![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
রাজনীতি আমার ভালো লাগেনা। শুভাকাঙ্ক্ষীরা রাজনীতি কপচাতে নিষেধ করেছে। করিও না। কর্ণেল তাহেরের একটি জবানবন্দী পেলাম, এটা রাজনীতি কীনা জানি না। মনে হল এটি একটি পোষ্টে দেওয়া দরকার। কর্ণেল তাহেরকে নিয়ে আমার আরও কাজ করার ইচ্ছে আছে।
_____________________________________________________
কর্নেল তাহেরের সাক্ষ্য
‘১৫ আগস্ট সেনাবাহিনীর একটি অংশ এবং কতিপয় অফিসারের হাতে শেখ মুজিব নিহত হন। ওই দিন ভোর বেলায় সেকেন্ড ফিল্ড আর্টিলারির একজন অফিসার আমাকে ফোন করে মেজর রশিদের একটি মেসেজ দেন। তিনি আমাকে বাংলাদেশ বেতারে যেতে বলেছেন। তিনি আরও বলেন শেখ মুজিব নিহত হয়েছেন এবং রাস্ট্রপতির একজন ঘনষ্ঠ সহযোগী খন্দোকার মোশতাক আহমেদ অফিসারদের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। আমি রেডিও অন করে শুনতে পাই শেখ মুজিবকে হত্যা করা হয়েছে এবং খন্দোকার মোশতাক ক্ষমতা গ্রহণ করেছেন। আমার কাছে এটি ছিলো ধাক্কা খাওয়ার মত, আমার মনে হয়েছিলো এতে দেশে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার সৃষ্টি হবে এবং এই পরিস্থিতিতে আমরা আমাদের গুরুত্ব হারাতে পারি।
সকাল ৯টার দিকে আমি বাংলাদেশ বেতারে পোছাই। মেজর রশিদ আমাকে একটি রুমে নিয়েযান। সেখানে খন্দোকার মোশতাক, তাহের উদ্দিন ঠাকুর, মেজর জেনারেল খলিল এবং মেজর ডালিমকে পেলাম। সেখানে কিছুক্ষণ তাঁদের সাথে আলোচনা হয়। আমি সেই মুহুর্তে দেশের স্বাধীনতা রক্ষার উপর গুরুত্ব আরোপ করি। একটু পর মেজর রশিদ আমাকে আরেকটি রুমে নিয়ে যান, এবং আমি মন্ত্রী সভায় যোগ দিতে চাই কীনা জানতে চান। আমি তাকে সশস্ত্র বাহিনী প্রধানদের সাথে আলোচনা করে একটি সমাধান বের করতে বলি। চীফদের উপর তার ভরসা ছিলোনা বলে তিনি লেঃ কর্ণেল জিয়াউদ্দিনকে সাথে নিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেবার আমাকে অনুরোধ করতে থাকেন। আমি সে অনুরোধ প্রত্যাক্ষান করি এবং বাকশালের কাউকে কেবিনেটে না নিয়ে সকল সর্ব দলীয় সরকার গঠণের পরামর্শ দেই।
আমি খন্দোকার মোশতাকের কাছে নিম্নোক্ত প্রস্তাব উপ্তহাপন করিঃ
১।অনতি বিলম্বে সংবিধান স্থগিত করা।
২।সামরিক শাসন ঘোষণা ও চালু করা।
৩।রাজনৈতিক কারণে অবরুদ্ধ ও বন্দীদের মুক্তি দেওয়া
৪। বাকাশাল বাদে অন্যান্য পার্টির সমন্বয়ে সর্ব দলীয় সরকার গঠন করা।
৫। অনতিবিলম্বে সাধারণ নির্বাচনের ব্যবস্থা করা।
খোন্দকার মোশতাক মনযোগ দিয়ে আমার প্রস্তাব গুলি শোনেন। কিছুক্ষণ পর শপথ নেন। তবে সেদিনের বেতার ভাষণে তিনি আমার প্রস্তাব গুলির কোনটিই উল্লেখ করেন নি।
সন্ধ্যায় আমি হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত অফিসারদের সাথে আলোচনায় বসি। সেখানে আমি মোশতাককে দেয়া প্রস্তাবগুলি আবার তুলে ধরি। এবং রাজনৈতিক বন্দীদের মুক্তি দেবার ব্যাপারে জোরাজুরি করি।আলোচনার শেষ দিকে জেনারেল জিয়াকে আলোচনায় যোগ দেন।
পরদিন আমি জেনারেল খলিল এবং জেনারেল শফিউল্লাহর কাছে আমার প্রস্তাব গুলি তুলে ধরি।
১৭ তারিখে আমার কাছে পরিষ্কার হয়ে যায় সমস্ত খেলার পিছনে আমেরিকা ও পাকিস্তানের হাত রয়েছে। আমি আরও বুঝতে পারি আওয়ামী লীগের উপরের সারির কিছু নেতা সহ খন্দোকার মোশতাক সরাসরি মুজিব হত্যায় জড়িত ছিলেন’।
সূত্রঃ Joyti Sengupta; Bangladesh in Blood and Tears, p 84,85
©somewhere in net ltd.