নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অন্যদের সেভাবেই দেখি, নিজেকে যেভাবে দেখতে চাই। যারা জীবনকে উপভোগ করতে চান, আমি তাঁদের একজন। সহজ-সরল চিন্তা-ভাবনা করার চেষ্টা করি। আর, খুব ভালো আইডিয়া দিতে পারি।

সত্যপথিক শাইয়্যান

আমার কাছে অনেক আইডিয়া আছে এবং আমি তা ব্লগে এপ্লাই করি! জানেনই তো, পৃথিবীর সব কিছুর মূলে রয়েছে আইডিয়া!

সত্যপথিক শাইয়্যান › বিস্তারিত পোস্টঃ

গল্পঃ ঢাকার রাস্তায় ওয়ান্ডার গার্ল (সাময়িক)

১৮ ই অক্টোবর, ২০২৫ রাত ৯:৩২

(উৎসর্গঃ ব্লগার সৈয়দ কুতুব ও ব্লগার কলিমুদ্দি দফাদার)



বাইরে ঝরঝরে সকাল। সূর্য থেকে যেন আগুন বের হচ্ছে। ঢাকার ব্যস্ত কোন রাস্তায় একটি ১০-তলা বাড়ি। বাড়ির ৭ম তলার একটি এপার্টমেন্টের ভিতরে ২৬/২৭ বছর বয়সী এক হাল্কা – পাতলা তরুণ বিছানায় শুয়ে আছে। ঘড়িতে ৯টা বাজে!

হঠাৎ তরুণের মোবাইলফোনে এলার্ম বেজে উঠে। ৯.৩০ টায় ইন্টার্ভিউ। তরুনটি ঘুমের ঘোরে এলার্ম বন্ধ করে। এভাবে কয়েকবার এলার্ম বাজার পরে, হঠাৎ মোবাইলফোনে রিং বাজলো। তরুণের আম্মা ফোন করেছেন।

“শাহরান, কোথায় তুমি?”

শাহরান ধড়মড় করে বিছানায় উঠে বসে। সে কিছু বলে উঠার আগেই, ওপাশের কণ্ঠস্বর বলে – “তোমার জীবনের প্রথম ইন্টার্ভিউ! আর, তুমি এখনো বাসায়! ধানমণ্ডি থেকে পল্টন যেতে হবে, এটা মনে আছে? জলদি রেডি হও!”

ওপাশে ফোন কেটে যায়। ওদিকে শাহরান এক লাফে বাথরুমে ঢুঁকে। কোন মতে দাঁত মেজে টয়লেটে বসেই উবার কল করে। ৩০ মিনিট ওয়েটিং দেখাচ্ছে উবার এপে! এখন! তার ইন্টার্ভিউ সাড়ে ৯টায়।

এক লাফে কমোড থেকে উঠে কাপড় পড়তে থাকে সে। প্রথমে শার্ট, তারপরে প্যান্ট, এরপরে মুজা ও জুতো। মুজা পড়তে গিয়ে দেখে এক পা ফুটো! ড্রয়ার খুলে প্রথমে সব কাপড়ের জটলায় মুজা খুঁজে পায় না শাহরান। এরপরে, সব কাপড় মাটিতে উড়িয়ে ফেলে সেখান থেকে আরেক জোড়া মুজা খুঁজে পায় সে।

একটা পায়ে সবে মাত্র মুজা পড়েছে, এই সময়ে বন্ধু হাসানের কল আসে। শাহরান কল কেটে দেয়। আবার, কল আসে। শাহরান আবার কল কেটে দেয়। আবার কল আসে, হাসান কল করছে। বিরক্ত হয়ে মোবাইলফোন সাইলেন্ট করে কাপড় পড়তে থাকে শাহরান।

দৌড়ে লিফটের কাছে এসে নিচে যাওয়ার জন্যে কল বাটনে চাপ দেয় শাহরান। লিফটের দরজার পাঁশের দেওয়ালে ৭ লেখা দেখে বুঝা যায়, এটি ৭ম ফ্লোর।

কিছুক্ষণ পরে, লিফট শাহরানের ফ্লোরে থামে। তাতে মানুষ ভর্তি। শাহরান তারপরেও উঠতে যেতেই, সবাই বলে উঠে –
“চোখের মাথা খেয়েছেন! দেখছেন না জায়গা নাই! পরের লিফটে আসেন!”

পরের লিফটের জন্যে অপেক্ষা করতে করতে বার বার ডান হাতে পড়া ঘড়িতে সময় দেখতে থাকে শাহরান। ৯.১০ বাজে!

পরের লিফটও বোঝাই! তার চোখের সামনেই দরজা বন্ধ হয়ে যায়। এখন কি করা! শাহরান ইমার্জেন্সী ডোর দিয়ে সিঁড়ি বেয়ে নামতে থাকে!

প্রথমেই তার সামনে পড়ে একজন ক্লিনার। সে হাটের লাঠি দিয়ে সিঁড়ি পরিস্কার করছে। পুরো সিঁড়ি পানিতে ছোপ ছোপ করছে। তাড়াহুড়া করে নামতে গিয়ে পিছলে পড়ে শাহরান। কোন মতে সামলে নিয়ে সে কয়েক ফ্লোর প্রায় উড়ে নামে! এবারে, ৪র্থ তলায় যখন পৌঁছে, সেখানে দেখা গেলো একজন সিনিয়র সিটিজেন পুরো জায়গা জুড়ে আস্তে আস্তে করে নামছেন। তাঁর হাতে লাঠি!

সিঁড়ি এতো ছোট যে বুড়ো মানুষটিকে পাশ কাটিয়ে যাবে সে উপায় নাই! বুড়ো মানুষটার পিছু পিছু এক তলা নেমে ঘড়ির দিকে তাকিয়ে আঁতকে উঠে শাহরান। সে এবারে, সিঁড়ির রেলিং দিয়ে ঝুলে ঝুলে বুড়ো মহিলাকে টপকে দৌড়ে বাকি কয়টা ফ্লোর পার হয়ে যখন গ্রাউন্ড ফ্লোরে পৌছালো, তখন ঘড়িতে ৯টা বেজে ২৫ মিনিট!

এই সময়ে, মাথায় হাত দিয়ে রাস্তায় বসে পড়ে শাহরান। এখন কি হবে! হঠাৎ, তার সামনে ঘ্যাঁচ করে একটা মোটর সাইকেল থামে। মোটর সাইকেল আরোহী মেয়েটি সুরেলা কণ্ঠে বলে উঠে –

“এটাই কি ৪/১ নাম্বার বাসা? আমি মিস্টার শাহরানকে খুঁজছি।“

শাহরান কিছুটা বিরক্ত হয়ে বলে – “আমিই শাহরান। কি চাই?“
মেয়েটি মিষ্টি হেসে বলে – “আমি উবার থেকে এসেছি। সেই কখন থেকে কল করছি। আপনি পিক আপ করছেন না!“
শাহরান এক লাফে উঠে দাঁড়িয়ে তার মোবাইল ফোন বের করলো। ওটা মিউট করা আর তাতে উবার এপে ১০টা কল এসেছে!

মেয়েটি বলে উঠে – “কি দেখছেন! ফালতু সময় নষ্ট না করে আমার পিছনে উঠে পড়েন!”
শাহরান হতাশার চোখে দেখে, ৯টা ২৭ বাজে! বলে – “৩ মিনিটে কি পৌঁছানো সম্ভব!”
মেয়েটি অট্টহাসি দিয়ে বললো – “২ মিনিটে পৌঁছে যাবেন!”


আসলে, মেয়েটি হচ্ছে ওয়ান্ডার গার্ল, আর, সে যা চালাচ্ছে সেটা হচ্ছে সুপারবাইক। তাদের অসাধারণ সুপার ন্যাচারাল পাওয়ার আছে!

অবিশ্বাসী চোখে যেই না শাহরান মোটর সাইকেলে উঠে বসেছে, সাথে সাথে ওয়ান্ডার গার্ল তার আসল রুপ ধরলো! আর, তার বাহন ‘সুপার মোটরসাইকেল’-এ ট্রান্সফর্ম হলো। ওয়ান্ডার গার্লের পড়নে আঁটো-সাটো রঙ্গিন ড্রেস। আর, সুপার মোটরসাইকেলের ডাবল সাইলেন্সার। পিছনে শাহরানকে নিয়ে ছুটে চলেছে তারা! সে এক এলাহি ব্যাপার!

যেতে যেতে হঠাৎ-ই সামনে পড়লো ট্রাফিক জ্যাম। অসংখ্য বাস-গাড়ি-রিকশা সামনে জটলা করে রয়েছে। শাহরান আঁতকে উঠে।


























মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.