| নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
[ ছবি সুত্রঃ ইন্টারনেট ]
অসহয গরমে ঘরে থাকতে না পেরে বাইরে চলে এলো আবীর। বাড়ির সামনের আম, কাঁঠাল আর নারকেলের ছায়াঘেরা শান্ত পরিবেশে হাটলো কিছুক্ষণ। পাশেই শান বাধানো পুকুর ঘাট। পুকুরের পানি শুকিয়ে গেছে।
চৈত্র মাসটি সত্যিই খুব দূর্যোগের। সূর্যদেব যেন পৃথিবীর সাথে জগড়া করেছে, আর এখন প্রতিহিংসা স্বরুপ অবিরামভাবে দিয়ে চলেছে অফুরন্ত উত্তাপ। মানুষের মন খিটখিটে হয়ে থাকে এ সময়। কোনো কিছু করতে ইচ্ছে করে না। অবস্বাদগ্রস্থ মানুষগুলো ঘরে শুয়ে বসে কাটাতেও পারছে না গরমের তাড়নায়। গৃহস্থ মহিলাদের হাতপাখা চালাতে চালাতে এমন অবস্থা হয় যে, মন চায় আরো একটু ঠাণ্ডা পরশ পেতে, কিন্তু শরীর ভেঙে আসে ক্লান্তিতে।
আবীরদের বাগানের মধ্য দিয়েই পলাশপুরের পায়ে হাটা মেঠো পথ। ছোট্ট ও অজপাড়াগা, তাই পুরো গ্রামটিতে শুধু পায়ে হাটা পথই চোখে পরে।
বাগানের মধ্যকার মাচায় পা ঝুলিয়ে বসে পড়ল আবীর। অলসতার এই সময়ে হঠাৎ আবীরের মনটি চঞ্চল হয়ে উঠল। চোখ বন্ধ করে শুরু করে দিল পুরনো স্মৃতিচারণা।
বছরের এই সময়টাতেই। আবীর তখন প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ে। অজপাড়া এই গ্রামে এখনও শিক্ষার আলো সবার মমাঝে পৌছায় নি। তাই অন্য সব মেয়েদের মত অনুও স্কুলে যায় না। অনু ও আবীরের বাড়ি বেশি দূরে নয়। বাল্যকালের দুই ছেলেমেয়ের বন্ধুত্ব ছিল আত্মার সাথে। ওদের দুষ্টুমি, ছেলেমানুষি, কীর্তিকালাপ সারা গ্রামের মানুষকে মুখরিত করে তুলতো।
একদিন আবীর স্কুল থেকে ফেরার পথে গাছ থেকে কিছু বরই পেড়ে আনলো অনুকে দেবে বলে। অনু তো টক মিষ্টি বরই পেয়ে খুব খুশি। আবীরকে সে বলল, ধনেপাতা দিয়ে বিশেষভাবে এগুলো খাবে সে। তবে কথা হচ্ছে সবাইকে দিতে হবে। এজন্য তারা বরই গাছটির কাছে আবার গেল আর কিছু বরইয়ের আশায়। আবীরের নাগালে যা সব বরই ছিল, তা সব সে পেড়ে নিয়েছে। তাই এখন তাকে গাছে ওঠার জন্য তাগাদা দিল অনু।
- এই আবীর, ওঠ না গাছে। নিচ থেকে কিচ্ছু পাবি না।
- কিন্তু পাড়বো কিভাবে? প্রচুর কাটা আছে যে।
- দেখছিস না, বরইগুলো কেমন পাকা। কয়েকটা ঝাকি দিলেই সব পড়ে যাবে।
আবীর কাঠবিড়াল এর মত গাছে চড়ে বসল। কিন্তু ঝাকি দেয়ার জন্য সুবিধাজনক ডাল ধরতে পারলো না। একবার ছোট একটা ডাল ধরে ঝাকি দিয়েছে কি অমি খচ খচ করে দু তিনটে কাটা বিধলো হাতে। সে কি ব্যথা। বরই পাড়া সাঙ্গ দিয়ে অনুদের বাড়ি গেল। কেউ কাউকে কিছু বলল না। অনু সূচ নিয়ে তার অভিজান শুরু করে দিল। ব্যথায় টনটন করছে আবীরের হাত। রক্ত পড়ছে টপাটপ। সে কি ভীষণ যন্ত্রণা। আবীরের চোখ দিয়ে যতটা না জল বেরুলো, অনু ঝড়াল তার তিনগুন। অবশেষে মুক্তি মিলল আবীরের, কাটা বেরিয়েছে। তার চলে যাওয়ার পর অনু এই সব কিছুর মূলে দায়ী করল বরই গাছটিকে। সে শাস্তি দিতে চাইল গাছটিকে। কিন্তু অপরের গাছ, সে গাছের কিছু করলে তাকেই বা ছেড়ে দেবে কেনো? অবশেষে দোষীকে শাস্তি দেওয়ার উপযুক্ত পথ পেল অনু।
©somewhere in net ltd.
১|
১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ১১:০৮
টুনটুনি০৪ বলেছেন: আপনার পোষ্টটি ভালো লেগেছে।