নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সবার উপরে দেশ - আমার স্বদেশ। ভাল লাগে সততা, সরলতা। খারাপ লাগে নোংরামি, মিথ্যা, অহমিকা, কুটিলতা।
বর্তমান বিশ্বে রাজনীতির মূল সুত্রই হচ্ছে অর্থনৈতিক রাজনীতি। ২১ শতকে কেউ আর দেশ দখল করেনা, করে বাজার দখল। মিডল ইস্ট, আফগানিস্তান এগুলো সব বড় বড় উদাহরন আমাদের সামনে। একটি দেশের সম্ভাবনাকে শেষ করতে হলে তার আভ্যন্তরিন অস্হিতিশীলতা তৈরি করে দিন, দেখা যাবে এটা কিছু দিনের মধ্যেই আমেরিকা ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের মত নিমিসেই ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। এর ধ্বংসটা এমন আপনি দেখতে থাকবেন যে এটা ধংস হচ্ছে কিন্তু আপনার কিছুই করার থাকবেনা। বাংলাদেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক অস্হিরতা বিশ্ব বানিজ্যে বাংলাদেশের সম্ভাবনাকে টেনে ধরেছে, এ অবস্হা চলতে থাকলে বাংলদেশের সামনে বড় এক অন্ধকার দেখা দিবে যাকে আবার আলোর পথে নিতে যুগের পর যুগ সময় লাগবে। সাম্প্রতিক রাজনৈতিক বিভেদ, সংঘাত এবং রাজনীতির গতি প্রকৃতি বলছে এই সংঘাত দীর্ঘস্হায়ী হবে। শাহবাগ পরবর্তী রাজনীতির অধ্যায় আমরা অলরেডি শুরু হয়ে যেতে দেখেছি। আজকের এই নিবন্ধে বাংলদেশের পরবর্তী রাজনীতির এবং রাজনৈতিক অর্থনীতির কিছু ধারনা বা বিশ্লেষন দেয়ার চেষ্টা করব।
শাহবাগের বিশ্লেষনে আমি বলেছিলাম, এর থেকে আওয়ামীলীগের লাভবান হওয়ার সুযোগ কম, যা হবে সবই সাময়িক। আপনারা খেয়াল করলে দেখবেন শাহবাগের ঢেউ মিলিয়ে যাচ্ছে ধীরে ধীরে, কিন্তু পুরানো ইস্যুগুলো ঠিকই মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। যে বিএনপি ৪ বছরেও একটি কার্যকর আন্দোলন তৈরি করতে পারেনি, তাদের সামনে এখন অনেক বড় সুযোগ।
আসুন এবার বর্তমান রজনীতির দিকে দৃষ্টি দেয় যাক। বাংলদেশের বর্তমান রাজনীতি ২ মেরুতে বিভক্ত, দেশের জনগন ও তাই। প্রশ্ন হচ্ছে রাজনীতিতে কি এ অবস্হায় সমঝোতা হবে? উত্তর, অবশ্যই না। বর্তমান অবস্হায় নিরপেক্ষ বলে যেহেতু কোন অবস্হান নেই বা রাখা যাচ্ছেনা তাই কেউই একটি সফল সমঝোতা মূলক অবস্হান তৈরি করতে পারবেননা, যেহেতু কেউই আস্হার যায়গাটি ধরে রাখতে পারছেন না।
বর্তমান রাজনীতির মূলে হচ্ছে ক্ষমতায় থাকা বা ক্ষমতায় যাওয়া। যদিও শুনতে খারাপ লাগবে তবুও বলছি যুদ্ধাপরাধের বিচার, ২য় মুক্তিযুদ্ধ, এ বিষয় গুলো যতটুকু এখন আদর্শিক তার থেকে বেশী রাজনৈতিক। শাহবাগ থেকে যদি সরকারী দলের মধ্যে অবস্হান করা রাজাকারদের ব্যাপারে অবস্হান পরিষ্কার করা হতো তা হলে এই আন্দোলন অন্তত রাজনৈতিক আন্দোলনে রুপায়িত হতোনা। যুদ্ধপারাধের বিচারের মেরুকরণ ও কম হতো।
বর্তমান মেরুকরণ যে সংঘাতের জন্ম দিচ্ছে তাতে যে সমস্যগুলো দেখা দিয়েছে তা হলোঃ
১) গার্মেন্টস এ নতুন অর্ডার কমে গেছে, এর অর্থ হলো যদি এই অবস্হা চলতে থাকে তাহলে গার্মেন্টস ব্যবসা অন্যকোন দেশে চলে যাবে।
২) সরকরের রাজস্ব আয় আশংকাজনক হারে হ্রাস পেয়েছে, নির্বাচন পর্যন্ত এ অবস্হা চলতে থাকলে জনপ্রশাসনের ধ্বংস / বিশৃংখলা অনিবার্য।
৩) জামাতের সাথে সম্পর্কিত ব্যবসা প্রতিষ্টান গুলো বন্ধ হলে দেশের সামগ্রিক অর্থনীতি এবং বেকার সমস্যা প্রকট হবে। জামাতি অর্থনীতি গড় হিসাবে মোট অর্থনীতির ১৫%। এ ধকল কাটিয়ে উঠার উপায় বাংলাদেশের হাতে নেই।
৪) দেশে বিশৃংখলার কারনে উৎপাদন ব্যহত হচ্ছে, তবে ভোগ কমছেনা। ফলে আমদানী বাড়বে। বৈদেশীক মুদ্রা খরছ করে সে আমদানী ব্যায় মিটাতে হবে। কিন্তু রপ্তানী বাড়ছে না। ফলে অর্থনীতিতে ঘাটতি বেড়ে যাচ্ছে। যুদ্ধাপরাধের বিচারের কারনে মধ্যপ্রাচ্যের শ্রমবাজার যদি নষ্ট হয় তাহলে দেশ চুড়ান্ত এক মানবিক বিপর্যয়ে প্রবেশ করবে। সে সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে।
৫) দেশের ভিতরে উৎপাদন ও ভোগের ঘাটতির কারণে আমাদের আভ্যন্তরীন বাজার প্রতিযোগিদেশের হাতে চলে যাবে।
৬) শিক্ষাব্যবস্হায় যে বিপর্যয় দেখা দিচ্ছে বা দিবে তার প্রভাব হবে সুদুর প্রসারী। এর প্রভাব জাতি বুঝতে পারবে আরও ১০ থেকে ১৫ বছর পর। বর্তমানে যে অগ্রগতি শিক্ষার ক্ষেত্রে এর শুরু কিন্তু ১০ বা ১৫ বছর আগে।
৭) আমরা মনে করছি রাজনৈতিক অস্হিরতা হলে শুধু জামাতীরাই মারা যাচ্ছে বা যাবে। বাস্তবতা হচ্ছে সাইদীর রায় কেন্দ্রিক সংঘাতে ৩৩ জন নিরীহ মানুষ নিহত হয়েছে যারা কোন ভাবেই জামাত বিএনপির রাজনীতিতে যুক্ত ছিলনা। ভবিষ্যতে অবস্থা এর থেকে আরও খারাপই হবে বলে মনে করি। এই খারাপ অবস্হা কল্পনা করা যাবে বা বিশ্লেষন করা যাবে কিন্তু একে ঠেকানো যাবেনা। কারণ বিভক্ত সমাজে ভাল কথা বলা সম্ভব নয়, বললে তিরস্কৃত হতে হয়।
৮) ত্বকির হত্যাকন্ডই বলে দেয় বৃহৎ আকারে এ সমস্যা বাড়লে, আমরা কেউই রেহাই পাবোনা। সামনের দিন গুলোতে এটা বাড়বে নিশ্চিত।
৯) রাজনৈতিক অস্হিরতা কেন্দ্রিক বর্তমান পংগু বা নিহতদের পরিবারের ভার কে নিবে। চুড়ান্তভাবে কিন্তু রাষ্ট্রের সামাজিক অর্থনীতি দায় বহন করবে।
১০) শুধু চিনে রাখুন কারা আমাদের আবেগ নিয়ে খেলছে, কারণ সময়ে আপনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করার আগে হলেও যাতে বলে যেতে পারেন "আমি নষ্ট সময়ের বলি"। বিস্তারিত লিখলে আবেগের কারণে ভুল বুঝবেন তাই লিখলাম না।
১১) জামাতীদের সহ সব রাজনীতিকদের বলব, বেঁচে থাকলে রাজনীতি করবেন, দেশ থাকলে রাজনীতি করবেন, কিন্তু দেশকে বিপদে ফেলে আপনারা কাকে নিয়ে রাজনীতি করবেন?
আমাদের অবচেতনাকে পুজি করে লাভবান রাজনীতির ব্যাপারে আমরা যতদিন সোচ্চার হতে না পারব ততদিন এটা চলতেই থাকবে। আপাতত দেখে যেতে থাকুন কিভাবে আপনি ক্ষমতার স্বার্থের বলি হন।
সর্বোপরি বলব, রাজনীতি এখন আর রাজনীতিবিদদের হাতে নেই। অপেক্ষায় আছি আবেগের শেষ স্রোত আমদের কতটুকু ধ্বংসের নীচে নামাতে পারে তা দেখার জন্যে।
©somewhere in net ltd.