন সৈনিক জড়ো করলেন আলফা কোম্পানিতে। ব্রিগেড থেকে ২৬টি ট্রাক দেওয়া হয়েছিলো পরিবহনের জন্যে সে গুলোর কয়েকটিতে বঝাই হলো এক মাস যুদ্ধ করার মত অস্ত্র, গোলা বারুদ আর রেশন। ব্রিগেড নেটের ভিএইচএফ সেট ছাড়াও একটি এইচ এফ সেট দেওয়া হলো, দূর থেকে যোগাযোগের জন্যে।

এত বড় বহর এমনিতেই ধীরে চলে তারপর আবার পথে পথে ব্যারিকেড সরিয়ে আসতে হচ্ছিলো তাকে। কিন্তু নিয়াজ পার্কের সামনের অভিনব ব্যারিকেডটি তিনি আর পার হতে পারলেন না। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ছাত্র নেতা হুমায়ুন ও তার সঙ্গী সাথিরা রাস্তার উপর শুয়ে ছিলেন তাদের পথ আগলে। চারিদিকে জনতার ঢেউ দেখে তাঁকে নামতে হলো রাস্তায়।

তিনি বললেন, আমি আপনাদের লিডারের সাথে কথা বলতে চাই। জনতার গর্জনে প্রথমে তাঁর কথা শোনা গেলনা। একটু পর একদল লোক এগিয়ে এসে তাঁকে প্রায় ঘিরে ধরলো। তিনি বললেন, ‘যে কোন একজন কথা বলেন’। জনতা একটু নিরব হলো এ কথায়। যিনি এগিয়ে গেলেন তাঁর নাম লুতফুল হাই সাচ্চু***। ব্রাহ্মণ বাড়িয়া থেকে গণ পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। খালেদ বললেন, ‘আমরা বেঙ্গল রেজিমেন্টের সৈনিক, শমসের নগর যাচ্ছি সরকারি কাজে’। সাচ্চু মৃদু হাসলেন, ‘পাব্লিক তো আপদের যাইবার দিতে চায় না’। খালেদ বললেন, ‘আমরা তো আপনাদের নিরাপত্তার জন্যেই যাচ্ছি, আমাদের পথ ক্লিয়ার করার ব্যবস্থা করেন’। সম্মিলিত জনতার মধ্যে থেকে কেউ একজন বললো, কাইল মুজিব ভাই স্বাধীন বাংলার পতাকায় সালাম দিছেন, মিলিটারি বারাইতে পারতো না’। সাচ্চু বললেন, ‘শোনলেন তো পাব্লিকের কথা, হ্যারা রাস্তা ছাড়তো না’।

খালেদ পড়লেন মহা বিপদে। এরই মধ্যে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌছালেন মেজর সাফায়েত জামিল। তিনি মার্চ মাসের শুরু থেকেই কোম্পানি নিয়ে ঘাঁটি গেড়েছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়। স্থানীয় নেতারা তাঁকে দেখে ভরসা পেলেন ঠিকই। তবু জনতা পথ ছাড়লো না। তিনি খালেদ মোশারফ কে সালাম দিয়ে বললেন, ‘Sir, let’s go to our camp, everything will be settled’.

ক্যাম্পে নেতাদের কথা দিতে হলো, খালেদ এই অস্ত্র বাঙালিদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করবেন না। পরদিন দুপুর দুইটায় পৌছালেন তিনি শমসের নগর।

সূত্রঃ এম আর আখতার মুকুলঃআমিই খালেদ মোশাররফ, মেজর আখতার আহমেদঃ বার বার ফিরে যাই। সিদ্দিক সালিকঃউইটনেস টু সারেন্ডার। মেজর সাফায়েত জামিলের সাক্ষাতকার।

*ইংরেজিতে 2’o clock in the morning on 25th March

* * কর্নেল আব্দুল গাফফার হালদার, এরশাদ সরকারের বাণিজ্য মন্ত্রী

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ০৯ ই জুলাই, ২০১৪ রাত ১০:০১

খাটাস বলেছেন: মুক্তিযুদ্ধের গল্প বরাবরই অনন্য।

০৯ ই জুলাই, ২০১৪ রাত ১০:৩৬

শাহেদ সাইদ বলেছেন: যারা পড়ছেন তাদের অনুরোধ করবো সবগুলো পর্ব পড়তে। টুকরা টাকরা গল্প গুলো জোড়া দিয়ে পুরো ছবিটা তৈরি করতে

২| ০৯ ই জুলাই, ২০১৪ রাত ১০:০৯

আমি নী বলেছেন: প্রিয়তে । । ।

০৯ ই জুলাই, ২০১৪ রাত ১০:৩৮

শাহেদ সাইদ বলেছেন: লেখক বলেছেন: যারা পড়ছেন তাদের অনুরোধ করবো সবগুলো পর্ব পড়তে। টুকরা টাকরা গল্প গুলো জোড়া দিয়ে পুরো ছবিটা তৈরি করতে । মুক্তি যুদ্ধ গোটা একটি জাতির গল্প। প্রতিটি মানুষই যার যার ভূমিকায় অনন্য।

৩| ০৯ ই জুলাই, ২০১৪ রাত ১১:০২

াহো বলেছেন:
তাজউদ্দিন কালুরঘাট বেতারের উল্লেখ করছে , আপনার আগের লেখার দাবিটি ভুল ,এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা


২৫শে মার্চ মাঝরাতে ইয়াহিয়া খান তার রক্তলোলুপ সাঁজোয়া বাহিনীকে বাংলাদেশের নিরস্থ মানুষের ওপর লেলিয়ে দিয়ে যে নরহত্যাযজ্ঞের শুরু করেন তা প্রতিরোধ করবার আহ্বান জানিয়ে আমাদের প্রিয় নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন।
প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীনের যুদ্ধকালীন প্রথম ভাষণ
জিয়া সহ পাঁচ সেনা কর্মকর্তার নাম উল্লেখ তাদের যুদ্ধের জন্য
তাজউদ্দীনের ভাষণ link---http://www.samakal.net/2013/07/23/7512




১০ ই জুলাই, ২০১৪ রাত ১:৩০

শাহেদ সাইদ বলেছেন: মুক্তি যুদ্ধ আবেগের বিষয় ছিলো, তবে মুক্তি যুদ্ধ সংক্রান্ত লেখায় আবেগ কম থাকা ভালো, আমি আমার লেখায় এখন পর্যন্ত স্বাধীনতার ঘোষণা প্রস্নগে উল্লেখ করিনি কাজচেই আমার আগের লেখা ভুল এ তথ্যটি সঠিক নয়। আপনি পরের মন্তব্য গুলিতে দেয়া তথ্য গুলির জন্যে আপনাকে ধন্যবাদ। তবে এ তথ্য গুলি বিদেশি সূত্র বলেই সঠিক ধরে নেবার কোন কারণ নেই।

৪| ০৯ ই জুলাই, ২০১৪ রাত ১১:১৮

াহো বলেছেন:



কিছু তথ্য




বই / ভিডিও প্রয়োজন নেই .বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষক কে, প্রথম রাষ্ট্রপতি কে এসবই বলা আছে .
বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র

মুজিবনগর, বাংলাদেশ ১০ এপ্রিল ১৯৭১(কার্যকর ১৯৭১ সনের ২৬শে মার্চ থেকে ১৯৭২ ডিসেম্বর ১৬ তারিখে যখন দেশের নতুন সংবিধান)

১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল মুজিব নগর থেকে স্বাধীনতার ঘোষনাপত্র জারি করা হয় এবং এর মাধ্যমে গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার গঠন করা হয়। শপথ গ্রহণ করেন ১৭ এপ্রিল।
স্বাধীনতার ঘোষনাপত্র ১৯৭১ সনের ২৬শে মার্চ থেকে কার্যকর । যতদিন বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চলেছে ততদিন মুজিবনগর সরকার পরিচালনার অন্তর্বর্তীকালীন সংবিধান হিসেবে এই ঘোষণাপত্র কার্যকর ছিল। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর স্বাধীন বাংলাদেশের জন্ম হওয়ার পরও এই ঘোষণাপত্র সংবিধান হিসেবে কার্যকর ছিল। ১৯৭২ সালের ডিসেম্বর ১৬ তারিখে যখন দেশের নতুন সংবিধান প্রণীত হয় তখন সংবিধান হিসেবে এর কার্যকারিতার সমাপ্তি ঘটে।

সেদিন মুজিবনগরে শেখ মুজিবুর রহমানকে রাষ্ট্রপতি, সৈয়দ নজরুল ইসলামকে উপ-রাষ্ট্রপতি এবং তাজউদ্দীন আহমদকে প্রধানমন্ত্রী করে গঠিত হয় বাংলাদেশের প্রথম সরকার। তবে পাকিস্তানের কারাগারে বন্দি বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে উপ-রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলামকে করা হয় অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি।

এপ্রিল ১৭ তারিখে গণপরিষদের সদস্য এম ইউসুফ আলী আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র পাঠ করেন.

=======================================
স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র
(কার্যকর ১৯৭১ সনের ২৬শে মার্চ থেকে ১৯৭২ ডিসেম্বর ১৬ তারিখে যখন দেশের নতুন সংবিধান)

(১০ এপ্রিল, ১৯৭১)

যেহেতু ১৯৭০ সালের ০৭ ডিসেম্বর ১৯৭১ সালের ১৭ জানুয়ারি পর্যন্ত একটি শাসনতন্ত্র রচনার অভিপ্রায়ে প্রতিনিধি নির্বাচনের জন্য বাংলাদেশে অবাধ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল

এবং

যেহেতু এই নির্বাচনে বাংলাদেশের জনগণ তাদের ১৬৯ জন প্রতিনিধির মধ্যে ১৬৭ জনই আওয়ামী লীগ থেকে নির্বাচিত করেছিলেন

এবং

যেহেতু জেনারেল ইয়াহিয়া খান একটি শাসনতন্ত্র রচনার জন্য ১৯৭১ সালের ০৩ মার্চ জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের অধিবেশন আহ্বান করেন

এবং

যেহেতু আহূত এ পরিষদ স্বেচ্ছাচার ও বেআইনিভাবে অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত ঘোষণা করা হয়

এবং

যেহেতু পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী তাদের প্রতিশ্রুতি পালনের পরিবর্তে বাংলাদেশের গণপ্রতিনিধিদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা চলাকালে একটি অন্যায় ও বিশ্বাসঘাতকতামূলক যুদ্ধ ঘোষণা করে

এবং

যেহেতু উল্লেখিত বিশ্বাসঘাতকতামূলক কাজের জন্যে উদ্ভূত পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশের সাড়ে সাত কোটি মানুষের অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার অর্জনের আইনানুগ অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্যে ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ ঢাকায় যথাযথভাবে স্বাধীনতা ঘোষণা করেন এবং বাংলাদেশের অখণ্ডতা ও মর্যাদা রক্ষার জন্যে বাংলাদেশের জনগণের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান

এবং

যেহেতু পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী একটি বর্বর ও নৃশংস যুদ্ধ পরিচালনাকালে বাংলাদেশের অসামরিক ও নিরস্ত্র জনসাধারণের বিরুদ্ধে অগুনতি গণহত্যা ও নজিরবিহীন নির্যাতন চালিয়েছে এবং এখনো চালাচ্ছে

এবং

যেহেতু পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী অন্যায় যুদ্ধ, গণহত্যা ও নানাবিধ নৃশংস অত্যাচার চালিয়ে বাংলাদেশের জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের একত্র হয়ে একটি শাসনতন্ত্র প্রণয়ন করতে ও নিজেদের সরকার গঠন করতে সুযোগ করে দিয়েছে

এবং

যেহেতু বাংলাদেশের জনগণ তাদের বীরত্ব, সাহসিকতা ও বিপ্লবী কার্যক্রমের দ্বারা বাংলাদেশের ভূ-খণ্ডের উপর তাদের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়েছে

সেহেতু

সার্বভৌম ক্ষমতার অধিকারী বাংলাদেশের জনগণ নির্বাচিত প্রতিনিধিদের পক্ষে যে রায় দিয়েছে, সে মোতাবেক আমরা, নির্বাচিত প্রতিনিধিরা আমাদের সমবায়ে গণপরিষদ গঠন করে পারস্পরিক আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশের জনগণের জন্যে সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা আমাদের পবিত্র কর্তব্য বিবেচনা করে আমরা বাংলাদেশকে সার্বভৌম গণপ্রজাতান্ত্রিক রাষ্ট্রে রূপান্তরিত করার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করছি এবং এতদ্বারা পূর্বাহ্নে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীনতা ঘোষণা অনুমোদন করছি

এবং

এতদ্বারা আমরা আরও সিদ্ধান্ত ঘোষণা করছি যে, শাসনতন্ত্র প্রণীত না হওয়া পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রপ্রধান ও সৈয়দ নজরুল ইসলাম উপ-রাষ্ট্রপ্রধান পদে অধিষ্ঠিত থাকবেন

এবং

রাষ্ট্রপ্রধান প্রজাতন্ত্রের সশস্ত্র বাহিনীসমূহের সর্বাধিনায়ক হবেন,

রাষ্ট্রপ্রধানই ক্ষমা প্রদর্শনসহ সর্বপ্রকার প্রশাসনিক ও আইন প্রণয়নের ক্ষমতার অধিকারী হবেন,

তিনি একজন প্রধানমন্ত্রী ও প্রয়োজনবোধে মন্ত্রিসভার অন্যান্য সদস্য নিয়োগ করতে পারবেন,

রাষ্ট্রপ্রধানের কর ধার্য ও অর্থব্যয়ের এবং গণপরিষদের অধিবেশন আহ্বান ও মুলতবির ক্ষমতা থাকবে এবং বাংলাদেশের জনগণের জন্যে আইনানুগ ও নিয়মতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠার জন্য অন্যান্য সকল ক্ষমতারও তিনি অধিকারী হবেন।

বাংলাদেশের জনগণের দ্বারা নির্বাচিত প্রতিনিধি হিসেবে আমরা আরও সিদ্ধান্ত ঘোষণা করছি, যে কোনো কারণে যদি রাষ্ট্রপ্রধান না থাকেন অথবা কাজে যোগদান করতে না পারেন অথবা তাঁর দায়িত্ব ও কর্তব্য পালনে যদি অক্ষম হন, তবে রাষ্ট্রপ্রধানকে প্রদত্ত সকল ক্ষমতা ও দায়িত্ব উপ-রাষ্ট্রপ্রধান পালন করবেন।

আমরা আরও ঘোষণা করছি যে, বিশ্বের একটি জাতি হিসেবে এবং জাতিসংঘের সনদ মোতাবেক আমাদের উপর যে দায়িত্ব ও কর্তব্য আরোপিত হয়েছে তা আমরা যথাযথভাবে পালন করব।

আমরা আরও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করছি যে, আমাদের স্বাধীনতার এ ঘোষণা ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ থেকে কার্যকরী বলে গণ্য হবে।

আমরা আরও সিদ্ধান্ত ঘোষণা করছি যে, আমাদের এই সিদ্ধান্ত কার্যকরী করার জন্যে আমরা অধ্যাপক ইউসুফ আলীকে ক্ষমতা দিলাম এবং রাষ্ট্রপ্রধান ও উপ-রাষ্ট্রপ্রধানের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান পরিচালনার দায়িত্ব অর্পণ করলাম।


===========================================================================================
1971/1972 সংবাদপত্রে
বিএনপি নেতার নাম খুঁজে পাচ্ছি না.
নিউ ইয়র্ক টাইমস
নিউজউইক
টাইম ম্যাগাজিন ইউএসএ
টাইমস সংবাদপত্র ইউকে

===================

বিশ্ব বিখ্যাত টাইম ম্যাগাজিন ইউএসএ


1) পাকিস্তান এখন শেষ --শেখ মুজিব---15 মার্চ 1971

2)শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতা ঘোষণা করেছেন --Apr. 05, 1971
--The World: Pakistan: Toppling Over the Brink

3)গত মার্চে পাকিস্তান সেনাবাহিনী ধ্বংসযজ্ঞ চালানোর পর বিশ্বব্যাংকের পরিদর্শকদের একটি বিশেষ টিম কিছু শহর প্রদক্ষিণ করে বলেছিলেন, ওগুলোকে দেখতে ভুতুড়ে নগরী মনে হয়। এরপর থেকে যুদ্ধ শেষ হওয়া পর্যন্ত এহেন ধ্বংসলীলার ক্ষান্তি নেই। ৬০ লাখ ঘরবাড়ি মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়া হয়েছে এবং ২৪ লাখ কৃষক পরিবারের কাছে জমি চাষের মতো গরু বা উপকরণও নেই। পরিবহনব্যবস্থা পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে। রাস্তাঘাট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, পুল-কালভার্টের চিহ্নও নেই এবং অভ্যন্তরীণ নৌ-যোগাযোগেও অনেক বাধাবিঘ্ন। ---শেখ মুজিবুর রহমান : বন্দি থেকে বাদশা / টাইম সাময়িকী ১৭ জানুয়ারি ১৯৭২

4)Bangladesh have suffered three consecutive years of natural or man-made disasters—a calamitous cyclone in 1970, the civil war in 1971, and a crop-crippling drought this year. Jan. 01, 1973

5)শেখ মুজিবের সময়কালে ৬০০০ হাজারের ও বেশী মানুষ সহিংসতা নিহত (মুজিব।। স্থপতির মৃত্যু Time Magazine USA আগষ্ট ২৫,১৯৭৫).

6)বাংলাদেশ. "বাস্কেট কেস", নয়, Jan. 01, 1973

১০ ই জুলাই, ২০১৪ ভোর ৪:১৭

শাহেদ সাইদ বলেছেন: স্বাধীনতার ঘোষণা প্রসঙ্গে আমি এখনও লিখিনি। তাই এই বিষয়ে আমি এখনই কিছু বলছিনা। তবে মুজিবনগরে ঘোষিত স্বাধীনতা ঘোষণা আদেশের পরিপ্রেক্ষিতটা বুঝতে হলে আপনাকে, মঈদুল হাসানের মূল ধারা পড়তে হবে। আর স্বাধীনতার ঘোষণা বিষয়ে আরও নিশ্চিন্ত হতে হলে আপনি প্রথমা প্রকাশনীর মুক্তিযুদ্ধের পূর্বাপার, ইন্টারন্যাশনাল হেরাল্ড ট্রিবিউন ৩০/৩/১৯৭১, স্টেটসম্যান ২৯/৩/১৯৭১, স্টেটস ডিপার্টমেন্টের টেলিগ্রাম, সহ আরো অনেক বই পুস্তক আপনাকে একাধিক বার পড়তে হবে

৫| ১০ ই জুলাই, ২০১৪ ভোর ৫:১৫

াহো বলেছেন:
আপনি নিম্নলিখিত কাগজ 1971 অনলাইন পড়তে পারেন
টাইম সাময়িকী USA
নিউ ইয়র্ক টাইমস /
The Times London
Guardian Newspaper UK
Times of India(Its not their website but some foreign library has digital copy)

এক ডলার আপনি সংবাদপত্র আর্কাইভ এক্সেস পেতে পারেন .
1971 থেকে আমাদের ইতিহাসের অনেক প্রশ্নের উত্তর...

====================




লন্ডনের টাইমস পত্রিকায় ২৭শে মার্চ, ১৯৭১
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষনার খবর




নিউ ইয়র্ক টাইমস
(২৭শে মার্চ, ১৯৭১)
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষনার খবর





-Times of India 27 March 1971
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষনার খবর






এটা 75 এর 07 November পত্রিকা.Where it said Zia announce 27 March 1971


এটা 75 এর 07 November পত্রিকা.Where it said Zia announce 27 March 1971

========================

১৯৭১ ও ৭২ এর কিছু পত্রিকা যা আগে দেখিনি
Click This Link

৬| ১০ ই জুলাই, ২০১৪ রাত ১০:৫২

শাহেদ সাইদ বলেছেন: দলকানা মানুষের মত ফালাফালি না করে অপেক্ষা করেন, আমি এখন পর্যন্ত
২৪ মার্চের মধ্যে আছি। পরের এপিসোড গুলিতে আপনার সন্দেহ দূর করার যথেষ্ট উপাদান থাকবে। বিদেশি ধরা ছোয়ার বাইরের নয়, খাটি দিশি

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.