নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মানুষ

সরকার পায়েল

মানুষ যা অনুভব করে তাই জ্ঞান।

সরকার পায়েল › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিপ্লব বিলাস নয় চাই চলমান বিপ্লব

১৯ শে অক্টোবর, ২০১৩ দুপুর ২:৪৪

বিপ্লব রাজনীতির একটি অংশ । রাজনীতির অনেক ধারার মধ্যে বিপ্লব একটি। বিপ্লব মানে একটি পরিবর্তন , নতুন কোন মতবাদ বা অধিকার আদায়ের সংগ্রাম । রাজনীতির যথারীতি ধারা থেকে বিপ্লব একটু আলাদা সে কোন নিয়ম নীতির তয়াক্কা করেনা , কারও মর্জিতে চলেনা । বিপ্লব চলে তার নিজের গতিতে।প্রচণ্ড গতিতে সকল মতবাদ সকল নিয়ম ধারা ভেঙ্গে তছনছ করে । বিপ্লবের যেমন গতি তেমনি এক একটি বিপ্লবের জন্য মূল্য দিতে হয় চরম আকারে অনেক রক্ত অনেক জীবন দিয়ে । সফল বা ব্যর্থ হোক বিপ্লব তার মূল্য ঠিক নিয়ে নেয়।



একটি বিপ্লবের সময় খুব অল্প কিন্তু তার রেশ রয়ে যায় দীর্ঘ সময়। ২য় বিশ্বযুদ্ধের কাহিনী নিয়ে লেখা একটি বইতে (নাম মনে পড়ছেনা) যুদ্ধ ফেরত জার্মানির এক সৈনিকের কথা পড়েছিলাম । সে কোন ভাবেই সমাজের সাথে মিশতে পারছিলনা। সময়ের সাথে সাথে সে কেমন যেন সমাজ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছিল। কারণ হিসেবে লেখক বলেছে , যুদ্ধের ময়দানে প্রতিনিয়ত জীবন মৃত্যুর সাথে যুদ্ধ করেছে । সেখানে ধির বা চিন্তার কোন সুযোগ ছিল না । সিদ্ধান্ত নিতে সেকেন্ড সময় নিতনা। সেখানে স্থিরতার কোন স্থান নেই । প্রতিদিন প্রতিমুহূর্তে বেঁচে থাকাই ছিল মূল লক্ষ্য । দীর্ঘ একটা সময় এই জীবনে অভ্যস্ত একটা সৈনিক খুব স্বাভাবিকভাবেই স্থির সমাজে তাল মেলাতে না পারারই কথা। তার কাছে সব কিছু কেমন স্থির মনে হয় ধীর মনে হয় কোন ভাবেই কিছু মেলাতে পারেনা।





বিপ্লব যে ছায়াগুলো ফেলে যায় এটি তার একটি। এবার বলি ৭১ এর বিপ্লবের কথা। অনেক আশা নিয়ে সবাই ঝাঁপিয়ে পরল সংগ্রামে দেশ স্বাধীন হবে আমরা মুক্ত হব । কিন্তু স্বাধীন হওয়ার পর যা চাইল তা পেল না। কিভাবে পাবে ? প্রথমে ব্রিটিশ তারপর পাকিরা শুষে শেষ করে দিয়ে গেল সোনার বাংলাকে। বাঙ্গালীরা জীবন বাজি রেখে স্বাধীন করল হাড়জীর্ণ মৃতপ্রায় শতবর্ষ ধরে শোষিত মাকে প্রিয় স্বদেশকে। কি ছিল দেশে স্বাধীনের পর ? কত সম্পদ ছিল দেশের ?





আজ যে মুক্তিযোদ্ধারা বলে কি পেলাম ? তাদের জিজ্ঞাসা করি কে তোমারে ফাঁসি দিয়েছে যুদ্ধে যাওয়ার জন্য ? আর যখন স্বাধীন করলাই হিসাব দেও দেশে তখন কত সম্পদ ছিল? যে মানুষকে তা দিয়ে সুখের সাগরে ভাসিয়ে দেয়া যেত। তখন দরকার ছিল অর্থনৈতিক যুদ্ধ ঘোষণার আরেকটি দেশ গড়ার সংগ্রামের ।





কিন্তু তা না করে তরুণরা মুক্তিযোদ্ধারা অর্ধেক সংগ্রাম করেই কিছু না পেয়ে হতাশ হয়ে গেল। তার সাথে দেশের আরও ভয়ঙ্কর ক্ষতি করল বিপ্লব বিলাস । যুদ্ধের ময়দানের ভাবনাটাই তখনও বিপ্লবীদের মাথায় । কালই পরিবর্তন করে ফেলবে সব, সবাই সুখের সাগরে ভাসবে –এধরনেরে নানা বিপ্লব বিলাস । কিন্তু সুখের সাগরটা কই ? তা কেউ খোঁজ করলনা ।তরুণরা রাজনৈতিক নেতারা ভুগতে শুরু করল করল বিপ্লব বিলাসে। সবাই মুজিব হবে । এক ডাকে সব পরিবর্তন করে দিবে । হায়রে যে ডাকে সব পরিবর্তন হয়েছিল সেই ডাক শতবর্ষ পূর্বে পলাশীতে বাঙ্গালীর স্বাধীনতা চুরির আর্তনাদ যা ৭১ এ ফিরে আসে হুঙ্কার হয়ে ।





সবচেয়ে বেশী বিপ্লব বিলাসে ভুগত সেনাবাহিনী কারণ ওরা অস্ত্র জমা দেয়নি । আর ওরা ভাবে অস্ত্রই সব সমস্যার সমাধান। ফলে ভুল যা করার করে ফেলল মেরে ফেলল জাতির পিতাকে । দেশকে নিশ্চিত ধ্বংসের দিকে নিয়ে গেল । ঘুরে দাড়ান দূরে থাক জাতিকে বিভক্ত করে দিল । জাতি পিছিয়ে গেল যোজন যোজন দূরে। একজন মুজিব একদিনে দশ দিনে তৈরি হয়না । যে মুজিবকে আমরা চিনি তার সৃষ্টির প্রেক্ষাপট জাতির পিতা সংগ্রামী মুজিবের প্রেক্ষাপট তৈরি শুরু হয়েছিল পলাশীর সেই আম্রকাননে বাঙালীর পরাজয়ের ঠিক পর মুহূর্ত থেকেই । তখন থেকেই বাঙালীর পরিচয় আত্ম পরিচয়ের প্রয়োজন ছিল ঠিক সেভাবেই আজকের রাজাকারদের বেইমানদের জন্ম হয়েছিল তারও আগে মিরজাফর ঘসেটিদের প্রাসাদ ষড়যন্ত্রের মধ্য দিয়ে ।





তারপর এক একটি বাঙ্গালী সংগ্রামী পুরুষ এক একটি ইট গেঁথে তৈরি করেছিল ৭১ এর সংগ্রামী মুজিবকে বাঙ্গালী জাতির আত্ম পরিচয়কে । এই মুজিব জন্মের প্রেক্ষাপট তৈরি হয়েছিল সেই পলাশীতে কিন্তু আজো মুজিব মরেনি । জীবিত মুজিব নেই কিন্তু রয়েছে তার আদর্শ ।





শত বছরে গড়ে ওঠা মুজিব, বাংলার বাঙালীর আত্ম পরিচয়ের জন্ম হল ১৬/১২/১৯৭১ এখন মুজিবের তরুণ বয়স সংগ্রাম করে যাচ্ছে মুজিবের আদর্শ এইতো সেদিন ৭১ এ মাত্র ৪০ বছর আগে যার প্রকৃত যাত্রা কিশোর বয়স শেষ মাত্র তারুন্যে পা দিয়েছে মুজিব । একটা আদর্শ এত তাড়াতাড়ি কি শেষ হয় ? প্রজন্মের পর প্রজন্ম চলে যায় কিন্তু আদর্শ কখন মরেনা । আদর্শের রঙ চির সবুজ ।





যারা হতাশ যারা আশা দেখোনা তাদের বলতে চাই , ভয় পেওনা আজো মুজিব আছে মুজিবের আদর্শ আছে । যে আদর্শ তোমাদের স্বাধীনতা দিয়েছে তা তোমাদের মুক্তি দিয়ে যাবে । মুজিবের আদর্শ তার কথা রাখবে , তোমাদের দেয়া সেই মুক্তির শপথ মুজিবের আদর্শ অক্ষরে অক্ষরে রেখে যাবে । বাঙ্গালিকে মুক্তি না দিয়ে মুজিবের আদর্শ শেষ হবেনা ।





কিসে ভয় পাও ? মুজিব মাত্র তরুণ । এখন অনেক সংগ্রাম বাকী অনেক পথ বাকী হাতে হাত রাখো এগিয়ে চলো। মৃতপ্রায় মাকে মাত্র সারিয়ে তুলেছ । মা তোমার এখন হাসে ,কথা কয়, তোমার মাথায় হাত দিয়ে ঘুম পারিয়ে দেয়। মাকে তুমি স্বপ্ন দেখাও পঙ্খিরাজ ঘোড়ায় করে মাকে নিয়ে দেশান্তরে যাবে। মায়ের জন্য এখন অনেক কিছু করা বাকী এত তাড়াতাড়ি হেরে গেলে হবে? যেতে হবে অনেক পথ । কিছুটা অন্ধকার পথ কিন্তু ভয় কি ? এগিয়ে যাচ্ছ নিজের তৈরি পথে স্বাধীন বাংলার মাটিতে। সাথে মুজিব আছে সে তোমাকে পথ দেখিয়ে নিয়ে যাবে । তুমি কেবল সাহসে বুক বাঁধো , যেভাবে দিগ্বিজয়ী সাহসী ছিলে ৭১ এ এই তো সেদিনের কথা । বুকের তাজা রক্তে মৃতপ্রায় মাকে নিয়ে এলে হায়েনার ছোবল থেকে জীবন বাজি রেখে ।



মাকে কষ্ট দিওনা । যে স্বপ্ন মাকে দেখিয়েছ এখনো মা তোমার চোখ দিয়ে সেই স্বপ্ন দেখে খোকা তার পঙ্খিরাজ ঘোড়া নিয়ে আসবে। সাহসে বুক বাঁধো, হিংস্র হায়েনাকে পরাজিত করেছ , তো স্বপ্ন কতদুর! , তোমার দিকেই তো মা তাকিয়ে । মাকে ভালোবাসি, ভালোবাসি বাংলাদেশ ।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.