| নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
লাজুক ছেলে......
বড়ই লাজুক ছেলে আমি, একটু নির্লজ্জ হওয়ার চেষ্টায় আছি.....
বাইশ্যা ডাকাত... এক আতংকের নাম। দেখতে নাদুস নুদুস অনেকটা গোবেচারা টাইপ এর লাগলো(টি.ভি যতটুকু দেখলাম)।একে মুদী দোকানদার বা কসাই হিসাবেও খুব একটা বেমানান লাগবে না।কিন্তু যা শুনলাম এই ব্যাটা তো “ছুপা রুস্তম নিকলা”...
গরুর গোশতের কসাই না হলেও মানুষ কোপানোর কসাই বাইশ্যা ডাকাত।ম্যাগী নুডুলস ২ মিনিটে নাকি রান্না করা যায় (যদিও আমি ২ মিনিটে পানি ও গরম করতে পারি নাই), বাট এই চান্দু আরও আপডেটেড... সে ৩ মিনিটে ২ জন রে জবাই করে সাগরে ফেলত। কি ইস্পাশিলিটি... কি পারফরম্যান্স! বাইশ্যা তো অপরাধ জগতের লিজেন্ড হইয়া গেল। অবশ্য এরকম লিজেন্ড আমরা আরও কয়েকটা পাইছিলাম....
যেমনঃ
১. এরশাদ শিকদারঃ বুকের উপর লাফাইয়া হাড্ডি-গুড্ডি ভাইঙ্গা,হাতুড়ি দিয়া পিটাইয়া পাথর বান্ধিয়া নদী তে ডুবাইয়া দিত।
২. রসু খাঁ ঃ বিখ্যাত প্রেমিক,রেপিস্ট এবং ফাইনালি খুনি।তার মনোবাসনা ছিল এই ব্যাপারে সেঞ্চুরি করার।পারে নাই।আফসোস।
৩.লাল্টু ঃ চুয়াডাঙ্গা জেলার ত্রাস.. সর্বহারা নেতা ছিল।স্টাইল ছিল চাদা না দিলে হাত পা বাইধা ইটের ভা্টায় ঢুকাইয়া দিত। ৫ মিনিটেই সব প্রমান শেষ।
এরকম আরও কয়েকজন আছে... এই মুহূর্তে মনে পড়ছে না।
বর্তমানের আমরা আর আমাদের অনুভুতিঃ
এ সব নিউজ দেখে শুনে আমরা খুব রোমাঞ্চিত হই।এখন ছোটখাট ২/১একটা খুন করা খুনী কে ছিঁচকে চোরের মত লাগে।
কোথাও রোড এক্সিডেন্ট এ ৫ জন মারা গেল,আগুনে পুড়ে একই পরিবার এর সবাই পুড়ে ছাই হোল,ইভটিজিং এর থেকে মুক্তি পেতে অষ্টাদশী কিশোরী গলায় ওড়না পেঁচিয়ে লটকে গেল... এই সব খবর মনে কোন আচড় কাটে না।
চ্যানেল বদলে হিন্দি গানের সুরে সুর মেলাতে থাকই।
হরতাল হলে উৎসুক হয়ে খুজতে থাকি কোথায় কতটুকু নৃশংসতা ঘটলো...কম হলে ভাল লাগে না... বেশী হলেই ভাল, টক-শো টা ভাল জমে ওঠে।আমরা সমালোচনা করে শরীর গরম করি।আর তেমন কিছু না হলে বিরোধী দলকে টিটকারি মারি যে তারা আন্দোলন করতে পারে না।বেশী নৃশংসতা হলেও হায় হায় কি করল । কিছু না কিছু আমরা করি-ই,কিছু না কিছু আমরা বল..আমাদের বলতেই হয়।কারন আমরা চায়ের কাপ হাতে নিয়ে খালি কথা বলা ছাড়া আর কিবা করতে পারি। আমরা যে আম-জনতা...সাধারন জনগণ।আর ওরা তাহলে কি...... অসাধারণ!
শুরু করেছিলাম বাইশ্যা ডাকাতের কথা দিয়ে যে কিনা একজন সরব ঘাতক। এই সরব ঘাতক অবশেষে গ্রেপ্তার হল,আমরা হাঁফ ছেড়ে বাচলাম।
সত্যিই কি বাচলাম!আমাদের চারপাশে যে নীরব ঘাতক এর ছড়াছড়ি তা থেকে আমাদের কে বাচাবে।
আপনি যে বাসে চড়ে জার্নি করছেন তার ফিটনেস তো কবেই
শেষ,গরু-ছাগলের সাইনবোর্ড চিনে লাইসেন্স করানো ড্রাইভার সাহেব আছে চালকের আসনে।
যে লঞ্চে চড়ে উত্তাল নদী পার হচ্ছেন তার নতুন চকচকে রঙ এর নীচেই রয়েছে মরিচা ধরা মেটাল বডি।যে কোনো মুহূর্তে হয়ে যেতে পারে পিনাক-৬।
যে ব্রিজ এর উপর দিয়ে পারাপার হচ্ছেন তার নির্মাণে ভেজাল থাকায় ভেঙ্গে পড়তে পারে যে কোন সময়।
অথবা যে আপনি তেলাপোকা দেখলে ভয় পান সেই আপনি ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার হয়ে রাতারাতি বনে যেতে পারেন খুনের আসামী।
আর যে সব কর্মকর্তার সিল-ছাপ্পর ও সই তে এই সব অবৈধ জিনিষ গুল বৈধ হয়ে যায় তাদের কে কি আপনাদের ঘাতক মনে হয় না।বাইশ্যা ডাকাতের সাথে এদের অনেক ফারাক? ডাকাত টা তো জেলে... এরা আপনার আমার চারপাশে...সারাক্ষন।
এই দুনিয়াই এদের হয়ত ধরা যাবে না...... কিন্তু শেষ বিচারে কোন ক্ষমা নেই।
অপেক্ষা করছে শাস্তি......সীমাহীন।
©somewhere in net ltd.