নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নিজের সমন্ধে কিছু বলার নেই। এক সময় সামান্য কিছু লেখালেখি করতাম, সে গুলো পার্সোনাল সাইটে পাবলিশ করেছি। পড়তে চাইলে দেখতে পারেন - https://sam-sumon.blogspot.com/

ভবঘুরের ঠিকানা

এখানেই পাবে আমাকে। এটাই হচ্ছে ভবঘুরের ঠিকানা।

ভবঘুরের ঠিকানা › বিস্তারিত পোস্টঃ

ক্যাপওয়ালা ও বানর

৩১ শে মার্চ, ২০১৩ সকাল ৮:০০

এক ছিল ক্যাপ ব্যবসায়ী। গ্রামের মেঠোপথে জ্যৈষ্ঠের খর রোদের মধ্যে সে মাথায় ঝাঁকা নিয়ে এ-বাড়ি

ও-বাড়ি ক্যাপ বিক্রি করত। দূরের গঞ্জ থেকে সে বেছে বেছে রংবেরঙের সুন্দর সুন্দর ক্যাপ নিয়ে আসত বলে তার পণ্য পছন্দ করত ছেলে-বুড়ো সবাই। একদিন ভরদুপুরে সে গ্রামে গ্রামে ঘুরছে ঝাঁকা নিয়ে। বিক্রি তেমন হয়নি। অন্যদিকে আজ আবার হাটবার, তাড়াতাড়ি যেতে হবে বাজারে। অনেক দূর হাঁটতে হাঁটতে সে যখন ক্লান্ত, তখন একটা আমগাছের ছায়ায় বিশ্রাম নেওয়ার জন্য বসল। পাশেই ক্যাপভর্তি ঝাঁকা রেখে গামছা দিয়ে ঘাম মুছে গা এলিয়ে দিল গাছের ছায়ায়। অনেক আম ধরেছে গাছে। ঝিরঝিরে বাতাসে কাঁচা আমগুলো নড়ছে অনবরত, দেখতে দেখতে দুই চোখে অবসাদের ঘুম নেমে এল ক্যাপওয়ালার।

ওদিকে পাশের আমগাছে আম খাচ্ছিল বানরদের একটা দল। তারা দেখল ক্যাপওয়ালা ঘুমিয়ে পড়েছে। তার রংবেরঙের ক্যাপগুলোর দিকে বানরদের নজর অনেক দিন ধরেই। ছোট বাচ্চাগুলো কী সুন্দর মাথায় দিয়ে ঘোরে, তখন থেকেই তক্কে-তক্কে আছে তারা। আজ মোক্ষম সুযোগ পেয়েছে। চুপি চুপি নেমে এল গাছ থেকে। নিজেদের পছন্দমতো এক এক করে ক্যাপ তুলে নিয়ে ভোঁ দৌড় আবার গাছের ওপরে।

কিছুক্ষণ পর ঘুম ভাঙল ক্যাপওয়ালার। চোখ খুলেই দেখল পুরো খালি তার ঝাঁকাটি। যত দূর চোখ যায় কোথাও কেউ নেই। অনেকক্ষণ খুঁজে যখন হায় হায় অবস্থা, তখন সে মাথায় হাত দিয়ে বিধাতার কাছে হতাশা ব্যক্ত করার জন্য ওপরের দিকে তাকায়। ৩০ থেকে ৪০টি বানর ক্যাপ মাথায় দিয়ে তার দিকে তাকিয়ে আছে।

ক্যাপওয়ালা যতই চেষ্টা করলে ক্যাপ আর পায় না। সে গাছে ওঠার চেষ্টা করে বানরগুলো দৌড়ে পালায়, ঢিল মারলে বানরগুলো আম ছুড়ে মারে, লাঠি দেখালে বানরগুলো হলুদ দাঁত দেখায়। কিছুতেই কিছু হয় না। সে যা করে, বানরগুলোও তা-ই করে। তাকে ভেংচি দেখায়। হঠাৎ করে তার মাথায় একটু বুদ্ধি এল। সে তার নিজের ক্যাপটি খুলে মাটিতে ছুড়ে ফেলে দিল। বুদ্ধিমান(!) বানরগুলো ভাবল, এটাও বোধহয় কোনো খেলা, তারাও মাথা থেকে ক্যাপ খুলে সবাই মাটিতে ফেলে দিল। আর যায় কোথায়, ক্যাপওয়ালা তাড়াতাড়ি সেগুলো তার ঝাঁকায় উঠিয়ে নিল। যাওয়ার আগে বানরদের উদ্দেশে বিশাল একটা ভেংচি মেরে গেল। অসহায় বানরগুলো বুঝল তারা কী বোকামি করেছে।

এর অনেককাল পরের কথা, ওই ক্যাপওয়ালার নাতি উত্তরাধিকার সূত্রে দাদার ক্যাপ বিক্রির ব্যবসাটা করে যেতে লাগল। সেও গ্রামে গ্রামে হেঁটে হেঁটে ক্যাপ বিক্রি করত। একদিন ক্লান্ত হয়ে পাশে ক্যাপের ঝাঁকা রেখে আমগাছের তলে বিশ্রাম নিতে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়ল সে। ওদিকে তখনো গ্রামে বানর ছিল। তারা নেমে এসে সেই ক্যাপ উঠিয়ে যার যার মাথায় দিয়ে গাছে বসে রইল। কিছুক্ষণ পর নাতির ঘুম ভাঙলে সে দেখল, তার ক্যাপের ঝাঁকা পুরো ফাঁকা। চট করে ওপরে তাকিয়ে দেখল, বানরগুলো ক্যাপ মাথায় দিয়ে হাস্যোজ্জ্বল মুখে তার দিকে চেয়ে আছে। সঙ্গে সঙ্গে তার মনে পড়ল দাদার কথা। দাদা বলেছিলেন, নিজের মাথার ক্যাপটা ফেলে দিলেই বানরগুলো ক্যাপ ফেলে দেবে। তাই সে আর অন্য কোনো চেষ্টা না করে নিজের মাথার ক্যাপটা খুলে ফেলে দিল।

কিন্তু বানরগুলো আর ক্যাপ ফেলে না। সে অবাক হয়ে ওপরের দিকে তাকিয়ে রইল! নাহ্‌! বানরগুলো কেউ তো ক্যাপ ফেলছে না। তখন সে ক্যাপটা আবার উঠিয়ে মাথায় দিল, আবার ফেলল, কিন্তু বানরগুলো ফেলছে না। আবার ওঠাল, আবার ফেলল। কাজ হচ্ছে না।

এমন সময় ক্যাপ পরিহিত একটা বানর নেমে এল গাছ থেকে। সামনে দাঁড়িয়ে তার গালে বিশাল এক চড় মেরে বলল, ‘বোকারাম, দাদা খালি তোর একারই ছিল? আমাদের ছিল না? আমাদের দাদারা যেই ভুল করেছিল, তুই কেমনে ভাবলি, আমরা সেই ভুল আবার করব? খালি তোর দাদাই তোকে শিখাইছে? আমাগো দাদা কিছু শিখায় নাই?’

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ৩১ শে মার্চ, ২০১৩ সকাল ৮:২৬

মোঃ নজরুল ইসলাম বলেছেন: কবিতা পড়তে ভাল লাগে। ছোট ছোট

২| ৩১ শে মার্চ, ২০১৩ সকাল ৮:৪৬

বিডি আইডল বলেছেন: হুম...দাদা তাহলে কথা বলাও শিখিয়ে গেছে!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.