![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সবাই যা ভাবে আমি তা ভাবি না
খালুজান ঢাকায় এসেছেন নতুন। নতুন যারা ঢাকায় আসেন তাদের মত স্বভাবতই খালুজানের ঢাকা অত্যন্ত পছন্দ হয়েছে। খালি পছন্দ হয় নি ঢাকার জ্যাম আর উন্মুক্ত ডাস্টবিন। আরে ভাই এই দু'টা জিনিস বাদ দিলে যে ঢাকা আর ঢাকা থাকে না, তাকে বলা চলে স্বর্গ, এটা খালুকে বুঝানোর লোক নেই।
আমি আর খালুজান বাসযাত্রায়, প্রচন্ড জ্যামে আটকা পড়ে আছি এলিফেন্ট রোডে। বাস যে গতিতে এগুচ্ছে তাতে এর সাথে রেস লাগলে সাইকেল হবে ফার্স্ট আর ঠেলাগাড়ি হবে রানার্সআপ। এদিকে খালুজান প্রতিটা সিগনালে মিনিটপ্রতি এবং প্রতিটা ডাস্টবিনের সামনে ঘন্টাপ্রতি একবার করে তার অভিযোগসমুহ আমার প্রতি জ্ঞাপন করছেন,"হ্যা রে, এই রাস্তাটা না এখনই ফাঁকা ছিলো, চোখের সামনে ভর্তি হয়ে গেল কিভাবে? কি ব্যাপার বাসটা শুধু শুধু দাড়িয়ে আছে কেন? কি ব্যাপার ট্রাফিক ব্যাটা ফাঁকা রাস্তাটা ছাড়ছে না কেন?" এতসব প্রশ্নের মধ্যে আমি কয়েকটার উওর দিয়ে হাপিয়ে উঠে হাল ছেড়ে দিয়েছি। শেষমেষ খালুকে বললাম,"তোমার অভিযোগ শোনার লোক তো নেই কেউ, তবে ভাগ্য ভাল থাকলে আগামি তিন ঘন্টার মধ্যেই জ্যাম ছেড়ে দিবে।"
খালু বললেন,"কিহ? তিন ঘন্টা? পাগল নাকি? চল হাটা ধরি।" আমার শুধু শুধু বাসে বসে থাকতে ভাল লাগছিল না তাই রাজি হয়ে গেলাম, আর যাই হোক, কলাবাগান তো কাছেও, একটা হাটা হয়ে গেলে আর মন্দ কি? শুনেছি হাটা নাকি আবার হার্টের জন্য ভাল, তাই এক ঢিলে চার পাখিটা মেরেই দেই, জ্যাম থেকে পালানো, পদবিহার , হার্টের অসুখ থেকে বাঁচা আর সুযোগ বুঝে কিছু পেট পুঁজো করা গেলে মন্দ কি?
খালু আর আমি পাশাপাশি হাটছি। সামনেই পড়লো একটা ফাস্টফুডের দোকান। খালু বললো কি খাবি বল। সাইন্সল্যাবের শর্মার আবার বিশেষ নামডাক আছে কি না, তাই আমি একবাক্যে বললাম,"শর্মা!!" খালু বললো ঠিক আছে চল! তারপর খালুজান বড় বড় পা ফেলে গিয়ে দাড়ালেন শর্মার দোকানের সামনে। তারপর বললেন,"এই যে ভাই, আমাকে তিন পিছ রমেশ দেন তো!!" দোকানের বয়টা খালুর কথা শুনে চোখ গোল গোল করে তাকাল, তারপর বললো, "স্যরি স্যার রমেশ তো এখানে পাওয়া যায় না।" খালু বললেন, "কি বলেন রমেশ পাওয়া যায় না?" তারপর শর্মার গ্রীলারের দিকে আঙ্গুল দেখিয়ে বললেন,"এই যে, এই এগুলা কি?" বয়টা বললো, "স্যার এগুলা তো শর্মা!" খালু বললেন, "ওই একই তো কথা, শর্মা আর রমেশের মধ্যে কোন পার্থ্যক্য আছে নাকি? দাও তিনটা রমেশ দাও।" বয়টা ক্ষীণ স্বরে প্রতিবাদ জানালো, "স্যার শর্মা।" খালু বললেন, "এই মিয়া আমি যদি রমেশ বলি তোমার কোন আপত্তি আছে?" বয়টা যন্ত্রের মত মাথা নাড়লো। খালু বললেন,"তাহলে দেরি না করে তাড়াতাড়ি তিন পিস রমেশ দাও।" বয়টা এবার যন্ত্রের মত রমেশ বানাতে লেগে গেল, আর আমি হাসি চাপে বয়টার রমেশ বানানও দেখতে লাগলাম।
০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৮:৫৯
স্বাধীন মন বলেছেন: তা আসতে বাধ্য!! আর যাই হোক মানুষে মস্তিষ্কের প্রোগ্রামটা এমনই
©somewhere in net ltd.
১|
০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৮:০০
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: আহ,, শর্মা!!
জিভে জল এসে যায়!!!