| নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
(লেখাটি বিদেশী ভাষা হতে অনুদিত; ভাষা বা ভাবের ব্যাত্যয় হলে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন)
আমার মায়ের একটি চোখ, অন্য চোখটি অন্দ্ব। দেখতে কিছুটা কুতসিৎ ছিল বলে আমার কাছে মায়ের মুখ ছিল বিব্রতকর। সংসারের ব্যায় নির্বাহের জন্যে সে বাসা বাড়ীতে পরিচারিকার কাজ করতো।
একদিন মা আমার স্কুলে আমাকে দেখতে এলো, আমি তাকে দেখে খুবই বিরক্ত হলাম, কেন যে আমাকে বিব্রত করতে এখানে এলো আমি ভেবে পেলামনা, আমার ঘৃনা হলো, আমি তাকে এড়িয়ে গেলাম, কোন কথাই বললামনা। পরদিন, আমার সহপাঠিরা আমাকে বিদ্রূপ করে, তোমার মা তো অন্দ্ব, একটা চোখ নাই,,, ছি, কি কুতৎসি দেখতে !
অপমানে আমার মরে যেতে ইচ্ছে করল, মন চাইল এখনই মাটির সাথে মিশে যাই; মাকে চিরতরে দুর করে দিই। মাকে ঘৃনা স্বরে বললাম তুমি মরে যাওনা কেন? আমাকে আর কত লাঞ্চনা দেবে তুমি? মা কোন উত্তর করলনা, আমি হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ফেললাম, কোন অনুভুতি কাজ করছিলনা যেন, আমি চাইলাম সে আমার কাছ থেকে চলে যাক, মা চলে গেল।
তারপর আমি আমার অধ্যায়নে খুবই মনযোগ দিলাম এবং সেই সুবাধে বৃত্তি নিয়ে বিদেশে যাবারও সুযোগ হয়ে গেল। আমি বিয়ে করলাম, নিজের ঘর হলো, সেখানেই স্থায়ী হলাম, স্ত্রী, সন্তান সব নিয়ে এক কথায় সুখী পরিবার।
আমার মা হঠাৎ একদিন আমার বাড়ীতে এসে হাজির, অনেক দিন ধরে আমার সাথে তার দেখা সাক্ষাৎ নেই, এমনকি তার নাতি নাতনীদেরও দেখেনি কখনো। সে দরজায় দাড়াতেই আমার সন্তানেরা তাকে দেখে চমকে উঠলো এবং হাসতে লাগল, আমি রাগতস্বরে চিৎকার দিয়ে বললাম, কোন সাহসে তুমি এখানে এসেছ, দেখছনা বাচ্চারা ভয় পাচ্ছে? এক্ষুনি এখান থেকে চলে যাও, মা নির্লিপ্ত স্বরে বলল, দুখিত আমি মনে হয় ভুল ঠিকানায় এসে পড়েছি, চলি যাচ্ছি ।
তারপর অনেকদিন কেটে গেল, একদিন আমার স্কুল থেকে পূনর্মিলনীর আমন্ত্রন পেলাম, শৈশবের স্মৃতি আমাকে কাছে টানছিল, তাই বউকে মিথ্যা করে বললাম, ব্যবসায়িক কাজে আমি আমার দেশে যাচ্ছি, শিঘ্রই ফিরব। স্কুল পূনর্মিলনীর পর নিতান্ত কৌতুহল বশত মায়ের বাড়ীতে গেলাম, প্রতিবেশীদের মুখে শুনলাম আমার মা মারা গেছে, কোন ভাবান্তর হলোনা আমার মধ্যে, একফোটা চোখের পানিও এলোনা মায়ের জন্যে, একজন আমাকে একটা কাগজ এগিয়ে দিল; আমার কাছে লেখা মায়ের চিঠি। মা লিখেছে,
প্রিয় বৎস ! তোমাকে খুব মনে পড়ছে, তোমার বাড়ীতে গিয়ে তোমার ছেলে মেয়েদের কে বিব্রত করার জন্যে আমি দুখিত। তুমি তোমার স্কুল পূনর্মিলনী তে আসছ জেনে খুশী হলাম, তবে তোমাকে দেখার সৈাভাগ্য আমার মনে হয় হবেনা, আমার শরীরে এতটুকু শক্তি নাই যে বিছানা থেকে উঠি, আমি দুখিত যে আমার জন্য তোমাকে সর্বদা বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হয়েছে, আমাকে ক্ষমা করো।
আজ তোমাকে একটা সত্যি ঘটনা বলি, শৈশবে একটা দূর্ঘটনায় তোমার একটা চোখ নষ্ট হয়ে গিয়েছিল, তোমার একটা চোখ নাই, একটা চোখ নিয়ে মানুষের তাচ্ছিল্যে তুমি বড় হবে, মা হিসেবে আমি তা সহ্য করতে পারিনি।, তাই আমার একটা চোখ তোমাকে দিয়ে দিয়েছিলাম। আর এই ভেবে আমি খুশী হয়েছিলাম যে, আমার সন্তান আমার চোখ দিয়ে তার নতুন পৃথিবীকে দেখবে, তাকে কখনো লোকে অন্দ্ব বলে তাচ্ছিল্য করতে পারবেনা । আজ আমার ত্যাগ স্বার্থক, তোমাকে নিয়ে আমি গর্বিত। পরিশেষে, তোমার জন্যে আমার ভালবাসা রইল, ভাল থেকো ।
ইতি – তোমার মা।
নিজের অজান্তেই চোখটা এবার ভিজে এলো, কিন্তু কোথায় আমার মমতাময়ী মা !
পাদটিকাঃ
সুবহানাল্লাহ্, সন্তানের প্রতি মায়ের মমতা যদি হয় এমন, তবে নিজ বান্দার প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ কেমন হতে পারে, যাকে তিনি সৃষ্টি করেছেন !
আমাদের নিজেদের কাছে নিজেদের সৃষ্ট জিনিসগুলো কত প্রিয়; নিজের লেখা কবিতাটি, নিজের লেখা নাটকটি, নিজের আকা ছবিটি, নিজের শখের জামাটি! তদ্রূপ আল্লাহর কাছে কি তার সৃষ্টি মানুষগুলো প্রিয় নয়? কিন্তু আমরা কি আমাদের সৃষ্টি কর্তার কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করি, তার হুকুম মত চলি নাকি নিজে সামান্য একজন সৃষ্টি হয়ে স্বয়ং শ্রষ্টার বিরুদ্বাচারন করি?
আচ্ছা, আমরা যদি কোন কিছু সৃষ্টি করতাম আর সৃষ্টি যদি আমাদের অমান্য অবজ্ঞা করতো; তাহলে আমরা তাদের সাথে কিরূপ আচরন করতাম?
হযরতা আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্নিত, রাসুল (সাঃ) বলেছেন, মহান আল্লাহ তার রহমতের শতভাগের একভাগ তার সৃষ্টি কুলের মধ্যে বন্টন করে দিয়েছেন, বাকি ৯৯ ভাগ তিনি তার জন্যে রেখেছেন, যা দিয়ে তিনি ক্বিয়ামতের দিন তার বান্দর উপর রহম করবেন।
হযরত উমর (সাঃ) বলেন, একদা আমাদের হাতে কিছু লোক বন্দি ছিল, আমরা দেখলাম এক বন্দি মহিলা তার সন্তানকে খুবই যত্ন করে মমতার সাথে বুকের দুধ পান করাচ্ছে, এই দৃশ্য দেখে রাসুল (সাঃ) আমাদের প্রশ্ন করলেন, তোমরা কি মনে কর এই মহিলা তান সন্তানটিকে আগুনে নিক্ষেপ করতে পারবে? আমরা বললাম, না, সে এমনটি করতে পারবেনা, তখন রাসুল (সাঃ) বললেন, একজন মা তার সন্তানের প্রতি যতটা না দয়ালু, মহান আল্লাহ তার বান্দার প্রতি তার চেয়ে অনেক বেশী দয়াশীল ।
০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০০৮ দুপুর ১২:০১
শাহীন - চট্টগ্রাম বলেছেন: তাই নাকি ,,, আমি দেখিনি
০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০০৮ দুপুর ১২:০৪
শাহীন - চট্টগ্রাম বলেছেন: আপনার মেয়ে কেমন আছে? আমরা দোয়া করি আপনার মেয়ে যেন অনেক বড় হয়, আল্লাহ তার হায়াত দারাজ করুন।
২|
০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০০৮ সকাল ১১:৪৭
মাহবুবা আখতার বলেছেন: চমৎকার। +
০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০০৮ দুপুর ১২:০২
শাহীন - চট্টগ্রাম বলেছেন: ধন্যবাদ
৩|
০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০০৮ দুপুর ১২:২৩
মাহমুদ রহমান বলেছেন: আমার চোখ ভিজে গিয়েছে। আহারে.......... মায়েরা এমনই হয়।
এই আমরা কত নিষ্ঠুর আসলে....।
৪|
০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০০৮ দুপুর ১২:২৮
অমি কবি বলেছেন: খুব ভাল লাগলো, আবার কষ্টও পেলাম।
৫|
০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০০৮ দুপুর ২:১৮
সাব্বির খুনকার বলেছেন: কষ্টও পেলাম। কিন্তু ছোট কালে মা এই গল্প বলছিলো।
৬|
০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০০৮ বিকাল ৪:০০
সাম্প্রতিক বলেছেন: "মা"
পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর শব্দ।
প্রিয়পোষ্টে +
০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০০৮ বিকাল ৪:৫৪
শাহীন - চট্টগ্রাম বলেছেন: মন্তব্যের জন্যে সবাইকে ধন্যবাদ ।
৭|
০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০০৮ সকাল ৭:৩০
বিবেক সত্যি বলেছেন: খুব সুন্দর ...
+
৮|
০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০০৮ সকাল ৭:৩২
হরিসূধন বলেছেন: +
৯|
২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০০৮ সন্ধ্যা ৬:১২
আবূসামীহা বলেছেন: মায়েদের কোন তুলনা নেই। আর যিনি মায়েদের সৃষ্টি করেছেন তিনি নিঃসন্দেহে সমস্ত করুমার উৎস।
২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০০৮ সন্ধ্যা ৬:১৫
শাহীন - চট্টগ্রাম বলেছেন: অবশ্যই।
১০|
২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০০৮ সন্ধ্যা ৬:১৫
আবূসামীহা বলেছেন: কারণার* হবে
©somewhere in net ltd.
১|
০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০০৮ সকাল ১১:৪২
অমি রহমান পিয়াল বলেছেন: এইটা সারিয়া তাসনিমের ব্লগে আছে। আপনারটাও খারাপ না